যাপনের গ্লানি ।। আবু জাফর সিকদার
জামিমা পাশ ফিরে দেখলো, তামিম বিছানায় নেই। মধ্যরাতে গেলো কোথায়!
নিজেও আলুথালু উঠে পড়লো। বাথরুমের দিকে উঁকি দিয়ে দেখলো, না, সেখানে তামিম নেই। খচখচ করে উঠলো মনটা। গেলো কোথায়?
দেখলো বেলকনির দরজাটা আধাআধি খোলা, তামিম গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে! ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদের লালচে আবিরে মনে হচ্ছে বাহিরে আকাশ জুড়ে আগুন লেগেছে!
জামিমা কাঁদছে। সে জোরে চেপে ধরলো জামিমাকে বুকের সাথে!
নিজেদের মধ্যে খটরমটর লেগে থাকে। কিন্তু জামিমা আজ হঠাৎ অপমানজনক শব্দবাণে আক্রমণ করে বসলো তামিমকে। তামিম সাধারণত এসব গায়ে মাখে না! কিন্তু আজ আর এড়িয়ে যেতে পারলো না, যেন তার মাথায় একটি বাজ এসে পড়লো! সে তড়িতাহত হয়ে গেল। কাঁচের ঘরে ঢিল ছুঁড়লে যেমন ঝনঝন করে মূহুর্তে পুরো ঘর ভেঙ্গে পড়ে তেমন কথিত সম্মান ও ইজ্জতের প্রশ্নে তামিমের মধ্যবিত্ত মনটাও অযাচিত আঘাতে ধুমড়ে মুছড়ে যেতে থাকে।
সবচেয়ে পীড়াদায়ক হলো চাকুরি থেকে যা রোজগার 'হাতে তুলে মুখে দেয়া' অবস্থা থেকে নিজেদের আর টেনে তুলতে পারলো না তামিম। এই টানাটানির সংসারে শ্বশুর বাড়ি থেকে বিয়ের সময় যৌতুক বলি কিংবা উপহার, যা পেয়েছিলো এখনও বাসার আসবাবপত্র বলতে তাই আছে। নতুন তেমন কিছুই যোগ করতে পারেনি তামিম। জামিমা শখ করে নয়, বাস্তব প্রয়োজনেই খাটটি বদলানোর বহুবার আবদার করেছ। দুজন থেকে তিনজন থাকতে গেলেই ঠাসাঠাসি, গাদাগাদি অবস্থা হয়, মেয়ে দুটি যখন ছোট ছিলো আড়াআড়ি করেই থাকতে হতো, তখন স্বামী স্ত্রীর পা চলে যেতো খাটের বাইরে! না হয় কোন রকমে কৌণিকভাবে শুতে হতো!
একজন বীমা কোম্পানীর কর্মীর প্ররোচনায় দুটি পলিসি খুলেছিল তামিম। বছর দশেক চালিয়েছিলো ঠিকঠাক মতো। নানাভাবে খরচ যে হারে বেড়েছে, বেতন তার সাথে পাল্লা দিতে না পারার কারণে বীমার কিস্তি আর দিতে পারছে না বেশ কয় বছর ধরে! কোম্পানি লোন হিসাবে দেখিয়ে এডজাস্ট করে নিচ্ছে। মেয়াদকাল শেষ হলে হয়তো দুটো হারিকেন ধরিয়ে দিবে তারা! কী বা করার আছে!
জামিমা নড়লো না, আরও জোরে তাকে জড়িয়ে ধরে থাকলো। বুকে মাথা যেরকম করে ছিলো, সে রকম রেখে অস্ফুট স্বরে বলল,
-প্লিজ, প্লিজ এভাবে আর নিজেকে কষ্ট দিয়ো না! আমি রাগের মাথায় কথাটা বলে ফেলেছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও, প্লিজ!
-বলো কি? এখন আর খাবো না।
ঝগড়ার জের ধরে দুপুরে ডাইনিং টেবিল ছেড়ে আধা খাওয়া থেকে তামিম উঠে গিয়েছিল। বিকেলে কিংবা রাতে আর কিছুই মুখে তুলেনি, মেয়েরা অনেক ডাকাডাকি, অভিমান করেও তামিমকে খেতে রাজি করাতে পারেনি। মেয়েরা খুব ভাল করেই জানে তাদের বাবা ভোতাগোসসা। ধীরে ধীরে কালো মেঘ কেটে যাবে। তাই তারা বেশি পীড়াপীড়ি করলো না। জামিমা সরাসরি না বললেও মেয়েদেরকে বারবার ঠেলে পাঠিয়েছে। কিন্তু তামিম গলেনি। না খেয়ে শেষপর্যন্ত শুয়ে পড়েছিল।
এখন প্রথম সুযোগেই জামিমা, তামিমকে খেতে ডাকলো!
জামিমা আড় চোখে তাকায়, মিটমিট হাসে আর খাবার চিবাতে থাকে! আবার কখনও কখনও চোখ দিয়ে পানিও গড়িয়ে পড়ে!
তামিম বিনা বাক্য ব্যয়ে হাত ধুয়ে এসে প্রথম লোকমাটা তুলে ধরলো জামিমার মুখের কাছে!
-হুম, হা করে গ্রাসটা নিয়ে নিল।
জামিমাও হাতে একটি লোকমা তুলে তামিমের মুখে তুলে দিলো।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
#গল্প
#ছোটগল্প
#সাহিত্য
#বাংলাসাহিত্য
#মোলাকাত
#সাহিত্য_ম্যাগাজিন
#মোলাকাত
#সাহিত্য_ম্যাগাজিন
#ওয়েব_ম্যাগাজিন
#Molakat
#ShortStory
#Story
#Literature
#Bengali_Literature
#আবু_জাফর_সিকদার
No comments