বিষাদ সিন্ধু : মীর মশাররফ হোসেন_মহরম পর্ব : ২৩তম প্রবাহ

স্বা­র্থ­প্র­­বি­নী গর্ভ­­তী আশা যত­দিন সন্তান প্র­সব না করে, তত­দিন আশা­জী­বী লো­কের সং­শিত মা­­সা­কা­শে ইষ্ট­­ন্দ্রের উদয় হয় না। রা­ত্রির পর দিন, দি­নের পর রা­ত্রি আসি­তে লা­গিল। এই রক­মে দি­বা-রজ­নীর যা­তায়াত। জেয়াদের মা­­সা­কা­শে এত­দিন শা­ন্তি­­ন্দ্রের উদয় হয় নাই। সর্ব­দা অন্য­­­স্ক। সর্ব­দাই দু­শ্চি­ন্তা­তে চি­­নি­­গ্ন। ইহা এক প্র­কার মোহ। জেয়াদ্ দিন-দিন-দিন গণ­না করি­তে­ছেন, ক্র­মে গণ­নার দিন পরিপূর্ণ হইল। মদি­না হই­তে কা­সে­দ্ ফি­রিয়া আসিল, কু­ফা আগ­­নে হো­সে­নের ঐকা­ন্তিক ইচ্ছা থা­কা সত্ত্বেও এত­দিন না-আসি­বার কা­রণ কী? দি­নের পর দিন যা­­তে লা­গিল, সূর্যের পর চন্দ্র আসি­তে লা­গিল, বি­না চন্দ্রে নক্ষ­ত্রের উদয় সম্ভব। সে দিনও ক্র­মে ক্র­মে উত্তী­র্ণ হইল, নি­শ্চয় যে­দিন আসি­বেন সা­ব্য­স্ত করিয়াছি­লেন, তা­হাও গত হইয়া গেল, তা­হার পর পরি­জন লইয়া এক­ত্র আসি­বার যে বি­­ম্ব সম্ভব তা­হাও গণ­না করিয়া শেষ করি­লেন। কি­ন্তু হো­সেন আসি­লেন না; জেয়াদ্ বড়ই ভা­বিত হই­লেন। দি­বা­রা­ত্রি চি­ন্তা! কি কৌ­­লে হো­সে­­কে হস্ত­গত করিয়া বন্দি­ভা­বে এজি­দের হস্তে সম­র্পণ করি­বেন, সেই চি­ন্তাই মহা প্র­বল। পু­­রায় সং­বাদ পা­ঠা­­তে মন­স্থ করিয়া ভা­বি­লেন, "যে বং­শের সন্তান, অন্ত­র্যা­মী হই­তেই-বা আশ্চ­র্য কী? আমার অব্য­ক্ত মনো­গত ভাব বোধ হয় জা­নি­তে পা­রিয়াছেন। আবার সং­বাদ দিয়া কি নূতন প্র­কার নূতন বি­­দে নি­­তিত হইব?" পরা­­র্শ স্থির হইল না। না­না­প্র­কার ভা­বি­তে­ছেন, এমন সময়ে নূতন সং­বাদ আসিল, মদি­না হই­তে হো­সে­নের প্রে­রিত সহ­স্র সৈন্য­সহ মো­স্লেম আসিয়া নগ­রে উপ­স্থিত! রা­­­­বা­রে আসি­তে ইচ্ছুক। পর­ম্প­রায় এই সং­বাদ শু­নিয়া জেয়াদ্ আরো চি­ন্তিত হই­লেন। হো­সেন স্বয়ং না আসিয়া দূত পা­ঠা­­বার কা­রণ কি? হই­তে পা­রে এটি আমার প্র­থম পরী­ক্ষা। আমার মনো­গত ভাব জা­নি­বার জন্যই হয়তো দূত প্রে­রণ। মনে মনে এইরূপ স্থির করিয়া সা­­রে মো­স্লে­­কে অভ্য­র্থ­না করিয়া সভা­গৃ­হে আনি­তে প্র­ধান মন্ত্রী­কে আদেশ করি­লেন
মো­স্লেম সভায় উপ­স্থিত হই­লে জেয়াদ্ কর­জোড়ে বলি­তে লা­গি­লেন, "দূতবর! বোধ হয়, প্র­ভু হো­সে­নের আজ্ঞা­ক্র­মেই আপ­নার আগ­মন হইয়াছে। প্র­ভুর না আসি­বার কা­রণ কী? সি­­হা­সন তাঁহার জন্য শূন্য আছে। রা­­কা­র্য বহু­দিন হই­তে বন্ধ রহিয়াছে। প্র­জা­গণ সভা­­দ্গণ প্র­ভুর আগ­মন প্র­তী­ক্ষায় পথ­পা­নে চা­হিয়া রহিয়াছে। আমি যে চি­­কি­ঙ্কর, দা­সা­নু­দা­সেরও অনু­­যু­ক্ত, আমিও সেই পবি­ত্র পদ­সে­বা করি­বার আশায় এত­দিন সমুদয় কা­র্য পরি­ত্যাগ করিয়া বসিয়া আছি। কী দো­ষে প্র­ভু আমা­দি­­কে বঞ্চিত করি­লেন, বু­ঝি­তে পা­রি­তে­ছি না।"
মো­স্লেম বলি­লেন, "ইমাম হো­সেন শী­ঘ্রই মদি­না পরি­ত্যাগ করি­বেন। মদি­না­বা­সী­রা অনেক প্র­তি­­ন্ধ­­তা করায় শী­ঘ্র শী­ঘ্র আসি­তে পা­রেন নাই। আপ­না­কে সা­ন্ত্ব­না করিয়া আশ্ব­স্ত করি­বার জন্য অগ্রে আমা­কে পা­ঠাইয়া দিয়াছেন, তি­নি শী­ঘ্রই আসি­বেন।"
আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ পূর্ববৎ কর­জোড়ে বলি­তে লা­গি­লেন, "আপ­নি প্র­ভুর পক্ষ হই­তে আসিয়াছেন, আম­রা আপ­না­কে প্র­ভুর ন্যায়ই গ্র­হণ করিব, প্র­ভুর ন্যায়ই দে­খিব এবং প্র­ভুর ন্যায়ই মা­ন্য করিব।" এই বলিয়া মো­স্লে­­কে রা­­সি­­হা­­নে বসাইয়া আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ ভৃ­ত্যের ন্যায় সে­বা করি­তে লা­গি­লেন। অমা­ত্য­গণ, সভা­­দ্গণ, রা­­­র্ম­চা­রি­গণ, সক­লেই আসিয়া রী­ত্যা­নু­সা­রে উপ­ঢৌ­কন সহিত নত­শি­রে ভক্তি­­­কা­রে রা­জদূতকে রা­জা বলিয়া মা­ন্য করি­লেন। ক্র­মে অধীন রা­­গণও মর্যা­দা রক্ষা করিয়া ন্যূনতা স্বী­কা­রে নত­শি­রে প্র­ণি­পাত করি­লেন
মো­স্লেম কি­ছু­দিন নি­র্বি­ঘ্নে রা­­কা­র্য চা­লা­­লেন, অধীন সর্ব­সা­ধা­রণ তাঁহার নি­­পে­ক্ষ বি­চা­রে আশার অতি­রি­ক্ত সু­খী হই­লেন; সক­লেই তাঁহার আজ্ঞা­কা­রী। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ সদা­­র্ব­দা আজ্ঞা­বহ কি­ঙ্ক­রের ন্যায় উপ­স্থিত থা­কিয়া মো­স্লে­মের আদেশ প্র­তি­পা­­নে ভক্তির প্রা­ধা­ন্য দে­খা­­লেন। মো­স্লে­মের মনে সন্দে­হের না­­মা­ত্রও রহিল না। অনেক অনু­­ন্ধান করিয়াও কো­­প্র­কা­রে কপট ভা­বের লক্ষণ, ষড়যন্ত্রের কু-অভি­­ন্ধি, এজি­দের সহিত যো­গা­যো­গের কু­­ন্ত্র­ণা, এজি­দের পক্ষ হইয়া বা­হ্যিক প্রণয়ভাব, অন্ত­রে তদ্বি­­রীত, ইহার কি­ছুই জা­নি­তে পা­রি­লেন না। দুই কর্ণ হই­লে তো সন্ধা­নের অঙ্কুর পা­­বেন? যা­হা আছে, তা­হা জেয়াদের অন্ত­রেই রহিয়াছে। কু­ফা নগ­রে জেয়াদের অন্তর ভি­ন্ন হো­সেন সম্ব­ন্ধীয় নিগূঢ় কথা কা­হা­রো কর্ণে প্র­বেশ করে নাই।এমন কি, জেয়াদ্ অন্তর হই­তে সে কথা আপন মু­খে আনি­তেও কত সত­র্ক­ভাব অব­­ম্বন করিয়াছেন, অপ­রের কর্ণে যা­­বার কো­নই সম্ভা­­না নাই। মো­স্লেম পরা­স্ত হই­লেন। তাঁহার সন্ধান ব্য­র্থ হইল, চতু­­তা ভা­সিয়া গেল।বা­ধ্য হইয়া কু­ফার আনুপূর্বিক সম­স্ত বি­­রণ মদি­নায় লি­খিয়া পা­ঠা­­লেন
এই লি­খি­লেন,-
"হজ­রত! নি­র্বি­ঘ্নে আমি কু­ফায় আসিয়াছি। রা­জা জেয়াদ্ সমা­­রে আমা­কে গ্র­হণ করিয়াছেন।কোন কপ­­তা জা­নি­তে পা­রি নাই। নগ­­বা­সী­রা ইমাম না­মে চি­­বি­শ্ব­স্ত এবং চি­­­ক্ত, লক্ষ­ণে তা­হাও বু­ঝি­লাম।এখন আপ­নার অভি­রু­চি
বশং­বদ- মো­স্লেম।"
হো­সেন পত্র পাইয়া মহা সন্তু­ষ্ট হই­লেন। পু­ত্র, কন্যা, ভ্রা­তু­ষ্পু­ত্র, ভ্রা­তৃ­বধূদ্বয় প্র­ভৃ­তির সহিত ঈশ্ব­রের নাম করিয়া কু­ফায় যা­ত্রা করি­লেন। ষষ্টি সহ­স্র লোক মদি­না পরি­ত্যাগ করিয়া হো­সে­নের অনু­গা­মী হইল।ইমাম হো­সেন সক­লের সহিত এক­ত্রে কু­ফা­ভি­মু­খে আসি­তে লা­গি­লেন; কি­ন্তু এজি­দের কথা মনে হই­লেই তাঁহার মুখ সর্ব­দা রক্ত­­র্ণে রঞ্জিত হইয়া উঠিত। হজ­­তের রওজা আশ্রয়ে থা­কায় কো­­দিন কোন মুহূর্তে অন্ত­রে ভয়ের সঞ্চার হয় নাই। এক্ষ­ণে প্র­তি মুহূর্তে এই আশ­ঙ্কা যে, এজি­দের সৈন্য পশ্চা­দ্ব­র্তী হইয়া আক্র­মণ করি­লে আর নি­স্তার নাই। ক্র­মে এগা­রো দিন অতীত হইল, এগা­রো দি­নের পর হো­সে­নের অন্তর হই­তে এজি­দের ভয় ক্র­মে ক্র­মে দূর হই­তে লা­গিল। মনে সা­হস এই যে, কু­ফা অতি নি­­টে, সে­খা­নে এজি­দের ক্ষ­­তা কি?একে­বা­রে নি­শ্চি­ন্ত হইয়া যা­­তে লা­গি­লেন। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের গু­প্ত­­­গণ চতু­র্দি­কে রহিয়াছে, হো­সে­নের মদি­না পরি­ত্যাগ হই­তে পর্য­ন্ত যে দিন যে প্র­কা­রে যে স্থা­নে অব­স্থি­তি করি­তে­ছেন, যে­খা­নে যা­­তে­ছেন, সকল সং­বা­দই প্র­তি­দিন দা­মে­স্কে এবং কু­ফায় যা­­তে­ছে। কু­ফা নগ­রে মো­স্লে­মে­কে প্র­কা­শ্য রা­­সি­­হা­­নে জেয়াদ্ বি­শেষ ভক্তি­­­কা­রে বসাইয়াছেন। মো­স্লেম প্র­কা­শ্যে রা­জা, কি­ন্তু জেয়াদের মতে তি­নি এক প্র­কার বন্দি। সহ­স্র সৈন্য সহিত মো­স্লেম কু­ফায় বন্দি। জেয়াদ্ এমন কৌ­­লে তাঁহা­কে রা­খিয়াছেন এবং মো­স্লে­মের আদে­শা­নু­সা­রে কা­র্য করি­তে­ছেন যে, মো­স্লেম যে জেয়াদ্-চক্রে বা­স্ত­বিক সৈন্য­সহ বন্দি, তা­হা তি­নি কি­ছুই জা­নি­তে পা­রি­তে­ছেন না; কে­বল হো­সে­নের আগ­মন প্র­তী­ক্ষা
ঈশ্ব­রের মহি­মার অন্ত নাই। এক­টি সা­মা­ন্য বৃ­ক্ষ­­ত্রে তাঁহার শত সহ­স্র মহি­মা প্র­কাশ পা­­তে­ছে।এক­টি পত­ঙ্গের ক্ষু­দ্র পা­­কে তাঁহার অন­ন্ত শি­ল্প­কা­র্য বি­ভা­সিত হই­তে­ছে। অন­ন্ত বা­লু­কা­রা­শির এক­টি ক্ষু­দ্র বা­লু­কা­­ণা­তে তাঁহার অন­ন্ত করু­ণা আঁকা রহিয়াছে। তু­মি-আমি সে করু­ণা হয়তো জা­নি­তে পা­রি­তে­ছি না; কি­ন্তু তাঁহার লী­লা­খে­লার মা­ধু­র্য, কী­র্তি­­লা­পের বৈচি­ত্র, বি­শ্ব­­ঙ্গভূমির বি­শ্ব­ক্রীড়া এক­বার পর্যা­লো­­না করি­লে ক্ষু­দ্র মা­­­বু­দ্ধি বি­চে­তন হয়। তন্ম­ধ্যে প্র­বেশ করিয়া অণু­মা­ত্রও বু­ঝি­বার ক্ষ­­তা মা­নু­ষী বু­দ্ধি­তে সু­দু­র্লভ! সেই অব্য­র্থ কৌ­­লীর কৌ­­­­ক্র ভেদ করিয়া তন্ম­ধ্যে প্র­বেশ করে কা­হার সা­ধ্য? ভবি­ষ্য­দ্গ­র্ভে কি নি­হিত আছে, কে বলি­তে পা­রে? কো­ন্ বু­দ্ধি­মা­ন্ বলি­তে পা­রেন যে, মুহূর্ত অন্তে তি­নি কি ঘটা­­বেন? কোন মহা­জ্ঞা­নী পণ্ডিত তাঁহার কৌ­­লের কণা­মা­ত্র বু­ঝিয়া তদ্বি­­রীত কা­র্যে সক্ষম হই­তে পা­রেন? জগ­তে সক­লেই বু­দ্ধির অধীন, কি­ন্তু ঈশ্ব­রের নিয়োজিত কা­র্যে বু­দ্ধি অচল, অক্ষম, অস্ফুট এবং অতি তু­চ্ছ। ষষ্টি সহ­স্র লোক হো­সে­নের সঙ্গে কু­ফায় যা­­তে­ছে, সূর্য­দেব পথ দে­খা­­তে­ছেন, তরু পর্বত নি­র্ঝ­রি­ণী পথের চি­হ্ন দে­খাইয়া লইয়া যা­­তে­ছে, কু­ফার পথ পরি­চিত; কত লোক তন্ম­ধ্যে রহিয়াছে, কত লোক সেই পথে যা­­তে­ছে, চক্ষু বন্ধ করিয়াও তা­হা­রা কু­ফা নগ­রে যা­­তে অস­­র্থ নহে। সেই সর্ব­­ক্তি­মান পূর্ণ কৌ­­লীর কৌ­­লে আজ সক­লেই অন্ধ-চক্ষু থা­কি­তেও অন্ধ।তাঁহার যে আজ্ঞা সেই কা­র্য; এক দিন যে আজ্ঞা করিয়াছেন, তা­হার আর বৈলক্ষ­ণ্য নাই, বি­­র্যয় নাই, ভ্রম নাই। এক­বার মনো­নি­বে­শপূর্বক অন­ন্ত আকা­শে, অন­ন্ত জগ­তে, অন­ন্ত প্র­কৃ­তি­তে বা­হ্যিক নয়ন একে­বা­রে নি­প্তি করিয়া যথা­র্থ নয়নে দৃ­ষ্টি­পাত কর, সেই মহা­­ক্তির কি­ঞ্চিৎ শক্তি বু­ঝি­তে পা­রি­বে। যা­হা আম­রা ধা­­ণা করি­তে পা­রি, তা­হা দে­খিয়া একে­বা­রে বি­হ্বল হই­তে হয়। তাঁহার আজ্ঞা অল­ঙ্ঘ­নীয়, বা­ক্য অব্য­র্থ! হো­সেন মহা­­ন্দে কু­ফায় যা­­তে­ছেন-ভা­বি­তে­ছেন, কু­ফায় যা­­তে­ছি, কি­ন্তু ঈশ্বর তাঁহা­কে পথ ভু­লাইয়া বি­জন বন কা­­বা­লার পথে লইয়া যা­­তে­ছেন, তা­হা তি­নি কি­ছু­তেই বু­ঝি­তে পা­রি­তে­ছেন না। কে­বল তি­নি কেন, ষষ্টি সহ­স্র লোক চক্ষু থা­কি­তে যেন অন্ধ। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের সন্ধা­নী অনু­চর গো­­নে আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের নি­কট যাইয়া সং­বাদ দিল যে, ইমাম হো­সেন মদি­না হই­তে ষষ্টি সহ­স্র সৈন্য সঙ্গে করিয়া কু­ফায় আসি­তে­ছি­লেন, পথ ভু­লিয়া ঘোর প্রা­ন্ত­রে কা­­বা­লা­ভি­মু­খে যা­­তে­ছেন। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ মহা সন্তু­ষ্ট হইয়া শু­­সং­বা­­বা­হী আগ­ন্তুক চর­কে যথো­­যু­ক্ত পু­­স্কৃত করিয়া বলি­লেন, "তো­মা­কেই আজ কা­সে­দ্প­দে বরণ করিয়া দা­মে­স্কে পা­ঠা­­তে­ছি।"
আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ এজি­দের নি­কট পত্র লি­খি­লেন, "বা­­শার অনু­গ্র­হে দা­সের প্রা­­দান হউক!আমি কৌ­শল করিয়া মো­হা­ম্ম­দের রওজা হই­তে ইমাম হো­সে­­কে বা­হির করিয়াছি। বি­শ্ব­স্ত গু­প্ত সন্ধা­নী অনু­­­মু­খে সন্ধান পা­­লাম যে, ইমাম হো­সেন কু­ফা নগ­রের পথ ভু­লিয়া দা­স্ত কা­­বা­লা অভি­মু­খে যা­­তে­ছেন।তাঁহার পূর্ব­প্রে­রিত সা­­সী মহা­বীর মো­স্লে­­কে কৌ­­লে বন্দি করিয়া রা­খিয়াছি। এই অব­­রে হো­সে­নের পশ্চাৎ পশ্চাৎ কত­­গু­লি ভাল ভাল সৈন্য প্রে­রণ করা নি­তা­ন্ত আব­শ্যক। ওত্বে অলী­­কে কু­ফার দি­কে সৈন্য­সহ পা­ঠা­­লে প্র­­মে মো­স্লে­­কে মা­রিয়া পরে তা­হা­রাও হো­সে­নের পশ্চা­দ্ব­র্তী হইয়া হো­সে­­কে আক্র­মণ করি­বে। প্র­­মে মো­স্লে­­কে মা­রি­তে পা­রি­লে, আর হো­সে­নের মস্তক দা­মে­স্কে পা­ঠা­­তে কি­ছুই বি­ঘ্ন হই­বে না,-ক্ষ­­কাল বি­­ম্ব হই­বে না।"
আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ স্ব­­স্তে পত্র লি­খিয়া গু­প্ত­­ন্ধা­নী অনু­­­কে কা­সে­দ্ পদে নি­যু­ক্ত করিয়া দা­মে­স্কে পা­ঠা­­লেন। এদি­কে মো­স্লে­মের নি­কট দিন দিন আরো ন্যূনতা স্বী­কার করিয়া, তাঁহার যথো­চিত সে­বা করি­তে লা­গি­লেন এবং সময়ে সময়ে হো­সে­নের আগ­­নে বি­­ম্ব­­নিত দু­­খে না­না­প্র­কার দু­ঃখ প্র­কাশ করিয়া, মো­স্লে­­কে নি­শ্চি­ন্ত রা­খি­বার চে­ষ্টা করি­তে লা­গি­লেন

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.