বাংলাদেশকে উন্নত করতে চাই ভাষা আন্দোলনকে জানা ।। অধ্যাপক আব্দুল গফুর
আজকের এই অনুষ্ঠানের আয়োজকবৃন্দ যারা উপস্থিত রয়েছেন মঞ্চে সুবিঙ্গজনেরা এবং সামনের সুধিবৃন্দু এবং আমার ছোট্র ভাই এবং বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আমরা আজকে ভাষা আন্দেলন সম্পর্কে আলোচনা করি ভাষা আন্দেল সম্পর্কে আলোচনা অনেকদিন ধরেই হয় সবসময় হয় কিন্তু অনেক সময় পূর্ণাঙ্গ জিনিসটা পুরানো ইতিহাসটা আমরা জানতেও চেষ্টা করিনা জানিও না ভাষা আন্দোলন শুরু হয় কিন্তু বায়ান্ন সালেও নয় আটচল্লিশ সালেও নয় ১৯৪৭ সালে। ৪৭ সালে যখন পাকিস্তান হয় তখন গোটা পাকিস্তানে শতকরা ৫৬ জন লোক পূর্বপাকিস্তানে উর্দভাষী ছিল তারমানে তারাছিল বাংলাভাষী তা সত্বেও উচ্চপদস্ত অফিসারদের মধ্যে উর্দূভাষিদের প্রভাব আধিক্যের কারণে প্রভাবের কারণে একটা গোপন চেষ্টা চলতে থাকে,স্বরজন্ত্র চলতে থাকে, উর্দূকে একমাত্র রাষ্টভাষা করার তার প্রমাণ পাওয়া যায় নতুন রাষ্টের পোষ্টকার্ড, মানিলন্ডারিং ফরম, ইনভিলাপ এগুলোতে ইংরেজির পাশাপাশি শুধু উর্দূ ব্যাবহার হয়। তখনি টেরপেয়ে এখানকার শুধীজনেরা তার ভীতরে যারা এগিয়ে আসলেন প্রথম তাদের নাম প্রথমেই উচ্চারণ করতে হয় অধ্যাপক আবুল কাশেম জিনি তমুদ্দুন মজলিশ নামে একটা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেন এই তমুদ্দুন মজলিশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল পহেলা সেপ্টেম্বর ৪৭ সালে ১৫ই সেপ্টেম্বর তার পক্ষথেকে একখানা পুস্তিকা বেরকরা হয় পাকিস্তানের রাষ্টভাষা বাংলা না উর্দূ এই নামে, এটা তিনটি লেখা ছিল একটা ছিল অধ্যাপক কাজী মোজহার হোসেনের আরেকটি ছিল বিখ্যাত সাংবাদিক সাহিত্যিক আবুল......... আরেকটি ছিল তরুন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবুল কাশেমের। আবুল কাশেম সাহেবের লেখাতে পরিষ্কার ভাষায় বলা হলো পূর্বপাকিস্তানের শিক্ষার বাহন হতে হবে বাংলা পূর্বপাকিস্তানের অফিস আদালতের ভাষা হতে হবে বাংলা এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে জুটি বাংলা এবং উর্দূ আমরা একা শুধু বাংলা দাবি করতে পারতাম কিন্তু উদারতা দেখিয়ে যেহেতু পশ্চিম পাকিস্তানের সকলেই মোটামুটিভাবে উদূ সমর্থক যদিও উর্দূভাষী না সেজন্য বাংলা এবং উর্দূ দুটোই রাষ্ট্রভাষার দাবি জানানো হয় এই নিয়ে আন্দলোন শুরু হয় সাতচল্লিশ সালে এবং অধ্যাপক নুরুল হক ভুইয়া ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের রশায়ন বিভাগের অধ্যাপক তাকে কনভেনার করে সাতচল্লিশ সালেই সর্বপ্রথম রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিশোধ গঠিত হয়। দ্বিতীয় বছর ১৯৪৮ সালে ৪ঠা জানোয়ারী একটি ছাত্র প্রতিষ্ঠান জন্মগ্রহণ করে যার নাম পূর্ব পাকিস্তান মুসলীম ছাত্রলীগ আজকে যেটা ছাত্রলীগ নামে পরিচিত এই ৪ঠা জানোয়ারী জন্ম নেয়া যে প্রতিষ্ঠানটি সেটি তমুদ্দুন মজলিশের সূচিত ভাষা আন্দেলনকে গোড়ার দিকে সমর্থন করতে থাকে এবং তাদের এ আন্দেলনে যোগদানের ফলে তমুদ্দুন মজলিশ এবং মুসলিম ছাত্রলীগের সাধারণ সদস্য যুগ্নপদসদস্য শমসের আলমকে কনভেনার করে নতুন কর্মপরিশোধ গঠন করা হয়। এবং এর উদ্যেগেই এইযে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের কথা একটু আগে বলা হচ্ছিল তিনি পাকিস্তান গণপরিষদের কংগ্রেস দলীয় সদস্য ছিলেন তিনি রাষ্ট্রভাষা দাবি করেন নাই তিনি বলেছিলেন পাকিস্তান গণপরিষোদের অন্যতম ভাষা ওই সদস্যরা কথা বলবেন সেই ভাষায় ইংরেজি এবং উর্দূতে এ্যালাউ করা হচ্ছে কিন্তু বাংলা এ্যালাউ করা হয়না তিনি সেই বাংলার দাবি করলেন যে পাকিস্তানের গণপরিষদে বাংলাতেও কথা বলার সুযোগ দিতে হবে সেই দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়, হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অধ্যাপক আবুল কাশেম ভাইয়ের সভাপতিত্বে ছাত্র শিক্ষকদের একটা প্রতিবাদ সভা হয় এবং সেই সভার পরে ১১ই মার্চ সারা পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিবাদ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয় সেই ১১ই মার্চের আন্দেলন দারুনভাবে সাফল্যমন্ডিত হয় সেদিন চট্রগ্রাম থেকে কোন ট্রেন ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করতে পারেনি রেল কর্মচারীরা ভাষা আন্দোলনের সমর্থন করে আজ সেদিন থেকে চারদিকে পিকেটিং চলে সেই পিকেটিং থেকে গ্রেফতার হন কাজী গোলাম মাহমুদ অলি আহাদ শেখ মজিবুর রহমান এবং অনেকে এবং পুলিশের লাঠিচার্যে আহত হন অধ্যাপক আবুল কাশেম সহ আরো অনেকে এই গ্রেফতার এবং লাঠিচার্যের খবর যখন ঢাকা শহরে ছড়িয়ে যায় সারা সহর থেকে লোক ভেঙ্গে পরে সেক্রেটারিয়েটের দিকে সেক্রেটারিয়েট তখন এরকম আজকের মত দেয়াল ছিল না চারদিকে কাটাতারের বেড়া ছিল সেই কাটাতরের বেড়া ভেদ করে ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকেপরে অনেক সচিব মন্ত্রি এদের কাছথেকে জোর করে বাংলা ভাষার দাবি মানে মুখে সিকৃতি নেয়া হয় তার মধ্যে আমি অন্যতম ছিলাম। সেই কাটাতারের বেড়া ডিঙ্গে যাওয়ার মধ্যে। যায়হোক এখানেই না এরপরে আন্দেলোন ১৫ই মার্চ পর্যন্ত চললে খাজা নাজিমউদ্দিন চিফ রেজিষ্টার তিনি ভয় পেয়ে যান কারণ ১৯শে মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নার ঢাকায় আসার কথা উনি এসে যদি দেখেন চারদিকে অরাজক অবস্থা তার ভবিষ্যত ক্ষমতা শেষ হয়ে যাবে এজন্য উনি ১৫ই মার্চ তারাতারি করে সংগ্রাম পরিষোদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেন সমস্ত দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে এরপরে জিন্না সাহেব আসলেন জিন্না সাহেব দুটি জায়গায় সভা করেন একটা রেসকোর্স ময়দান যেটা বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আরেকটা কার্যঘরে বিশেষ সমাবর্তন উৎসব দুটো জায়গাতেই তিনি উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলেন কিন্তু বিশাল জনসভায় কে কোনদিক থেকে প্রতিবাদ করেছিল সেটাও উনি টের পাননাই কিন্তু কার্জন হলের সিমিত উপস্থিতির মধ্যে যখন কয়েকজন ছাত্র তার মুখের উপরে নো নো বলে প্রতিবাদ করে তিনি অবাক হয়ে যান কারণ এই ছাত্ররাই মাত্র কয়েকদিন আগে তার ডাকে পাকিস্তান আন্দেলনে সাড়া দিয়ে সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছিল অতএব তিনি থমকে গেলেন কিছুক্ষন চুপ থেকে বক্তৃতা সংক্ষেপ করে চলে গেলেন পরবর্তী কালে তিনি ছাত্রদের সাথে ঘরোয়া বৈঠক করে এরপর থেকে কিন্তু উভয় পক্ষতে যার যার অবস্থানে অটল থাকাতে সে আলোচনা ব্যার্থ হয় তবে একটা জিনিস লক্ষ করার ব্যাপার যে জিন্না সাহেব এর পরে ১১ই সেপ্টেম্বর ওই বছরে মারা যান তা আগ পর্যন্ত তিনি আর রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে কোন প্রকাশ্য বৃবৃতি দেননি বরংচ আমরা জানতে পারি কর্ণেল এলাহি বখত ওনার ব্যাক্তিগত চিকিৎসক তার জবানিতে মোহাম্মদ মোজাম্মেলের লেখা সাংবাদিকের রোজ নামচা বইয়ের থেকে যে উনি জিন্না সাহেব নাকি তার মৃত্যুসজ্জার আগে দুটি কথা বলেছিলেন যে অন্যর কথায় আমি দুটা বড় ভ’ল করেছি জীবনে তার একটি হলো রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে বাংলার বিরোধীতা করা, অন্যর কথা বলতে বোঝা যাচ্ছে খাজা নাজিমুদ্দিন নিজেই উর্দূ ভাষী ছিলেন তিনি এই দেশের নেতা হয়েও উর্দূ ভাষী ছিলেন পরে জিন্না সাহেব কে বভ্রিান্ত করেছিলেন বোঝা যায়। যায়হোক খাজা নাজিমুদ্দিনে কিন্তু সেই ব্যাক্তি জিনি ১৫ই মার্চ ৪৮ সালে ভাষার দাবি মেনে নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। সেই নাজিমুদ্দিন জিন্না সাহেবের মৃত্যু লিয়াকতআলীর মৃত্যু অন্যদের মৃত্যুর পর নিজে যখন গোটা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন তিনি ১৯৫২ সালের ২৭শে জানুয়ারী পল্টন ময়দানে এক সভায় এসে হঠাৎ বলে বসলেন উর্দূই হবে একমাত্র রাষ্টভাষা এই যে জিনি মাত্র ৪৮ সালে সব দাবি শিকার করে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তারমুখে একথা এটা আমরা মনে করলাম চরম বিশ্বাস ঘাতকতা তখন মাওলানা ভাসানির সভাপতিত্বে.......হলে একটা সভা হয় এবং সেখানে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষোধ গঠিত হয় প্রত্যেক দলের থেকে তমুদ্দুন মজলিশ ,ছাত্রলীগ ,আওয়ামিলীগ প্রত্যেক দলের থেকে দুজন করে সদস্য এবং কনভেনার কাজী গোলাম মাহবুব। তো সেখান থেকে সিদ্ধান্ত হয় যে আমরা ২১শে ফেব্রুয়ারী প্রতিবাদ দিবস পালন করবো ২১শে ফেব্রুয়ারী প্রতিবাদ দিবস যাতে ব্যার্থ হয় সেজন্য ২০শে ফেব্রুয়ারী হঠাৎ গভমেন্ট ১৪৪ ধারা জারি করে বলছে যাতে ২১শে ফেব্রুয়ারী আমরা কোন কিছু না করতে পারি। এই প্রতিবাদ দিবস তখন রাত্রে আবুল কাশেম সাহেবের সভাপতিত্বে ৯৪ নম্বর নওয়াবপুর রোড আওমীলিগ অফিসে জরুরী সভা হয় যে, এই অবস্থাতে কি করা যাবে যারা ভবিষ্যতে রাজনীতে করবেন এবং নির্বাচিত হবেন তারা নির্বাচনে আসায় তখন বললেন যে যদি ১৪৪ ভঙ্গ করা যায় গোলমাল হবে নির্বাচন হতে পারবেনা এই মুসলিমলীগ ...থেকে যাবে তারা অধিকাংশই ভোট দিলেন যে, না ভাগা যাবেনা কিন্তু তরুনরা ভাগার পক্ষে ছিলেন। যায়হোক শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় যে কালকে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে যে ছাত্রসভা হবে সেটাই যেটা সিদ্ধান্ত হয় সেটাই হবে চূড়ান্ত এবং সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে ১৪৪ ভাঙ্গা হবে এবং আমাদের দাবি যেকোনো মূল্যে আদায় করতে হবে। আপনারা জানেন এর পরের ইতিহাস সকলেরেই জানা যে ১৪৪ ব্রেক করবার জন্য যে আন্দল শুরু হয় তাতে গুলি চলে এবং গুলি চলে সালাম, বরকত অনেকেই এরকম শহীদ হয় এই শহীদ দিবস এই রক্তদানের ফলে এই বাংলারি বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আর কারো হয়নাই। এরপরে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয় এবং ১৯৫৬ সালে যে দ¦ীতিয় গণপরিষোধ যেটা পাকিস্তানের সেটাতে বাংলা এবং উর্দূ দুটোকে রাষ্ট্রভাষা শিকার করে নেওয়া হয় । তারপরেও একটা জিনিস কিন্তু বাকি থাকে সেটা হলো যে এই যে বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা সহ সব শিক্ষার বাহন হবে যে বাংলা সেটা অনেক শিক্ষাবিদ অনেক ইউনিভারর্সিটির প্রফেসর পর্যন্ত ভয় পাচ্ছিলেন যে এটা করা সম্ভব হবেনা তখন বাংলা ভাষা আন্দেলনের যে মূল পথিকৃৎ অধ্যাপক আবুল কাশেম তিনি নিজে বাংলা কলেজ নামে একটা কলেজ স্থাপন করে সেই কলেজটা প্রথম কিন্তু বর্তমান জায়গায় ছিল না নবকুমার ইনিস্টিটিউট হাইস্কুল সেই হাইস্কুলের নাইট সেকশনে বাংলা কলেজ যাত্রা শুরু করে তার পরে পরবর্তীকালে মিরপুরে স্থাপন হয় যাই হোক এইভাবে বাংলা ভাষা আন্দেলনটা আমরা সফল করেছিলাম আজকে আমাদের এই পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসটা জানা দরকার ইতিহাস জানলে তখন আমাদের মূল দাবিকে ই করার যে যুক্তি সেটা আরো জোরালো হবে আমি সকলকে অনুরোধ করবো যে বাংলা ভাষা আন্দেলনের ইতিহাস, সেটা আমাদের গর্বের ইতিহাস ওই আন্দলনের পথবেয়েই কিন্তু আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি সেজন্য আমরা আজকে স্বাধীন বাংলাদেশকে যদি উন্নত করতে চাই ভাষা আন্দোলনকে ভালোভাবে জানতে হবে মূল্যায়ন করতে হবে এবং এটার প্রতি মর্যাদা দিতে হবে এই কথাগুলো বলে আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি আসসালামু আলাইকুম।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Facebook: facebook.com/samoiki
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments