ইবরাহীম আদহাম’র ছড়া

 
ভালোবাসি মাকে
 
একটি মানুষ যার কাছে হয়
সকল মানুষ ঋণী
মা নামে সেই মানুষটাকে
আমরা সবাই চিনি।
 
যার হাসিতে দুখ ঘুচে যায়
ক্লান্ত হৃদয় সুখ খুজে পায়
ফুটে হাসি মুখে
তার সাথে কারো নেই তুলনা
এই ধরণীর বুকে।
 
অপেক্ষাতে দিন কাটে যার
আসবে কখন খোকনটা তার
দুয়ার খুলে ডাকে
সব কিছুকে পর করে সে
আগলে আমায় রাখে।
 
আসুক যত ভারি বিপদ
যায় দিয়ে সে আদর দরদ
পাশে সদাই থাকে
তাইতো আমি সবার আগে
ভালোবাসি মাকে।
..................................................
 
জোনাক পোকা
 
বাঁশ বাগানে মিটিমিটি
জ্বলছে কারা
দেখতে তাদের লাগছে যেনো
আকাশ তাঁরা।
 
এদিক সেদিক ছুটছে তারা
আলো জ্বেলে
জানলা খুলে দেখছি আমি
চোখটি মেলে।
 
বলছি মাকে ওগুলো কি
তারার থোকা
মা ডেকে কয় নারে খোকা
জোনাক পোকা।
..................................................
 
শ্রমিক
 
শ্রমিক ওরা দিন থেকে রাত
ঝড়ায় গায়ের ঘাম
কাজের শেষে পরিশ্রমের
পায়না সঠিক দাম।
 
অল্প টাকায় ভিষণ খাটে
রক্ত করে জল
কেউ দেখেনা কষ্ট ওদের
বুক ফাটানো রোল।
 
কাজের চাপে হয়না খাওয়া
তিনবেলা ঠিকঠাক
একটু ভুলে মালিকগুলো
দেখায় ভিষণ রাগ।
 
শোনরে মালিক বিত্তশালী
ঠকলে শ্রমিক সব
কাল হাশরে নিবেন হিসাব
বিচারপতি রব।
 
থাকতে সময় নিজেই নিজের
ভুলটা বুঝে নাও
ঘাম শুকানোর আগেই ওদের
মূল্য দিয়ে দাও।
..................................................
 
আমার গ্রাম
 
ওই যে দূরে মাঠের পরে সবুজ গাছের সারি
ঠিক সেখানেই গ্রামটা আমার সেথায় আমার বাড়ি।
যেথায় বসত করে তাঁতি কামার কুমার চাষা
কি মনোরোম দৃশ্য শ্যামল দেখতে লাগে খাসা।
 
মাঠের পরে মাঠ বিছানো সবুজ শ্যামল ধানে
দিন কেটে যায় খুব সহজেই হরেক পাখির গানে।
সূর্যি মামা দেয় উঁকি দেয় হিজল পাতার ফাঁকে
বিলের জলে শাপলা শালুক হাতছানিতে ডাকে।
 
ঝোপের আড়ে ডাহুক ডাকে মিষ্টি মধুর সুরে
বর্ষাএলে বৃষ্টি ঝরে মেঘের আকাশ ফুঁড়ে।
শিউলি বকুল রয় ছড়িয়ে মাঠের সবুজ ঘাসে
কুসুম রোদের আলতো ছোঁয়ায় শিশির কণা হাসে।
 
রাখাল বসে বাজায় বাঁশি বটের ছায়া তলে
পাবদা পুঁটি করে খেলা দিঘির অতল জলে।
বুনো হাওয়া দোল দিয়ে যায় মাঝির রঙিন পালে
হাঁসের ছানা সাঁতার কাটে ঢেউয়ের তালে তালে।
..................................................
 
প্রার্থনা
 
কখন বাগে ফুল ফুটেছে
কখন গেছে ঝরে
বন্দি ঘরে বসে থেকে
হিসেব কে তার করে।
 
দুপুর গড়ায় বিকেলে গড়ায়
আসে ফিরে রাত
হয়না জানা পাখির ডাকে
কখন হলো প্রাত।
 
বসে থেকে অলস সময়
হয়না যে আর শেষ
হয়না দেখা বন্ধু স্বজন
স্নিগ্ধ পরিবেশ।
 
এবার প্রভু মোদের প্রতি
রহম করো দান
এই করোনার বিপদ থেকে
করো মোদের ত্রান।
..................................................
 
বই
 
বই মোটে নয় শত্রু মোদের
বইকে বানাও সখা
দেখবে তবে মা কখনো
দিবেনা আর বকা।
 
আদর করে দিবেন চুমু
নিবেন ডেকে কাছে
বইয়ের ভেতর জ্ঞান গুনের
হাজার কথা আছে।
 
বই পড়িলে প্রজ্ঞা বাড়ে
নেই যে মোটে ক্ষতি
বইয়ের কদর সোনা রুপা
হিরার চেয়ে অতি।
 
খেলা ছেড়ে বইয়ের প্রতি
দাও মনোযোগ তবে
দেখবে তোমায় বাসবে ভালো
পাড়াপড়শি সবে।
..................................................
 
ভালোবাসি
 
ভালোবাসি চাঁদ হাসি তারা ঝিলমিল
উষাকালে সোনা রোদ আকাশের নীল।
ভালোবাসি মেঘমালা সাদা বক চিল
কেয়া বেলি জবা জুঁই নদী খাল বিল।
 
ভালোবাসি গাছপালা নানা ফুল ফল
ডালে ডালে পাখিদের খুব কোলাহল।
ভালোবাসি মাছেভরা পুকুরের জল
প্রজাপতি মৌমাছি জোনাকির দল।
 
ভালোবাসি রংধনু গোধুলীর হাত
জোছনার হাসিমাখা ঝকঝকে রাত।
ভালোবাসি কুয়াশায় ঢাকা হিম প্রাত
শিশিরের জলে ধোয়া সবুজাভ পাত।
..................................................
 
গ্রীষ্মের আগমন
 
গ্রীষ্মের আগমনে
আকাশের গায়
কালো মেঘ পাখ মেলে
যায় ভেসে যায়।
 
গাছপালা জুড়ে হয়
কতো নানা ফল
দেখে মন ভরে যায়
জিভে আসে জল।
 
হাওয়া বহে দমকা
আসে খুব ঝড়
উড়ে যায় ঘরবাড়ি
লাগে খুব ডর।
 
সূর্যের কড়া তাপে
শুকায় খাল বিল
নদীর বুকে উড়ে
সাদা গাঙচিল।
..................................................
 
ঘুড়ি
 
নাটাই ঘুড়ি হাতে খোকন
ছোটছে বিলে
দেয় উড়িয়ে ঘুড়িটা তার
আকাশ নীলে।
 
ডানা ছাড়াই উড়ছে ঘুড়ি
মেঘের দেশে
সুতোর টানে নেজ নাড়িয়ে
হাওয়ায় ভেসে।
 
উড়ে উড়ে যাচ্ছে ঘুড়ি
মেঘ ছাড়িয়ে
যেতে যেতে দিচ্ছে আভাস
নেজ নাড়িয়ে।
 
তাইনা দেখে ইচ্ছে জাগে
খোকার মনে
ডানা ছাড়াই উড়বে সে-
ঘুড়ির সনে।
..................................................
 
কার ইশারায়
 
কার ইশারায় রাত্রি শেষে দিনের আলো ফোটে
পূব আকাশে মিষ্টি হেসে সূর্যিমামা উঠে।
কার ইশারায় গায় পাখিরা মিষ্টি মধুর সুরে
কিচিরমিচির শব্দ তুলে যায় হারিয়ে দূরে।
 
কার ইশারায় আকাশ জুড়ে লক্ষ তারার মেলা
থরে থরে ফুল কলিরা ফোটে প্রভাত বেলা।
কার ইশারায় মিটিমিটি জোনাকিরা জ্বলে
ধূসর কালো মেঘের ভেলা শূন্যে ভেসে চলে।
 
কার ইশারায় পাতায় পাতায় ঝরে শিশির কণা
মাঠের পরে মাঠ বিছানো সবুজের আলপনা।
কার ইশারায় মেঘ সরিয়ে চাঁদ দিয়ে যায় আলো
বিমল হাওয়ায় জুড়ায় দেহ মন করে দেয় ভালো।
 
কার ইশারায় নৌকা জাহাজ পাড়ে এসে ভিরে
সচ্ছ জলের ধারা বহে পরতের বুক চিরে।
কার ইশারায় বাঁচা মরা এই জগতের সবই
আর কেহো নন তিনি হলেন তোমার আমার রবই।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.