একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রস্তুতি ও সাবধানতার অনুষঙ্গে_মতিউর রহমান মল্লিক

আমি এখানে ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছি। আমি কিন্তু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বলতে পারতাম। তা না বলে আমি বলেছি ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা। আসলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মানেই যে ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, এমনটি ধারণা করা ঠিক নয়। কবি গোলাম মোস্তফার একটি প্রবন্ধ আছে। প্রবন্ধটির নাম হচ্ছে ‘ইসলামি সাহিত্য’। তিনি ঐ প্রবন্ধের মধ্যে অনেক অনেক মূল্যবান কথা বলেছেন। কিন্তু সে-সব কথার মধ্যের একটি মূল্যবান কথা আমাকে সারাজীবন অনিবার্যভাবে অনুপ্রাণিত করে রেখেছে। ঐ প্রবন্ধে তিনি বলেছেন, শুধু সাহিত্যের কথা বললেই হতো, কিন্তু বর্তমান সময়ে সাহিত্যের নামে যে-অনাচার চলছে ঐ অনাচারের মোকাবেলায় সৎসাহিত্যের কথা বলতে গেলেই আমাদেরকে ইসলামি সাহিত্যের কথা বলতে হবে। যদিও সাহিত্য বললে অসৎ-সাহিত্যের কথা আসে না, অসৎ-সাহিত্যের কথা আসাটা ঠিকও নয়, তবুও সাহিত্যের পবিত্রতাকে আলাদাভাবে বুঝানোর জন্যে ইসলামি প্রসঙ্গতা আনতে হয়। তেমনি সংস্কৃতির কথা বলতে গেলেও সংস্কৃতির পবিত্রতার বিষয়টি উচ্চারণের ক্ষেত্রে ইসলামি কথাটা আনা অত্যন্ত প্রয়োজন।
 
লক্ষ্য নির্ধারণের অনিবার্যতায়
ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কথাটা উচ্চারিত হলে স্বাভাবিকভাবে সেখানে পবিত্রতা ফুটে ওঠে; এই পবিত্রতাকে তুলে ধরার জন্য আমি ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা বলেছি। আমার আসল আলোচনার লক্ষ্য হলো, একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিভাবে করা যায়। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকাল সারাদেশে যে-সব ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই অনুষ্ঠানগুলো ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বটে, কিন্তু সফল কিনা তা আমাদের ভেবে দেখতে হবে। ইসলামি সংস্কৃতির নামে যে-সব অনুষ্ঠান হচ্ছে, সে-সব যে, সর্বদিক থেকে সফল হচ্ছে তা কিন্তু নয়। সে-জন্যে সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিভাবে করা যায়, তার জন্য কি কি উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিৎ, তার জন্য কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ, সে-সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা প্রয়োজন এবং খুবই প্রয়োজন।
ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্যে পূর্বপ্রস্তুতির খুবই দরকার। এবং এই দরকারের ক্ষেত্রে প্রথম প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে, আমরা যে-ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি করতে যাচ্ছি তার লক্ষ্য কি হবে তা নির্ধারণ করা। অর্থাৎ আমরা এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কি অর্জন করতে চাই, আমি বা আমরা দর্শক-শ্রোতাদের কি দিতে চাই, এই যে দেওয়ার বিষয়টি, এই বিষয়টিই লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমি একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে গেলাম কিন্তু প্রথমেই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ঠিক করলাম না, যখন আমি লক্ষ্য নির্ধারণ করলাম না, তখন এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আসলে যে-শেষ পর্যন্ত কি অর্জিত হবে, সে-ব্যাপারে একটি বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি করলাম।
আমি একবার কোনো একটি বিভাগীয় শহরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদ্বোধনের জন্য গেলাম। পুরো অনুষ্ঠানটির মধ্যে যদিও আর্কষণ ছিল, কিন্তু যারা সততাকে গ্রাহ্য করে না, যারা আর্দশকে গ্রাহ্য করে না, তাদের অনুষ্ঠানের সংগে আর ঐ বিভাগীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে আমি কোনো পার্থক্য নির্ণয় করতে পারলাম না। মূলত পুরো অনুষ্ঠানটার মধ্য দিয়ে মানুষকে অসম্ভব রকমের উদ্বেলিত করা হলো, আনন্দিত করা হলো কিন্তু ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যা অর্জন করা উচিৎ ছিলো, তার কোনো কিছুই অর্জন করা গেল না। কারণ হলো, অনুষ্ঠানের লক্ষ্য নির্ধারণ বলতে যা বোঝায়, তা আগে থেকে করা হয়নি। দেখা গেলো, অনুষ্ঠানের মধ্যে এমন কিছু কৌতুক ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, যে-কৌতুকের সাথে যৌনতা জড়িয়ে রয়েছে, আদর্শবিরোধী বক্তব্য জড়িয়ে রয়েছে, যে-কৌতুকের মধ্যে হাসাহাসি ছাড়া আর কিছুই নেই বরং ঐ কৌতুক হয়ে উঠেছে অপসংস্কৃতির বাহন। এবং যা নৈতিকতা অর্জনের দিকে মোটেই ধাবিত করে না। এই কৌতুক দেখে আমি নিজেও অপসংস্কৃতির একটি প্রভাবকে লক্ষ্য করেছি।
যাই হোক, আমি একটি কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, সফল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবার জন্য আগেভাগেই লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিতে হবে। এ-ক্ষেত্রে রাসুল সা.Ñএর যে-নির্দেশনা, সেই নির্দেশনাকেই সামনে রাখতে হবে। রাসুল সা.Ñএর সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কিত বক্তব্যের মধ্যে একটি বক্তব্য আমি কোনোক্রমেই ভুলতে পারি না। যদিও হুবহু আমি ঐ বক্তব্যটি বলতে পারছি না, তবুও ঐ হাদিস থেকে আমি যে-শিক্ষা পেয়েছি, সেই শিক্ষাকে আমি সত্যিই ধরে রেখেছি। এবং রাসুল সা.Ñএর ঐ শিক্ষা আমার মাঝে সবসময় কাজ করে। তিনি বলেছেন, যারা শুধুমাত্র মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য সাহিত্যচর্চা করে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের কাছ থেকে কিছুই গ্রহণ করবেন না। অর্থাৎ যারা মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য, মানুষের আনন্দদানের জন্য কাজ করে এবং এই কাজ করতে গিয়ে আল্লাহর তোয়াক্কা করে না, আল্লাহর কথা স্মরণ করে না, তাদের এই প্রচেষ্টাটা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়ে যায়। এই প্রচেষ্টার কোনো বিনিময় আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি শিক্ষাÑ রাসুলের নির্দেশের মধ্য থেকেÑ আমি পেয়েছি, তা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যারা সাহিত্যচর্চা করে, মানুষের তোয়াক্কা করে না, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদেরকে দান করবেন উত্তম বিনিময়। এখন আল্লাহর রাসুলের এই হাদিসটিকে যদি সংগঠকরা সামনে রাখেনÑ লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেÑ তাহলে তাঁরা সবসময় সচেতন থাকতে পারবেন। সেই কারণে, সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নির্মাণের যথার্থতায় লক্ষ্যের বিষয়টিকে সর্বপ্রথম গুরুত্ব দিতে হবে।
লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরো কতকগুলো প্রয়োজনীয় দিক আছে। যেমন অনুষ্ঠানটি আমি কোথায় কোন জায়গায় করবো, সেটি নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে। আমি হয়তো একটি নবীনবরণ অনুষ্ঠান করতে যাবো। সেখানে তরুণ আছে, তরুণী আছে এবং তারা ইসলামি সংস্কৃতির সাথে পরিচিত নয়। সেখানে এমন কিছু পরিবেশনা রাখতে হবে, যে-পরিবেশনায় নিছক উল্লাস আছে। যে-উল্লাসে না আছে খারাপ দিক, না আছে ভালো কিছু। তার মানে এমন একটি পরিবেশনা করতে হবে, যাতে মন্দের কিছু নেই, আর চূড়ান্তভাবে হয়তো ভালো কিছুও নেই। বলতে গেলে নিরপেক্ষ একটি হাস্যরসের বিষয় সেখানে থাকতে পারে। হাস্যরসের মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে এমন জায়গায় আমি অনুষ্ঠানকে পৌঁছে দেবো, যেখানে গেলে স্বাভাবিকভাবে শ্রোতা এবং দর্শকদের মাঝে আবেগ তৈরি হবে। সেই আবেগ আর কিছুই নয়, সেই আবেগ হচ্ছে সত্যের পরে আবেগ, সেই আবেগ হচ্ছে সৌন্দর্যের পরে আবেগ, সেই আবেগ হচ্ছে জাতির স্বার্থের পরে আবেগ, সেই আবেগ হচ্ছে দেশের স্বার্থের পরে আবেগ। যেমন নজরুল বলেছেন, ‘সত্যকে আজ হত্যা করে অত্যাচারীর খাঁড়ায়, নেই কিরে কেউ সত্য সাধক বুক খুলে আজ দাঁড়ায়’। নবীনবরণের মতো একটি সফল ইসলামি অনুষ্ঠান নির্মাণের বেলায় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার শিক্ষাকেও আমরা সামনে রাখতে পারি।
যখন চতুর্দিকে অন্ধকার, মিথ্যা, অপসংস্কৃতি, চরিত্রহীনতা, দুর্নীতি তখন অবশ্যই সমস্ত অন্ধকারের বিরুদ্ধেÑ আনন্দদানের মধ্য দিয়েÑ আমাকে সত্যের কথা বুক টানটান করে বলতে হবে। এই সত্যের কথাকে আমি গানের মধ্যে পরিবেশন করতে পারলাম না, এই সত্যের কথাকে আমি কৌতুকের মধ্য দিয়ে বলতে পারলাম না কিন্তু আমি হয়ত নাটকের মধ্য দিয়ে সেই কথাটি বলতে পারলাম। আসল কথা হলো, আমাকে সত্য কথা বলতে হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলতে হবে। নাটকের মধ্য দিয়ে যদি আমি বলতে না পারি, তাহলে এমন কিছু গান আমাকে অবশ্যই গাইতে হবে, যে-গানের মধ্য দিয়ে সত্য কথাকে বুক ফুলিয়ে বলা যায়।
 
একগুঁয়েমি বাদ দেয়ার প্রসঙ্গে
একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্যোগের আবশ্যকতায় নিছক যে-বিষয়টি আমি একান্তভাবে উল্লেখ করতে চাই, সেটি হলো, একটি ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সফল করবার জন্য নিজের ইচ্ছা, নিজের একগুঁয়েমিকে সত্যিই বিসর্জন দিতে হবে। অনেক সময় যেটা দেখা যায়, সেটা হলো, একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নির্মাণের জন্যে আমি যেটা বুঝেছি, সেটারই প্রাধান্য দিতে চাই। শ্রোতাদের, দর্শকদের চাহিদার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করি না। নিজেকে মনে করি, ‘আমি বড় কোনো শিল্পীগোষ্ঠীর প্রভাবশালী ব্যক্তি, আমি যা বুঝি আমার চেয়ে কেউ-ই আর বেশি বোঝে না’। ঐটি মোটেই ঠিক নয় বরং একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নির্মাণের সময় শ্রোতা-দর্শকদের মন-মানসিকতাকে বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে অবশ্যই।
আমি একবার শুনেছিলাম যে, খুব প্রতিষ্ঠিত একটি শিল্পীগোষ্ঠীÑ আমি নাম বলবো নাÑ কোনো একটি ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছে অনুষ্ঠান করতে। ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে তারা কৌতুক অভিনয়ের একটি ব্যবস্থা করেছে। এটা তারা করেছিলো কোনো একজন বড় শিল্পীর একগুঁয়েমির কারণে। এখন এই যে কৌতুক অভিনয় করলো, কোথায় করলো, একটি ওয়াজ মাহফিলের মঞ্চে। ওয়াজ মাহফিলে সাধারণত কারা আসে, ওয়াজ মাহফিলে সাধারণত তারাই আসে যারা দ্বিনের কথা শুনতে চায়, কোরআন-হাদিসের কথা শুনতে চায়। এবং আমাদের দেশের মফস্বল অঞ্চলে শ্রোতা-দর্শকরা এখনো এতটা তৈরি হয়নি, যারা ওয়াজ মাহফিলের মঞ্চে কৌতুক দেখবে। সুতরাং আমি কোথায় প্রোগ্রাম করবো, আমার শ্রোতারা কেমন, আমার দর্শকরা কেমন, সেটা আমাকে ভাবতেই হবে। এই জন্যে দেখা যায় যে, অত্যন্ত পরিশ্রম করে একটি অনুষ্ঠান করা হলো, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো পরিশ্রমই কাজে আসলো না। এর কারণ হলো, আমরা শ্রোতা-দর্শকদের যে একটা মন-মানসিকতা আছে, তা মূল্যায়ন করতে শিখিনি। এখন এ-ব্যাপারে কি করতে হবে? এ-ব্যাপারে শিল্পীগোষ্ঠীর সকল সদস্যদের নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে হবে এবং সবার পরামর্শ নিয়ে অনুষ্ঠান সাজাতে হবে। যেমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছি, সেখানে কি কি গান, কৌতুক, নাটক করবো জনশক্তির সঙ্গে পরামর্শ করে পূর্বাহ্নেই সেটি আমাদের ঠিক করতে হবে। তারপর আমাদের শিল্পীগোষ্ঠীগুলোর পরামর্শদাতা, উপদেষ্টাম-লী, পৃষ্ঠপোষকম-লী এবং তত্ত্বাবধায়কবৃন্দকে একত্রিত করতে হবে, তাঁদের সামনে আমাদের অনুষ্ঠানকে উপস্থাপন করতে হবে। বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা পরামর্শ দেবার বিষয়েÑ আমি মনে করি আমাদের জন্যÑ আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিরাট রহমত। আমরা অনেক সময় বলে থাকি যে, তাঁরাতো সংস্কৃতি বোঝেন না, সে-অবস্থায় আমি প্রায়ই বলে থাকি, ক্রিকেট, ফুটবল খেলা দেখতে যায় সাধারণ মানুষ এবং ঐ যে-চতুর্দিকে অসংখ্য দর্শক থাকে, তাঁরা যদি খেলার মূল্যায়ন করতে না পারবে, তাহলে পয়সা খরচ করে খেলা দেখতে যাবে কেন? তাই দেখা যায়, কোনো চ্যানেলের প্রতিবেদকরা দর্শকদের কাছ থেকে মতামত নিচ্ছে যে, আজকে অমুক দল হেরে গেল কেনো, আজকে অমুক দল জিতে গেল কেনো, আপনাদের একটি মূল্যায়ন আমরা জানতে চাই। আসলে যাঁরা দর্শক থাকেন, তাঁরা হয়ত খেলতে পারেন না, কিন্তু তাঁরা খেলার কলাকৌশল সম্পর্কে অবশ্যই কিছু-না-কিছু জানেন। সেখানে একটি কথা খুব ভালো করে মনে রাখতে হবে, আমি যতই উন্নতমানের অনুষ্ঠানের নির্মাণ করি না কেনো, সেটা যদি দর্শক-শ্রোতা গ্রহণ না করে, তাহলে সেই উন্নতমানের অনুষ্ঠান করার কোনো অর্থ হয় না। সুতরাং যখন কোথাও অনুষ্ঠান করতে যাবো, সেখানকার দর্শক-শ্রোতাদের মন-মানসিকতাকে অবশ্যই মূল্যায়ন করবো। এই মূল্যায়ন যদি আমি করতে না পারি, এখানে যদি আমার মোহকে কাজে লাগাই, একগুঁয়েমিকে কাজে লাগাই, আমার সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দেই, তাহলে আমি একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নির্মাণের অযোগ্য হয়ে গেলাম। সেই জন্যে যে-বিষয়টির গুরুত্ব দিতে হবে, সেটি হলো, আমি দর্শক-শ্রোতাদের আনন্দ দেবো ঠিকই কিন্তু আমার আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে নয়, আমার লক্ষ্যকে বর্জন করে নয়। আমি আমার লক্ষ্য অর্জনে অটল থাকবো, অনড় থাকবো শেষ পর্যন্ত।
 
সামর্থ্যরে দিকে সতর্ক থাকার অভিপ্রায়ে
বস্তুত আমি যেখানে অনুষ্ঠান করতে যাবো, সেখানকার অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে দিকেও খেয়াল রাখবো। আমি সম্মান রেখে বলছিÑ নাম বলব নাÑ একটি জেলা শহরে বার্ষিক সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আমি শুনলাম যে, সেখানে দেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পীগোষ্ঠীগুলোকে দাওয়াত করা হয়েছে। আমি সেখানকার আয়োজকদের জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কি শিল্পীগোষ্ঠীগুলোর সমস্ত খরচ বহন করতে পারবেন? তাঁরা আমাকে চমৎকার করে হেসে বললেন- মল্লিক ভাই, আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, ইনশাআল্লাহ সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। দুঃখজনক ঘটনা হলো, অধিকাংশ শিল্পীগোষ্ঠীকে তাঁরা পুরো খরচ দিতে পারেননি। ঐ উৎসবে দাওয়াতপ্রাপ্ত একটি শিল্পীগোষ্ঠীর খবরও আমি পেলাম যে, তাদেরকে পরিষ্কার বলে দেয়া হয়েছে, ‘আপনাদের যাওয়ার খরচ তো দেয়া সম্ভব হচ্ছে না, আপনারা এসেছিলেন, সেই আসার খরচটাই আমরা দিয়ে দিলাম মাত্র’। চিন্তা করা দরকার, একটি শিল্পীগোষ্ঠীর ১৬/১৭ জন শিল্পী দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাবে, তাদের ন্যূনতম খরচ কতটা লাগতে পারে। পরবর্তীতে আরো খবর পেলাম, যে-অঞ্চলের শিল্পীগোষ্ঠী ঐ অঞ্চলেরইÑ একটি ব্যাংকে চাকরি করছেন এমনÑ এক কর্মকর্তার কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে ঐ গোষ্ঠীকে ফিরে যাবার ভাড়া জোগাড় করতে হয়েছে।
 
স্থানীয় শিল্পীদের গুরুত্ব দেয়ার ঔদার্যে
যে-বিষয়টির আরো খেয়াল রাখতে হবে তা হলো, যে-এলাকায় প্রোগ্রাম করতে যাবো, সে-এলাকার শিল্পীদের গুরুত্ব দিতে হবে। হয়ত আমি ঢাকার একটি শিল্পীগোষ্ঠীর পরিচালক, যাচ্ছি নরসিংদী প্রোগ্রাম করতে, তাই আগেভাগেই উচিত হবেÑ সেখানকার স্থানীয় সংগঠকদের সাথে পরমার্শ করে, সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতি জেনে নেয়া। এবং যে-অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে নিয়ে যাচ্ছি, স্থানীয় শিল্পীদের সাথে পরামর্শ করে, যদি ঐ পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়, তাহলে তা অবশ্যই আনতে হবে। রাসুল সা. যখন কোথাও যেতেন, তখন তিনি স্থানীয় ইমামের পেছনে নামাজ পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করতেন। কিন্তু স্থানীয় ইমানদার যাঁরা ছিলেন তাঁরাতো রাসুলের সা. পিছনে নামাজ পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতেন। রাসুল সা. তাঁদের অনুরোধ উপেক্ষা করতেন না হয়তো। কিন্তু তাঁর এই যে মহান আদর্শ, এই আদর্শের গুরুত্ব দিতে হবে। সময় নিয়ে তাদের গান শুনতে হবে। এবং তারা যে-সব গান ভালো গাইতে পারে, সেইসব গান গাওয়ার সুযোগও করে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যে যত বড়, সে তত উদার।
 
অনুষ্ঠান নির্মাণের দায়িত্ব অর্পণের সতর্কতা
অনুষ্ঠান নির্মাণের দায়িত্ব আমি কাকে দেবো? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যথার্থ আদর্শবাদী সাংস্কৃতিক প্রতিভার হাতে যদি অনুষ্ঠান নির্মাণের দায়িত্ব না দেয়া হয়, তাহলে আমি প্রকৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে-কথা বলেছি, ঐ লক্ষ্য অর্জিত হবে না।
আমি একটি উৎসবে গিয়ে লক্ষ্য করলাম যে, পরিচালক ব্যস্ত রয়েছে অর্থ সংগ্রহের ব্যাপারে। কিন্তু পুরো অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দিয়েছে এমন এক ব্যক্তিকে, যে-একসময় ইসলামি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল, অথচ পরবর্তী সময়ে ইসলামি সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বের হয়ে গেছে, বের হয়ে গেছে ইসলামি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের যে-মূলধারা তার সাথে বিদ্রোহ করে। আবার তাকেই উৎসবের মূল অনুষ্ঠান পরিকল্পনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, এবং প্রশিক্ষণের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। উৎসবতো প্রতিদিন হয় না। প্রতিমাসেও হয় না, বছরে একবার হয়। দেখা গেলো যে, ঐ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সাবেক নেতা, যে-এখন ইসলামি আদর্শকে মানতে চায় না, ইসলামি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মূলধারাকে বৃদ্ধাংগুল দেখায়, সে-তার মতো করে পুরো অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে। উৎসবের পুরো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটা দেখে আমার মনে হলো, আমরা যে-একটি আদর্শিক পরিবেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম; সত্য-সুন্দর দিকে, আল্লাহর দেয়া পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থার দিকে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করতে চেয়েছিলাম, গোটা অনুষ্ঠানের মধ্যে তার কোনো চিহ্নমাত্র নেই। এই যে-সারাবছরের পরে ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি গোষ্ঠীর উৎসব হলো, পুরো উৎসবটাই মাটি হয়ে গেল। তো এই ধরনের উদ্যোগ কেনো আমরা নেবো? কেনো আমরা আদর্শচ্যুত লোকদের হাতে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, পরিচালনা এবং পরিবেশনার সমস্ত দায়িত্ব ছেড়ে দেবো?
 
অনুষ্ঠানের বিচিত্রতার প্রয়োজনে
এখন আমি আলোচনা করতে চাই, অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্য নিয়ে। অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্য আনার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করা দরকার। একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নির্মাণের জন্য অনুষ্ঠানের ভেতরে বিষয়বৈচিত্র্য আনা অপরিহার্য। বিষয়বৈচিত্র্য কেমন? আমি একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছি একবার। সেখানে গিয়ে আমি হামদ, নাত, দেশের গান, ইসলামি গান পেলাম, হাস্যরসে ভরা কৌতুক পেলাম। এবং হঠাৎ করে আমি আবৃত্তি পেলাম। এই হলো বিষয়বৈচিত্র্যের একটি সংযোগ অর্থাৎ পুরো অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি আবৃত্তির সংযোজনা। আমি এই ধরনের আরো সংযোজনকে বৈচিত্র্য হিসেবে আখ্যায়িত করতে চাই। সুতরাং দেখতে হবে যে, অনুষ্ঠানের মধ্যে বিভিন্ন স্বাদ আনার উদ্দেশ্যে আরো কি কি সংযোজন করা যায়।
ঐ অনুষ্ঠানে কিছুক্ষণ পরে দেখি, ইসলামি সাংস্কৃতিক জগতের শ্রেষ্ঠ গণসঙ্গীত শিল্পী আবুল কাশেম ভাই তার গণসঙ্গীত নিয়ে হাজির। তার একটি গণসঙ্গীত পুরো অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে তুললো। আমার চোখ দিয়ে পানি ঝরতে লাগলোÑ অন্ধকারের মধ্যে কেউ লক্ষ্য করল নাÑ আমি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাকে গভীরভাবে গ্রহণ করলাম, আমার এই চোখের অশ্রুর ভেতর দিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য দোয়া বের হয়ে এলো। আবার এক সময় লক্ষ্য করলাম, ঐ অনুষ্ঠানের সঙ্গে আঞ্চলিক গানেরও ব্যবস্থা করেছে। এই আঞ্চলিক গান একটি বড় ধরনের সম্পদ। এবং বৈচিত্র্যময় সংযোজন সন্দেহ নেই। পারতপক্ষে প্রত্যেক জেলার শিল্পীদের উচিৎ তাদের আঞ্চলিক সুর কাজে লাগানো।
সুতরাং রাজশাহীর শিল্পীদের উচিত প্রতিটি অনুষ্ঠানে গম্ভীরাকে প্রাধান্য দেয়া। রংপুরের শিল্পীদের উচিত প্রতিটি অনুষ্ঠানে ভাওয়াইয়াকে প্রাধান্য দেয়া। সিলেটের শিল্পীদের উচিত তাদের আঞ্চলিক ভাষার গানকে প্রাধান্য দেয়া। সিলেটের একটি অসাধারণ আঞ্চলিক সুর আছে, যে-সুরকে হাছন রাজা সমৃদ্ধ করেছেন। এই সুরেÑ সব গানে নয়, কোনো কোনো গানে হাছন রাজা পরিপূর্ণ আদর্শকে ধারণ করেছেন। হাছন রাজার ওইসব আদর্শবাহী গানকে সিলেটের শিল্পীরা মন ভরে গাইতে পারে। মোট কথা, আমি বলবো ইসলামি সংস্কৃতির জন্য যাঁরা কাজ করেছেন, তাদের বিভিন্ন বিষয়কে, অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। উদাহরণ হিসেবে আমি বলতে চাই, শিল্পীসম্রাট আব্বাস উদ্দীনের একটি গানÑ ‘শোন মুমিন মুসলমান, করি আমি নিবেদন, এই দুনিয়া ফানা হবে জেনে জানো না’।
আমি আজকে সারাদেশে যে-অবস্থাটা লক্ষ্য করছি সেটা হলো, একদিন যে-সব গান বিশ্বাসীদের উদ্বুদ্ধ করেছিল দেশপ্রেমে, দেশপ্রেমিকদের উদ্বুদ্ধ করেছিল সত্যের দিকে, আমরা সেই গানগুলোকে গাই না, আমরা নজরুলের, ফররুখের, আব্বাস উদ্দীনের পল্লীগীতি, আব্দুল আলীমের সুন্দর সুন্দর পবিত্র গানগুলো গাই না। কত চমৎকার চমৎকার গান শিল্পীরা আগের দিনে গেয়েছেন, সেই গানগুলোর দিকে আমরা একেবারেই নজর দেই না।
নজরুলের গান গাওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক হওয়ার দরকার। নজরুলের গানের সুর কোনোভাবেই যাতে ভুল না হয়, সেজন্যে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রশিক্ষণ না নিয়ে নজরুলের গান গাওয়া ঠিক হবে না। নজরুলের গানগুলো যারা গাইতে পারে, কেবল তারাই যেন গায়। আর এ-জন্য যথার্থ শিল্পী বাছাই করতে হবে।
 
মুখস্থকরণের অপরিহার্যতা
অনুষ্ঠানে পরিবেশিতব্য গান, অভিনয়, আবৃত্তি এবং অনুষ্ঠানের জন্য বর্ণনাধর্মী যা-কিছু-তা মুখস্থ করে ফেলতে হবে। একজন উপস্থাপক যদি তার উপস্থাপনাকে মুখস্থ করতে পারে, তাহলে তার উপস্থাপনায় বৈচিত্র্য আসবে। আমি নিজেও অনেক সময় দেখে দেখে গাই, কখনো কখনো শিল্পীদের দেখে গাওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে, কিন্তু এটা কৃতিত্বপূর্ণ কাজ নয়। একটি সফল ইসলামি অনুষ্ঠানের জন্য যা অপরিহার্য তা হলো, যা কিছু পরিবেশন করবো তা যেন সত্যিই আমার মুখস্থ থাকে। পরিবেশনার বিষয়গুলো সমস্ত দাবিদাওয়াসহ যেমন সুর, তাল, লয়, উচ্চারণের সমস্ত অধিকার পূরণসহ একেবারেই কণ্ঠস্থ না শুধু, আত্মস্থও করতে হবে, তাহলে পরিবেশনায় প্রাণ সঞ্চারিত হবেই। একটি জারী আমি গাইব, আমার যদি জারী গাইতে হয়, এবং তার জন্য যদি বিশ মিনিট সময় দিতেও হয়, তাহলে সেই বিশ মিনিট সময়ের জারী আমাকে মুখস্থ করতে হবে। এ-ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার প্রয়োজন। আমরাতো অহরহ দেখছি রেডিও, টেলিভিশনে বিরাট বিরাট জারী-গম্ভীরা শিল্পীরা গাইছে, বিভিন্ন গান পরিবেশন করছে, সবই তাদের মুখস্থ। আমরা যদি মুখস্থ করার ব্যাপারে প্রতিযোগিতা না করি, তাহলে কিন্তু আমরা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবো।
আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, ‘তুমি যখনই কোনো কাজ করবে, তখনই তা প্রতিযোগিতার মনোভাব নিয়ে করবে’। অর্থাৎ তুমি গবেষণা করবে, যে-বিষয়ে তুমি গবেষণা করবে, ঐ বিষয়ে আর যারা গবেষণা করছে, তাদের চেয়েও যেন তোমার গবেষণা তুলনামূলকভাবে সুষ্ঠু হয়, তুমি যদি ছাত্র হয়ে থাকো, তাহলে তোমার প্রতিযোগিতা হবে শ্রেষ্ঠ ছাত্রত্বের জন্য, অন্য সবার চেয়ে তোমার রেজাল্ট অবশ্যই ভালো করতে হবে। তেমনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বেলাও রাসুলের এই আদর্শকে মান্য করতে হবে। ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করতে চায় যারা, বাতিলকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যারা, তারা সাংস্কৃতিক পরিবেশনার ক্ষেত্রে যে-পরিশ্রম করে, যে-আন্তরিকতার পরাকাষ্ঠা দেখায়, আমাদের তাদের চেয়েও বেশি পরিশ্রম করতে হবে, বেশি আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে, বেশি কোরবানি করতে হবে, একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য পকেটকে উজাড় করে দিতে হবে এবং পর্যাপ্ত সময়ও দিতে হবে। শ্রম দিতে হবে, যে-শিল্পীগোষ্ঠী একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপহার দিতে চায়, একটু ব্যাখ্যা করে বলতে গেলে বলতে হয়, সেই শিল্পীগোষ্ঠীর প্রত্যেক শিল্পীকে পারতপক্ষে ঐ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য খরচ করতে হবে, ঐ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আল্লাহর একটি নির্দেশ সুরা বাকারায় এই রকম, ‘ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করো’। আমরা চাইছি ইসলামি সংস্কৃতির বিজয়, আমরা চাইছি রাসুলের সংস্কৃতির বিজয়, আমরা চাইছি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সংস্কৃতির বিজয়, সুতরাং এই সংগ্রামে আমাদেরকে সর্বশক্তি নিয়োগ করতেই হবে। এবং এই সংগ্রামেÑ ইচ্ছাকৃতভাবে হোক অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে হোকÑ যতটুকু ফাঁক থাকবে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও ততটুকু ফাঁক থাকবে।
বস্তুত একটি সফল ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য, অনুষ্ঠান নির্মাণের জন্য আমি মাত্র গুটিকয়েক দিকেরই উল্লেখ করেছি। এই বিষয়ের ওপরে আরো চিন্তা করা যায়, আরো গবেষণা করা যায়। তাই প্রয়োজন ওয়ার্কশপ করার। সুতরাং ওয়ার্কশপ করার উদ্যোগও আমাদের নিতে হবে।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com 

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.