প্রগতির চটকবাজ বিজ্ঞাপন বনাম ধর্ম ।। নির্ঝর আহমেদ প্লাবন
যদি বেঁচে যাও এবারের মতো
যদি কেটে যায় মৃত্যুর ভয়
জেনো, বিজ্ঞান লড়েছিলো একা
মন্দির মসজিদ নয়
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রগতিবাদীদের জাতীয় স্লোগান হয়ে উঠেছে এটি। প্রগতিশীল আন্দোলন পরিচালিত হয় ইস্যুকে কেন্দ্র করে। এরা সারাক্ষণ অপেক্ষায় থাকে কখন একটি নতুন ইস্যু তৈরি হবে, আর তা নিয়ে মিড়িয়া পাড়ায় তোলপাড় শুরু করবে। কোনো ইস্যু না থাকলে নিজেরা ইস্যু সৃষ্টি করবে। যতো অযৌক্তিকই হোক না কেন তারা সেটিকে মানবের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে। তাদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার মিডিয়া। দেশের অধিকাংশ মিডিয়া তাদের দখলে। করোনায় সবাই যখন লক ডাউনে নিজকে বাঁচানোর প্রচেষ্টায় উদ্বিগ্ন। পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখার জন্য ব্যাকুল তখন তারা মানবের দুর্বল জায়গায় আঘাত দেয়ার জন্য তৈরি করলো নতুন স্লোগান। মানুষের মৃত্যু নিয়েও এরা চিনিমিনি খেলে! মুমূর্ষু মানবতার নিয়েও তাদের রাজনীতি করতে হয়! জীবনানন্দ দাশ ঠিকই বলেছিলেন-
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা
যাদের হৃদয়ে প্রেম নেই, প্রীতি নেই, করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া
তাদের এই স্লোগানটি একটি ধুরন্ধর স্লোগান। মানুষকে প্রতারিত করে তার বিশ্বাসকে দুর্বল করে দেয়ার একটি হীন চক্রান্ত। মানুষ বাঁচে তার আদর্শ ও বিশ্বাস নিয়ে। সে বিশ্বাসের ভিতকে ভেঙে দেয়ার জন্য যারা অনবরত কাজ করতে থাকে তারা সুন্দরের পরিপন্থি লোক। সকল লোকজ বিশ্বাসই সুন্দর। যে যার বিশ্বাস নিয়ে চলুক। এটা মানার মতো উদারতা প্রগতির আলখেল্লায় ম-িত প্রাচীন যুগীয় বর্বরদের নেই। এই স্লোগান ভ্রান্ত, নষ্ট এবং প্রগতিবাদীদের ব্যবসায়িক চিন্তার ফসল। কেন এমন কথা লিখলাম- তার ব্যাখ্যা দিচ্ছি:
১
বিজ্ঞান কী করে লড়েছিলো? বিজ্ঞানের হাত, পা, চোখ, কান, নাক, মুখ, দেহ, আত্মা আছে নাকি? এটাও তো একটা অন্ধ চিন্তা। অনগ্রসর ভাবনা। মোতাহের হোসেন চৌধুরী এজন্যই ধর্মান্ধের চেয়ে মতবাদিকে বেশি ভয়ঙ্কর বলেছিলেন। ভাষাগত সমস্যাও এ স্লোগানে প্রকট। বিজ্ঞান লড়ে না বৈজ্ঞানিক লড়ে? নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিজ্ঞানকে একেবারে রক্ত-মাংশের মানুষ বানিয়ে ফেললো তারা! বিজ্ঞানের জ্ঞানের উৎস কী? বিজ্ঞান যখন শুরু হয় তখন কোথা থেকে তারা ধারণা নিয়েছিলো? মানুষকে সৃষ্টি করে তার জীবিকার জন্য তাকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেছে ইসলাম। সে জীবিকার ধরণ নানারকম। অনাবাদি জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়ে যাবার কথাও বলেছে। সৃষ্টি জগত ঘুরে ঘুরে সেখান থেকে জ্ঞান আহরণের কথা বলা হয়েছে। সকল নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা দিয়েছে। বিজ্ঞান তো সে জ্ঞানেরই একটি শাখা। ধর্মমতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা একটি ফরজ তথা অবশ্যকরণীয় কাজ। না করলে তার ধর্ম থাকবে না।
২
মানুষের কখনো মৃত্যুর ভয় কাটে কি? পৃথিবীতে কোন কোন মানুষ আজীবন বেঁচেছিলো? আমাদের প্রগতিবাদীদের বিজ্ঞান লড়ে লড়ে কতজন মানুষকে চিরজীবনের জন্য দৈহিকভাবে বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছে? সকল মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ধর্ম। প্রগতিবাদীদের বিজ্ঞান সে সত্যকে ভুল প্রমাণ করতে পেরেছে কী? ইতালীর প্রধানমন্ত্রি যখন বলেন, সবকিছু এখন উপরওয়ালার হাতে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমেরিকার মতো বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ এগিয়ে থাকা দেশের সবচেয়ে মারকুটে প্রেসিডেন্টের চোখ যখন ছলোছলো করে, কানাডার রাষ্ট্রনায়ক যখন কান্নায় ভেঙে পড়েন তখন আমাদের সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবীরা অনলাইনে বিজ্ঞানের রাজনীতি করে। আমাদের প্রগতিবাদীরা বলে তাদের কা-জ্ঞান নাই। যারা বিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে তাদের যদি কা-জ্ঞান না থাকে আর বিজ্ঞানে ব্যাপক পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের প্রগতিবাদীদের কা-জ্ঞান যদি বেশি থাকে তবে চর্যাপদের ভাষায় বলতেই হয়- ‘বলদা বিয়ালো গাভিআ বান্ধা’ অর্থাৎ হিজড়ার বাচ্চা হয় কিন্তু নারীর বাচ্চা হয় না। আমাদের প্রগতিবাদীরাও অনেকটা সেরকম সৃজনশীল। বাংলাদেশের প্রগতিবাদীদের ভাবসাব এমন, বোধহয় তারা কা-জ্ঞানের ঠিকাদারি নিয়ে বসেছে।
৩
প্রগতিবাদিরা কোলাহল করে পানি ঘোলা করতে পছন্দ করে খুব। পানি ঘোলা করে মাছকে বোকা বানিয়ে শিকার করতে তারা ওস্তাদ। অনেকটা মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে কার্যসিদ্ধির মতো। করোনা ভাইরাস কোন ধর্ম ছড়িয়েছে? করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জন্য যতগুলো বিষয়কে সন্দেহ করা হচ্ছে তার একটিও কোনো ধর্ম সমর্থন করে না। বরং ধর্ম ওগুলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে। ধর্ম বলেছে, একজন মানুষ হত্য মানে সমগ্র মানবজাতিকে হত্য। মানুষ হত্যা ধর্মের মতে মহাপাপ। যে দেশ থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে সে দেশ তো প্রগতিবাদীদের রাজধানী। তাদের সূতিকাগার ও তীর্থস্থান। তাদের বিজ্ঞান এখানে অচল হয়েছিলো কেন? নাকি তাদের সচল বিজ্ঞানের বিজ্ঞানাগার থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে? বিশ্বকে প্রগতিবাদের (চীনের) নিয়ন্ত্রণে আনার প্রত্যয়ে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে কীনা তা নিয়ে বিশ্বে এখন ব্যাপক তোলপাড় চলছে। গবেষণা হচ্ছে। আলোচনা, সমালোচনা হচ্ছে। প্রগতিবাদীদের ছড়ানো ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ধার্মিক বৈজ্ঞানিকরাই অধিকতর সফল হচ্ছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এগিয়ে এসেছে অনেক দূর। কিউবা কিংবা উত্তরকোরিয়া ততটা নয়।
৪
পৃথিবীর সকল মন্দির মসজিদ বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে এবং মহামারি হলে বিজ্ঞানের দেয়া নিয়ম-নীতি মেনে চলেছে। কিছু অন্ধ মানুষ অবশ্যই আছে। তবে তাদের অন্ধত্ব বিজ্ঞানঅন্ধদের তুলনায় কিছুটা কম। সৌদি আরবসহ সকল মুসলিম দেশে সকল মসজিদ লক ডাউনের আওতায় এসেছে। ভারতে মন্দিরগুলো লকডাউনের আওতায় এসেছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালির গির্জাগুলো এসেছে। আলেম এবং পুরোহিতরা এরপক্ষে তাদের ধর্মীয় ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। কিছু অতি উৎসাহি লোক ভুল করেছে। তার জন্য সমগ্র ধর্মকে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে সাপে-নেউলে অবস্থানে দাঁড় করাতে চাচ্ছে প্রগতিবাদীরা। এটা নিয়ে মহা-রাজনৈতিক ব্যবসায় নেমেছে প্রগতিশীল নাস্তিক সংগঠনের বিজ্ঞানঅন্ধ সমাজতন্ত্রের ব্যবসায়িরা। মানুষের জীবন যখন করোনার আঘাতে পর্যুদস্ত তখনো প্রগতিশীলরা তাদের প্রগতির ব্যবসা নিয়ে মত্ত। মানুষকে বিভ্রান্ত করার প্রত্যয়ে তারা বলীয়ান। এ বিভৎস সময়ে মানবতার উন্নতির কথা ভেবে হলেও এরা এদের রাজনৈতিক প্রচারণা বন্ধ রাখতে পারতো। কিন্তু না, মানবতার সর্বশেষ বিধ্বস্ত অবস্থায়ও তাদের মঙ্গলের চিন্তা না করে তারা ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের লড়াই বাঁধিয়ে একটা বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা তৈরি করে নিজেদের রাজনৈতিক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জসীম উদ্দীনের সোজনবাদিয়ার ঘাট কাহিনী কাব্যের নেতার মতো এদের চরিত্র। হিন্দু-মুসলমানে দাঙ্গা বাধিয়ে দিয়ে নেতা যেমন নিজের সুবিধা নিয়েছে এরাও ধর্ম-বিজ্ঞানে গোলযোগ বাধিয়ে মানুষকে হতভম্ব করে নিজেদের সুবিধা আদায় করতে মত্ত। এটা কী প্রগতি না দুর্গতি- এ নিয়ে বরং আলোচনা হতে পারে। কারণ এদের রংচটা বিজ্ঞাপন দেখে কোমলমতি তরুণদের পাশাপাশি অল্প জানা ও সাধারণ শিক্ষিত লোকেরাও বিভ্রান্তিতে পড়ছে।
৫
ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের বিরোধ কখনো ছিলো না। যারা বিরোধ বাধিয়েছে বা বাধানোর চেষ্টা করছে তারাই প্রগতিশীল। এরা সব সময় সংগ্রাম, সংগ্রাম করে চিৎকার করে। ভালোর বিরুদ্ধেও সংগ্রাম, খারাপের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম, কিছু হলেও সংগ্রাম, না হলেও সংগ্রাম। নীতির বিরুদ্ধেও সংগ্রাম, নৈতিকতার বিরুদ্ধেও সংগ্রাম। স্থিতিশীল অবস্থাতেও সংগ্রাম! উদ্ভট প্রজাতির জীব এরা। সব সময় ইনকিলাব জিন্দাবাদ! এদের অবস্থা হয়েছে সেই অন্ধ নেতার মতো: যে অন্ধ নেতা চিৎকার করে বলে, “দুনিয়ার অন্ধ এক হও, এসো তোমাদের পথ দেখিয়ে দেবো”। অন্ধ যেমন অন্ধকে পথ দেখাতে পারে না, এরাও তেমনি মানবতাকে পথ দেখাতে পারে না। অন্ধ পথ দেখাতে গেলে যেমন করে অপর অন্ধ গর্তে (বিপদে) পড়ে তেমনি প্রগতিবাদীদের দেখানে পথে চললে মানুষও গর্তে পড়ে। যখন বেশ কিছু সংখ্যক লোক গর্তে পড়ে যায় এবং আর উঠতে পারে না তখন এদের অবস্থা হয়ে যায় সেই লেজকাটা শেয়ালের মতো। সবার লেজ কাটার জন্য এরা তখন হন্য হয়ে যুক্তি খুঁজে বেড়ায়। কিছু খোঁড়া যুক্তি এরা পায় বটে কিন্তু সে যুক্তি মানবজাতিকে মুক্তি দিতে পারে না। স্বজাতির ধ্বংস যে চায় তাকে বলা হয়, মুরতাদ। মানবতার ধ্বংস চায় বলে প্রগতিবাদীরা মুরতাদ হিসেবে চিহ্নিত। মানুষের উন্নতির বিরুদ্ধে গিয়ে এরা কার জন্য সংগ্রাম করতে চায়? ধর্ম মানুষের লোক বিশ্বাস। যুগ পরম্পরায় এ বিশ্বাস মানুষকে বেঁচে থাকার আশ্বাস যুগিয়েছে। সে আশ্বাসকে ভেঙে দিলে তারা অস্থির ও টালমাটাল অবস্থায় পড়ে যাবে। বাঁচার স্বপ্ন বাদ দিয়ে আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়বে। কিছু বিষয়ে বিজ্ঞান যখন অসহায় সে সময়ে তারা ইশ্বরের উপর ভর করে সাহস অর্জন করে। সে সাহসও যদি ভেঙে যায় তাহলে তাদের মতো বিধ্বস্ত মানুষ প্রবোধ গুণবে কী করে? মানুষের বিশ্বাসকে যারা অপমান করে তারা আর যাইহোক, মানুষ হতে পারে না।
৬
পৃথিবীতে কোনো ধর্মই বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে বলেনি। ইসলাম তো বলেই দিয়েছে, এটা বিজ্ঞানময় কোরআন। বিজ্ঞানের মহৎ আবিষ্কার করার জন্য ধর্ম উৎসাহ দিয়েছে। পৃথিবীতে যত বড় বড় বৈজ্ঞানিক জন্ম নিয়েছে তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক নাস্তিক। পৃথিবীর মহৎ আবিষ্কারক বিজ্ঞানীরা অধিকাংশই ধার্মিক। ধর্ম যে বিজ্ঞানের কথা বলে তা গবেষণাগারে এবং প্রকৃতিতে। আর প্রগতিশীলরা যে বিজ্ঞানের কথা বলে তা রাজনীতির মাঠে; কিছু মুখরোচক উক্তিতে। ধার্মিক বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার নিয়ে তারা প্রগতির ব্যবসা করে। যাদের নিয়ে ব্যবসা করে তাদের বিশ্বাসকে আবার অবজ্ঞা করে। এদেরকেই বোধহয় নিমকহারাম বলে।
৭
মানবতার জন্য ক্ষতিকর যে বিজ্ঞান সে বিজ্ঞান চর্চাকে ধর্ম নিষিদ্ধ করেছে। জীবানু অস্ত্র তৈরির অনুমোদন কখনোই কোনো ধর্ম দেয়নি। ধর্মের আলখেল্লায় আবৃত শাসকরাই এ কাজ করছে। শাসকরা নিজেদের সুবিধার জন্য ধর্ম ব্যবহার করেছে মাত্র। প্রগতিশীলরাও নিজেদের সুবিধার জন্য ধর্ম ব্যবহার করে। একজন ইতিবাচকভাবে অপরজন নেতিবাচকভাবে। ডিনামাইট আবিষ্কার করা হয়েছে খনিজ দ্রব্য আহরণের জন্য কিন্তু শাসকরা তা ব্যবহার করেছে মানবতাকে ধ্বংস করার জন্য। ধর্ম এ ব্যবহার অনুমোদন দেয়নি। বৈজ্ঞিানিক আবিষ্কার করেই তার কাজ শেষ করেন। ধর্ম তার ব্যবহারবিধি বাতলে দেয়। অনবিক বোমা কেন আবিষ্কার করা হয়েছে? হিরোসিমা-নাগাসাকিতে যে বোমা নিক্ষেপ করা হলো তা কি কোনো ধর্ম অনুমোদন দিয়েছে? ধর্ম পারমানবিক বোমা বানানোকে নিষেধ করেছে। মানুষ ধ্বংসকে হারাম করে দিয়েছে ধর্ম। মানুষ তো দূরে থাক অকারণে কোনো প্রাণী হত্যাকেও নিষেধ করেছে ধর্ম। বিজ্ঞানকে পথ দেখায় ধর্ম। বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের কখনোই কোনো বিরোধ ছিলো না। অযথা খুঁটে খু^টে তিলকে তাল করে যারা বিরোধ দেখাতে মত্ত তাদের আসল উদ্দেশ্য কী?
৮
এছাড়াও মহামারি লাগলে ধর্মের দেয়া বিধিগুলো মানলে করোনা এত ছড়াতে পারতো না। ইসলাম বলেছে, “ কোথাও যদি মহামারি লাগে, তবে সে এলাকার জনগণ ঐ এলাকা ছেড়ে যাবে না এবং বাইর থেকে কোনো লোক ঐ এলাকায় ঢুকবে না”। আমরা কী সে নীতি মেনেছি? বিশ্বের কোনো দেশ মেনেছে? মানুষের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল কাজের বিরুদ্ধে সকল ধর্মের অবস্থান চূড়ান্ত। বলা হয়েছে, “তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন, আমার জন্য আমার দ্বীন”। ব্যক্তি স্বাধীনতার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ধর্ম দিয়েছে। বিজ্ঞানকে প্রমোট করেছে, করছে এবং করবে ধর্ম। আর বিজ্ঞান নিয়ে রাজনীতি করছে সমাজতন্ত্রের ধ্বজাধারিরা। অনেকটা পশ্চিম পাকিস্তানের মতো। পূর্ব পাকিস্তান ফসল উৎপাদন করতো আর পশ্চিম পাকিস্তান তা ভোগ করতো। ধার্মিক বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করে আর তা নিয়ে রাজনীতি করে নাস্তিক প্রগতিশীলরা। প্রগতিবাদিরা মানুষের জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থাতেও নিজের আদর্শ বিক্রি করতে মত্ত। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের শাহবাগ আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গড়ের মাঠে বিজ্ঞান চর্চা হয় না, হয় বিজ্ঞানঅন্ধের চর্চা। বিজ্ঞান চর্চার জন্য গবেষণাগারে যেতে হয় রাজনৈতিক মাঠে নয়। প্রগতির ধোঁয়া তুলে সমাজতন্ত্রের প্রচারকরা মানুষকে চরম দুর্গতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এরা ধর্মকে আফিমের সঙ্গে তুলনা করে। ধর্ম যদি আফিম হয় তবে প্রগতিবাদ হলো গাঁজার কলকি। সুতরাং প্রগতিবাদের গাঁজাখুরি গল্প শুনে বিভ্রান্ত না হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
শেষ কথা হলো, বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের বিরোধ লাগানোর চেষ্টা করা অন্যায়। অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে তৃণসম দহে। আমাদের আত্মবোধের বোধোদয় হোক। মানবতার মুক্ত আঙিনায় আমাদের নিশান উড্ডীন হোক। প্রগতির চটকবাজ বিজ্ঞাপনে আমরা যেন খেই না হারিয়ে ফেলি।
যদি কেটে যায় মৃত্যুর ভয়
জেনো, বিজ্ঞান লড়েছিলো একা
মন্দির মসজিদ নয়
যাদের হৃদয়ে প্রেম নেই, প্রীতি নেই, করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া
বিজ্ঞান কী করে লড়েছিলো? বিজ্ঞানের হাত, পা, চোখ, কান, নাক, মুখ, দেহ, আত্মা আছে নাকি? এটাও তো একটা অন্ধ চিন্তা। অনগ্রসর ভাবনা। মোতাহের হোসেন চৌধুরী এজন্যই ধর্মান্ধের চেয়ে মতবাদিকে বেশি ভয়ঙ্কর বলেছিলেন। ভাষাগত সমস্যাও এ স্লোগানে প্রকট। বিজ্ঞান লড়ে না বৈজ্ঞানিক লড়ে? নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিজ্ঞানকে একেবারে রক্ত-মাংশের মানুষ বানিয়ে ফেললো তারা! বিজ্ঞানের জ্ঞানের উৎস কী? বিজ্ঞান যখন শুরু হয় তখন কোথা থেকে তারা ধারণা নিয়েছিলো? মানুষকে সৃষ্টি করে তার জীবিকার জন্য তাকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেছে ইসলাম। সে জীবিকার ধরণ নানারকম। অনাবাদি জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়ে যাবার কথাও বলেছে। সৃষ্টি জগত ঘুরে ঘুরে সেখান থেকে জ্ঞান আহরণের কথা বলা হয়েছে। সকল নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা দিয়েছে। বিজ্ঞান তো সে জ্ঞানেরই একটি শাখা। ধর্মমতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা একটি ফরজ তথা অবশ্যকরণীয় কাজ। না করলে তার ধর্ম থাকবে না।
মানুষের কখনো মৃত্যুর ভয় কাটে কি? পৃথিবীতে কোন কোন মানুষ আজীবন বেঁচেছিলো? আমাদের প্রগতিবাদীদের বিজ্ঞান লড়ে লড়ে কতজন মানুষকে চিরজীবনের জন্য দৈহিকভাবে বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছে? সকল মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ধর্ম। প্রগতিবাদীদের বিজ্ঞান সে সত্যকে ভুল প্রমাণ করতে পেরেছে কী? ইতালীর প্রধানমন্ত্রি যখন বলেন, সবকিছু এখন উপরওয়ালার হাতে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমেরিকার মতো বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ এগিয়ে থাকা দেশের সবচেয়ে মারকুটে প্রেসিডেন্টের চোখ যখন ছলোছলো করে, কানাডার রাষ্ট্রনায়ক যখন কান্নায় ভেঙে পড়েন তখন আমাদের সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবীরা অনলাইনে বিজ্ঞানের রাজনীতি করে। আমাদের প্রগতিবাদীরা বলে তাদের কা-জ্ঞান নাই। যারা বিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে তাদের যদি কা-জ্ঞান না থাকে আর বিজ্ঞানে ব্যাপক পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের প্রগতিবাদীদের কা-জ্ঞান যদি বেশি থাকে তবে চর্যাপদের ভাষায় বলতেই হয়- ‘বলদা বিয়ালো গাভিআ বান্ধা’ অর্থাৎ হিজড়ার বাচ্চা হয় কিন্তু নারীর বাচ্চা হয় না। আমাদের প্রগতিবাদীরাও অনেকটা সেরকম সৃজনশীল। বাংলাদেশের প্রগতিবাদীদের ভাবসাব এমন, বোধহয় তারা কা-জ্ঞানের ঠিকাদারি নিয়ে বসেছে।
প্রগতিবাদিরা কোলাহল করে পানি ঘোলা করতে পছন্দ করে খুব। পানি ঘোলা করে মাছকে বোকা বানিয়ে শিকার করতে তারা ওস্তাদ। অনেকটা মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে কার্যসিদ্ধির মতো। করোনা ভাইরাস কোন ধর্ম ছড়িয়েছে? করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জন্য যতগুলো বিষয়কে সন্দেহ করা হচ্ছে তার একটিও কোনো ধর্ম সমর্থন করে না। বরং ধর্ম ওগুলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে। ধর্ম বলেছে, একজন মানুষ হত্য মানে সমগ্র মানবজাতিকে হত্য। মানুষ হত্যা ধর্মের মতে মহাপাপ। যে দেশ থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে সে দেশ তো প্রগতিবাদীদের রাজধানী। তাদের সূতিকাগার ও তীর্থস্থান। তাদের বিজ্ঞান এখানে অচল হয়েছিলো কেন? নাকি তাদের সচল বিজ্ঞানের বিজ্ঞানাগার থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে? বিশ্বকে প্রগতিবাদের (চীনের) নিয়ন্ত্রণে আনার প্রত্যয়ে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে কীনা তা নিয়ে বিশ্বে এখন ব্যাপক তোলপাড় চলছে। গবেষণা হচ্ছে। আলোচনা, সমালোচনা হচ্ছে। প্রগতিবাদীদের ছড়ানো ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ধার্মিক বৈজ্ঞানিকরাই অধিকতর সফল হচ্ছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এগিয়ে এসেছে অনেক দূর। কিউবা কিংবা উত্তরকোরিয়া ততটা নয়।
পৃথিবীর সকল মন্দির মসজিদ বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে এবং মহামারি হলে বিজ্ঞানের দেয়া নিয়ম-নীতি মেনে চলেছে। কিছু অন্ধ মানুষ অবশ্যই আছে। তবে তাদের অন্ধত্ব বিজ্ঞানঅন্ধদের তুলনায় কিছুটা কম। সৌদি আরবসহ সকল মুসলিম দেশে সকল মসজিদ লক ডাউনের আওতায় এসেছে। ভারতে মন্দিরগুলো লকডাউনের আওতায় এসেছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালির গির্জাগুলো এসেছে। আলেম এবং পুরোহিতরা এরপক্ষে তাদের ধর্মীয় ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। কিছু অতি উৎসাহি লোক ভুল করেছে। তার জন্য সমগ্র ধর্মকে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে সাপে-নেউলে অবস্থানে দাঁড় করাতে চাচ্ছে প্রগতিবাদীরা। এটা নিয়ে মহা-রাজনৈতিক ব্যবসায় নেমেছে প্রগতিশীল নাস্তিক সংগঠনের বিজ্ঞানঅন্ধ সমাজতন্ত্রের ব্যবসায়িরা। মানুষের জীবন যখন করোনার আঘাতে পর্যুদস্ত তখনো প্রগতিশীলরা তাদের প্রগতির ব্যবসা নিয়ে মত্ত। মানুষকে বিভ্রান্ত করার প্রত্যয়ে তারা বলীয়ান। এ বিভৎস সময়ে মানবতার উন্নতির কথা ভেবে হলেও এরা এদের রাজনৈতিক প্রচারণা বন্ধ রাখতে পারতো। কিন্তু না, মানবতার সর্বশেষ বিধ্বস্ত অবস্থায়ও তাদের মঙ্গলের চিন্তা না করে তারা ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের লড়াই বাঁধিয়ে একটা বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা তৈরি করে নিজেদের রাজনৈতিক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জসীম উদ্দীনের সোজনবাদিয়ার ঘাট কাহিনী কাব্যের নেতার মতো এদের চরিত্র। হিন্দু-মুসলমানে দাঙ্গা বাধিয়ে দিয়ে নেতা যেমন নিজের সুবিধা নিয়েছে এরাও ধর্ম-বিজ্ঞানে গোলযোগ বাধিয়ে মানুষকে হতভম্ব করে নিজেদের সুবিধা আদায় করতে মত্ত। এটা কী প্রগতি না দুর্গতি- এ নিয়ে বরং আলোচনা হতে পারে। কারণ এদের রংচটা বিজ্ঞাপন দেখে কোমলমতি তরুণদের পাশাপাশি অল্প জানা ও সাধারণ শিক্ষিত লোকেরাও বিভ্রান্তিতে পড়ছে।
ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের বিরোধ কখনো ছিলো না। যারা বিরোধ বাধিয়েছে বা বাধানোর চেষ্টা করছে তারাই প্রগতিশীল। এরা সব সময় সংগ্রাম, সংগ্রাম করে চিৎকার করে। ভালোর বিরুদ্ধেও সংগ্রাম, খারাপের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম, কিছু হলেও সংগ্রাম, না হলেও সংগ্রাম। নীতির বিরুদ্ধেও সংগ্রাম, নৈতিকতার বিরুদ্ধেও সংগ্রাম। স্থিতিশীল অবস্থাতেও সংগ্রাম! উদ্ভট প্রজাতির জীব এরা। সব সময় ইনকিলাব জিন্দাবাদ! এদের অবস্থা হয়েছে সেই অন্ধ নেতার মতো: যে অন্ধ নেতা চিৎকার করে বলে, “দুনিয়ার অন্ধ এক হও, এসো তোমাদের পথ দেখিয়ে দেবো”। অন্ধ যেমন অন্ধকে পথ দেখাতে পারে না, এরাও তেমনি মানবতাকে পথ দেখাতে পারে না। অন্ধ পথ দেখাতে গেলে যেমন করে অপর অন্ধ গর্তে (বিপদে) পড়ে তেমনি প্রগতিবাদীদের দেখানে পথে চললে মানুষও গর্তে পড়ে। যখন বেশ কিছু সংখ্যক লোক গর্তে পড়ে যায় এবং আর উঠতে পারে না তখন এদের অবস্থা হয়ে যায় সেই লেজকাটা শেয়ালের মতো। সবার লেজ কাটার জন্য এরা তখন হন্য হয়ে যুক্তি খুঁজে বেড়ায়। কিছু খোঁড়া যুক্তি এরা পায় বটে কিন্তু সে যুক্তি মানবজাতিকে মুক্তি দিতে পারে না। স্বজাতির ধ্বংস যে চায় তাকে বলা হয়, মুরতাদ। মানবতার ধ্বংস চায় বলে প্রগতিবাদীরা মুরতাদ হিসেবে চিহ্নিত। মানুষের উন্নতির বিরুদ্ধে গিয়ে এরা কার জন্য সংগ্রাম করতে চায়? ধর্ম মানুষের লোক বিশ্বাস। যুগ পরম্পরায় এ বিশ্বাস মানুষকে বেঁচে থাকার আশ্বাস যুগিয়েছে। সে আশ্বাসকে ভেঙে দিলে তারা অস্থির ও টালমাটাল অবস্থায় পড়ে যাবে। বাঁচার স্বপ্ন বাদ দিয়ে আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়বে। কিছু বিষয়ে বিজ্ঞান যখন অসহায় সে সময়ে তারা ইশ্বরের উপর ভর করে সাহস অর্জন করে। সে সাহসও যদি ভেঙে যায় তাহলে তাদের মতো বিধ্বস্ত মানুষ প্রবোধ গুণবে কী করে? মানুষের বিশ্বাসকে যারা অপমান করে তারা আর যাইহোক, মানুষ হতে পারে না।
পৃথিবীতে কোনো ধর্মই বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে বলেনি। ইসলাম তো বলেই দিয়েছে, এটা বিজ্ঞানময় কোরআন। বিজ্ঞানের মহৎ আবিষ্কার করার জন্য ধর্ম উৎসাহ দিয়েছে। পৃথিবীতে যত বড় বড় বৈজ্ঞানিক জন্ম নিয়েছে তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক নাস্তিক। পৃথিবীর মহৎ আবিষ্কারক বিজ্ঞানীরা অধিকাংশই ধার্মিক। ধর্ম যে বিজ্ঞানের কথা বলে তা গবেষণাগারে এবং প্রকৃতিতে। আর প্রগতিশীলরা যে বিজ্ঞানের কথা বলে তা রাজনীতির মাঠে; কিছু মুখরোচক উক্তিতে। ধার্মিক বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার নিয়ে তারা প্রগতির ব্যবসা করে। যাদের নিয়ে ব্যবসা করে তাদের বিশ্বাসকে আবার অবজ্ঞা করে। এদেরকেই বোধহয় নিমকহারাম বলে।
মানবতার জন্য ক্ষতিকর যে বিজ্ঞান সে বিজ্ঞান চর্চাকে ধর্ম নিষিদ্ধ করেছে। জীবানু অস্ত্র তৈরির অনুমোদন কখনোই কোনো ধর্ম দেয়নি। ধর্মের আলখেল্লায় আবৃত শাসকরাই এ কাজ করছে। শাসকরা নিজেদের সুবিধার জন্য ধর্ম ব্যবহার করেছে মাত্র। প্রগতিশীলরাও নিজেদের সুবিধার জন্য ধর্ম ব্যবহার করে। একজন ইতিবাচকভাবে অপরজন নেতিবাচকভাবে। ডিনামাইট আবিষ্কার করা হয়েছে খনিজ দ্রব্য আহরণের জন্য কিন্তু শাসকরা তা ব্যবহার করেছে মানবতাকে ধ্বংস করার জন্য। ধর্ম এ ব্যবহার অনুমোদন দেয়নি। বৈজ্ঞিানিক আবিষ্কার করেই তার কাজ শেষ করেন। ধর্ম তার ব্যবহারবিধি বাতলে দেয়। অনবিক বোমা কেন আবিষ্কার করা হয়েছে? হিরোসিমা-নাগাসাকিতে যে বোমা নিক্ষেপ করা হলো তা কি কোনো ধর্ম অনুমোদন দিয়েছে? ধর্ম পারমানবিক বোমা বানানোকে নিষেধ করেছে। মানুষ ধ্বংসকে হারাম করে দিয়েছে ধর্ম। মানুষ তো দূরে থাক অকারণে কোনো প্রাণী হত্যাকেও নিষেধ করেছে ধর্ম। বিজ্ঞানকে পথ দেখায় ধর্ম। বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের কখনোই কোনো বিরোধ ছিলো না। অযথা খুঁটে খু^টে তিলকে তাল করে যারা বিরোধ দেখাতে মত্ত তাদের আসল উদ্দেশ্য কী?
এছাড়াও মহামারি লাগলে ধর্মের দেয়া বিধিগুলো মানলে করোনা এত ছড়াতে পারতো না। ইসলাম বলেছে, “ কোথাও যদি মহামারি লাগে, তবে সে এলাকার জনগণ ঐ এলাকা ছেড়ে যাবে না এবং বাইর থেকে কোনো লোক ঐ এলাকায় ঢুকবে না”। আমরা কী সে নীতি মেনেছি? বিশ্বের কোনো দেশ মেনেছে? মানুষের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল কাজের বিরুদ্ধে সকল ধর্মের অবস্থান চূড়ান্ত। বলা হয়েছে, “তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন, আমার জন্য আমার দ্বীন”। ব্যক্তি স্বাধীনতার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ধর্ম দিয়েছে। বিজ্ঞানকে প্রমোট করেছে, করছে এবং করবে ধর্ম। আর বিজ্ঞান নিয়ে রাজনীতি করছে সমাজতন্ত্রের ধ্বজাধারিরা। অনেকটা পশ্চিম পাকিস্তানের মতো। পূর্ব পাকিস্তান ফসল উৎপাদন করতো আর পশ্চিম পাকিস্তান তা ভোগ করতো। ধার্মিক বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করে আর তা নিয়ে রাজনীতি করে নাস্তিক প্রগতিশীলরা। প্রগতিবাদিরা মানুষের জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থাতেও নিজের আদর্শ বিক্রি করতে মত্ত। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের শাহবাগ আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গড়ের মাঠে বিজ্ঞান চর্চা হয় না, হয় বিজ্ঞানঅন্ধের চর্চা। বিজ্ঞান চর্চার জন্য গবেষণাগারে যেতে হয় রাজনৈতিক মাঠে নয়। প্রগতির ধোঁয়া তুলে সমাজতন্ত্রের প্রচারকরা মানুষকে চরম দুর্গতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এরা ধর্মকে আফিমের সঙ্গে তুলনা করে। ধর্ম যদি আফিম হয় তবে প্রগতিবাদ হলো গাঁজার কলকি। সুতরাং প্রগতিবাদের গাঁজাখুরি গল্প শুনে বিভ্রান্ত না হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments