সনজয় কুমার রায়’র ছড়া

আষাঢ়স্য ছড়া
 
)
কালো মেঘের ভেলায় ভেসে
আষাঢ় আমার কাছে এসে
ভিজিয়ে দেয় আমায়
কদমফুল বর্ষার জলে
দেহ ভিজায় স্নানের ছলে
ঠোঁটে ঠোঁটে চুমু খায়!
 
)
কালো মেয়ের নাচন দেখে
হাসছে কদমফুল
ভাবছে মেয়ে বৃথাই বসে
করছে কোনও ভুল?
ভুল করেনি মেয়ে আমার
খোঁপার বাঁধন খুলে
কদমফুলের সাথে নাচে
একসাথে হাত তুলে।
 
)
ভোরের বেলা শিশির মেঠোপথে
একলা হাঁটে গায়ে লাগিয়ে রোদ
ঘাসের ডগা তাইতো কোনোমতে
রোদ লাগিয়ে করে আরাম বোধ!
ঘাসের ডগা শুকনো ছিলো বেশ
মাড়িয়ে যেতো পাড়ার যত ছেলে
ভাবটা এমন হবে তারা নিরুদ্দেশ
আষাঢ় মাসে জলটা মাঠে এলে!
 
)
রোদের হাসি চকমকিয়ে
সবুজ পাতার ফাঁকে
মুখ লুকিয়ে হাসতে থাকে
কদমফুলের ডাকে।
হাত ইশারায় টিয়াপাখি
রোদকে বলছে ডেকে
বন্ধু তোমার আমিই ভালো
কদমফুলের থেকে।
রোদ বলে তাই সে কী কথা
বন্ধু আমরা সবাই
কাউকে ছাড়া কেউ আমরা
থাকতে কি পারি ভাই?
 
)
মাঠ ফেটে চৌচির ঘাসফুল ফোটেনা
শুকিয়ে গেছে মধু অলি এসে জোটেনা।
হাহাকার সবখানে ফেটে যায় ছাতি
গ্রীষ্মের দাবানলে পুড়ছে দিন-রাতি।
 
দরদর ঘাম ঝরে গোসলেই শান্তি
পড়ায় বসেনা মন সারাদিন ক্লান্তি।
খেতেও লাগেনা ভালো খেলতেও কষ্ট
মনে হয় গরমে জীবনটা নষ্ট!
 
আষাঢ় আসেনা কেনো, ঝরাবেনা বৃষ্টি?
পৃথিবী হয়েছে দগ্ধ, বাঁচাবেনা সৃষ্টি?
আষাঢ় আসোনা ফিরে নিয়ে জলরাশি
ওষ্ঠাগত প্রাণটায় ফোটাওনা হাসি।
তোমাদের ভালোবসি আষাঢ়, শ্রাবণ
কাছে এসে ভালোবেসে জুড়াও মন।
 
)
পানকৌড়ি জলের সাথে করছে খেলা
বর্ষাকালে ভরদুপুরে, বিকেলবেলা,
সকালবেলা সূর্য্যমামা উঠলে হেসে,
মেঘের ভেলায় সন্ধ্যাবেলা ভেসে ভেসে।
হাত নাড়িয়ে সম্ভাষণে জলের মাঝে
পানকৌড়ি যায় লুকিয়ে ভীষণ লাজে,
শাপলা ফুলের মালা গেথে হাতে নিয়ে
ডুবসাঁতারে গান গায় গুনগুনিয়ে!
 
)
হিজল বনের ধারে
বর্ষা মেয়ের পায়ের নুপুর হৃদয়টাকে কাড়ে।
নুপুর বাজে টাপুর টুপুর টুপুর
বাজে সকাল, সন্ধ্যা, বিকাল, দুপুর।
বর্ষা মেয়ের নুপুর বাজে তালে
সুরের লহরী লাগায় হাওয়া পালে।
বর্ষা মেয়ের নাচের ধরন এমন
কদম, টগর নৃত্য দেখায় যেমন।
 
)
মেঘ গুরগুর মেঘ গুরগুর
আকাশটা যায় ফেঁটে
সম্পারানী রাগের মাথায় যায়
বাবার বাড়িতে হেঁটে!
ছলাৎ ছলাৎ ছলছলোছল
নয়ন বাবুর ডাকে
হিজল, তমাল কাঁধে নিয়ে যায়
ফাঁটানো আকাশটাকে!
 
)
আষাঢ় শ্রাবণ গেছে বাবুদের বাড়ি
তাদের সাথে ভীষণ ছিলো নাকি আড়ি!
আষাঢ় আর শ্রাবণের শুনেই কান্না
বাবু তার বাড়িতেই থাকতে চাননা!
একদিন গরমে বাবুদের বাড়িতে
একফোঁটা জল নেই কলসি, হাড়িতে,
পুকুরেও জল নেই সেচানো পুকুর
বাবুর বুকটা করে ধুকুর পুকুর!
দিশেহারা হয়ে বাবু ডাকছে আষাঢ়,
শ্রাবণ কোথায় তোরা বাঁচিনাতো আর!
আমাদের বাড়ি আসো ভালোবাসা দেবো
তোমাদের ভালোবাসা প্রাণ ভরে নেবো।
 
১০)
সবুজ শ্যামল দেশ আমাদের
মায়া মমতায় ঘেরা
সকল দেশের সেরা এই দেশ
জজনী জঠর ছেড়া।
দোয়েল, কোয়েল, ময়না, শালিক
চড়ুই, বাবুই, হাঁস,
পাখপাখালির আজব দেশ
একসাথে করে বাস।
ষড়ঋতুর সোনার এই দেশ
রুপেরতো নেই শেষ
বর্ষাকালে দেশের রুপ ভাই
অন্য এক পরিবেশ।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.