সড়ক দুর্ঘটনা সমাচার_সাঈদী আলম

 
সড়ক উপর টানানো ট্র্যাফিক সাইনবোর্ডে দেখতে পাই ' একদিনের দুর্ঘটনা, সারাজীবনের কান্না' আমরা টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন চোখ রাখি ব্রেকিং নিউজঃ দেখতে পাই সড়ক দুর্ঘটনায় এতো ওতো নিহত/আহত। যে বা যারা মারা যাচ্ছে  কারো ভাইবোন,স্ত্রী,পুত্র, স্বজন কিংবা একই ফ্যামিলির / জন নিহত, বা নব দম্পতি নিহত,ফ্যামিলির সবাই নিহত। এগুলো নিঃসন্দেহে বিবেককে নাড়া দেয় এমন খবর। এসব ঘটনাগুলোধ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্প্রতি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে একই ফ্যামিলি দুই  ভাইসহ পনেরো জন নিহত হওয়ায় শোকাহত পরিবার গুলোতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  জনমনে অাতঙ্ক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সড়ক ব্যবস্হা ট্র্যাফিক রুলসের নিয়মনীতি তোয়াক্কার উপর। একটু পেছনে ঘুরে আসি, ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৭০২ টি,নিহত হয়েছে হাজার ২২৭ জন।  নিরাপদ সড়ক চাই ( নিসচা) এর রিপোর্ট মতে,  ২০১৯ সালে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে। ২০১৮ সালে হাজার ১০৩ টি সড়ক দুর্ঘটনায় হাজার ৩৯ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে হাজার ৪২৫ জন।২০১৭ সালে হাজার ৩৪৯ টি সড়ক দুর্ঘটনায় হাজার ৫৬৫ জন নিহত হয় হাজার ৯০৮ জন আহত হয়। ২০১৯ সালে ৪৯ জন বাসচালক, সহকারি নিহত হয় ৭২ জন ট্রাক চালক, সহকারি নিহত হয়।এছাড়া পথচারি মারা গেছে ২৬৬১ জন। যা মোট দুর্ঘটনার ৫০. শতাংশ মোটর চালক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১০৯৮ টি নিহত হয়েছে ৬৪৮ জন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ৫৩১টি দুর্ঘটনায় ৪৪৭ জন প্রাণ হারায় ফেব্রুয়ারিতে ৩৮৭ টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ৪৬৩ জন। উপরোক্ত পরিসংখ্যান একটি দেশের মোটেও সুখকর নয়। দুর্ঘটনা কাউকে একটুও সময়ও দেয়না প্রস্তুতি নেবার। ২০১৮ সালের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সারাদেশে সাড়া ফেলে দিয়েছে। সরকারি- বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের, শিক্ষিত অশিক্ষিত মানুষের বিবেকবোধ নীতিবোধকে নাড়া দিয়েছে। দুর্ঘটনা চিনে না কে কত বড় কর্মকর্তা। কেন  এই দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে এর কারণ বেরিয়ে আসবে বহুবিধ।আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা রেটিং অনেক এগিয়ে। মহাসড়কগুলো সংকীর্ণ যানবাহনের তুলনায়, যেগুলো চার লাইন হওয়া খুব বেশি জরুরি। অদক্ষ, অনভিজ্ঞ চালকরা গাড়ি চালানো যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে ফেলেছে। রোড় পারমিট নেই,নেই লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন যত্রতত্র গাড়ি চালানো তারা ট্রাফিক রুলসকে তোয়াক্কা না করে গাড়ি চালায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় হেলপারই ড্রাবিং বসে যেটা পরিপক্ব হওয়ার আগে দুর্ঘটনা ডেকে আনে। যাদেরকে প্রাণঘাতি চালকও বলা যায়। কম বয়সি,অপেক্ষাকৃত দুর্বল শ্রেণি একাজগুলো করে বসে। আমাদের দেশে চালকশ্রেণি মাদকসেবন করে আসক্ত হয়। যার দরুণ ড্রাবিং বসে দুর্ঘটনা ডেকে আনে। একটা কথা থেকেই যায়, তারা কি ড্রাবিং করতে যেয়ে মাদক নেয়, নাকি মাদকাসক্তরা ড্রাবিং বসে। অনেক সময় লক্ষ করা যায় অভারটেকিং প্রতিযোগিতা করে যেটা অন্যতম দুর্ঘটনা কারণ। এই প্রতিযোগিতার সময় তারা যে অনেক যাত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব আছে সেটা বেমালুম ভুলে যায়। ট্র্যাফিত সিগন্যাল গুলো তারা মানে না, অনেক ড্রাইবার অশিক্ষার দরুণ সিগন্যাল গুলো বুঝে না। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, স্টেশন ছাড়া যাত্রি উঠানামা ট্র্যাফিক জ্যাম দুর্ঘটনায় নিপতিত হয়।হেলমেট ছাড়া ফুয়েল নয়, এটা আরো জোরালো করতে হবে। গ্রামিণ অঞ্চলে দেখা যায়, যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটভাটা স্কুল, মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে  মাটি কাটতে ট্র্যাক, ড্যাম্পার ব্যবহার এর কারণে। একদিকে যেমন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে দুর্ঘটনা রুখতে হলে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিআরটিসি কর্তৃক অনুমোদিত চালকরা ড্রাবিং লাইসেন্স রোড পারমিটের অধিকার পাবেন,অন্য কেউ নয়।সরকারি বেসরকারি  কোর্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা।  মহাসড়কে ছোট গাড়ির ব্যাপারে বিধি নিষেধ আরোপ করা। ডোপ টেস্ট এর মাধ্যমে চালকদের নিয়ত্রণে আনা। লক্কড়, ঝক্কড় কালভার্ট পুননির্মাণ বা মেরামতের ব্যবস্হা করা।ওভার ব্রীজ ব্যবহার করা। ফুটপাতের নিয়ম শৃংখলা মেনটেইন করা।  দোষীদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়ক্ষতি পূরণে ব্যবস্হা গ্রহণ করা। আপনজন যে  হারিয়েছে সে বুঝে আপনজন হারানোর ব্যথা কত মর্মান্তিক। আমাদের দেশে অনেক মায়ের স্বপ্ন দেখার আগে স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।। অনেকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ার আগে ইহকাল ত্যাগ করে চুড়ান্ত গন্তব্যে পাড়ি জমান। সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন,  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সচেতনতায় আরো এগিয়ে আসে তাহলে অনেকটা দুর্ঘটনা কমিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস। এব্যাপারে অনেক অান্দোলন হলেও  ক্ষেত্রে বিশেষে আশার মুখ দেখেনি। ট্র্যাফিক প্রশাসনের বিভিন্ন সাইনবোর্ডে দেখি "সময়ের চেয়ে জীবনের গূরুত্ব অনেক বেশি"এটা 'জনে মানতে চেষ্টা করি? অনেক সময় দেখা যায় যাত্রিরা ড্রাইভারকে দ্রুত গাড়ি চালাতে উৎসাহিত করি। তখন জীবনের গূরুত্বটা ছোট হয়ে আসে। আমরা এটা বুঝতে চেষ্টা করি না জীবন থাকলে সময়ের ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। জীবনই বা নাই থাকে এই সময় কার জন্যে। আসুন আমরা ড্রাইভার যাত্রি, পথচারি সচেতন হই।
 
লেখকঃ শিক্ষক প্রাবন্ধিক

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com 

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.