ললিতকলায় উৎকর্ষ সাধনা ও দাওয়াত ।। আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ

 
ললিতকলা কী কেন?
সংস্কৃতির নানা রকম প্রকাশ আমরা লক্ষ্য করি। আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে যা কিছু ঘটে তার ভেতর দিয়ে আমাদেও সংস্কৃতির প্রতিফলন হয়। চিএকলায়ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটে কিন্তু অবশ্যই তা সংস্কৃতির অন্র মাধ্যমের মত মূর্ত নয়। সংস্কৃতির অনেক প্রকরন বাহন রয়েছে। ললিতকলা সংস্কৃতির একটি বড় বাহন এবং এই বাহনের রয়েছে অনেকগুলো প্রকরণ।
আমরা ললিতকলার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকি গান, কবিতা, আবৃত্তি, অভিনয়, বক্তৃতা, গল্প, সিনেমা, নাটক. টেলিফিল্ম, ডকুমেন্টারী, মূকাভিনয ইত্যাদিকে। ললিতকলায় পারদর্শী কলা কুশলী তাদেও দক্ষতা, নৈপুন্য পারফর্ম দিয়ে দর্শক শ্রোতার হৃদয়ে আবেগ জন্মায়, তাদেরকে প্রভাবিত করে, অভিভ করে এবং বলয়ানুসারী করে। এদেরকে আমরা পারফরমার হিসেবে চিহ্নিত করি।
ললিতকলায় তিন শ্রেনীর মানুষ যুক্ত হয়। যিনি বা যারা এর আয়োজক- মিডিয়া মালিক, অপরদিকে দর্শক-শ্রোতা এক কথায় ভোক্তা শ্রেনী আর অন্যপক্ষ যারা এর উৎপাদনের মূলশক্তি গায়ক, নায়ক, কলাকুশলী এক কথায় পারফরমার।
একসময় এটি ব্যাপকতা লাভ করার আগে জন থেকে জন এবং জন থেকে গোষ্ঠী পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল। পর্যায়ক্রমে তা অনেক বিস্তৃতি লাভ করেছে এবং জন থেকে অনেক, দল থেকে জাতি এবং জাতি থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এখন এটি বিশ্বায়নের প্রবল ধাক্কায়, তথ্য-প্রযুক্তির অভাভিতপূর্ব বিকাশে বিশ্বময় ছড়িয়ে গেছে।
ললিতকলা এখন অন্যসব মাধ্যমের মতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পারফরমাররা এখন অন্যেও মডেল হচ্ছে। তারা দর্শক-শ্রোতা বিচারকের রায় নিয়ে বড় বড় পুরষ্কার জিতছে। লতিলকলায জাতীয় আন্তর্জাতিক পুরষ্কার সমূহ চালু হয়েছে যেমন- গ্র্যামী এওয়ার্ড, কান চরচ্চিত্র উৎসব, অস্কার এওয়ার্ড যা আবার একই বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত ভিন্ন ভিন্ন দক্ষতাকে বিবেচনায় রেখে করা হচ্ছে।
 
ললিতকলা দাওয়াত:
কোন মহৎ উদ্দেশ্যের দিকে মানুষকে কথা কাজ দ্বারা আহবান করাকে আমরা দাওয়াত হিসেবে চিহ্নিত করি। ইসলামের দিকে মানুষকে আহবান করার জন্যও দুটি প্রক্রিয়া সব সময় ব্যবহৃত হয়েছে। সাধারণত মানুষেরা তাদেও পছন্দের বিষয়কে অনুসরন করে। অমুকের কথা, অমুকের হাসা, অমুকের পোষাক, অমুকের হাঁটা, অমুকের চাহনি- এভাবেই মানুষ বিভিন্ন পছন্দের মানুষের বিভিন্ন বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয। ব্যাপকভাবে লোকেরা কোন বিষয়ে অবহিত হয় প্রচার মাধ্যমের কল্যাণে। আজকাল প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়া মুহুর্তেও মাঝে কোটি মানুষের কাছে একটি বার্তা সচিত্রভাবে পৌঁছে দেয়। এই দুই মিডিয়ার পছন্দেও বিষয়গুলো মানুষ প্রায সময়ই অন্ধ অনুসরণ করতে থাকে। হয়তো দেখা গেলো একজন খেলোয়াড় ডাক্তারী পরামমেৃ মাথার চুল চেঁছে ফেলেছেন, তার দেখাদেখি পরদিন হাজার হাজার তরুন চুল কামিয়ে ফেললো। এধরনের ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টির সুয়োগ কওে দিয়েছে মিডিয়া। সত্যকে মিথ্যা, আর মিথ্যাকে সত্য বলে চালিয়েদেয়ার এক অসূরীয় ক্ষমতা রয়েছে মিডিয়ার যার হাত থেকে বেচেঁ থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। আর আগেই বলেছি- মিডিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয়গুলো ললিতকলা কেন্দ্রিক।
মানুষকে কোন আদর্শের দিকে ডাকার জন্য ললিতকলার প্রয়োগ একটা সুপ্রাচীন বিষয। শযতান বেহেশত থেকে বিতাড়িত হওয়ার সময়ই তার দিকে মানুষকে আহবান করার হাতিয়ার হিসেবে বাদ্যযন্ত্রেও সম্মোহনী সুর মানুষকে উম্মাতাল করতে দেখি আমরা। যুগে যুগে মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করা, আক্রমণ করা, তিরষ্কার করা আর অনুপ্রাণিত করার একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আমরা কবিতা আবৃত্তিকে দেখতে পাই।
যুদ্ধের ময়দানে প্রতিপক্ষের লোককে মল্লযুদ্ধে আহবান করা হতো কবিতায়, কবিতা দিয়েই অন্যদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার প্রথম প্রয়াস নেয়া হতো, হতো যুদ্ধেও জন্য উদ্ধুদ্ধ করা। জনমিলনের স্থান সমূহে কবিতা ছিল একটি বড় মাধ্যম। যেমন: সেই জাহেলী যুগেও লোকেরা কবিতা লিখে ক্বাবার দেয়ালে লাগাতো আর অন্যরা তা দ্বারা উৎসাহিত উদ্ধুদ্ধ হতো।
গানতো সব সময়েই ছিলো একটি অগ্রগন্য বিষয়। গানের সুর তাল, লয় সব সময়ই হয় মানুষকে সৎকাজে উদ্ধুদ্ধ করে কিংবা অকল্যানের দিকে ডেকে যায়।
এভাবেই দেখা যায, ললিতকলার দিক বিভাগ দ্বারাই মানুষকে আল্লার দিকে যেমন দাওয়াতে দেয়া সম্ভব তেমনি সম্ভব অন্যায় অশ্লীলতার দিকে ঠেলা দেওয়া।
 
ললিতকলায় উৎকর্ষ সাধন:
যেহেতু আমরা এক তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে বাস করছি আমরা দেখতে পাচ্ছি সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তা ভাবনা, রুচিবোধ পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগত ছাড়িয়ে যাওয়ার একটা মানসিকতা কাজ করছে সবত্র। টিকে থাকা বিজয়ের জন্য এখানে প্রতিনিয়ত উৎকর্ষ সাধন করতে হবে। আর এটি কেবল অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনার একটি সূত্রমাত্র নয়। আল্লার নবী (সা:) বলেছেনÑ “ধ্বংস তার জন্য, যার আজকের দিনটি গতকালের চেয়ে উত্তম হলো না।জেতার জন্য, বিজয়ের জন্য এখন সবচেয়ে বড় সূত্র অবিরাম অনিশেষ উৎকর্ষ প্রয়াস।
ইতিহাস, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান প্রযুক্তিসহ জীবনের বিভিন্ন সমযে পরিবর্তন হচ্ছে, পরিবর্তন চিরন্তন। চিরন্তন পরিবর্তনের ফলে পরিবর্তন আসছে ললিতকলায়। কারণ ললিতকলার প্রতিপাদ্য বিষয় মানুষের মান উন্নয়ন পরিশোধনের দিকে সবিশেষ নজরদারী দরকার।
 
উৎকর্ষের বিষয় সমূহ:
. লক্ষমাত্রা নির্ধারনে উৎকর্ষে
. ললিতকলার ধরণ প্রকরণে উৎকর্ষ
. স্টাইলে উৎকর্ষ
. চিন্তার উৎকর্ষ
. উপস্থাপনের উৎকর্ষ
. চরিত্র নির্মানে উৎকর্ষ
. বানী বিষয়ের উৎকর্ষ
এসব বিষয়ে উৎকর্ষ প্রাধিকার পাওয়া দরকার।
 
উৎকর্ষের নানামাত্রিক দিক সমূহ: সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ
কবিতা আবৃত্তি:
এক. ললিতকলায় মানুষের প্রাচীনতম বিষয় কবিতা। ছন্দবদ্ধ কথা।
বাংলাদেশের একজন কবি লিখেছেনযে কবিতা ভালবাসেনা সে মানুষ খুন করতে পারে কবির একথা সত্য কিনা জানিনা তবে এটুকু বুঝি কবিতা মানুষকে ভালবাসতে শিখায়। দেশ, জনতা, মানুষ, মানবতা- সুন্দর কল্যাণের বানীই কবিতা।
মানব মনের ভাবকবিতাবাছড়াহয়ে সহজেই বেরিয়ে আসে। সাহিত্যের সব নমুনাই কবিতায় মূর্ত হয়েছে। মায়েরা, বোনেরা, দাদা দাদুরা এখনও শিশুদের শোনায় একই কবিতা, একই ছড়া।
আয় আয় চাঁদ মামা টিপ্ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ্ দিয়ে যা।
ঘুম পাড়ানি মাসী পিসি মোদের বাড়ী এসো
খাট নেই পালঙ্ক নেই চৌকি পেতে বসো।
কিংবা বিখ্যাত ইংরেজী ছড়া- “ঞরিহশষব ঞরিহশষব ষরঃঃষব ঝঃধৎ
                                          ঐড়ি ড়িহফবৎ যিধঃ ুড়ঁ ধৎব.”
আর কবিদের নিয়েই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একটা সূরা নাজিল করেছেন যার নাম সূরাআশ্ শোয়ারা
দুই. আমরা জানি আরবদের মাঝে অনেক বড় বড় কবি ছিলেন যাদেরকে আজও বিশ্ব সাহিত্য স্বীকৃতি সম্মান করে থাকে। যদিও তারা কবিতা অশ্লীলতায় দুষ্ট তবুও কাব্য সুষমার জন্য জগদ্বিখ্যাত আরব কবিইমরাউল কায়েস তার সাবয়া মুয়ল্লাকা কাব্য বিচারের মানদন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
যে কথা বলছিলাম রাসূলের (:) যুগে আরবের লোকেরা কবিতা লিখতো এবং তা লিখে ক্বাবা ঘরের দেয়ালে লিখে রাখতো। সে সময়কার অন্যতম প্রধান কবি লাবিদ এসব কবিতা দেখতেন এবং শুধরে দিতেন।
 একদিন একজন সাহাবী কোরআনে হাকীমের সূরা কাওছার- একটি দেয়ালে লিখে রাখলেন এবং অপেক্ষা করতে থাকলেন লাবিদের প্রতিক্রিয়ার জন্য। লাবিদ এলেন, থমকে দাড়াঁলেন এবং কয়েকবার পড়লেন অসাধারন কাব্যময় ছন্দময় পবিত্র বাণী।
            ইন্নআ তাইনা কাল কাউছার
            ফা সাল্লিলি রাব্বিকা ওয়ানহার
            ইন্না শা নিয়া কা হুয়ার আবতার....
কোন খুঁত, কোন ত্রুটি খুঁজে পেলেন না তিনি। মুগ্ধ বিশ্বয়ে লক্ষ করলেন এর ছন্দেও কারুকাজ, কাব্য সুধা এবং সর্বোপরি বাণীর গভীরতা। নিজ থেকেই তিনি সিদ্ধান্তে উপনীত হলেনএতো কোন মানুষের কথা হতে পারে না। বদলে গেলেন লাবিদ। তিন লাইনের সূরার নীচে চতুর্থ লাইনে লিখলেন ভয়ে ভয়ে- হাজাল কালামু লাইছাল বাশার
            না কোন মানুষের কথা হতে পারে না।
কবি লাবিদের মতো রাসূলের সাহাবীদের মাঝে যোগ দিয়েছিলেন কবি হাসসান বিন সাবিত, তেমনি কবি ছিলেন হযরত আলী (রা:), মা আয়েশা, মা ফাতিমা। বলা হয়ে থাকে কবিতা হচ্ছে নবুয়তের /৪০ ভাগ। কারণ কবিরা স্বপ্ন দেখান, ভবিষৎতে নির্মানের কথা বলেন।
রাসূলের (সা:) যুগে কবিরা তাদের কবিতার মাধ্যমে যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ অনুপ্রানিত করতেন। হযরত আলী স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দীদের মল্লযুদ্ধের জন্য আহবান জানাতেন। অন্য যোদ্ধারাও স্বরচিত বিরচিত কবিতা আওড়াতেন।
এছাড়া কবিরা তাদের কবিতার মাধ্যমে অতীতের ইতিহাস, কালিমা, গ্লানি ইত্যাদিও কথা তুলে ধরে, আল্লার শ্রেষ্ঠত্ব, রাসূলের (সা:) অসাধারন গুনাবলী উল্লেখ করে, কোরআনের মহিমা তুলে ধরে মানুষকে ইসলামের দিকে ডেকেছেন। ইসলামী পরবর্তীকালের মুসলিম কবিগণ ইসলামের মহিমা প্রকাশ করেছেন তাদের কবিতায়।
ইসলামের ইতিহাসে অমর কিছু কবির কথা আমরা জানি। ইরানের কবি- রুমী, শেখ সাদী, ফেরদৌসী, আল্লামা ইকবাল, বাংলায়- যেমন নজরুল ফররুখ, কিংবা বর্তমানের আল মাহমুদ এদেও কবিতা ইসলাম, মুসলিম শৌর্য বীর্য এবং কাব্য মহিমায় অনন্য।
তিন. কবিতা আবৃত্তি-কে দাওয়াতের কাজে ব্যবহার করতে হলে কতগুলো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য রাখা দরকার।
.        কোরআন যেমন বলেছে- ‘অধিকাংশ কবিরা উদ্ভ্রান্তের মত মিথ্যার উপত্যকায় ঘুওে বেড়ায় এই মিথ্যাচার, শিরক, বিদ্য়াত, ভালগারিটি, অশ্লীলতা ইত্যাদি থেকে কবিতাকে মুক্ত রাখতে হবে। অনেকে মনে করেন কবি হলেই একটু স্বাধীনতা পেতে হবে, একটু অন্যায় আস্কারা পেতে পারেন। কারণ, কবি বলুন আর শিল্পী বলুন, আর বলুন একজন প্রেমিক। সবাই আমরা মানুষ।
.        উৎকর্ষের সময় আমাদের মনে রাখতে হবে কবিতার ছন্দে, উপমায়, উৎপ্রেক্ষায়, ধরণ, স্টাইল, বাণী রুপকে। একটিবালাগাল উলা বি কামালিহিযেমন শেখ সাদীকে অমর কওে রেখেছে, বাংলা কবিতার পাঠক মাত্রই নজরুলকে মনে রাখতে তার বিদ্রোহী, মানুষ কিংবা খেয়াপারের তরনী জন্য, যেমন ফররুখ অমর হয়ে থাকবেন হাতেম তায়ী, সিরাজাম মুনীরা, সাত সাগরের মাঝির মাঝে। এমনিভাবে বেচেঁ থাকার মত কবিতা লিখতে হবে। লক্ষ্য করুনএত যে শ্যামা সক্ষীত লিখেছেন তবুও নজরুলের একটি ভক্তিগীতি বা ইসলামী সংগীতে আপনি খুঁজে পাবেন না- ‘শিরকএর কোন অস্তিত্ব।
প্রসঙ্গে লেবাননের কবি খলীল জিবরানের কথা মনে পড়ছে। আপনি তার কবিতা পড়ুন। সেখানে মানবতা, সৃজন সুন্দরের কথা পাবেন।
তবে উৎকর্ষের জন্য আমাদের কিছু করার আছে। আমাদেও বেশী বেশী পড়তে হবে, অধ্যয়ন করতে হবে এবং ভাবতে হবে এবং সেই সাথে লিখতেও হবে বেশী। একটি বিষয় বিবেচনা রাখা যায়। আল্লামা ইকবাল মাত্র ২৪২টি কবিতা লিখেছেন। এই স্বল্পপ্রজ কবি কিন্তু বিশ্বময়, একইভাবে সমাদৃত স্বীকৃত। মজার কথা হলো- প্রত্যেক মানুষ কৈশোর যৌবনে স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নময়তা তাকে কবিতা লিখতে উদ্বুদ্ধ করে। তবে হ্যাঁ, সবাই শেষ পর্যন্ত কবি হন না।
 
গান:
ললিতকলার অন্যতম, প্রাচীন, কার্যকর জনপ্রিয় মাধ্যম সংগীত। সুখ, দুখ, আনন্দ, বেদনা সহ মনের ভাব প্রকাশের এতো কার্যকর সহজ মাধ্যম আর হতে পারে না। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে রয়েছে গানের মিকা।
সহজে মনের ভাব অনুভতি প্রকাশ করার জন্য গানের প্রতি রয়েছে সব শ্রেনীর মানুষের তীব্র আগ্রহ আকর্ষণ। গানতো আসলে কবিতা। গীতি কবিতা। তাল, লয় সংযুক্ত কবিতাই গান।
গানের আবার রয়েছে অনেক ফর্ম, অনেক প্রকারভেদ। পল্লীগীতি, দেশের গান, জাতীয় গান, রক, জ্যাজ, একক সংগীত, দলীয় গীতি, ব্যান্ড সংগীত, রণ সংগীত, গণ সংগীত সহ বিভিন্ন প্রকারের গানের সাথে আমরা পরিচিত।
গান মানুষকে ভাবাভেগে আপ্লুত করে, তাদেও মনে ভাবান্তর ঘটায়, হৃদয় গভীওে বাঞ্জনা সৃষ্টি করে, কঠোরকে নরম করে, চিন্তাকে নতুন করে সাজায়। নতুন জাগরণ চেতনা সৃষ্টি করে। গানের সকল প্রকার দাওয়াতের উপযোগী নয়। যেমন: রক, জ্যাজ, ডিস্কো কিংবা প্রেমের গান দাওয়াতের কাজে ব্যবহৃত হওয়ার মতো নয়।
 
উৎকর্ষ প্রসঙ্গ:
আমরা যারা গানে ইসলামী একটি ফর্ম গড়ে তুলেছি তাদের গান নিয়ে অনেক কথা আছে। গান গাইতে গিয়ে আমাদের সবসময় সাবধানে থাকতে হয়। এই সাবধানে থাকার বিষয়টি উৎকর্ষেও ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বাংলাদেশের অন্যতম কবি, বুদ্ধিজীবি জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান প্রায় সময় বলতেন- “কে তোমাদেরকে সংগীত করতে বলেছে। অথচ তোমরা তাল, লয় কিছুই বোঝনা।স্যারের মন্তব্যটি প্রান্তিক কিন্তু এর একটি বাস্তবতাও রয়েছে। আবার তাল, লয় যে ইসলামী গানের দলগুলোর নেই তা নয়। লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে- বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকার বড় বড় সমাবেশে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে সাইমুম, অনুপম, পাঞ্জেরী, বিকল্প ইত্যাদি শিল্পী গোষ্ঠী। কয়েকটি জনসভা, কয়েকশ বক্তৃতা যে চেতনা সৃষ্টিতে ব্যর্থ, একটি সফল গান তাকে ছাড়িয়ে যেতে সমর্থ্য।
নবী করিম (সা:) যখন মক্কা থেকে মদীনার উপকন্ঠে পৌঁছালেন, ইয়াসরীব বাসী শিশুগন তখন গানে গানে তাঁকে বরণ করে নিলো- ‘তালায়াল বাদরু আলাইনা, মিনসানিয়াতিল ওয়াদায়ি প্রতিবছরই রমজান শেষে ঈদ আসতো কিন্তু নজরুলের এই গানটিই যেন আমাদের ঈদের প্রতীক। মন রমজানেরই রোজার শেষে, এলো খুশির ঈদদুয়ারে আইসাছে পালকি নাইওয়ারী গাও তোলরে তোলো, মূখে আল্লাহ রাসূল সবাই বলো।’ “আল্লাহু আল্লাহু তুমি জাল্লে জালালাহু, শেষ করাতো যায় না, গেয়ে তোমার গুনগান।কিংবারুপালী নদীরে, রুপ দেইখা তোর হইয়াছি পাগল।আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান, কোথঅ সে মুসলমান।
এই সব গান ছিলো এক সময় এদেশের মানুষের কাছে আল্লাহ রাসূল, পরকাল, আল্লার সৃষ্টির ব্যাপারে দাওয়াত পৌছার হাতিয়ার।
বর্তমানে এসবের পাশাপাশি নতুন নতুন সব অসাধারন গান যুক্ত হয়েছে। নজরুল, ফররুখ, গোলাম মোস্তফা, বন্দে আলী মিঞা, আব্দুল লতিফ, আজিজুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, রুহুল আমিন খান রচিত ইসলামী ধারার গান সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে, গীত হতে থাকে শহর-গ্রামের মাহফিল জলসায়।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রচিত হয় অসংখ্য দেশাত্মবোধক গান।মোরা একটি ফুলকে বাচাঁবো বলে যুদ্ধ করি।এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলবো না। এসময় রোমান্টিকতা স্বদেশ প্রেম বিষয়ক অসংখ্য শিল্প গুণ সমৃদ্ধ আধুনিক গা নবাংলা গানে সংযোজিত হয়। আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আবু জাফর, খান আতাউর রহমান, আব্দুল লতিফ, আজাদ রহমান, রফিকউজ্জামান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, লোকমান হোসেন ফকির, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের মতো বিশিষ্ট গীতিকারগন ওঠে আসেন।
আশির দশকে বাংলাগানে নজরুল ফররুখের ধারায় গানের একটি ধারার সূচনা হয়। কবি মতিউর রহমান মল্লিকের নেতৃত্বে ধারায় যারা গান রচনা করেন তাদেও কয়েকজন হলেন- তফাজ্জল হোসাইন খান, রাশিদুল হাসান, চৌধুরী আব্দুল আলি, চৌধুরী গোলাম মাওলা, আবুল কাসেম, গোলাম মোহাম্মদ, তারিক মনোয়ার, আবু তাহের বেলাল, জাকির আবু জাফর, আমিরুল মোমেনীন মানিক প্রমূখ।
এদেও রচিত গান গাওয়া হতে লাগলো দেশের প্রতিটি অঞ্চলে, সাংস্কৃতিক মঞ্চে, মাহফিল জলসায়। বের হওয়া শুরু হলো অডিও ক্যাসেট, সিডি, ভিসিডি, ডিভিডি নতুন ধারার গান। যারা গাইতে লাগলো সেসব গানে যন্ত্র পরিহার করে বানী সুরের লালিত্য, কোবিওগ্রাফ এবং উপস্থাপনার নতুনত্বের দিকে দৃষ্টি দিলেন। ফলে অল্প সময়ের ব্যবধানে এটি আলাদা ধারা হিসেবে জনপ্রিয় হযে ওঠে।
অতি সম্প্রতি কোন কোন শিল্পী গোষ্ঠি যন্ত্রব্যবহারের পরীক্ষা নীরিক্ষা শুরু করেছে। এর দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্যনীয়। ব্যাপক শাস্ত্রীয় প্রশিক্ষণ, রেওয়াজ অর্জন ছাড়া যন্ত্রের ব্যবহার তাদের স্বাতন্ত্র্যকে ব্যাহত করছে।
ফলে আজ গানের উৎকর্ষের ব্যাপারে কয়েকটি বিষয় দৃষ্টিতে আনা জরুরী বোধ করছি-
.        গানের বানী সমৃদ্ধ করার সকল রকম সুযোগ এখানে রয়েছে
আল্লাহকে যারা বেসেছে ভালো দুঃখ কি আর তাদের থাকতে পারে
তুমি রহমান তুমি মেহেরবান, অন্ধ গাহেনা শুধু তোমারই গুনগান
এখনো মানুষ মরে পথের পরে, এখনো আসেনি সুখ ঘরে ঘরে,
কী করে তাহলে তুমি নেবে বিশ্রাম, কী করে তাহলে ছেড়ে দেবে সংগ্রাম।
সেই সংগ্রামী মানুষের সারিতে আমাকেও রাখিও রহমান....
আল্লাহ এদেশ তোমারই দান.....
এর মতো অনেক সুন্দর সুন্দর গান বাণীর ক্ষেত্রে প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
.        পাশাপাশি খেয়াল রাখা দরকার সুর বৈচিত্রের দিকে। সুরের নকল একটি অসাধু অসুন্দরের প্রবণতা। প্যারোডি এক বিষয়- আর সুরের নকল অন্য বিষয়। সবচেয়ে বড় কথা সিনেমার চটুল জনপ্রিয় গানের অনুকরণে গান রচনা সুরারোপ কখনো সুস্থতার পরিচায়ক নয়। তাল লয় সুর বৈচিত্রে অন্যদের ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রয়াস থাকা চাই। এক্ষেত্রে শাস্ত্রীয় প্রশিক্ষণ দরকার।
.       গানের অন্যতম অনুসঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যন্ত্র। সঙ্গত যুক্ত হয়েই গানের বানী হয় সংগীত। সংগীত কতটুকু আমরা এগিয়ে নিতে পারি? রাসূলে আকরাম (:) এর সময় তৎকালীন উন্নত বিশ্বে সংগীত ছিলো। অথচ রাসূল যন্ত্র সংগীতকে উৎসাহিত করেননি। কেবলমাত্র দক্ষ জাতীয় যন্ত্রের ব্যবহার তিনি নিরুৎসারিত করেননি। যতক্ষণ পর্যন্ত একটি জনপদের ইসলামী চিন্তাবিদ ফকীহগন ঐক্যেমতের ভিত্তিতে রায় না দিবেন ততক্ষণ পর্যন্ত যন্ত্রেও ব্যবহারে ব্যক্তিগত দলগত দায়িত্ব গ্রহণের ঝুঁকি নেয়ার বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে।
.        সেক্ষেত্রে উৎকর্ষের অন্যদিক- কোরিওগ্রাফি, আলোর ব্যবহার, দলগত দৈহিক কসরত ইত্যাদি গানে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। হামদ, নাত সারি, জারী, পল্লীগীতি, জীবনের গান, রোমান্টিক গান, দেশের গান, ভক্তিমূলক গান- ইত্যাদি ক্ষেত্রে উৎকর্ষেও অনেক অবকাশ রয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে ভক্তিমূলক গানের আবরণে শিরক জিন্দিককে কোন অবস্থাতেই প্রশয় দেয়া ঠিক হবে না।
 
নাটক/ সিনেমা:
দুটি ললিত কলার দুই শক্তিশালী মাধ্যম। জীবনের নানা রুপ-রস-গন্ধ-সুখ-দু: ইত্যাদিকে কাছ থেকে দেখে তা দশজনের জন্য উপস্থাপনের অপূর্ব ক্ষমতা থাকে এর রচয়িতা-পরিচালক-প্রযোজক শিল্পীদের হাতে। আমরা আরবী সাহিত্যে তাওফিক আল হাকিম, বাংলায়-নজরুল, আবুল ফজল, আসকার ইবনে শাইখ কে নাটকে ইসলামের বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করতে দেখি। তারা ইতিহাস আশ্রয়ী, সামাজিক বিষয় আশ্রয় নিয়ে নাটক লিখেন। এসবের ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে অনেক নাট্যকার এগিয়ে আসেন।
 সিনেমার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসেন-সবাক সিনেমার যুগে মিশর পরবর্তীতে ইরানি পরিচালকগন। দি ম্যাসেঞ্জার, ওমর মুখতার এর পথ ধরে আজকের অসকার বিজয়ী ইরানী চলচ্চিত্র এগিয়ে আসে। এই মাধ্যমে চরিত্র নির্মান, সংলাপ প্রক্ষেপন, কোরিওগ্রাফী, দৃশ্যায়ন ইত্যাদি নানা বিষয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা উত্তরণ-উপযোগিতা নিয়ে কাজ করার রয়েছে। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে বিষয়গুলো নিয়ে স্থিও সিদ্ধান্ত প্রদানে মুশকিলের বিষয়।
 
উৎকর্ষের বিষয়:
.        বিষয় নির্বাচন:  অৎঃ ভড়ৎ ধৎঃ ংধশব না হয়ে তা হতে হবে অৎঃ ভড়ৎ যঁসধহরঃু ংধশব. শিরক, বিদয়াত, সামাজিক বিচুৎতি, লড়াই, নবী কাহিনী, ইতিহাস ইত্যাদি হতে পাওে নাটক-সিনেমার অন্যতম বিষয়বস্তু। বিবেচনায় আনতে হবে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়ার মতো বিষয বস্তুকে।
.        সংলাপ: নাটক সিনেমার সংলাপ জীবন থেকে নেয়া হয়। অবান্তর, অপরিচিত সংলাপ সর্বজনবোধ্য গ্রহনযোগ্য নয়। কোন অবস্থাতেই অশোভন, অশ্লীল, অশ্রাব্য দুর্বোধ্যতা আক্রান্ত সংলাপ দ্বারা শিল্পগুন নষ্ট করা উচিত নয়। মাত্রাজ্ঞান- সংলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
.       মুদ্রাদোষ: নাটক/ সিনেমায় দুএকটি চরিত্রের পরিস্ফুটনের জন্য মুদ্রাদোষের আশ্রয় নেয়া হয়। এসব মুদ্রোদোষ নির্বাচনের সময় সতর্ক থাকা দরকার। অনেক সময় প্রতীকী অর্থে ঐবৎরঃধমব ঐতিহ্য বা উপস্থাপন করা হয়।
.        কোরিওগ্রাফি/ মেকাপ: নাটক/সিনেমায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয। কোরিওগ্রাফীর ক্ষেত্রেসতরএর বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। তবে চরিত্রের প্রয়োজনে মাত্রার মাঝে থেকে পোষাক ডিজাইন করা যায়। সেট এর ক্ষেত্রে প্রচুর উৎকর্ষের সুযোগ রয়েছে। রয়েছে আলোক-সংলাপ রংয়ের ব্যবহারের ক্ষেত্রে।
এক্ষেত্রে মেকাপের বিষয়টি বিশেষ বিবেচনার দাবী রাখে। ভাঁড় আর ভিলেনের মুখে দাঁড়ি আর টুপি দেখে মনে হয় এটিই যেনো সত্যিকার চিত্র! ব্যাপারটি কি আসলেই তাই? ‘মাটির ময়না মাদ্রাসা শিক্ষকের চরিত্র হননের যে অপপ্রয়াস তা দেখে মনে হয় বিশ্বে তাবৎগেসডোমিষ্টমাদ্রাসা থেকে তালিম নিয়েছে। মেকাপের ক্ষেত্রে তাই মৌলিক পরিবর্তন আবশ্যক।
এক্ষেত্রে আধুনিক নাট্যরীতি, নাট্যকৌশর সহ নির্মানের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ পারদর্শিতা অর্জন সময়ের দাবী। ঋরহব, অৎঃং, উৎধসধ ঈরহবসধঃড়মৎধঢ়যু- তে উচ্চতর পড়ালেখার কোন বিকল্প নেই।
ইরানের নির্মাতাদের কথাই ধরুন। তারা আধুনিক প্রযুক্তি কৌশল অবলম্বন করেছেন ঠিকই বিষয় নির্বাচন, চরিত্র নির্মান, ঐতিহ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টিতে পিছপা হননি। কত ছোট্র বিষয়কে কত নিখুঁতভাবে জীবন অন্বিস্ট করে তুলে ধরা যায় যেনো তার চরম পরূকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন।
উৎকর্ষ উত্তরণ একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া:
শিল্পকলাসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতো ললিতকলার বিভিন্ন বিভাগে উৎকর্ষ উত্তরণ একটি নিরন্তর প্রক্রিয়ার নাম। এক্ষেত্রে গবেষণা উন্নয়ন চিন্তা অব্যাহত রাখা দরকার। সেজন্য দরকার শক্তিশালী সমৃদ্ধ আর্কাইভ।
যারা উৎকর্ষে শীর্ষে যেতে চান তাদেরকে-
প্রচুর পড়তে হবে। অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত নাটক-সিনেমা, গান কবিতা সহ অন্যান্য বিষয়ে যেসব বই পুস্তক পাওয়ার যায় তা মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করতে হবে। প্রচুর শুনতে হবে। গান না শুনে, সুরের বৈচিত্রের সাথে, কথার ঐশ্বর্যের সাথে পরিচয় হওয়া ছাড়া নতুন সৃষ্টি সম্ভব নয়। শুনতে শুনতেই তৈরী হয় নতুন নতুন সুর বানী। একইভাবে, প্রচুর নাটক সিনেমা দেখতে হবে যদি কেউ এক্ষেত্রে কাজ করতে চান। সেকোষত্রে বিশেষভাবে নাটক সিনেমার ডিভিডি দেখে কোথায় কোথায় অসংগতি তা নির্ণয় করা দরকার। দরকার উৎকর্ষ বিষয়ক বিশেষ গবেষণার। প্রচুর রচনা করা ছাড়া উৎকর্ষ সম্ভব নয়। কবি নজরুলের সাড়ে চার হাজার গানের নবকটিইতো আর সমান মানের নয়, নয় এসব নাট্যকার বা সিনেমা নির্মাতার সবকটি নাটক/সিনেমা পর্যায়ের। প্রচুর লিখলে হয়তো দেখা যাবে কালের বিচারে কয়েকটি উৎরে যাবে।
শিক্ষার কোন বয়স নেই। যারা শিখেননা তারা উৎকর্ষের দিকে এগুতে পারেন না। প্রচুর শিখা- প্রচুর লিখা- প্রচুর গাওয়া ব্যাপক চর্চা উৎকর্ষ উত্তরণের একমাত্র পথ।
 
দাওয়াতে আমাদের সকল কাজের প্রাধিকার:
একজন মুসলিম শিল্পী, কবি, গীতিকার, নাট্যকার, নাট্যকর্মী শিল্পের জন্য শিল্প করেন না। কবিতার জন্য কবিতা লিখেন না বা আবৃত্তি করেন না, গানের জন্য গান লিখেন না, করেনও না। তাঁর প্রতিটি সৃষ্টির অন্যতম উদ্দেশ্য এসবের মধ্য দিয়ে আল্লার দ্বীর আল ইসলামের দাওয়াত তুলে ধরা। যে গান দ্বীনের সাথে সাংঘর্ষিক, যে কবিতা ইসলামের বানী ধারন করে না, যে নাটক/সিনেমা দ্বীনের বিরোধিতা করে বা তার উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে তা যতই পুরুষ্কৃত হোক না কেন- তা তার হৃদয়কে প্রশান্তি দিতে পারে না।
আজ তাই ললিতকলার প্রতিটি শিল্পী- স্রষ্টাকে দাওয়াতের প্রেরনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহবান জানাই।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

#সংস্কৃতি
#বাংলাদেশী_সংস্কৃতি
#মঞ্চনাটক
#মোলাকাত
#Molakat
#Culture
#Bangladeshi_Culture
#Islamic_Culture
#Literature
#Bengal_Literature
#সাহিত্য_ম্যাগাজিন
#ওয়েব_ম্যাগাজিন
#সাহিত্য
#বাংলাসাহিত্য
#___ওবায়েদুল্লাহ

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.