শুভ্র শরৎ ১৪২৭ : পর্ব-৪
শুভ্রতার কথা আসলেই আমাদের চিন্তায় ভেসে উঠে কাশফুলের শুভ্রতা। শাদা মেঘের উড়া উড়ি। যেনো সে বয়ে নিয়ে যায় জান্নাতী শুভ্রতা। যেখানে কেবলী পবিত্র এক অনুভূতি। পরিস্কার নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ফুল ফুটে। জমিনেও সবুজ প্রকৃতির মাঝে কাশফুলের শুভ্রতা। এই জন্যই সৃজনশীল মানুষ এই ঋতুকে রাণী বলে। বাংলার আকাশে যখন এই বৃষ্টি এই মেঘ। এটা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি। তিনি বলেছে ‘আমি যদি বেঁচে থাকি তবে এরকম এক প্রকৃতিতে বেঁচে থাকতে চাই। কিন্তু আমার অনেক কাজ। সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তিব্বত জয় করেই আমি আবার বাংলায় ফিরে আসবো। আর আল্লাহ যদি হায়াত দেন তবে বাংলাতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে চাই।’
শহৎকাল এমন এক ঋতু যার ভেতর বাহির সবই শুভ্র। তার আকাশ থাকে পরিস্কার, নীল নয়না আকাশে টুকরো টুকরো শাদা মেঘের ভেলা। মেঘকাটা প্রকৃতিতে থাকে সবুজ পাতার সজীবতা। কমতে থাকা বিলে ঝিলে শাদা শাদা শাপলা ফুল। যেনো স্বচ্ছ কাচের উপর বসে আছে সুন্দরী শাপলাফুল।
এমন দৃশ্য দেখে সৃজনশীল মানুষের হৃদয়ে দোল খায় শুভ্র চিন্তা। সে চিন্তায় মগ্ন হয় সৃজনে। লিখে কবিতা, গল্প, গীতিকবিতা আরো কতো কী! যেনো এই প্রকৃতি তাকে দিয়ে লিখেয়ে নেই শুভ্রপ্রেমের বয়ান। ‘মোলাকাত’ ডটকম শুভ্র শরৎ নামে শরৎ সংখ্যার আয়োজন করে। লেখক বন্ধুরা তাদের সৃজনক্রিয়া আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। সেই সকল সৃজিত
লেখা
নিয়ে আমরা প্রকাশ করলাম শুভ্র শরৎ ১৪২৭
: ৪র্থ পর্ব।
এ
সংখ্যায়
আছে
কুড়ি
জন
লেখকের
লেখা।
আমরা আশা করি লেখক-পাঠক সকলেরই ভালো লাগবে। সকলকে শরতের শুভ্র শুভেচ্ছা। আবার মোলাকাত হবে শুভ্র শরৎ ১৪২৭ এর ৫ম
পর্বে সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সম্পাদক
মোলাকাত
শরৎ স্লোগান :: অনন্য মিত্র
শারদদৃশ্য :: অনু ইসলাম
ভাদ্রের পরে আসে আশ্বিন :: রানা জামান
শরৎপত্র :: মনিরুজ্জামান মিন্টু
এই তো শরত :: শাহজাহান মোহাম্মদ
শরতে মিলবে মুক্তি :: কমল কুজুর
নীল সবুজের পাল :: জালাল খান ইউসুফী
ফুলকচুরি ফুলের কথা :: মালেক মাহমুদ
শরৎ হলো :: রেজা ফারুকী
শরতের সকাল :: যুবায়ের আহাম্মেদ
শরৎ আর কাশফুল :: আসাদুজ্জামান শাওন
মেঘকাশফুল :: সৌরভ হোসেন
শরৎচিঠি :: অনন্য কামরুল
রজচক্র :: শায়লা আক্তার
সিক্ত উনুন :: ইব্রাহীম ইউসুফ
হাসিনা বিবি :: সুমন নন্দ
শরতের স্বপ্নঘোর :: আবু আফজাল সালেহ
শরতের বিকেল :: ইসমাইল বিন আবেদীন
মনে পড়ে সেই শরৎ সন্ধ্যা :: এম.এস ফরিদ
..................................................
আবদুস সালাম
ডুবে যায় নিসর্গ মগ্ন বোধের আলিঙ্গনে
নিসর্গ খুন হয় প্রতিদিন ভ্রান্ত ছায়ায়
শোকেসে সাজিয়ে রাখি সর্বনামময় মোহকথা
শূন্যে ছুঁড়ে দিই ক্ষোভ আর করুণ প্রবাহ
ঘড়ি পেন্ডুলামে বাঁধা, ঝাপসা সংস্কৃতি
থেকে থেকে জেগে উঠে শীতের উদ্বেগ
..................................................
অনন্য মিত্র
শরৎ মানেই কাশের বনে দোলা,
পুজোর ছুটি হচ্ছে শুরু,
এটার প্রতি আমার বড় ঝোঁক,
সাজছে আকাশ,সাজছে বাতাস,
..................................................
অনু ইসলাম
মনোবৈঠা আজও তা অন্বেষণ করে হলুদডোবা সন্ধ্যাবেলায়
আকাশপরিধি বেয়ে ছেঁয়ে গেছে আগুনকুসুম রঙ; জলআয়নায়—
নতুনের;- জয়ের ভেতর এতটা দুর্বার পরাজয় থমকে যাক
সুন্দর, তুমি তো লুকিয়ে থাকো নিজেরই আড়ালে ডুমুরেফুল হয়ে—
রানা জামান
আশ্বিন ভাদ্রের পরে
মাঠ প্রান্তরে সবুজ ধানে
খুশি চাষির ঘরে
পানির ভয়াল ধারা
দেশি মাছে ডোলা ভরতে
থাকে অনেক তাড়া
ফুটে থাকে গাছে
শরতের স্বাদ পেতে চাইলে
চলো পল্লীর কাছে।
..................................................
মনিরুজ্জামান মিন্টু
শাহজাহান মোহাম্মদ
ছুটছে অচিন দেশে
ঝুমুর ঝুমুর পরীর রানী
কাশ ফুলের বেশে।
বিলের জলে হাসে
বলাকারা পালক মেলে
দূর আকাশে ভাসে।
কৃষ্ণাণ বউরে আঁচল
স্বপ্নে দোলা সবুজ ক্ষেতে
নয়ন জুড়ানো কাজল।
ছেলেমেয়ের মেলা
এই তো শরত, সাজ ধরেছে
নিত্য সারাবেলা।
..................................................
কমল কুজুর
অবশেষে চোখ মেলে তাকান
জগৎ দেখে বিস্মিত হতবাক হয়ে পড়েন।
তাকে ক্রমশঃ দ্বিধান্বিত করে।
সংস্পর্শে জরাগ্রস্ত সন্ধ্যা আনে ডেকে।
পেঁজা তুলোর মতো ভেসে ভেসে আসা
শ্বেত শুভ্র মেঘ যেন অভয় দিয়ে যায়।
একটু একটু করে যাক দূরে সরে আতংক
আসুক ফিরে জগতে মধুসম্ভার।
..................................................
জালাল খান ইউসুফী
গ্রামের মেয়ে হাঁটে
কলসী ভরে জল তুলে নেয়
সুরমা নদীর ঘাটে।
সুর্যরাজের আলোক তাতে
আলতা রাঙা পায়ের সাথে
মুক্ত করে খেলা।
সওদাগরের হাঁটার মতো চলার গতিবেগ।
শরৎ রানি মেঘের বুড়ি
নদীর পাড়ে কাশ
কাশবাগানের একটু দূরে
বাগান ভরা বাঁশ।
উদাস এ মন উঠল গেয়ে
পল্লীগীতি গান
শরৎ রূপে মুগ্ধ কবি
উদাস কবির প্রাণ।
একটি শরৎ কাল
এই মেয়েটি দেয় উড়িয়ে
নীল সবুজের পাল
..................................................
মালেক মাহমুদ
নদীর মাঝে ঢেউ খেলে
ঢেউয়ের সাথে অছড়ে পড়ে
জীবন তখন নড়বড়ে
কোথায় নেবে ঠাঁই
ফুলকচুরি ভাই
ঠাঁই যদি পায় ঝিলের জলে
ফুল ফুটে সে গল্প বলে
ফুলকচুরি ফুল
আনন্দ বুলবুল ।
ফুলকচুরি ফুল রাশে
ডোবার জলে ফুল হাসে
দেখতে লাগে ভালো
শরৎ সকাল আলো,
আরো খুশি মৌটুসি
ফুলকচুরি রাঙিয়ে
ফুলের তোড়া বানিয়ে
আনন্দ পায় খুব
ওরা ফুলকচুরির রূপ।
..................................................
রেজা ফারুকী
শিউলী তলায় ফুলেল মালায়
মৌ মৌ গন্ধ মেলে ধরা
নীলাম্বরে
সফেদ মেঘের পাহাড় গড়ে তোলা,
শাপলা রাশী বাশী
মৎস্য শিকারের লাগি
বেজায় মাতোয়ারা
চলে-
পলো ওঁচা জুইতা জালে
মাছকে ঘিরে ফেলা
খালই বোঝাই করা
মাছ ধরারই উৎসব যেনো
মন কাড়ারই মেলা
মন মাতানো
জারী সারি গানের দেহলিজ-
শরৎ হলো কাশের বনে শ্বেত শুভ্রের মেলা
নীলাম্বরে
সফেদ মেঘের পাহাড় গড়ে তোলা।
..................................................
যুবায়ের আহাম্মেদ
বাতাসে হেলে দুলে ওঠা কাশফুলের পানে
মুগ্ধ! ওগো মুগ্ধ আমি….
হয়ে যাই র্নিবাক
তিনিই মহান স্রষ্টা আমার
যাঁর রয়েছে নিখুত সৃষ্টির হাত।
ছেড়া ছেড়া শুভ্র মেঘ
সুর্যের আলোয় আলোকিত হয়
চির সবুজের দেশ।
দেখেআনমনে গাই তোমারি গুণগান
আমি গুণাহগার পাপী
তুমি রাহিম রাহমান।।
..................................................
আসাদুজ্জামান শাওন
শরৎতের শুভ্র এক বিকেল বেলা
নীল রং দিয়ে লেপটে থাকা একটা নীল আকাশ,
যেন তেল রঙ দিয়ে আঁকা কোনও শিল্পীর পোট্রেইট।
ঠিক নীল আকাশটার নিচে আমি দাঁড়িয়ে,
আর পাশ দিয়ে বয়ে চলা একটা নদী।
নদীর পাশে বিস্তৃর্ণ কাশফুলের মাঠ
যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে,
শত শত বছর ধরে।
আর কাশফুলের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে,
হলুদ রঙের শাড়ী পড়া আমারই মহাকাল!
খুব শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
যেন একটা স্বর্গের অপ্সরী,
আমারই অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।
আমাকে দেখে হয়ত বড্ড অভিমান করে আছে মহাকাল,
খুব দেরী করে ফেলেছি তো তাই!
বড্ড রাগ করে আছে পাগলীটা,
চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে দূরে।
এই মহাকাল!
কি হয়েছে তোমার?
খুব রাগ করেছো বুঝি,
দেখো আর কোনদিন এমনটা হবে না,
আর কোনদিন দেরী করবো না আমি, মহাকাল।
এই যে আমি প্রতিজ্ঞা করলাম!
মহাকাল,কথা বলোনা একটু,
চুপ করে থেকো না!
অতঃপর একটু একটু করে মহাকালের সম্মুখে এগিয়ে যাওয়া,
তখনও মেয়েটা বড্ড অভিমান করে দাঁড়িয়ে আছে।
এতটা অভিমান যে,
আমার দিকে ফিরেও তাকালোনা।
মহাকাল,কাশফুলের দিকে চেয়ে আছে একদৃষ্টিতে!
যেন কাশফুলের কাছে নালিশ করছে আমার বিরুদ্ধে।
এই মহাকাল!
আমার চোখের দিকে একবার তাকাও না,
একটি বার না হয় তাকাও।
বললাম তো আর এমনটা হবে না
এই দেখো আমি কানে ধরে আছি।
একবার শুধু তাকাও,শুধু একটি বার!
তারপর চুপটি করে মহাকালের কাছে যাওয়া,
কানের কাছে মৃদু শব্দে বলা ভালোবাসি মহাকাল।
তারপর অভিমান ভুলে বুকের গহীনে অবসাদ আশ্রয় খোঁজা মহাকালের;
আর মহাকালের চোখ দিয়ে একরাশ অশ্রু ঝরে পড়া আমারই বুকে,
আর কয়েক’টি বাক্য দিয়ে গড়া একটা মধুর ঝগড়া।
অতঃপর মহাকালের প্রতিশ্রুতি বদ্ধ দু’টি হাতে বন্দী আমার হাত,
অতঃপর চোখে-চোখে বন্দী দু’জন অনন্তকাল,
ঠোঁটে-ঠোঁট রেখে তৃষ্ণা নেওয়ার নির্লজ্জ সহবাসের রংচটা প্রতিযোগিতা।
কাশফুলে লেগে থাকা কয়েক’টা মলিন স্মৃতির স্পর্শ!
তারপর নদীর তীরে বসে স্বচ্ছ পানিতে নিজেদের প্রতিচ্ছবি দেখা,
আর খালি চোখে দেখা নীল আকাশের রঙিন পোট্রেইট।
তারপর গোধূলি বেলার শেষ লগ্নে বন্দী,
তোমার আর আমার রং-চটা স্কেচ্।
অতঃপর ইতিহাসের শেষ অধ্যায়!
যেন কাশফুলের কলম দিয়ে শরৎতের পৃষ্ঠায় লেখা,
তোমার আর আমার এক অন্য প্রণয়-কাব্য।
..................................................
সৌরভ হোসেন
তুমি জানো তারা তবুও ভালোবাসে নিবিড় ভাবে।
তারা একে অপরের ওতপ্রোত জড়িত,
তারা সাদা বলে বলছিনা!
আকাশ ভয় দেখায় মেঘ'কে, মেঘ ভয় পায়,
নদীজল ভয় দেখায় কাশফুল'কে, সে ভয় পায়।
তবুও তাদের ভালোবাসা কখনো দমে নাহ্।
কাশফুলের সেই সে শরৎ সুন্দর্য,
ঢেউ খেলানো রূপের মাধূর্য, হারিয়ে যায় একটা সময় শুকিয়ে, পঁচে গোলে, নষ্ট হয়ে যায় বিলিন হয়ে যায়।
তখন মেঘের কান্না বৃষ্টি হয়ে ঝরে পরে!
তার আত্মহুংকার শুনোনি?
দেখনি তার শরীর ফাঁটা বেড়িয়ে আসা আলো?
তীব্র সাদা রশ্মিজাল আলো।
সে আকাশের বুকেই লিখে যায় তার নাম অবিরত, ক্ষতবিক্ষত!
বিদ্যুৎ চমকায় তুমি ভয়পাও?
সে তো মানুষ নয় যে তুমি রক্ত দেখবে!
প্রিয়জন বিয়োগজ্বালা কতটা বেদনাতুর,
কতটা বিষাদময়, তুমি জানো?
পাগল হয়ে যাওয়া মেঘ, তার শুভ্রতা হারায়,
একটা সময় কালো, একটা সময় ছিন্নভিন্ন।
তবুও সে জাগে, সে স্বপ্ন দেখে, সে থাকে
তার ফেরার অপেক্ষায়।
একটা দিন যায়, একটা সপ্তাহ যায়,
একটা মাস যায় এভাবে বছর চলে যায়।
পুনঃজন্মে কাশফুল ফিরে আসে।
তাহলে মানুষ কেনো পারবেনা থাকতে অপেক্ষায়?
তুমি আমি দূরে, আজ বহুদূরে, তুমি পারবে?
আমাকে দেখো, আমি চুপটি করে সাদামেঘ হয়ে,
আজও আছি তোমার অপেক্ষায়!
তোমারি'ই প্রতীক্ষায়।
যদি তোমার কখনো পুনর্জন্ম হয়!
তুমি আসবেতো সব ভুলে? অতীত স্মৃতি ফেলে?
আমি থাকবো আকাশ মেঘে, শুভ্র তুলো এঁকে,
তুমি না হয় দূরেই থেকো মাটির বুকে লেগে।
তাকে দেখো, যত্নে থেকো, ভালো রেখো,
আমি না হয় মেঘ হয়েই রাখবো তোমায় ঢেকে।
সকাল বিকাল জল ছিটাবো,
দেখব তোমায় রেখে, থাকবো তোমাতে মেখে।..
অনন্য কামরুল
কাশফুলের মৌন-কাতরতা- স্বচ্ছতার নির্লোভ আগমনী-
ছুঁয়ে যায় বিমর্ষ অন্তঃরন্ধ্র- কল্পকথার ফুল্ল বন্দর...
ভেঙে যাওয়া চক্রের বিপ্রতীপ স্রোতে
নম্র্র হাসির মধুরতা জ্বেলে, উপদ্রুত ব-এর পৃষ্ঠায়
নৈঃশব্দ্যে রেখে যায় একতারার অমোঘ সংবেদ, শুভ্রতার বৈভব-
শায়লা আক্তার
দেখছে জামার দাগ
আত্মসম্মানে পড়লো কাঁটা
হচ্ছে লজ্জা, রাগ।
৩-৪ দিন বাদ যায়
শিক্ষকরা সব প্রশ্ন করে
জবাব মিথ্যে হয়।
ঘন্টা,ঘন্টা যায়
সেনোরা হাতে পুরুষ চক্ষু
আমায় গিলে খায়।
হয় না কভু বলা।
মা বলবেন বাজে বকছিস
ঠিক নেই তোর চলা।
বাড়ন্ত মেয়ের ভয়,
রক্তস্রাব হয়!
অস্বস্তি, লজ্জা,ভয়ে
রজচক্র বারংবার আসে
মাতৃত্ব নিয়ে বয়ে।
..................................................
ইব্রাহীম ইউসুফ
বন্যায় আছে পানি বন্ধি
লাখো লাখো লোক,
কলা গাছের ভেলায় ভাসে
দেখে লাগে শোক
সিক্ত উনুন রিক্ত পকেট
খাবার নাহি পায়,
কতেক আছে ভোটের তরে
ত্রাণ বিলাতে যায়
ছোট্ট কালে আটাশিতে
বন্যা আসে হায়!
চার সালে'ও পানি বন্ধি
মানুষ নিরুপায়
ক্ষেতের ফসল তলিয়েছে
পানির নিচে হায়!
কৃষকরা তাই দিশেহারা
হবে কী উপায়
এবার'ও যে বন্যা হবে
সুর শুনা যায় সুর,
রক্ষা করো মা'বুদ খোদা
বন্যা করো দূর।
..................................................
সুমন নন্দ
আর বনমালীর পাঁচিল পেরিয়ে ঝাঁকড়া মাথায়
বেয়াড়া গাছটার বুকে কিছু শিউলি ফুটেছে,
তবু যেন... শরৎ আসে নি...
পাড়ায় সকল প্রবীণ তখন ব্যস্ত আড্ডায়,
বাজারে চড়াদাম- থিম- সবজি আগুন বা,
দুটো কুকুর আস্তাকুড়ের পাশে তখন
গুটিসুটি মেরে শুয়ে,
হঠাৎ চোখ মেলে ওরা,
এগিয়ে গেল দুলকি চালে ওরা আস্তাকুড়ের দিকে
ঘাড় উঁচিয়ে দেখলো কিছু, তারপর
চিৎকার করে উঠলো, আর্তনাদ ...
বিরক্তিভরে আস্তাকুড়ের দিকে চাইলো,
-আরে হ্যাঁ,হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন৷
-চলুন তো, দেখে আসি, চলুন
-চলুন৷
প্রবীণের দল লাঠি ঠুকে এগোল আস্তাকুড়ের দিকে
একটু উঁকি মারলো, আবর্জনার মাঝে ওদের
দৃষ্টি টানলো পড়ে যাওয়া রমনীর সিঁদুরের মতো
লাল একটা পুঁটলি, সেটা নড়ছে, থেমে থেমে
কারোর মনে উঠলো কৌতুহল, কারোর ভয়- বিষ্ময়
-এটা আবার কী?
-খুলে দেখি, কী বলুন?
-আচ্ছা দাঁড়ান৷
একজন এগিয়ে গিয়ে পুঁটলি তুলে বলে
-এ মা, এতো একটা বাচ্চা মনে হচ্ছে!
পুঁটলি খুলতেই শেষ ভোরের শিশিরের মতো একটা মুখ, ঠোঁটটা চেটে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে, আঙুল চুষে
মাকে ডাকতে চায়, কিন্তু পারে কই!
অনাথ এই শিশু তখন আপনমনে আঙুল চুষছে আর মাঝে মাঝে কেঁদে উঠছে খিদে চাগাড় দিলে,
-ঠিক বলেছেন৷
ও এখন আস্তাকুড়ের মতোই অদরকারী, অতিরিক্ত
না থাকলেই বোধহয় ভালো ...
ও হাসিনাবিবি, কয়েকঘর কাজ করে খোরাক জোগায় সংসারের, চারটি ছেলে, একটি সবে হলো
ওদের বাপ মোড়ের মাথায় ভ্যান ঠেলে
মোটের ওপর সুখী...
বাচ্চাটা নিয়েই বুকে জড়িয়ে চিন্তিত মুখে ওর মাথায় হাত রাখলো,
বলেই মাই গুঁজে দিল ওর মুখে
খামচে ছিনিয়ে নিলো ও, বেঁচে থাকার ওই
শেষ আশাটুকু
বুকের ওপর কচি মুখে কাপড় টেনে হাসিনাবিবি বললো
-ওকে আমি নিলুম, ও আমার ব্যাটা এখন থেকে
বুঝলে তোমরা
এখন থেকে আমিই ওর সব, ওর মা...
শিউলিটাও ঝরে রাস্তা ভরিয়ে ফেললো
পেঁজা তুলো মেঘও এলো, কিন্তু
হাসিনাবিবিদের হাত ধরেই
মনে হয় শরত এলো...
আবু আফজাল সালেহ
কাশবনের শাদা-পেলব ঢেউ
চকচকে নীল আকাশ, শুভ্র মেঘ
মিষ্টি বাতাসে তার দুধেল পিঠে
কালো মেঘ খেলা করে।
হারিয়ে যাচ্ছি আনমনে, স্বপ্নঘোরে।
..................................................
ইসমাইল বিন আবেদীন
স্নিগ্ধ শরৎ ঋতু,
মেঘ বালিকা মিতু।
বেলেমাঠের চরে,
ফিরে যেতাম ঘরে।
অন্য ফসল ফলে,
ভ্রমর দলে দলে।
আকাশ ভরা মেঘে,
তুমুল গতিবেগে।
শরৎ বিকেল বেলা,
সাদা মেঘের ভেলা।
..................................................
এম.এস ফরিদ
যেখানে আলোছায়ার খেলা দেখে ছিলাম দুজন মিলে।
চারপাশ জুড়েছিলো কাশফুল,হিমঝুরি আর গগনশিরীষ
নীল আকাশের তলে বয়ে যাওয়া সমুদ্রের বুকে তার প্রতিচ্ছবি
দেখতে দেখতে অনেকটা বিকেল গড়ালো আমাদের।
গড়ালো কত শত আলাপন আর স্বপ্নীল মধুরতার আবেগময়ী প্রহর।
সাদাটে মেঘের উপর ভাসতে ভাসতে হারিয়ে গিয়েছিলাম
তামাম শরতের আকাশ পানে ।
ধান ক্ষেতের রৌদ্র ছায়ায় আলিঙ্গন করতে করতে
কেটেছিল তোমার আমার শরৎ সন্ধ্যা।
জমিনের সবুজ রঙ যেনো গাঢ়ো হয়েছিলো সেদিন।
নীলের ছটা ছড়িয়েছিলো তোমার অঙ্গনজুড়ে নীলাভ শাড়িতে।
আমি কখনো মেঘ কখনো শরৎ ফুল হয়ে পাশে ছিলাম তোমার।
পান্থপাদপের আঁড়ালে সন্ধ্যার সাঁঝ যেনো উঁকি মেরেছিলো
নদীর ধার বেয়ে বেয়ে ফিরে ছিলাম শরতকে আলিঙ্গন করে।
আজোও মনে পড়ে সেই শরৎ সন্ধ্যা খানি।
জীবনের প্রতিটি শরৎ মুহূর্ত এলে; খুব গোপনে…
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Facebook: facebook.com/samoiki
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments