আলিফ লায়লা : আরব্য রজনী_পর্ব-৫৪
ইংরেজি অনুবাদ : ডঃ জে. সি. মারদ্রুস
বাংলা অনুবাদ : ক্ষিতিশ সরকার
-এবার এক কচ্ছপ আর এক বকের কাহিনী শোনাবো? একদিন এক বক সমুদ্রের তীরে বসে বসে জলের শোভা দেখছিলো। এমন সময় দেখতে পেলো, একটা মৃতদেহ ভেসে আসছে। লাশটা ভাসতে ভাসতে গিয়ে ঠেলো পাড়ের একটা বাঁকে। দেখলো, লোকটার মুণ্ডটা কাটা। পরনে ফৌজী পোশাক। বুঝতে কষ্ট হয় না, লড়াই হেরে গিয়ে তার এই দশা হয়েছে। যাই হোক, আনন্দে তার মন নোচে উঠলো। এমন শাসলো খানা সে অনেকদিন খায়নি। এমন সময় দেখলো, একটা কচ্ছপ। সাঁতার কেটে এগিয়ে আসছে। বকটা মাথা তুলে তাকে স্বাগত জানায়। কচ্ছপটা বলে, কি গো, বক তীরে বসে বসে কী দেখছো?
বক খুব খুশি হয়। বলে, তোমার মতো এত সুন্দর ব্যবহার আমি আর কারো দেখিনি। তুমি যে আমাকে বন্ধুত্ব দিতে চাইছে! এ আনন্দ রাখবার আমার জায়গা নাই। মন প্ৰাণ দিয়ে তা আমি গ্রহণ করলাম। তোমার এই দিল-খোলা মেজাজ আমাকে মুগ্ধ করেছে বন্ধু। জীবনে বন্ধুর প্রয়োজন অপরিহার্য। বন্ধুহীন জীবন মৃত্যুরই সামিল। বন্ধুর কথা, বন্ধুর হাসি, গান জীবন মধুর করে। তোলে। যে তার নিজের মনের মতো বন্ধু খুঁজে নিতে পারে সেই বুদ্ধিমান। আমাদের সমাজে সে-রকম একজনকেও এ যাবৎ আমি খুঁজে পাইনি। সব বকরাই ভীষণ স্বার্থপর আর হিংসুটে। তারা এমনই হাঁদা বোকা যে, কোন একটা ভালো কথার ধারে কাছে দিয়েও ঘেঁষে না। শুধু তাদের একমাত্র লক্ষ্য, কি করে ভালো ভালো মাছ ধরবে, আর বাচ্চা পয়দা করবে। তারা সবাই বড্ডো বেশী আত্মকেন্দ্ৰিক। আল্লাহর নাম তারা ভুলেও কখনও মুখে নেয় না। শুধু ঠোঁট দুটো চোখা করে ওৎ পেতে বসে থাকাই তাদের একমাত্র কাজ। আল্লাহ যে তাদের দু’খানা পাখাও দিয়েছে সে-কথা তাদের মনে থাকে না। দূর দিগন্তে নীল আকাশের নিঃসীম শূন্যে পাখা মেলে উড়ে বেড়াবার যে কি নির্মল আনন্দ তা তারা কোনও দিনই জানতে পারলো না। জানতে চাইলোও না।
কচ্ছপ এতক্ষণ নীরব শ্রোতা ছিলো এবার সে আর চুপ করে থাকতে পারলো না, তুমি এত সুন্দর সুন্দর কথা কি করে বলো, ভায়া। এসো, আমরা একটু আলিঙ্গন করি। বক নিচে নেমে আসে। ওরা দুজনে গভীর আশ্লেষে কোলাকুলি করে। বলে, তোমার স্বজাতিদের মধ্যে তোমাকে শোভা পায় না। তাদের না আছে তোমার মতো জ্ঞানাগরিমা-না জানে তারা তোমার মতো এইরকম বাদশাহী আদব-কায়দা! কি দরকার তোমার জাতিভাইদের মধ্যে গিয়ে নিজেকে কুপ-মণ্ডুক করে রাখার। তার চেয়ে চলো, কোথাও গিয়ে আমরা একটা ঘর বেঁধে বসবাস করিগে। সুন্দর একটা নদীর ধারে একটা গাছের কোটরে আমরা বাস করবো। খাবো দাবো। আর মনের আনন্দে গান গেয়ে ঘুরে বেড়াবো, কেমন?
এই কথা শুনে বক বলে, আল্লাহকে অশেষ ধন্যবাদ-তোমার মতো এমন একজন বন্ধু মিলিয়ে দিলেন তিনি।
এই সময়ে শাহরাজাদ থামালো। রাত্রি প্রায় শেষ হতে চলেছে। বাদশাহ শারিয়ার বলে, শাহরাজাদ তোমার সব গল্পগুলোই বড় মধুর। এসব কথা শুনতে থাকলে-হিংসা দ্বেষ মুছে গিয়ে ধীরে ধীরে মানুষের সুকুমার বৃত্তিগুলো জেগে উঠতে থাকে। সেই জন্যে বলছি, তুমি কোনও ধূর্ত নেকড়ে বা কোনও হিংস্ব জন্তু জানোয়ারের কাহিনী শোনাও।
–তাহলে, ওধরনের মজার মজার অনেক গল্প আমার জানা আছে। শাহরাজাদ বললো, কিন্তু আজ তো রাত কাবার হয়ে গেছে। কাল রাতে শোনাবো জাঁহাপনা।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments