মহিউদ্দিন বিন জুবায়েদ’র ছড়া

 
বৃক্ষ রোপন
 
এসো সবাই বৃক্ষ রোপন
করি বাড়ির পাশ
নইলে হবে দূষণ বায়ু
হবে সর্বনাশ।
 
গ্রামে-গঞ্জে বৃক্ষরোপন
বাঁচায় পরিবেশ
বৃক্ষ থাকলে জীবন বাঁচে
নইলে হবে শেষ।
 
ভবিষ্যতে আসবে যারা
তাদের ভেবে আজ
এসো সবাই তাদের জন্য
করে যাবো কাজ।
 
পরম বন্ধু বৃক্ষরাজি
রোপন করে ভাই
সবুজপল্লি সুখি দেশের
স্বপ্ন দেখতে চাই।
……………………………………………
 
মনের পাখায় ওড়তে পারি
 
প্রজাপতির রঙিন ডানায় দেশের ছবি
ঘাস ফড়িংয়ের ডানায় ডানায় ওঠে রবি
রোদের তেজে খুলি আঁখি..
কিচির মিচির সাতসকালে ডাকে পাখি।
 
মনের পাখায় ওড়তে পারি ইচ্ছে মতো
সবুজ গাঁয়ে ঘুরতে পারি ইচ্ছে যতো
দস্যিপনায় ছুটতে থাকি..
মনের খাতায় কলম দিয়ে ঘুড়ি আঁকি।
 
এভাবে ওই ছোটাছুটির দুপুর কাটে
আকাশ নীলে তেপান্তরের মাঠেঘাটে
সর্ষে ক্ষেতে লুটোপুটি..
নেই ইশকুলে পাঠের খেলা দীর্ঘ ছুটি।
 
মনের রাজ্যে পঙ্খিরাজের ঘোড়ায় চড়ে
রবির আলোয় দেশকে দেখি মনের ঘরে
সাধ মিটে না দেখে তবু..
সবুজ শ্যামল দেশকে ভোলা যায় না কভু।
……………………………………………
 
এই ছবিটি
 
রেইন লিলি ফুটছে শত
বৃষ্টি ছোঁয়া পেয়ে
পুবের হাওয়া মাখামাখি
ওঠছে পাখি গেয়ে।
 
গন্ধরাজে প্রজাপতি
রঙিন পাখায় উড়ে
পালক নাচায় টুনটুনিটা
টুইট টুইট সুরে।
 
দুপুর গড়ায় সন্ধ্যা আসে
এমন পরিবেশে
মায়ায় ভরা এই ছবিটি
সোনার বাংলাদেশে।
……………………………………………
 
বাংলা ভাষা
 
বাংলা ভাষা মায়ের কণ্ঠে
আদর মাখা বোল
বাংলা ভাষা শহীদ ভাইয়ের
রক্তে ফোটা ফুল।
 
বাংলা ভাষা বাঙালিদের
সাতটি রাজার ধন
আগাম দিনের স্বপ্নবোনা
বাঙালিদের পণ।
 
বাংলা ভাষা কবির ছড়া
মিষ্টি মধুর গান
মেঘনা নদীর ছলাৎ ছলাৎ
নিত্য বহমান।
……………………………………………
 
হেমন্ত
 
একটু একটু শিশির ঝরে হেমন্তকাল ওই
শীতের উঁকি সবুজ গাঁয়ে কেমনে ঘরে রই।
ধানের খেতে ফিঙ্গে ওড়ে ফড়িং ধরে খায়
রৌদ্র পেয়ে ধানের পাতা ফুরফুরিয়ে চায়।
 
নবান্ন হয় হেমন্তে এই খেজুর গাছের রস
খেজুর রসে পিঠাপুলির থাকে বড়ই যশ।
নতুন ধানের ছড়াছড়ি চাষির নেইতো ঘুম
সকাল দুপুর কাটা মাড়ি চলে যে হরদুম।
 
নতুন বধু জামাই আদর হেমন্ততেই হয়
বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পিঠাপুলির জয়।
……………………………………………
 
শরৎ
 
আকাশে নেই মেঘের ভেলা নেই তো আঁধার পুবে
চাঁদের আলো কাশেরবনে সূর্য যখন ডুবে।
দূরের মাঠে ধানের খেলা ওড়ে সুরের পাখি
ডাক দিয়ে যায় ইশারাতে মন ভুলানো আঁখি।
 
ভাদ্রমাসে রাতের শিশির ঘাসের ডগা ভিজে
মনজুড়োনো ফুলের ঘ্রাণে শান্তি মনে কী যে!
জোনাক জ্বলে পাতার ভাঁজে এই পৃথিবী হাসে
মেঘবৃষ্টি পালিয়ে গেছে চাঁদের ছবি ভাসে।
……………………………………………
 
খোকাখুকুর ঈদ
 
ঈদ এসেছে চাঁদ হেসেছে
নীলাকাশের গাঁয়ে
খোকাখুকুর মুখে হাসি
নতুন জামা গায়ে।
 
ঈদ এসেছে ধান পেকেছে
সবাই যখন কাজে
খুশির নদী ঢেউ খেলে যায়
খোকাখুকুর মাঝে।
 
ঈদ এসেছে, যে করোনায়
দেশ ভরছে লাশে
খোকাখুকুর চোখে ঈদের
আনন্দটাই ভাসে।
 
ঈদ এসেছে হাসিখুশি
ভালোবাসার টানে
খোকাখুকু বাইরে ঘুরে
করোনা কী জানে?
……………………………………………
 
মধু মাসে
 
গ্রীষ্মঋতু মিষ্টি ফলের
বাহার নিয়ে আসে
রসালো ফল স্বাদের লিচু
চোখের সামনে ভাসে।
 
আম কাঁঠালের ছড়াছড়ি
সবার গাছে গাছে
মিষ্টি ফলের লোভে পরে
মনের ময়ূর নাচে।
 
ফুলের বনে ফুল ফুটে রয়
গোলাপ টগর বেলি
গ্রীষ্মঋতুর ফলের ঘ্রাণে
হৃদয়টারে মেলি।
 
গ্রীষ্মঋতু সারা মাসই
আতা জামের খেলা
জবা পলাশ ফুলের দেশে
যায় কেটে যায় বেলা।
……………………………………………
 
গোলাপ ফুল
 
চারটি গোলাপ ফুটছে গাছে
টকটকে খুব লাল..
প্রজাপতি ওড়ছে দেখি
ফুল থেকে ফের ডাল।
 
দেখতে খুবই চোখ জুড়ানো
চমৎকার এক ফুল..
অন্য কোন ফুলের সাথে
হয় না তাহার তুল।
 
উঠোন মাঝে ফুলগুলোকে
দেখতে লাগে বেশ..
ফুলের বাগান যে সব বাড়ি
দারুণ পরিবেশ।
……………………………………………
 
ইচ্ছে
 
ইচ্ছে জাগে অনেক কিছুর
টাট্টু ঘোড়া মনে
আনমনে তাই অনেক কিছু
ভাবছি নিরবক্ষণে।
 
ইচ্ছেগুলো ম্লান হয়ে যায়
পকেট যখন ফাঁকা
মন আকাশে দুখের ছবি
কালির নকঁশা আঁকা।
 
ইচ্ছেগুলো উড়াল দেয় না
অভাব যখন দোরে
হাজার সাধের পাখনা দু'টো
চারপাশে যে ঘোরে।
 
ইচ্ছেডানা ভেঙে গেলে
লুটায় ধুলো মাটি
স্বপ্ন তখন দুখের সাগর
হারায় পরিপাটি।
……………………………………………
 
বাবা
 
বটবৃক্ষের মতো বাবা
আগলে রাখে বুকে
নিজে খায় না কষ্ট করে
সুখে এবং দুখে।
 
ধরাতে আপন বলতে
আর কেহ নাই বুঝি
চলে গেলে পাবো না যে
যতই তাকে খুঁজি।
 
কদর তাকে করতে হবে
বেঁচে থাকতে ভবে
বাবার মতো দরদী মন
আর না কেহ হবে।
……………………………………………
 
আষাঢ়
 
আষাঢ় এলো বর্ষাঋতু
মেঘবৃষ্টি নামে
গাঁ ভিজে যায় বাইরে গেলে
একটু না থামে।
 
আষাঢ় এলো মেঘের কোলে
রোদের ফাঁকে
থেমে থেমে টিপটিপানির
বৃষ্টির পিক আঁকে।
 
আষাঢ় এলো গুড়ুম গুড়ুম
কাঁপে ডাকে
বৃষ্টি শেষে খোলাকাশে
রঙধনু থাকে।
……………………………………………
 
বর্ষাঋতু
 
গাছ রোপনের ঋতু এলো
আষাঢ় শ্রাবণ মাস
গাছ লাগালে পরিবেশটা
সুস্থ বারোমাস।
 
বনজ ফলজ ওষুধি আর
লাগাও যত সব
শুদ্ধ বায়ু পরিবেশটা
দিবে মহান রব।
 
আষাঢ় এলো বৃষ্টি পড়ে
গাছ লাগানো ক্ষণ
বর্ষাঋতু গাছ লাগাতে
করছি নিমন্ত্রণ।
 
একটি কাটলে দু'টি লাগাও
গাছ হলো সম্পদ
গাছ রোপনে পূণ্য মিলে
নিয়ত থাকলে সৎ।
……………………………………………
 
বৃষ্টি এলো
 
বৃষ্টি এলো বৃষ্টি এলো
টাপুরটুপুর বেসে
নারিকেলের লম্বা মাথার
চিরল পাতা ঘেষে।
 
বৃষ্টি পেয়ে ছুটছে শামুক
খালে বিলের বাঁকে
রঙিন পুঁটি সাঁতার কাটে
সবাই ঝাঁকে ঝাঁকে।
 
বৃষ্টি এলো বৃষ্টি এলো
কদম কেয়া ফুলে
কানি বকের সারি লুকায়
পাখায় দোলে দোলে।
 
দেয়া ডাকে গুড়ুম গুড়ু
বৃষ্টি এলো গাঁয়ে
মাঠে ঘাটে ভরছে যেন
ভাসা পানির নায়ে।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.