টিনএজ'
র কৌতুহলী মনকে
স্বযত্নে শাসন সোহাগ করতে
পারলে সন্তানকে বখে যাওয়ার হাত
থেকে রক্ষা করা যায় অন্যথায়
এই টিনএজে বহু সন্তান কক্ষচ্যুত
হয়ে বিপথে চলে যায়। নিজকে অবক্ষয়ের গড্ডালিকা প্রবাহে ভাসিয়ে দেয়। অভিভাবকরা অবশেষে
শত চেষ্টাও আর তাদের আর
লাইনে আনতে পারেন না।
যাদের সন্তান বখে যায় তাদের
বাহ্যিক আর আভ্যন্তরীন কষ্টের
সীমারেখা থাকে না। সার্বক্ষণিক
দুঃশ্চিন্তায় সময় অতিবাহিত করতে
হয়। গুনতে আর্থিক ও মানসিক কষ্ট।
আমাদের দেশের এখন প্রধান সমস্যা
কিশোর গ্যাং। দেশে নতুন এক
আতংকের নাম এই কিশোর
গ্যাং। প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও কিশোর
গ্যাংয়ের অঘটনের সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। এই কিশোর গ্যাং
আমাদের উন্নাসিকতা আর অবহেলার ফল।
আমরা যদি স্ব স্ব
জায়গায় আমাদের সন্তানদের ব্যাপারে সচেতন হতাম,
ওদের গতিবিধির উপর
সাবধানি চোখ রাখতে পারতাম
আর ওদের স্নেহ ভালবাসা
আর শাসন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ
করতে পারতাম তাহলে এই কিশোররা কক্ষচ্যুত
হয়ে অপরাধে শামিল হতে পারত না।
সময় অনেক গড়িয়ে,
যা
হারিয়েছি তা নিয়ে আফসোস
করে সময় ক্ষেপণ না
করে সামনের দিনের জন্য করণীয় ঠিক
করে সাবধানে আগানো হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
আমরা আমাদের সন্তানদের ব্যাপারে যেন খানিকটা গাফিল
না হই। আমার আপনার
সামান্যতম গাফিলতি পরিবার সমাজে বিশাল ভয়াবহ দূর্যোগ নিয়ে আসবে। সামাজিকভাবে
আমরা অপমানের গ্লানি বয়ে চলতে হবে
যুগ যুগ ধরে। তাই
সময় থাকতে আমাদের টিনএজ সন্তানদের লাগাম ধরতে হবে। এই
বয়সটা সাংঘাতিক ঝুঁকির। এই বয়সে সন্তানদের
শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তনও আসে। যদ্দরুণ সন্তানরা
থাকে বেশ কৌতুহলী।সন্তানদের কৌতুহলী মনমানসিকতা
ও আবেগ প্রবণতা থাকে
মাত্রাতিরিক্ত। এই কৌতুহলী মন
ও আবেগকে যদি নিয়ন্ত্রণ না
করা যায় তাহলে কঠিন
খেসারত গুনতে হয় সেই পরিবারকে।
আরেকটা বিষয় আমাদের বর্তমান
সমাজ ব্যবস্থায় টিনএজ সন্তানদের সুপথে পরিচালিত করার যত উপায়
উপকরণ বা প্রচেষ্টা আছে
তারচেয়ে বেশি বিপথে পরিচালিত
করার উপায় উপকরণ বিদ্যমান।
এতে করে আমাদের অজান্তেই
কিংবা অবহেলা ও উন্নাসিকতায় খুব
সহজে টিনএজ সন্তানরা অতি সহজেই বখে
যাচ্ছে। আমরা যখন এই
বখে যাবার খবর পাই ততক্ষণে
ফেরানো পথ অনেক দূরে
চলে যায় বা আমাদের
নিয়ন্ত্রণ রেখার বাইরে চলে যায়। মাদক
ও পর্ণগ্রাফির ছোবলে পড়লে সেই জায়গা
থেকে ফেরানো অত্যন্ত কঠিন।আগ থেকে সাবধানি চোখ
রাখলে সন্তানদের বিপথে যাওয়ারোধ অনেকটা সহজ হয়। আমাদের
সমাজের অনেক অভিভাবক শুরুতে
সন্তানদের যথেচ্ছ স্বাধীনতা দিয়ে দেন পরে
বখে গেলে আফসোস করেন।
এতে যা হবার তাতো
আগেই হয়ে গেছে। সুতরাং
যা করার দরকার ভেবে
চিন্তে করবেন। কলিজার টুকরোকে বখে যাওয়া থেকে
রক্ষা করে নিজে পরিবারকে
সুরক্ষিত রাখুন।
কীভাবে বুঝবেন
সন্তান
বখে
যাচ্ছে-
আপনার
সন্তান বখে যাচ্ছে কিনা
সেটা কীভাবে বুঝবেন?
নিন্মোক্ত আলামতগুলো দেখলেই বুঝবেন সন্তান ধীরে ধীরে বখে
যাচ্ছে। তখনই তাদের ফেরে
আনার সম্ভাব্য সকল পথ কাজে
লাগান। এক্ষেত্রে সময় ক্ষেপন করলে
কঠিন মাশুল গুনতে হবে।
১. প্রয়োজনাতিরিক্ত
টাকা
পয়সা
নষ্ট
করলেঃ
আপনার সন্তান যখন প্রয়োজনাতিরিক্ত টাকা
পয়সা চাইবে তখনি তাকে বেশ
সাবধানে নজরদারি করুন।আপনার যথেষ্ট সামর্থ আছে বলেই সন্তানকে
অবাধে টাকা পয়সা দেবেন
না। আপনার উদারতা এখানে বিপরিত ফল বয়ে আনবে।
পাশাপাশি সন্তানের সব চাহিদা সাথে
সাথে পুরণ করবেন না।
তাকে জীবনবোধ বুঝতে দিন।সাথে সামান্য অভাববোধও বুঝতে দিন। যে ছেলে
মেয়েরা পরিবার থেকে অতিরিক্ত টাকা
পয়সা ও বৈষয়িক সুযোগ
সুবিধা বেশি পায় তাদের
বেশির ভাগই বখে যায়।
২. অসময়ে বাসার
বাইরে
অবস্থান
করলেঃ
সন্তানদের গতিবিধি লক্ষ্য করুন। কোথায় যাচ্ছে?
কতক্ষণ থাকছে?
কাদের সাথে মিশছে?
এসবের
ব্যাপারে কখনো সামান্যতম ছাড়
দেবেন না। বিনা প্রয়োজনে
বাসার বাইরে যাওয়া,
আড্ডায় লিপ্ত হওয়া,
অধিক সময় বাসার
বাইরে থাকা এসব কঠোরভাবে
নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সুকৌশলে।
এক্ষেত্রে যে পরিবারের সন্তানরা
ধরা বাধা নিয়মের মাঝে
কঠোর নিয়ন্ত্রণ রেখায় লালন পালন হয়
তারা খুব কমই বখে
যায়।অন্যদিকে যারা অবাধে ঘুরাফেরা
করে,
মা বাবার নিয়ন্ত্রণ
নেই সেই সন্তানেরাই অতি
দ্রুত বখে যায়।
৩. সারাদিন মোবাইল
ফোনে
ব্যস্ত
থাকলেঃ
প্রয়োজন
ছাড়া টিনএজ সন্তানদের হাতে মোবাইল ফোন
বিশেষ করে এনড্রয়েড সেট
ভুলেও দেবেন না। যদি একান্ত
প্রয়োজনে মোবাইল দিতেই হয় তাহলে বুঝিয়ে
শুনিয়ে একটা বাটন ফোন
দিন। বর্তমানে টিনএজ'
রা মোবাইলে পর্ণ
আসক্তিতে ডুবে যাচ্ছে। এই
সময়ে সন্তানরা বখে যাবার জন্য
মোবাইল ও পর্ণগ্রাফি অন্যতমভাবে
দায়ী।ইন্টারনেট সুবিধা সম্বলিত মোবাইল ফোন সন্তান বখে
যাওয়ার আরেকটা নিয়ামক উপকরণ। যদি কোন কারণে
আপনার ব্যবহত এন্ড্রয়েড সেট তাদের হাতে
দিতে হয় তাহলে অন্তত
মোবাইলে ইউটিউব কিংবা গুগল সার্চের হিস্ট্রিটা
চেক করে দেখবেন।
৪. অধিক রাত
পর্যন্ত
জেগে
থাকলেঃ
আপনার
সন্তান লেখাপড়া ছাড়া অধিক রাত
জেগে থাকছে কিনা সেই বিষয়ে
আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে।অধিকাংশ টিনএজ'
রা অধিক রাত
জেগে থেকে পর্ণগ্রাফি কিংবা
চটি বই পড়ে। এতে
করে নিজের অজান্তেই নানা বদ অভ্যাসে
লিপ্ত হয়ে যায়। ফলে
তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ
হয়ে পড়ে। একসময় চরম
নৈতিক অবক্ষয়ের মুখোমুখি হয়ে মূল্যবান জীবন
যৌবন শেষ করে দেয়।আবার
অনেক ছেলে মেয়ে পড়ার
টেবিলে পড়ার নামে সামনে
বই নিয়ে মোবাইলে চ্যাটিং
করে কিংবা বাজে গল্প উপন্যাস
চটি বই পড়ে। অভিভাবকদের
সেদিকেও সাবধানে খেয়াল করতে হবে।
৫. আড্ডাবাজি করলেঃ
টিনএজ
সন্তানদের জন্য আড্ডাবাজী বর্তমানে
আরেক বিরাট মহামারি। আড্ডাবাজিতে লিপ্ত হলে বুঝবেন সন্তান
বখে যাবার পথে হাঁটা শুরু
করছে। কিশোর'
রা এখন অন্যের
দাবারগুটি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আপনার সন্তান আপনার অজান্তেই অন্যের দাবারগুটি হিসেবে ব্যবহার হয়ে নিজের এবং
পরিবারকে চরম হুমকির মুখে
ফেলে দেয়ার নিরব আয়োজন করতে
পারে। সুতরাং সন্তানের আড্ডাবাজিরোধে যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।তাকে পড়ালেখায় ব্যস্ত রাখুন।
৬. সামান্য বিষয়ে
খিটখিটে
মেজাজ
দেখালেঃ
সামান্য
বিষয়ে খিটখিটে মেজাজ দেখানো এবং সার্বক্ষণিক রাগ
রাগ ভাব নিয়ে থাকাও
বখে যাবার পূর্ব আলামত। সন্তান যখন সামান্য কারণে
খিটখিটে মেজাজ দেখায় তখন তাকে খুব
সাবধানে অবজারবেশন করুন এবং বুঝিয়ে
শুনিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন। আড্ডাবাজি বাইরে ঘুরাফেরায় চোখ রাখুন। নচেৎ
বিশাল খেসারত গুনতে হবে।
৭. খুব বেশি
সাজগুজ
করলেঃ
আপনি
যখন দেখবেন আপনার সন্তান কিছুক্ষণ পর পর সাজগুজ
করছে। চুলের কাটিং এবড়ে থেবড়ে করছে।
দিনে দু তিনবার জামা
কাপড় পরিবর্তন করছে তখনই বুঝবেন
সে বিগড়ে যাচ্ছে। তখন তার চলা
ফেরায় নজর দিন। কখন
কোথায় যাচ্ছে কার সাথে মিশছে
এসবের খোঁজও রাখুন। তখন পারিবারিকভাবে তাকে
বেশি বেশি সঙ্গ দিন
এবং জীবনবোধ বুঝতে সাহায্য করুন।
৮. বখাটে স্টাইলে
চুল
রাখলেঃ
বর্তমানে
টিনএজ সন্তানদের আরেকটি মহাসমস্যা হল বখাটে স্টাইলে
চুল রাখা। কখনো সন্তানকে বখাটে
বিশ্রি স্টাইলে চুল রাখতে দেবেন
না।আর যখন দেখবেন এভাবে
চুল রাখার জন্য চেষ্টা করছে
তখন তাকে ভাল মন্দ
বুঝান। ব্যবহারিক জীবনের সৌন্দর্যবোধ সম্পর্কে বুঝান এবং অসৌন্দর্যবোধ থেকে
কঠোরভাবে বারণ করুন।
৯. পড়ালেখা ও
খাওয়া
দাওয়ায়
অমনোযোগী
হলেঃ
হঠাৎ
করে সন্তানের মাঝে লেখাপড়া খাওয়া
দাওয়াসহ অন্যান্য কাজে অমনোযোগিতা ও
অনিহাভাব দেখলে সন্তানকে নিরবে ও সাবধানে পর্যবেক্ষণ
করুন। অমনোযোগিতা ও অনিহার কারণ
উদঘাটন করুন। হঠাৎ অমনোযোগিতা ও
অনিহা সন্তানের বখে যাওয়ার আরেকটি
অন্যতম কারণ। তখন পরিবারে সদস্যরা
মিলে তাকে বেশি বেশি
সঙ্গ তার অমনোগীতা ঘুচিয়ে
আনুন। প্রয়োজনে সপ্তাহ অন্তর তাকে নিয়ে কোন
দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যান।
১০. দিনের সিংহভাগ
ঘুমিয়ে
কাটালেঃ
রাতজাগা
এবং দিনের সিংহ ভাগ সময়
ঘুমিয়ে কাটানোর বদ অভ্যাস দেখলে
সন্তানের প্রতি খুব নজরদারি করুন।
এই স্বভাবও সন্তান বখে যাবার আরেকটি
পূর্ব লক্ষণ। সন্তানকে কেয়ারটেকিং করে রাতে যথা
সম্ভব সময় মত ঘুমাতে
সাহায্য করুন এবং সকালে
ঘুম থেকে তুলে দিন।
কোন অবস্থায় রাতজাগা এবং বেলা দশটা
এগারোটা পর্যন্ত ঘুমাতে দেবেন না।
বখে যাবার হাত
থেকে
কীভাবে
ফেরাবেন-
সন্তান
যদি একবার বখে যায় সেই
সন্তানকে বখে যাওয়া থেকে
ফেরানো সাংঘাতিক কঠিন। অনেক সময় বখে
যাওয়া থেকে ফিরিয়ে আনতে
পারিবারিক কঠোর অনুশাসন উল্টো
প্রতিক্রিয়া বয়ে আনে। তাই
সন্তান বখে যাবার আগেই
বখে যাবার যাবতীয় পথ ও উপকরণ
রুদ্ধ করতে হবে। সন্তানের
ব্যাপারে সামান্য গাফলতিও করা যাবে না।
প্রাণপ্রিয় সন্তানকে বখে যাওয়া থেকে
রক্ষা করতে দশটি বিষয়
খুব শক্তভাবে অনুসরণ করুন। সন্তানের স্বার্থেই কিছুটা কঠোর হতেই হবে।
১. ইন্টারনেট সুবিধা
সম্বলিত
মোবাইল
না
দেয়াঃ
আপনার
সন্তানের হাজারো আবদার থাকুক। তাদের হাতে জীবন বিধংশী
ইন্টারনেট সুবিধা সম্বলিত এনড্রয়েড মোবাইল সেট তুলে দেবেন
না।একান্ত প্রয়োজনে বুঝিয়ে শুনিয়ে একটা বাটন ফোন
কিনে দিন। আবার অনেক
পরিবার উঠতি বয়সের এই
ছেলেদের আবদারের কাছে হার মেনে
তাদের হাতে তুলে দেয়
বাইক। টিনএজ সন্তানের হাতে ইন্টারনেট সুবিধা
সম্বলিত মোবাইল ফোন আর বাইক
তুলে দেয়া হচ্ছে আপনি
স্বেচ্ছায় তার হাতে মরণাস্ত্র
তুলে দিচ্ছেন। সুতরাং এই বিষয়ে আগে
সাবধান হওয়া জরুরী।
২. ধর্মীয় ও
নৈতিক
শিক্ষাদানঃ
আপনার
সন্তানকে ছোটকাল থেকে ধর্মীয় ও
নৈতিক শিক্ষাদান করুন। ধর্মীয় অনুশাসন নিজে মানার পাশাপাশি
সন্তানদের মানতে অভ্যস্ত করে তুলুন। তবে
সন্তানকে বখে যাওয়া থেকে
ফেরাতে পারবেন।
৩. পরিবারের সদস্যদের
সঙ্গদান
বাড়ানোঃ
ইদানিং
প্রায় পরিবারের বড়'
রা নিজেদের
ব্যস্ততার দরুণ ছোটদের সময়
দিতে পারেন না। এই সময়
না দেয়া আরেকটি নেতিবাচক
ফল বয়ে আনে। আপনার
শত ব্যস্ততার মাঝেও সন্তানদের জন্য একটু সময়
বের করুন,
তাদের নিয়ে সপ্তাহে একটিবার
ঘুরতে বের হোন। তাদের
সাথে গল্প করুন। টিনএজ
সন্তানরা পরিবারের বড়দের কাছাকাছি পেলে খুব একটা
ডিপ্রেশনে ভোগে না। আপনার
আন্তরিক সময়দান সন্তানের বখে যাওয়ারোধে কার্যকর
ভুমিকা রাখতে পারে।
৪. গতিবিধি খেয়াল
রাখাঃ
আপনার
সন্তানের ব্যাপারে যথাসম্ভব চোখ কান খোলা
রাখুন। তাদের চাল চলন উঠাবসা
গতিবিধি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। তারা কী করছে?
কোথায় যাচ্ছে?
এসবের ব্যাপারে সাবধানি চোখ রাখুন। অবাধে
বাইরে যাতায়াত যার তার সাথে
মিশতে দেবেন না। তার পড়ার
টেবিলে বই পত্র চেক
করুন। সিলেবাসের বাইরে বয়স সংশ্লিষ্ট নয়
এমন কোন বই উপন্যাস
পড়ছে কিনা সেটাও খেয়াল
করুন। মোবাইলে কী দেখছে?
কী
করছে সেটাও খেয়ালে রাখুন।
৫. আড্ডাবাজি বন্ধ
করাঃ
টিনএজ
সন্তানের জন্য আড্ডাবাজি আরেক
মহামারি। পাড়া মহল্লার এমন
কোন জায়গা নেই যেখানে এসব
আড্ডা দেখা যায় না।
এইসব আড্ডাই সন্তানদের সর্বনাশের মূল কারণ। সন্ধ্যার
পর যেন সন্তান বাইরে
না থাকে সেই বিষয়টাও
নিশ্চিত করতে হবে। আড্ডা
নামক এই ভাইরাস দূর
করতে পরিবার সমাজ রাষ্ট্রকে ভুমিকা
নিতে হবে।
৬. অধিক রাত
জাগতে
না
দেয়াঃ
বর্তমানে
আমাদের পরিবারগুলোর ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে অধিক
রাত জেগে থাকা আর
সকালে খুব দেরি করে
ঘুম থেকে ওঠা। এটা
স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। অনেক টিনএজ সন্তানেরা
গভীর রাত জেগে থেকে
মোবাইলে পর্ণফ্লীম দেখে কিংবা চটি
বই পড়ে। এসব কারণে
সন্তানেরা অনেক বেশি বিগড়ে
যাচ্ছে। দ্রুত নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
তাই যথাসম্ভব ওদের তারাতারি ঘুমিয়ে
যেতে সাহায্য করুন এবং এদের
দিকে বিশেষ নজর রাখুন।
৭. পাঠ্যবইয়ের বাইরে
জ্ঞানমুলক
বই
নির্বাচন
করে
দিনঃ
আপনার
সন্তানের পাঠ্যবইয়ের বাইরে জ্ঞানমুলক বই নির্বাচন করে
দিন। তাদেরকে সমসাময়িক বিষয়ের উপর লেখা বই
পড়তে দিন। সাধারণ জ্ঞানের
বইয়ের উপর জোর দিন।
ভাষার দক্ষতা অর্জনের জন্য বই পত্র
নির্বাচন করে দিন। এটা
করতে পারলে তাদের সময় কাটবে ভাল
অন্যদিকে পর্ণগ্রাফি আসক্ত হবার সম্ভাবনা কম
থাকবে।
৮. কারো সাথে
কিংবা
কোন
অনুষ্ঠানে
একা
যেতে
না
দেয়াঃ
কারো
সাথে কিংবা বিয়ে শাদিসহ কোন
অনুষ্ঠানে একা যেতে দেবেন
না। রাতের কোন অনুষ্ঠানে তাকে
কোন অবস্থায় একা বা বন্ধুদের
সাথে ছাড়বেন না। মেয়ে হলেতো
একদমই না। কোন অনুষ্ঠানে
যেতে হলে একান্ত নিজের
সাথে নেবেন এবং আনবেন। তাহলে
অনেক বিপদ থেকে রেহাই
পাবেন।
৯. ইশকুল কোচিং
এ
সম্ভব
হলে
সাথে
নিয়ে
যাওয়াঃ
আপনার
টিনএজ সন্তানকে সম্ভব হলে ইশকুল কিংবা
কোচিং একা না পাঠিয়ে
সাথে নিয়ে যান আবার
সময়মত গিয়ে নিয়ে আসুন।
এই সময় খারাপ বন্ধুদের
কবলে পড়ে বিভিন্ন বদ
অভ্যাসে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে।
ইদানিং রাস্তাঘাটে প্রায় দেখা যায় স্কুল
কলেজ পড়ুয়া টিনএজ ছেলে মেয়েরা ধুমপানসহ
নানা খারাপ কাজ করছে। এসব
থেকে সন্তানকে বাঁচাতে সচেতনতা ও সাবধানতার বিকল্প
নেই।
১০.দিনের বেশি
সময়
একা
থাকতে
দেবেন
নাঃ
টিনএজ
সন্তানকে বেশি বেশি পারিবারিক
সঙ্গ দিন। তার সাথে
গল্প করুন,
কাছাকাছি রাখুন। দীর্ঘসময় একাকিত্ব থাকতে দেবেন না। এই সময়ের
একাকিত্ব থাকাটা আরেকটা সমস্যা। এসময়ের মন মানসিকতায় নানা
কৌতুহল জন্মে আর কৌতুহল থেকেই
বিপথে ধাবিত হবার সমুহ সম্ভাবনা
থাকে। যে পরিবারের সন্তানরা
বড়দের সঙ্গ কম পায়
তারাই অধিকাংশই ডিপ্রেশনে ভোগে এবং বিগড়ে
যায়।
সন্তানকে
কী দেবেন কী দেবেন না
সেটাও একটা বিশাল ফ্যাক্টর।
আমাদের অনেক পরিবার এই
বিষয়টা বুঝে না বলেই
তাদের সন্তানরা অকালেই বিগড়ে গিয়ে পরিবার সমাজের
জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
একটা বিগড়ে যাওয়া সন্তান একটা পরিবারের দুশ্চিন্তার
কারণ। পরিবারে সুখ শান্তি বিনষ্টের
জন্য এই রকম বিগড়ে
যাওয়া একটা সন্তানই যথেষ্ট।
তাই আপনার আদরের সন্তান কী আপনার খানিক
উন্নাসিকতার কারণে বিগড়ে যাচ্ছে কি না সেটাও
ভাবুন। সন্তানের আবেগ ইচ্ছে থাকবে
নানাবিধ সেগুলোকে যাচাই বাচাই করুন। আর্থিক সামর্থ আছে বলেই যা
চাইবে তা দেবেন না।
এই বয়সের সন্তানদের অতিরিক্ত টাকা পয়সা,
বাইক
কিনে দেয়া,
বন্ধুদের সাথে অবাধে ঘুরতে
দেয়া,
যেখানে সেখানে রাত যাপন কিংবা
আড্ডায় অংশগ্রহণ এসব কঠোর হস্তে
দমনের পাশাপাশি সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলুন।তাদেরকে মনীষীদের
জীবনী শোনান,
ভবিষ্যৎ মানুষ হবার ক্ষেত্রে চক
এঁকে দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে
সাহায্য করুন। আরেকটা বিষয় মনে রাখবেন
অতিরিক্ত শাসন বকাঝকাও কিন্তু
টিনএজ বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
বোঝাতে হবে বেশি। যে
কোন বিষয়ের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক
সুকৌশলে তাদের সামনে উপস্থাপিত করুন। তাদের মাঝে বুঝ গড়ে
তুলুন। সন্তানদের সঙ্গ দিন,
ভালোবাসা
ও শাসনের ভারসাম্যতা বজায় রাখুন। তবেই
সন্তানকে বখে যাওয়া থেকে
রক্ষা করা যাবে।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments