না য়ে সচ না বো সচ_অলভ্য ঘোষ


স্থানীয় কাউন্সিলর গোপাল ঘোষ কে ধরেকরে। চার নম্বর লকগেটের খাল পাড়ে বাঁকা ব্রিজটা ওঠার ঠিক মুখে।বটতলায় ওপরটা প্লাস্টিকের ছাউনি টাঙ্গিয়ে একপাশে দরমা বেড়া দিয়ে সুরেন নাপিত ভাগলপুর থেকে কলকাতা আসার পাঁচ বছরের মাথায় নিজের একটি সেলুন খুলেছিল। তারপর বিয়ে করল এখান কারি মেয়ে।বাপ রিকশা চালায়। সুরেন নেশা ভাং করে না হাতের কাজ শিখেছে চুল কাটতে জানে। তার খাওয়া পরার অভাব হবে না। সত্যি সেলুনটা গাছতলায় হলেও বেশ চলছিল ভালো।
 
পাকা দোকান আয়না; ক্রিম; স্নো পাউডার, ম্যাসাজ, ফ্যানের হাওয়া। চকচকে ঝকঝকে সেলুনের থেকে সুরেনের সেলুনে চুল কাটতে লাগে মাত্র কুড়ি টাকা। ফলে এই মাগ্যিগণ্ডার বাজারে কেবল মুঠে মজুর রাই নয়; অনেক অফিস বাবুরাও টুক করে বটতলায় বাজার করে ফেরার পথে সুরেনের দিয়ে দাড়ি কামিয়ে নেয়। চুল কাটায়। বগল চাঁচায়। এর উপর রয়েছে অন্নপ্রাশন, বিয়ে শ্রাদ্ধ বাড়ির কাজ। সেখানেও ভালো রোজগার খাওয়া দাওয়া। মোটের ওপর তল্লাটে সেলুন না থাকায় সুরেনের ব্যবসাটা চলছিল ভালোই। বৌ দুই এক বাড়ি খাওয়া পরার কাজ করে। ফলে সংসারে অভাব বলতে কিছুই ছিল না। ছেলেটা আসার পর; সুরেন দেখল সংসারে পেট বেড়েছে। নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার মত করে সুরেন সেলুনের গায়ে বটতলার নিচে স্থাপন করে শিবলিঙ্গ। প্রতি সোমবারে পাড়ার লোক পুজো দেবে। শ্রাবণ মাসে জল ঢালবে মেয়ে বৌ রা। বেলটা, কলাটা, কাঁঠালটা, শসাটা, শাঁখআলুটা, ডাবের জলটা; নারকেলটা প্রসাদ হিসাবে পাবে। প্রণামি বাক্সে জমবে টাকা।পাশে যদি আরও একটা শনি ঠাকুরের মন্দির খোলা যায় তখন আর পায়কে সুরেন কে।এতে আর একটা ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হতে পারবে সুরেন।তার আশেপাশে প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ গজাবে না।তার দোকানে এক পাশে ময়লা ফেলার ঢিপি আর এক পাশে বটতলা।ময়লা ফেলার ঢিপি তে তো কেউ দোকান খুলবে না।রইল বাকি গাছতলা।তা গাছ তলা ফাঁকা থাকলে কেউ না কেউ বসবে পান বিড়ি সিগারেট নিয়ে।সে স্থানে ঠাকুর দেবতা বসিয়ে দিলে আর কারো বাবার সাধ্য নেই বসার।অনেকটা ভদ্রলোকের বাড়ির দেওয়ালে ঠাকুর দেবতার ছবি টাঙ্গানোর মত ঘটনা।পাবলিকের হিসু মাথায় উঠে যায়।দেওয়ালে মোতা বন্ধ।এসব কথা মনে পড়লেই সুরেন মুচকি হাসে।সবই তোমার মহিমা ভগবান।তুমি কার কে চাকরি দাও আবার কারো বা চাকরি খাও।বটতলায় তলায় রাস্তার মড়ে মড়ে যত শনি মন্দির শিব মন্দির মনসা মন্দির শীতলা মন্দির পার্টি অফিস দখল জমিতে ক্লাব রয়েছে;এগুলো তুলে দিলে কত বেকারের কর্মসংস্থানের পথ হত সুরেন জানে।তবুও না জানার ভান করে।ভগবান মাথায় থাক।থাক বাবা আমার শনির দোষটা কাটিয়ে দাও।দখলে রাখো আমার সুরক্ষা আমার দুধ ভাত।
 
-ভগবান এক দরবান হ্যায় বেটা সিকিউরিটি গার্ড।তুমহারা সব-কুছ দেখভাল করতা হ্যায়।
 
সুরেনের কপাল খুলেছে ফকির চাঁদ বাবা এখানে আসার পর থেকে।মন্দিরটা শুরু করেছিল মাইক টাইক বাজিয়ে গান বাজনা প্যান্ডেল ট্যান্ডেল বেশ জমজমাট পূজা আর্চা করে।কিন্তু মন্দির ব্যবসা ঠিক জমছিল না সুরেনের।সেই সময় কোথা থেকে এসে জুটল ফকির চাঁদ বাবা।বাবাজি হাত দেখতে পারে।হাত দেখে সুরেন কে বলল;
-বেটা তু তো রাজা হ্যায়।
 
সুরেন মুখ বেজার করে বলেছিল;
-মহারাজ দো রোজ কি খানা পীনা তো মিল জাতা হ্যায়; লেকিন ...
 
ফকির চাঁদ বাবা বলেছিল;
-''সোচ মত বেটা।এক রোজ তু দুনিয়া কো খিলায়েংগে।
 
-ক্যা খিলায়ংগে?
-গুল খিলায়ংগে।
শেষ দুটো কথা ফকির চাঁদ বাবার সাথে না হলেও সুরেনের  মনে হয়েছিল।যদি চা বেচতে বেচতে নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যেতে পারেন।সুরেনো বা কেনও চুল কাটতে কাটতে একদিন কেউকেটা কিছু একটা হতে পারবে না।সুরেনের ফকির চাঁদ বাবার কথাগুলো বেশ ভালো লেগেছিল।লোকটা বেশ কাজের।বাবার ছাওয়ায় যদি ভাগ্য চমকায় ক্ষতি কি।ওই গাছ তলায় বাবার বসার একটি আসনও করেছিল সুরেন।ফলে বাবাকে হাত দেখাতে লোকের ভিড় জমতে লাগল।মন্দিরের পসার জমল।আর সত্যিই সুরেনের রোজগার বাড়ছিল লাফিয়ে লাফিয়ে।একটি ব্যাংকের খাতাও খুলেছিল।জিরো ব্যালেন্সে সেই অ্যাকাউন্টেও বেশ জমছিল টাকা পয়সা।
 
কিন্তু সে সব অতীত।আজ ছয় মাস সুরেনের কাজ নেই।বৌ টার জ্বর কাশি।ডাক্তার বাবুরা তুলে নিয়ে গেছে হাসপাতালে।এই বস্তির ঘরে কোয়ারেন্টাইন না ফোয়ারেন্টাইন সে সব সম্ভব নয়।ঘাড়ে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘর।সেনেটারী পায়খানায় সকলে থেবড়ে বসে হাগা মোতা।তাই কারো করোনা হলে ধাপার মাঠ।একমাত্র আস্তানা সরকারি হাসপাতাল যাও সেখানে পাছা উল্টে থাকো।জনসাধারণের ক্ষতি করে বস্তিতে থাকা চলবে না।বস্তির লোক কিছুতেই থাকতে দেবে না।ব্যাঙ্কে যে দুটো পয়সা জমেছিল তাও ভাঙ্গিয়ে ভাঙ্গিয়ে খেতে খেতে ফুরতে শুরু করেছে।
 
সুরেনের চুল কাটার টেবিলে একটা মেয়ে মানুষ।উথলানো বুক।ব্লাউজের গোল ফাঁক পাখির চোখে সুরেন সে দিকে চাইতেই হাত থেকে কাঁচিটা পড়ে বুকের লম্বা চেরাই করা খাঁচায় কাঁচির ছুঁচলো দিকটা যেন তির গেঁথে যাবার মত আটকে গেলো।কাঁচির সুড়সুড়িতে মেয়ে মানুষ টার যেন কুড়-কুড়ানি জেগে উঠল।সে খিলখিল করে উঠলো হেসে।কিন্তু মেয়ে মানুষের চুল সুরেন তো কাটে না।
 
দোকানের পাশ থেকে জোরে সাইকেল চালিয়ে বেড়িয়ে গেল কমল দা।সুরেন রেলিংয়ের দিকে তাকাল।রেলিং ফাঁকা।এই তো স্নান করে লুঙ্গিটা ওখানে মেলেছিল সুরেন।সাইকেল চড়ে চলে যাওয়া খালি গা মোটা চেহারার কমলদার পরনে সুরেন দেখতে পেল নিজের লুঙ্গিটা।
 
সুরেন যেন মনে মনে বলল;
-যা ঝেড়ে দিল।
 
সুরেন এর সামনের মেয়ে মানুষ টা যেন আরও কুড় কুড়িয়ে হেসে উঠলো।
 
-অভাব... অভাব একেই বলে বুঝলে।
 
সুরেন রাস্তার দিক থেকে মেয়ে মানুষটার দিকে চেয়ে চেঁচিয়ে ওঠে।
-অভাব না স্বভাব শালা চোর চোটটা চিটিংবাজ।
 
আর ঠিক সেই সময় তার দিকে সারি সারি জীর্ণ হাত এগিয়ে আসতে থাকে।লেংটা পেট উঁচু চোখ গুলো ঠেলে বেড়িয়ে আসতে চাইছে।নাক থেকে শিকনি ঝড়ে পড়া বাচ্চা গুলো।ভিখারির মত বাটি মেলে রয়েছে তার দিকে।
 
-ফ্যান দাও একটু ফ্যান দাও...
 
মাগিটা আরও হাঁসতে লাগল; ... ... ... করে...
 
আর ঠিক সেই সময় সুরেনের মুখের সামনে ভেসে উঠলো বড় বড় দাড়ি গোঁফ সম্বলিত ফকির চাঁদ বাবাজির মুখ টা।
-মহামারী মন্বন্তর।
 
সুরেন যেন পৌঁছে যায় ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে।কলকাতার রাস্তায় সাড়ি সাড়ি পড়ে রয়েছে ক্ষুধার্ত মানুষের মৃতদেহ।আয়নার কাঁচে সুরেন তখনো তার চুলকাটার চেয়ারে বসে থাকা মেয়ে মানুষ টার মুখ দেখতে পাইনি।দুধ দুটো দেখেছে।কাপড় ফুঁড়ে বের হয়ে আসতে চাওয়া দুটো দুধ।জন্ম লগ্নে সুরেন মা কে হারিয়েছে।মায়ের দুধ সে পায়নি।
 
মাগিটা চেয়ারে বসে দুলতে থাকে।আর তার থলথলে বুকটা দুলে দুলে ওঠে দুলুনির তালে তালে।পেছন থেকে চেয়ারের উপর ঝুঁকে পড়ে স্তন দুটোকে গভীর দৃষ্টিতে দেখতে থাকে সুরেন।
 
মেয়ে মানুষ টা আরও খিল খিল করে যেন হেসে ওঠে।সুরেন কি চায় সে যেন বুঝে ফেলেছে।
 
আশপাশটা ভালো করে চেয়ে নেয় সুরেন।মেয়ে মানুষ টা এখনো হাসছে কুড়-কুড়ানি হাসি।না আসে পাশে কেউ নেই।মাগী টা ভীষণ সাহসী একাই বুকের হুক গুলো পটপট করে খুলতে লাগলে; সুরেনের মনে হল এক টানে সে ছিঁড়ে ফেলে ব্লাউজ টা।বুকটা চটকে চটকে ফাটিয়ে দেবে সে।সুরেন যখন এমন সব ভাবছে তখন দেখে; মেয়ে ছেলেটার স্তনবৃন্ত টা চুষে খাচ্ছে একটি শিশু।
 
সুরেন ভুরু কুঁচকে বলে;
-কে ?
 
মেয়েছেলে টা বলে;
-তুমি গো।চিনতে পারছ না।
 
সুরেন জোঁকের মত দুধ কামড়ে থাকা বাচ্চা টাকে টেনে ছাড়ায়।বাচ্চা টা কেঁদে ওঠে।খুব জোরে স্পন্দিত হতে হতে হৃদপিণ্ড টা যেন থেমে যায় সুরেনের।লোভ সামলাতে পারেনা সুরেন।সুরেন হাত বাড়ায় মেয়ে মানুষটার বুকের দিকে।
 
আর ঢলানি মেয়ে ছেলেটা বুকের হুক গুলো এঁটে নিতে নিতে বলে উঠলো;
-পহলে পয়সা ফেংকো ফির প্যাস মিটাও বেটা।
 
সুরেন মনে মনে বলে উঠল। রেন্ডি দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা।আর যেই না সে স্তন দুটোকে সজোরে চেপে ধরল; মরণ টিপুনিতে মেয়ে মানুষ টা ককিয়ে উঠল।
-বাবাগো কি জোরে টেপও।কত বছর টেপনি গো।
 
গলগল করে বেড়িয়ে এলো বীর্য।লুঙ্গি নোংরা হয়ে গেল।আর ঠিক প্রথমবার আয়নাতে সুরেন মেয়ে মানুষ টার মুখ দেখতে পেলো।মুখটা তার চেনা চেনা লাগল।সে মনে করার চেষ্টা করতে লাগল কোথায় দেখেছে তাকে।তড়িৎ গতিতে মানিব্যাগটা বের করে সুরেন।আর মানিব্যাগের ভেতর থেকে তার মায়ের একমাত্র স্মৃতি চিহ্ন ভোটার কার্ডটা বের করতেই সে যেন চারশো চল্লিশ ভোল্ট কারেন্ট খেয়ে পড়ে গেল মাটিতে।সুরেন কাঁপতে থাকে মেয়ে মানুষ টা তার মা।মেয়ে মানুষটা আবার আগের মত হাসতে থাকে। পা এগিয়ে দেয় সুরেনের থাই বেয়ে পা টা এগিয়ে আসে তার লিঙ্গের দিকে।আর যেই না সেই আদুরে পার তলায় লিঙ্গটি সজোরে দলিত হয়।সুরেন চিৎকার করে উঠে বসে।
 
আর ঠিক তখনই সুরেনের ঘুম ভেঙ্গে যায়।মাটিতে নয়।সুরেন শুয়ে আছে।তার সেলুনের বাঁশের নির্মিত বেঞ্চ এর ওপরে।সুদূরে বটতলায় বসে আছে খদ্দের শূন্য ফকির চাঁদ বাবা।লক-ডাউনে তারও রাস্তার কুকুর গুলোর মত দশা।খাবার জোটে না।তবু মুখে অম্লান হাসি রেখে বলল।
-"না য়ে সচ না বো সচ! কুছ ভী সচ নহী হ্যায় বেটা।"
 
সুরেনের মনে পড়লো ফকির চাঁদ বাবার বলা রাজা জনকের গল্প টা।
 
রাজা জনক ঘুমচ্ছিল সুখ নিদ্রায়।সেনাপতি এসে খবর দিল; মহারাজ বহি শত্রু আপনার রাজ্য আক্রমণ করেছে।সুখ নিদ্রা ছেড়ে রাজা যুদ্ধে গেলেন।শক্তিশালী বহিঃশত্রুর হাতে রাজা পরাজিত বন্দী হলেন।দয়া পরবশত রাজ্য টুকু কেড়ে নিয়ে মহারাজা  কে তার শত্রু নৃপতি ছেড়ে দিয়েছেন।রাজা তখন রাজা নয়।রাজ্য ছেড়ে রাজ্যের সীমানা ডিঙ্গিয়ে ভিখিরির মত বনে জঙ্গলে লুকিয়ে লুকিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অন্য দেশে ঘুরতে ঘুরতে প্রচণ্ড ক্ষুধা তৃষ্ণায় তার নাড়ি ছিঁড়ে যাচ্ছে।এক জায়গায় এক ধনী আত্ম পিরিতের সেবায় খাদ্য দ্রব্য দান করেছিলেন।রাজা সেই ভিক্ষুকের সারিতে এসে দাঁড়ালেন।ভিক্ষুকের সারি চলল এগিয়ে এক এক করে।আর যখন রাজা দান সামগ্রীর লাইনে দাতার সম্মুখে পৌঁছল;দাতা করজোড়ে গ্রহীতা জনকের দিকে প্রণাম জানিয়ে বললেন;
-"ক্ষমা করবেন আর দানের সামগ্রী নেই।সব ফুরিয়ে গিয়েছে।"
 
ক্ষুধার্ত জনক তখন খিদের জ্বালায় দাতার উদ্দেশ্যে বললেন।
-"মহামান্য খাদ্য-পাত্রের তলানিতে যদি কিছু অবশিষ্ট থেকে থাকে দয়াকরে আমায় দান করুন।তিন দিন আমি কিছুই খাইনি।আমি ক্ষুধার্ত।"
 
তখন দাতা সেই খাদ্য-পাত্রের তলানি কাঁচিয়ে সামান্য খাদ্যদ্রব্য দিলেন মহারাজের হাতে।আর মহারাজ জনক যেমনি খাদ্য দ্রব্য হাতে পেয়ে আকাশের দিকে চেয়ে ঈশ্বর কে ধন্যবাদ জানাতে গেলেন।
 
আর ঠিক তখনই; একটা চিল কোথা থেকে উড়ে এসে এমন ছোঁ মারল।যে সেই সামান্য কয়েক দানা খাদ্যদ্রব্য রাজার হাত থেকে মাটিতে ধুলোয় পড়ে নষ্ট হল।ক্ষুধার্ত রাজা যখন খিদের জ্বালায় ধুলোয় মলিন খাদ্যের জন্য হাহাকার করে ওঠে।হে বিধাতা কোন কঠিন পরীক্ষায় ফেললে তুমি।
 
রানি ছুটে আসে।
-মহারাজ আপনি কি অসুস্থ বোধ করছেন।
 
আর ঠিক সেই সময় রাজার ঘুম ভেঙে যায়।রাজা বুঝতে পারেন এতক্ষণ তিনি যা দেখেছেন তা সবি স্বপ্ন। তিনি রাজপ্রাসাদেই আছেন।কিন্তু দার্শনিক জ্ঞানী রাজার মনে একটি প্রশ্ন উদয় হল।বো সচ না য়ে সচ।স্বপ্ন সত্য না বাস্তব? রাজার রাজ্য পাঠে মন নেই।ঘুম খাওয়া কিছুই নেই।কেবলই বলেন বো সচ যা য়ে সচ।" বদ্যি হাকিম কবিরাজ এসেও রাজার রোগ ধরতে পারেন না।এরকম অবস্থায় অষ্টাবক্র মুনি জনক রাজার রাজসভায়;রাজা জনক কে বলেছিলেন।
-না য়ে সচ না বো সচ।কুছ ভী সচ নহী হ্যায়।সাচ তো আপ হ্যায় মহারাজ।তত্ত্বমসি!
 
সুখ,দুঃখ কোনটাই স্থায়ী নয়।মৌসুমি বায়ু।আসে আর যায়।অর্থ নিরর্থ।কোনটা সত্যি নয়।রাজা যখন রাজ্য সুখে মগ্ন-ছিল সেটি যেমন মিথ্যে।পরাজিত রাজার দুঃখ দারিদ্র সেটাও সত্যি নয় স্থায়ী নয়।হার জিত সবই মিথ্যা সবই আপেক্ষিক।সবই সাময়িক।সবই একটি ঘোর।স্বপ্নের মত।একটি অভিজ্ঞতা।একটি অবস্থা।অবস্থান বদলায়।পরিবর্তন হয়।কেবল আত্মা বদলায় না।নানা অবস্থার ভেতর দিয়ে চলতে চলতে তাকে আগে যেতে হয়।কিন্তু কোন অবস্থাই তাকে স্পর্শ করতে পারেনা।প্রভাবিত করতে পারে না।জামা বদলালে কি মানুষটা বদলে যায়।তা যেমন বদলায় না।তেমনি শরীর বদলায়।আত্মা না।
 
ফকির চাঁদ বাবার কথাগুলো মনে করতে করতে সুরেন নাপিত বুঝল; তার স্বপ্ন দোষে নোংরা লুঙ্গিটা বদলানো দরকার।কিন্তু রোদে মেলার সময় একটু চোখে চোখে রাখতে হবে।আবার কেউ নিয়ে চলে গেলে বিপদ।সুরেনের মনে হল জীবন যাপনের জন্য আড়ম্বরের সঞ্চয়ের হয়তো কিছুই থাকবে না।তবে বেঁচে থাকার জন্য প্রাণ ধারণের জন্য;এই বটগাছটিও চিরস্থায়ী দাঁড়িয়ে থাকলেও শিকড় খালের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।
 
সুরেন যখন এসব ভাবছে; বটতলায় বসে ফকির চাঁদ বাবা চেঁচিয়ে উঠল।
-শিব শম্ভু।সোচ মত খীঁচো তস্বীর।
 
মুখে মাস্ক পড়ে চাল ডাল বিলতে আসা কতগুলো লোক ফকির চাঁদ বাবার সাথে সেলফি তুলছে।সুরেনও একটা বড় চাল ডাল তেল মসলার প্যাকেট পেয়ে মনে মনে ভাবল স্নান সেরে সবকিছু নিয়ে খিচুড়ি বসিয়ে দেবে।
 
সুরেনের আবার মনে হয়।সত্যিই বোধহয় সে একটু বেশি ভাবছে।বট গাছটি তার জ্ঞানের ঝুড়ি মাথায় নিয়ে এত ভাবনা চিন্তা করে কি? সে আর ফকির চাঁদ বাবা দিব্যি একসাথে বসে বসে দিন কাটায়।খাল পাড় দিয়ে ময়লা জল বয়ে যায়।রসদ জুটে যায় কোন না কোন ভাবে বাঁচার।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.