সাইফুল আরেফীন’র দীর্ঘ কবিতা ভাদ্রের শোকগাঁথা
আমাদের আদরের ছোটবোন রীতা, রক্তে গেড়েবসা ক্যান্সারজীবানুর বিরুদ্ধে দশমাস ধরে লড়েছে। সাধ্যের সমস্ত প্রচেষ্টা বুলন্দ করেও ২০ আগস্ট, ভাদ্রের ৫ তারিখ আমরা মাথা নত করলাম আরশের হুকুমের প্রতি, আর তার চোখজোড়া বন্ধ হলো জুলুমবিহীন এক মানবিক সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখতে দেখতে। সেই স্বপ্নগুলো এখনও উড়ে বেড়ায় আযানের সুরের সাথে, ইথারে ইথারে, হাজারও বিশ্বাসীচোখের সন্ধানে, যেখানে তারা আবারও আশ্রয় গড়ে নেবে।
তোর সমুদ্র বিশাল চোখে স্বপ্ন ছিল-
কোথাও রবে না একটুও ভুল।
খুব অনিচ্ছায় ফোন ধরে বলবি,
হন্তদন্ত বলবে-
কপটরাগে গামছা হাতে বলবি-
তুই স্বপ্ন দেখতি-
এসে বলবে:
আমাকে ফিশিংগেম কিনে দেবে, মা?’
বলতে গিয়ে তুই খুব মন খারাপ করে ফেলবি;
তবে নিশ্চয় আমি তোকে ফিশিংগেম
কিনে দেব মা। ... ... কাঁঠালের
বিচি দিয়ে কাটুয়ার ডাটা রান্না হয়েছে,
বলতে বলতে চলে যাবে-
‘অভিযোগ’ বলে কোন শব্দও কি ছিল তোর
অভিধানে?
বর্ষার পানি দরদর ঢুকে পড়লে-
ক্যাথা-কাপড় গুছিয়ে নিয়ে বসে থাকতি
ঘরের এক কোনে;
আমি জানি। আমিই জানি
শুধু স্বপ্নের খুঁটি আঁকড়ে
দারুন দূর্যোগেও তুই টিকে যেতিস
বুকের মধ্যে এক লড়াকু বিশ্বাস পুষে-
সব স্বপ্ন বুঝি চাপা পড়ে গেলো?
স্বপ্নের ফিরে যাওয়া গোধূলী রঙটুকুও
আর অবশিষ্ট নেই সেখানে।
আচ্ছা-
অথবা দূর নক্ষত্রের গাঁয়ে,
অথবা বাঁশঝাড়ের হিমতলায় মিথেনের আলেয়া- আলোয়,
সৌরজগতের কোনো এক চলমান গ্রহের কক্ষপথে?
আমি জানি না- ‘স্বপ্নের অবিনাশীতাবাদ’-এর
কোন অর্থ আছে কিনা।
মানুষেরা যখন আবার নিমগ্ন হলো কাজে;
পশ্চিমে হেলে না যেতেই...
স্বপ্নশূণ্য তুই নি:সাড় পড়ে। যেনো
কার্বনশূন্য ব্যাটারির নিশ্চল দেয়ালঘড়ির পেণ্ডুলাম।
বিক্ষত-বিধ্বস্ত, জখম-বিকৃত তিকরীতের ময়দান!
নফস আর কলবের মতো বেশুমার লড়াই হয়েছে।
দশটি মাসের। স্বপ্ন আর মৃত্যুর মাঝে।
অবিরাম,
দারুন ক্লান্ত,
যেন, পলাশীর প্রান্তরে মাতৃভূমির জন্য লড়াই শেষে
সিরাজের নি:শেষ আÍসমর্পন।
যখন চলছিল আমাদের দী-র্ঘ পথ পরিক্রমা,
যখন আমাদের সমগ্র মধ্যরাতের প্রার্থনা
আর প্রানান্ত কোশেশ এক সাথে রাস্তায় পদাতিক শামিল,
তুই বলে বসলি- হঠাৎ-
আর আাসামীরা?
অথচ
এ আমার কেমন নিয়তি মা,
চকিতে পাল্টা ঠনঠন উত্তর:
কোনও ভয় নেই, এইতো আর ক’টা দিন ...’
আমাদের ফিরে আসা নির্দিষ্ট সেই হাসপাতালের তেতলায়,
সাথে রাশি রাশি গান-কবিতা আর নানান হাসি-কৌতুক-গল্প।
উন্মুখ হয়ে থাকা তুই
কখনও কখনও হাসির দমকে ভড়ং গলায় বলতি-
কারণ, তিনি এক সর্বংসহা মা।
আর তিনি তো কেবল বুকের ওপরে দুহাতে আগলে আছেন
টাল-মাটাল এক অসম্ভব পাহাড়।
সেই নিরস্ত্র-সাহসী একাকী যোদ্ধার কাছে কেনো তুই প্রশ্ন করিস-
সীমাবদ্ধতা-ই মানুষ।
আর, মানুষের হাসি-কান্নার সেই মালিক!
ভাদ্রের এক নরক দুপুরে
তুই জানিয়ে দিলি: ‘বি ... দা ... য়।’
নারীর যে নাড়ী-ছেঁড়া চিৎকার
তার অনেকগুন যন্ত্রণায়
দশটি মাস শিয়রে বসে থাকা
গর্ভধারিনিীর কলিজাছেঁচা আর্তচিৎকারে
কঁকিয়ে উঠল ভাদ্রের রুদ্ধ বাতাস!
বুমেরাং আঘাতে বেজে উঠল
আমাদের বিশ্বাস ও বাস্তবতার দেয়ালে।
আমরা ঋজু হলাম অস্ফুটে- প্রভু, ক্ষমা করে দাও ... প্রভু!
সুখ অনাঘ্রাতা
আর বিদীর্ণ কষ্টের নিস্পেষিতা’র গন্তব্য
সেই সফেদ ঝর্ণার কলরোল
আর শীতল ছায়া-বৃক্ষের এক নিশ্চিত সবুজ বাগানে;
আর আমরা, নাস্তিক নই।
গাঢ় সবুজ সেই বাগানের প্রবেশ পথে দিগন্ত বি¯তৃত
আলোক সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে, রীতা
তুই কি আমাদের দিকে ফিরে বলবি-
আয় আমার সাতে- এই সবুজ বাগানে-
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments