সায়মন_মুহাম্মদ মিজানুর রহমান : পর্ব-১৭

বেশ কিছুদিন কেটে গেল। সায়মনেরফিরে আসার খরবটাও সবাই জানতে পারল। জারিফাও জানল। সে জানতে পারলে তাতে কিছু এসে যায় না। এখন তার কিছু করার নেই। সে কোন মুখে তার সামনে এসে দাঁড়াবে। অতীতে সে যা করেছে তাকে সে কীভাবে ভুলিয়ে দেবে। সবশেষে যেটুকুই-বা বাকি ছিল নিজ হাতে তাকে খতম করে দিলো। তার কর্মফল তার সঠিক স্থান চিনিয়ে দিয়েছে। এখন সেখানেই তাকে পড়ে পড়ে কাঁদতে হবে।
একদিন সন্ধ্যাবেলায় মনজুকে দেখা গেল, রাফিদের বাড়ির সামনে চায়ের দোকানে। রাফি ওকে দেখে চমকে উঠল। ওর ব্যাপারে আর কাউকে কিছু বলল না। অনেক সময় কেটে গেল। চারিদিকে এশার আযান পড়েছে। এশার নামায শেষে আবিদ মসজিদ থেকে বাসায় ফিরে এসেছে। হঠাৎ দরজায় ঠক ঠক শব্দ। আবিদ দরজাটা খুলবে, রাফি বলল, বাবা তুমি দরজাটা খুলো না। আমাকে দেখতে দাও। তুমি ভিতরে যাও।
দরজা খুলে মনজুকে দেখে ভারি অস্থির হয়ে পড়ল রাফি। তার এই উপস্থিতি রাফির কাছে কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। সবাই তাকে দেখে অবাক হলো। মনজু কেন এখানে এসেছে ? এত বড় একটা ঘটনার পরে সে কীভাবে এখানে আসতে পারে। তার মতো একজন মানুষের জন্য তা কখনো শোভনীয় নয়।
রাফি বলল, মনজু, তুমি এখান থেকে চলে যাও। আর সমস্যার সৃষ্টি করো না। যা হয়েছে অনেক।
সমস্যা করবো বলেই তো এলাম।
মানে ?
কী বললে ?
ঘরভর্তি লোক। পরিবেশটা ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল। সবাই কেমন ফুরফুরে মেজাজে ছিল। সান্ধ্যকালীন এই পরিবেশটা একদম নষ্ট করে দিলো ছেলেটা। ছুটি শেষ হতে আর মাত্র একদিন বাকি। ঠিক এমন সময়ে এরকম একটা ব্যাপার সবার কাছে দারুণ বিরক্তির।
আবিদমনজুকে বলল, দেখো বাবা, যা হয়েছে সব ভুলে গেছি। নতুন করে তুমি আর পুরনো কথাগুলোকে মনে করিয়ে দিয়ো না। যাও বাবা, চলে যাও। আর লোক হাসিও না।
মামা, আমি চলে যাব।থাকার জন্য আসিনি। এসেছি কেবল কিছু কথা বলার জন্য। আজকে যদি বলতে না পারি তাহলে হয়তো আর কোনোদিন বলা হবে না। কারণ, দুদিন বাদেই আমি তিন বছরের জন্য দেশের বাইরে চলে যাচ্ছি। এই তিন বছরে এমন কিছু ঘটে যাবে, যার মাশুল আমি তিন দশক ধরে দিলেও শেষ হবে না। তাই এই অসময়ে আপনাদের বিরক্ত করতে বাধ্য হলাম। ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন আমায়।
সবাই মনজুর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটি কী বলতে চায়।
রাফি চেয়ারে বসা। পাশের চেয়ারটা ফাঁকা। মনজু ধপ করে বসে পড়ল চেয়ারটিতে। কেউ কিছুই বুঝে উঠতে পারল না। ছেলেটি পাগল হয়েছে! নাকি বিয়ের পর পাগলামোটা আরো বেড়েছে। এসব এতদিন কোথায় ছিল ?
আসলে জীবনটাই অভিনয়, নইলে আমাকে আজ এখানে অপরাধী বেশে দাঁড়াতে হবে কেন ? কী অপরাধ করেছি আমি।
তুমি কী বলতে চাও ?
এসব কী হচ্ছে ?
যে মনজু রহমান আপনার মেয়েকে ভালোবেসেছিল সে আজও তাকে ভালোবাসে। তার পথ চেয়ে বসে আছে। আপনার মেয়েকে ছেড়ে সে অন্য কাউকে বিয়ে করেনি।
আপনি আমাকে কত বড় অপরাধী বানিয়ে দিলেন। আমি মঞ্জুয়ারার ছেলে, বিশ^াসঘাতকতা আমার রক্তে নেই। যদি থেকে থাকে, সেটা অহংকার। আর তা-ভালোবাসার, মনুষ্যত্বের। তার মা মরে গেলেও এ শিক্ষাটা তার ছেলের মাঝে রেখে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
রাফিঅবাক হয়ে মনজুর দিকে তাকিয়ে রইল। লজ্জায় তার মাথাটা নত হয়ে আসছে।
আবিদ বড়ই আফসোস করে জারিফার জন্য। হয়তো মেয়েটা ভুল করেছে ঠিকই, তাই বলে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সায়মনের যেমন ছেলেটার কথা ভাবা উচিত ছিল তেমনি জারিফারও। সায়মনের জায়গায় সায়মন ঠিক থাকলেও তাদের স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক কলহের জন্য কষ্ট পাবে তার নিরপরাধ ছেলেটি!
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments