আর একবার লিখে নাও আমাকে, আমি তোমার প্রেমিক। রোদ্দুরের অক্ষরগুলি ছড়িয়ে পড়ছে। দাঁড়ি, কমা, কোলন সব বিরামচিহ্নগুলি উড়ে যাচ্ছে বাতাসে। আমি ঘোড়ার মতো জল থই থই করা মাঠে একা দাঁড়িয়ে ভিজছি। ঘাস রোচে না। জলের ছাঁটে ভেজা বিকেল। বাঁশপতারা শিল্প হয়ে উড়ছে। এক একটা যেন তরবারি।
—যোদ্ধা কে?
—আমি ঘোড়া।
মেঘ নামছে দুগ্ধবতী। পয়োভারে দুলছে বুক। সান্ধ্য কোনও ঘোর যুবতী। রমণরঙ্গে নামছে মাঠে। কুঞ্জবিহার এক পলকে চোখের সামনে ঝলসে ওঠে।
আমি ঘোড়া। একা একাই জানালা কপাট খুলে রেখে ডাকছি ওকে। ও যুবতী, বৃষ্টি নামাও। সঙ্গম আজ সৃষ্টিসুখের। প্রত্যাশীরা পরান ভেঙে কান্না মেশায় জলোচ্ছ্বাসে। চুলের রাশি গন্ধ ছড়ায়।সিঁদুরধোয়া কপাল খুলে প্রথম তুমি চুমু খেলে। বৃষ্টিভেজা পথের বাঁকে এখনও আমি দাঁড়িয়ে আছি।
দাঁড়িয়ে আছি তন্দ্রা চোখে।ও কালিদাস, ব্যাকুল ঠোঁটে তৃষ্ণা ঝরে। যক্ষ আমি, যক্ষ তুমি। নিজ বিরহের কাব্য লিখে মেঘকে ডাকি :
'আধিক্ষামাং বিরহশয়নে সন্নিষন্নৈকপার্শ্বাং
প্রাচীমূলে তনুমিব কলামাত্রশেষাং হিমাংশোঃ।
নীতা রাত্রি ক্ষণ ইব ময়া সার্ধমিচ্ছারতৈর্ষা
তামেবোষ্ণৈর্বিরহমতীমশ্রুভির্ষা পয়ন্তীম্।'
রামগিরির সানুদেশে গুরুগম্ভীর বর্ষা নামাও। আলুথালু পোশাক খুলে আমরা এবার আদিম হব। শরীর থেকে শরীর গেলে বলো মন, উদাস দিয়ে মরমে তুমি মর্মরিত। একটি শুধু গিটার বাজুক। ভেজাসুরের আমলকি বন কেঁপে উঠুক। ভেতর ভেতর ছুঁয়ে যাও আমার মুখ। আমার বুক। নগ্ন কলম।
নিমগ্ন তবু তোমার কাছে ভিজিয়ে পালক স্রেফ ঘোড়া। চারহাত পায়ে জড়িয়ে বাঁধন। স্বপ্ন ভাঙি, স্বপ্ন গড়ি। স্বপ্নে তুমি কড়া নাড়ো। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া। ঠান্ডা স্পর্শ। মাঝে মাঝে সুদূর চাওয়া। বাঁধন কেটে বৃষ্টি পাওয়া।
আমি তো তোরই বৃষ্টিকন্যা! ঋতুমতী। প্রসবিনী দুষ্টুমতী। লজ্জালেখা মেদুর বুকে নাইটি পরে বিকেলটুকুই নেমে এলি চায়ের কাপে। কখনও তুই আততায়ী দৌড়ে এলি পেছন পেছন। ভিজিয়ে একসা শান্তি পেলি! লন্ঠনআলো, নিশুতিরাত। অন্ধকারে ব্যাঙের ডাক। ঝিঁঝিঁপোকার আসর ভেঙে আমার ঘরে কবিতা হয়ে টিনের চালে ঝাঁপ দিলি! একরাতে ও জয়দেব, তুমিও এই বাংলা ভাষার ছেলের মুখে উচ্চারিত গ্রাম বাংলা:
'মেঘৈর্মেদুরম্বরং বনভূব শ্যামাস্তমালদ্রুমৈঃ'
মনে পড়লো এই বাঙালির ঘরে ঘরে পদ্মাবতী। জয়দেবরা শুধুই পুরুষ। ঘরের পাশে অজয় নদী। এসব বর্ষা অনেক দিনের অথচ নতুন। নতুন নতুন বৃষ্টিভাষা। চোখেমুখে কাব্যবিলাস। অভিসারের যাত্রাপথে। নিমেষহারা বেরিয়ে যাওয়া। বর্ষা এসে হাত ধরেছে। বৃন্দাবনে আমিই রাজা।
যদিও ঘোড়া। খুরের আওয়াজ। অশ্বগন্ধা। ফুটে উঠছি মেঘবালিকার। সমর্পণে গোপন ইচ্ছা। অন্ধ ব্যাকুল চিনেছি। স্রোতে স্রোতে ভেসে যাওয়া।
—একটু শুই।
—ভেজা মাটি! মাথা রাখো আমার বুকে।
—বিলি কাটো চুলের ফাঁকে সস্নেহ।
—এইতো আমি, তাকাও গভীর, ঠোঁট দুটিতে…
—আর একটু প্রগাঢ় বাঁশি,কদমতলা…
—চাঁদ উঠবে না! অন্ধকারে নদীর হাসি, জোনাক আলো, মেঘের পাশে বুক খুলে শোও…
—আমি কেমন নিষিদ্ধ ঘ্রাণ চুপি চুপি!
—তোমার কাছে রইল এসব আমার লেখার পান্ডুলিপি।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments