বিষাদ সিন্ধু : মীর মশাররফ হোসেন_মহরম পর্ব : ২২তম প্রবাহ

প্রণয়, স্ত্রী, রা­জ্য, ধন-এই কয়েক­টি বিষয়ের লোভ বড় ভয়ানক। এই লো­ভে লো­কের ধর্ম, পু­ণ্য, সা­ধু­তা, পবি­ত্র­তা সম­স্তই একে­বা­রে সমূলে বি­নাশ প্রা­প্ত হয়। অতি­­ষ্টে উপা­র্জিত বন্ধু­­ত্ন­টাও লো­ভে অনে­কেই অনায়াসে বি­­র্জন দেয়। মা­নুষ লো­ভে অনায়াসেই যথে­চ্ছ ব্য­­হা­রে অগ্র­সর হই­তে পা­রে। এজি­দ্ দা­মে­স্কের রা­জা, কু­ফা তাঁহার অধীন রা­জ্য। হো­সে­নের সহিত আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের কে­­­মা­ত্র বন্ধু­ত্ব­ভাব সম্ব­ন্ধ। উপ­রি­­ক্ত চা­রি প্র­কার লো­ভের নি­কট বন্ধু­ত্ব­ভাব সর্ব­ত্র অকৃ­ত্রি­­ভা­বে থা­কা অস­ম্ভব। অধি­­ন্তু আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের নি­­টে তা­হার আশা করাও যা­­তে পা­রে না। কা­রণ, আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ মূর্খ অর্থ­লো­ভী; মূর্খের প্রণয়ে বি­শ্বাস নাই, কা­র্যেও বি­শ্বাস নাই, লো­ভীও তদ্রূপ
আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ সেই রা­ত্রি­তেই দা­মে­স্কের দূতকে বি­দায় করি­লেন। শয়নগৃ­হে শয্যার এক পা­র্শ্বে বসিয়া মনে মনে বলি­তে লা­গি­লেন, "হো­সে­নের প্রণয়ে লাভ কী? শু­ধু মু­খের প্রণয়ে কী হই­তে পা­রে?"-এইরূপ অনেক আন্দো­লন করিয়া নি­দ্রা­ভিভূত হই­লেন
প্র­ধান অমা­ত্য, সভা­সদ এবং রা­­সং­ক্রা­ন্ত কর্ম­চা­রি­গণ কে­হই এই নিগূঢ় তত্ত্বের কা­রণ কি­ছুই জা­নি­তে পা­রি­লেন না। কি উদ্দে­শ্যে উহা­রা দা­মে­স্ক হই­তে আসিয়াছিল, এক দি­বস অতীত না হই­তেই কে­নই-বা ফি­রিয়া গেল, এই বিষয় লইয়া সক­লে না­না প্র­কার আন্দো­লন করি­তে লা­গি­লেন
রজ­নী প্র­ভাত হইল। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ রা­­সি­­হা­­নে উপ­বে­শন করিয়া সমুদয় সভা­­দ্গ­­কে সম্বো­­নপূর্বক বলি­তে লা­গি­লেন, "গত রজ­নী­তে আমি হজ­রত মো­হা­ম্মদ মো­স্ত­ফা­কে স্ব­প্নে দে­খিয়াছি। হস্তে কৃ­ষ্ণ­­র্ণ আশা (যষ্টি), শি­রে শু­ভ্র­­র্ণ উষ্ণীষ, অঙ্গে পরি­ষ্কার-পরি­চ্ছ­ন্ন শু­ভ্র পি­­হান। আমার শিয়রে দণ্ডায়মান হইয়া তি­নি বলি­তে লা­গি­লেন, 'আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্! তো­মা­কে এক­টি কা­র্য করি­তে হই­বে।' আমি স্ব­প্ন­যো­গে সেই পবি­ত্র পদ চু­ম্বন করিয়া জোড়হস্তে দণ্ডায়মান থা­কি­লাম। নূরন­বী দু­­খিত স্ব­রে বলি­তে লা­গি­লেন, 'হো­সেন ভ্রা­তৃ­হীন হইয়া আমার সমা­ধি­ক্ষে­ত্রে পড়িয়া, নি­­­হায়রূপে দি­বা­রা­ত্রি ক্র­ন্দন করি­তে­ছে। তু­মি তা­হার পক্ষ অব­­ম্বন কর। তো­মার সা­ধ্যা­নু­সা­রে তা­হার সহায়তা কর। সৈন্য-সা­­ন্ত-ধন দ্বা­রা হো­সে­নের উপ­কার কর।' এই কথা বলিয়াই পবি­ত্র মূর্তি অন্ত­র্হিত হইল। আমারও নি­দ্রা ভা­ঙ্গিয়া গেল; স্ব­র্গীয় সৌ­­ভে সমুদয় ঘর আমো­দিত হইয়া উঠিল। সেই সময় আমার মনে যে অনু­পম আন­ন্দ ভক্তি­ভাব উদয় হইল, তা­হা এক্ষ­ণে মু­খে প্র­কাশ করি­তে সা­ধ্য হই­তে­ছে না। আর নি­দ্রাও হইল না। তখ­নই কায়মনে হজ­রত ইমাম হো­সে­নের প্র­তি আত্ম-সম­র্পণ করি­লাম। এই রা­জ্য, এই সৈন্য-সা­­ন্ত, এই ভা­ণ্ডা­­স্থ ধন­­ত্ন মণি­মু­ক্তা সক­লই হো­সে­নের। এই সি­­হা­সন আজ হই­তে হো­সে­নের না­মে উৎসর্গ করিয়া তাঁহা­কে ইহার যথা­র্থ অধি­কা­রী করি­লাম। আপ­না­রা আজ হই­তে মহা­মা­ন্য ইমাম হো­সে­নের অধীন হই­লেন। আজ হই­তে আমি তাঁহার আজ্ঞা­বহ কি­ঙ্ক­­মা­ত্র থা­কি­লাম। অমা­ত্য­গণ!এখ­নই আপ­না­রা নগ­রের ঘরে ঘরে ঘো­­ণা করিয়া দেন যে, রা­জ্য আজ হই­তে ইমাম হো­সে­নের অধি­কৃত হইল আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ তাঁহার আজ্ঞা­বহ হইয়া রহি­লেন। অধীন রা­জা, রা­­প্র­তি­নি­ধি, রা­­সং­স্র­বী, যি­নি যে­খা­নে আছেন কি­­বা রা­জ্য­শা­সন করি­তে­ছেন, অদ্যই তাঁহা­দের নি­কট এই শুভ সং­বাদ অগৌ­ণে জ্ঞা­পন করা হউক। আর অদ্যই আমার স্ব­প্ন বি­­­­সহ রা­জ্য­­রি­ত্যাগ-সং­বাদ ইমাম হো­সে­নের গো­­­­রণ জন্য মদি­নায় কা­সে­দ্ প্রে­রণ করা হউক। রা­জা­বি­­নে রা­জ্য শা­সন হওয়া নি­তা­ন্তই কঠিন, রা­­সি­­হা­সন শূন্য থা­কাও অযৌ­ক্তিক। যত শী­ঘ্র হয়, ইমাম হো­সেন কু­ফা নগ­রে আসিয়া রা­­পাট অধি­কার এবং আমার মনো­বা­ঞ্ছা পূর্ণ করুন। ইহাও জা­নাইও,-যত­দিন ইমাম হো­সেন এই রা­­সি­­হা­­নে উপ­বে­শন না করি­তে­ছেন, তত­দিন প্র­ধান উজির রা­­কা­র্য পরি­চা­­না করি­বেন। আমার সহিত রা­জ্যের আর কোন সং­স্রব রহিল না।"
প্র­ধান উজির নত­শি­রে রা­জা­জ্ঞা প্র­তি­পা­লন করি­লেন। সক­লেই হো­সে­নের না­মে রা­­­ক্তির পরিচয় দিয়া শত শত আশী­র্ব­চন প্রয়োগ করি­তে লা­গি­লেন। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ­কেও এক­বা­ক্যে সক­লে ধন্য­বাদ দিয়া বলি­লেন, "এমন সা­­সী ধর্ম­­রায়ণ সর­­হৃদয় ধা­র্মিক জগ­তে কেহ হয় নাই, হই­বেও না। এমন পু­ণ্য­কা­র্য পর্য­ন্ত কেহ কোন দে­শেই করে নাই। কথাও সত্য যে, যি­নি ইহ­কাল-পর­কা­লের রা­জা, প্রাণ দিয়া তাঁহার উপ­কার করা সকল মু­­­মা­নের কর্ত­ব্য। এজি­দের চক্রা­ন্তে ভ্রা­তৃ­হা­রা-রা­জ্য­হা­রা-একে একে সর্ব­হা­রা হই­বার উপ­ক্রম হইয়াছেন, সময় যি­নি যত প্র­কা­রে ইমা­মের উপ­কার করি­বেন, ঈশ্বর তাঁহা­কে তা­হার কো­টি কো­টি গু­ণে পু­ণ্যময় করিয়া পর­কা­লের প্র­ধান স্ব­র্গে তাঁহার স্থান নি­র্ণয় করিয়া রা­খি­বেন। আপ­নি সৈন্য­সা­­ন্ত সহিত রা­জ্য-ধন ইমা­­কে দান করি­লেন; আম­রা চি­­কাল হই­তে তাঁহার আজ্ঞা­নু­­র্তী দা­সা­নু­দাস আছি। আজ হই­তে জী­বন, ধন, সম­স্তই হো­সে­নের না­মে উৎসর্গ করি­লাম।"
প্র­ধান উজির রা­জা­জ্ঞা­নু­সা­রে সমুদয় স্থা­নে ঘো­­ণা করিয়া দি­লেন। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের স্ব­প্ন­বৃ­ত্তা­ন্তও বি­স্তা­রি­তরূপে বর্ণ­না করিয়া, রা­জ্য­দান-সং­ক্রা­ন্ত সম­স্ত বি­­রণ লি­পি­­দ্ধ করি­যা হো­সেন-সমী­পে কা­সে­দ্ প্রে­রণ করি­লেন
ক্র­মে সর্ব­ত্র প্র­কাশ হইল যে, কু­ফা­ধি­­তি আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ তাঁহার সমুদয় রা­জ্য হো­সে­­কে অর্পণ করিয়াছেন। এজি­দের স্ব­­ক্ষীয়েরা ব্য­তীত সক­লেই এক­বা­ক্যে আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ­কে শত শত ধন্য­বাদ দিয়া ঈশ্বর সমী­পে হো­সে­নের দী­র্ঘায়ু সর্ব­­ঙ্গল প্রা­র্থ­না করি­লেন। ক্র­মে মদি­না পর্য­ন্ত এই সং­বাদ রটিয়া গেল
হো­সেন পূর্ব হই­তেই মদি­না পরি­ত্যাগ করিয়া কু­ফা নগ­রে আসি­বার ইচ্ছা করিয়াছি­লেন। কি­ন্তু আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ কর্তৃক আদৃত না হইয়া তথায় গমন করা যু­ক্তি­­ঙ্গত বি­বে­­না করেন নাই। লো­­মু­খে জেয়াদের বদা­ন্য­তা, বি­পদ সময়ে সা­হা­য্য এবং অকা­­রে রা­জ্য পর্য­ন্ত দা­নের বিষয় শু­নিয়া ঈশ্ব­­কে ধন্য­বাদ দিয়া কৃ­­জ্ঞ­তার সহিত উপা­­না করি­লেন। কি­ন্তু জেয়াদ্-প্রে­রিত নি­শ্চয় সং­বাদ না পাইয়া অন্য কা­হা­কেও কি­ছু বলি­লেন না
মারওয়ান আজ মদি­না আক্র­মণ করি­বে, রওজা আক্র­মণ করি­বে, হো­সে­নের প্রাণ হরণ করি­বে, সর্ব­সা­ধা­­ণের মু­খে এই সকল কথার আন্দো­লন। মদি­না­বা­সী­রা সক­লেই হো­সে­নের পক্ষ হইয়া এজি­দের সৈন্যের সহিত যথা­সা­ধ্য যু­দ্ধ করি­বে, প্রাণ থা­কি­তে হো­সে­নের পরি­­­দি­­কে বন্দি করিয়া দা­মে­স্কে লইয়া যা­­তে দি­বে না, কথাও রা­ষ্ট্র হইয়াছে। 'আজ যু­দ্ধ হয়, কাল যু­দ্ধ হয়'-এই কথা­রই তর্ক­বি­­র্ক। এজি­দের সৈন্য­গণ মদি­না আক্র­মণ না করি­লে যু­দ্ধে প্র­বৃ­ত্ত হই­বে কি-না এই বিষয় লইয়াই-এই চি­ন্তা­তেই ইমাম-বং­শের চি­­হিতৈষী মদি­না­বা­সী­রা সক­লে মহা ব্য­তি­ব্য­স্ত। দি­­রা­ত্রে কা­হা­রই যেন আহার-নি­দ্রা নাই
কয়েক­দিন যায়, শে­ষে সা­ব্য­স্ত হইল যে, শত্রু­গণ নগ­রের প্রা­ন্ত­ভা­গে-প্রা­ন্ত­রের শেষ সী­মায় শি­বির নি­র্মাণ করিয়া যে প্র­কার শা­ন্ত­ভা­বে রহিয়াছে, তা­হা­তে আশু বি­রো­ধের সম্ভা­­না কী? কোন বিষয়ে অনৈক্য, কোন বিষয়ে বা­ধা কি­­বা কোন কথার প্র­­ঙ্গে অয­থা উত্তর না করি­লে কী প্র­কা­রে বি­বা­দে প্র­বৃ­ত্ত হওয়া যায়; এই বি­বে­­না করিয়া সক­লেই যু­দ্ধের অপে­ক্ষায় বি­বা­দের সূচনার প্র­তী­ক্ষা করিয়া রহিয়াছেন।এক­দিন কু­ফা নগ­রের কা­সে­দ্ মদি­নায় দে­খা দিল। মদি­না­বা­সী­রা জেয়াদের বদা­ন্য­তার বিষয় পূর্বেই শু­নিয়াছি­লেন, নি­শ্চয় সং­বাদ না পাইয়া অনে­কে অনেক সন্দেহ করি­তে­ছি­লেন, আজ সে সন্দেহ দূর হইল। এক­মু­খে বলি­তে শত শত মু­খে জি­জ্ঞা­সিত হইল, "কু­ফার সং­বাদ কী?"
কা­সে­দ্ উত্তর করিল, "কু­ফা­ধি­­তি মা­­নীয় আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ তাঁহার সি­­হা­সন, রা­জ্য, ধন, সৈন্য­সা­­ন্ত সম­স্তই হজ­রত ইমাম হো­সে­নের না­মে উৎসর্গ করিয়াছেন। তি­নি এক্ষ­ণে রা­­কা­র্য হই­তে অপ­সৃত হইয়াছেন। ইমাম হো­সেন কু­ফা-সি­­হা­­নে উপ­বে­শন না-করা পর্য­ন্ত প্র­ধান উজি­রের হস্তে রা­­কা­র্যের পরি­চা­­নার ভার রহিয়াছে। ইমাম হো­সেন কো­থায় আছেন আপ­না­রা বলুন, আমি তাঁহার নি­­টে যাইয়া এই সং­বাদ দিব।" এক­জন বলি­তে শত শত লোক কা­সে­দের অগ্র-পশ্চা­তে চলি­তে লা­গিল। কেহ আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের প্র­শং­সা, কেহ কেহ হো­সে­নের কু­ফা­­­­­নিত দু­ঃখ, কেহ এজি­দের দৌ­রা­ত্ম্যে হো­সেন দে­­ত্যা­গী, এই সকল কথার শা­খা-প্র­শা­খা বা­হির করিয়া পর­স্পর বা­দা­নু­বাদ তর্ক-বি­­র্ক করি­তে করি­তে হজ­­তের রওজায় উপ­স্থিত হইল। প্র­ধান প্র­ধান লো­কে­রা কা­সে­দের বৃ­ত্তা­ন্ত ইমা­মের নি­কট বি­বৃত করি­লেন
আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের পত্র পাঠ করিয়া হো­সেন সেই পত্র­­স্তে কা­সেদ সম­ভি­ব্যা­হা­রে নিজ ভব­নের প্র­বে­­দ্বা­রে উপ­স্থিত হইয়া মদি­না­বা­সী­দি­­কে বলি­তে লা­গি­লেন, "ভাই সকল! আপ­না­রা কেন আর কষ্ট পা­­তে­ছেন? যদি কু­ফার অন্ন-জল ঈশ্বর আমার অদৃ­ষ্টে লি­খিয়া থা­কেন, তবে আপ­না­রা আমার কৃ­­দোষ মা­র্জ­না করি­বেন। সময়ে আমি আপ­না­দের প্র­ত্যে­কের নি­কট হই­তে বি­দায় গ্র­হণ করিব। এক্ষ­ণে এত ব্য­স্ত হই­বার কোন কা­­ণই দে­খি­তে­ছি না।"
মদি­না­বা­সী­রা সক­লেই এক­বা­ক্যে হো­সে­­কে আশী­র্বাদ করিয়া স্ব-স্ব স্থা­নে প্র­স্থান করি­লেন
জেয়াদের পত্র লইয়া হো­সেন মা­­নীয়া বি­বি সা­লে­মার হো­জ্রা (নি­র্জন স্থান) সমী­পে গমন করি­লেন। সং­বাদ পাইয়া বি­বি সা­লে­মা হো­জ্রা হই­তে বহি­র্গত হই­লেন। ইমাম হো­সেন মা­তা­­হীর (হজ­রত হো­সে­নের আপন মা­তা­­হী বি­বি খা­দি­জা। বি­বি সা­লে­মা হয­রত মো­হা­ম্ম­দের অন্য স্ত্রী।) পদধূলি গ্র­হণ করিয়া জেয়াদের পত্র­বি­­রণ প্র­কাশ কু­ফা নগ­রে গমন প্র­­ঙ্গ উত্থা­পন করি­লেন
রওজা হই­তে হো­সে­নের আগ­­­বৃ­ত্তা­ন্ত শু­নিয়া পরি­জন, আত্মীয়, বন্ধু অনে­কেই বি­বি সা­লে­মার হো­জ্রায় আসিয়া উপ­স্থিত হই­লেন
হো­সেন সক­লের নি­­টেই কু­ফা-গম­­­ঙ্ক­ল্পে পরা­­র্শ জি­জ্ঞা­সা করায়, কে­হই কোন উত্তর না করিয়া নি­স্ত­ব্ধ­ভা­বে রহি­লেন। বি­বি সা­লে­মা গম্ভীর স্ব­রে বলি­তে লা­গি­লেন, "আব­দু­ল্লাহ জেয়াদ্ যা­হাই লি­খুক, আমি তো­মা­কে পু­নঃ পু­নঃ নি­ষেধ করি­তে­ছি, তু­মি কখ­নোই কু­ফায় গমন করিয়ো না-হজ­­তের রওজা ছাড়িয়া কোন স্থা­নেই যাইয়ো না; হজ­রত আমা­কে বলিয়া গিয়াছেন যে, হো­সেন আমার রওজা পরি­ত্যাগ করিয়া স্থা­না­ন্ত­রে গমন করি­লে অনেক প্র­কার বি­­দের আশ­ঙ্কা। আমি পু­নঃ পু­নঃ নি­ষেধ করি­তে­ছি, তু­মি কখ­নোই রওজা হই­তে বা­হির হইও না। এখা­নে কা­হা­রো ভয় নাই, কোন প্র­কার শত্রু­তা সা­ধন করি­বার ক্ষ­­তা কা­হা­রো নাই, তু­মি স্ব­চ্ছ­ন্দে নি­শ্চি­ন্ত­ভা­বে রওজায় বসিয়া থাক।"
হো­সেন বলি­লেন, "কত­কাল এই­ভা­বে বসিয়া থা­কিব? কা­ফে­­গণ ক্র­­শঃই তা­হা­দের সং­খ্যা বৃ­দ্ধি করিয়া মদি­নার নি­­টে এক­ত্রিত হই­তে­ছে। আমি কি করি, কত­দিন এই প্র­কা­রে বসিয়া কা­টা­ইব? একা আমার প্রা­ণের জন্য কত লো­কের জী­বন বি­­ষ্ট হই­বে? তা­হা অপে­ক্ষা আমি কি­ছু­দিন স্থা­না­ন্ত­রে বাস করি, ইহা­তে দোষ কি? বি­শেষ কু­ফা নগ­রের সমুদয় লোক মু­­­মান-ধর্ম­­রায়ণ, সে­খা­নে যা­­তে আর বা­ধা কী?"
সা­লে­মা বি­বি বি­­ক্ত­ভা­বে বলি­তে লা­গি­লেন, "আমি বৃ­দ্ধা হইয়াছি, আমার উপ­দেশ তো­মা­দের গ্রা­হ্য হই­বে কেন? যা­হা হয় কর।" এই বলিয়া হো­জ্রা­­ধ্যে চলিয়া গে­লেন। তৎপরে হো­সে­নের মা­তার সহো­­রা ভগ্নী উম্মে কু­­সু­ম্ হো­সে­নের হস্ত­ধা­রণ করিয়া বলি­তে লা­গি­লেন, "হো­সেন! সক­লের গু­রু­জন যি­নি, প্র­­মেই তি­নি নি­ষেধ করি­তে­ছেন, তাঁহার কথার অবা­ধ্য হওয়া নি­তা­ন্তই অনু­চিত। বি­শেষ আমিও বলি­তে­ছি, তু­মি কু­ফার নাম পর্য­ন্তও করিয়ো না। কু­ফার নাম শু­নি­লে আমার হৃদয় কাঁপিয়া উঠে। তো­মার কি স্ম­রণ হয় না যে, তো­মার পি­তা কু­ফায় যাইয়া কত কষ্ট পাইয়াছি­লেন? কু­ফা-নগ­­বা­সী­রা তাঁহা­কে কতই-না যন্ত্র­ণা দিয়াছিল, সে কথা কি একে­বা­রে ভু­লিয়াছ? কু­ফায় যা­­বার বা­­না অন্তর হই­তে একে­বা­রে দূর কর। নি­শ্চি­ন্ত­ভা­বে রওজায় বসিয়া থাক, আমি সা­হস করিয়া বলি­তে­ছি, জগ­তে এমন কে­হই নাই যে, তো­মার অঙ্গ স্প­র্শ করে।"
হো­সেন বলি­লেন, "আমার মন অত্য­ন্ত অস্থির হইয়াছে! তি­লা­র্ধ কালও মদি­নায় থা­কি­তে ইচ্ছা হই­তে­ছে না। আপ­না­রা আর আমায় বা­ধা দি­বেন না। মি­­তি করিয়া বলি­তে­ছি, অনু­­তি করুন, শী­ঘ্রই যা­হা­তে কু­ফায় যা­ত্রা করি­তে পা­রি।"
উম্মে কু­­সু­ম্ বি­­ক্ত হইয়া চলিয়া যা­­তে যা­­তে বলি­লেন, "ঈশ্বর অদৃ­ষ্ট­­­কে যা­হা লি­খিয়াছেন, তা­হা রদ করি­বার কা­হা­রো সা­ধ্য নাই। তো­মার যা­হা ইচ্ছা তা­হাই কর।"
হো­সে­নের বন্ধু­বা­ন্ধব এক­বা­ক্য হইয়া সক­লেই কু­ফা­­­নে নি­ষেধ করি­লেন। প্র­তি­বে­শী­­ণের মধ্যে এক­জন বলি­লেন, "মদি­নার মায়া একে­বা­রে অন্তর হই­তে অন্তর করি­বেন না। এজি­দের ভয়ে মদি­না পরি­ত্যাগ নি­তা­ন্ত পরি­তাপ দু­­খের বিষয়। তা­হা­রা প্র­কা­শ্য যু­দ্ধে কী করি­বে? মদি­না­বা­সী­দের এক­­নেরও প্রাণ দে­হে থা­কি­তে শত্রু­গণ কি আপ­নার অঙ্গ স্প­র্শ করি­তে পা­রে? কা­হার সা­ধ্য? আমা­দের স্বা­ধী­­তা, স্ব­দে­শের গৌ­রব রক্ষা, ইহা তো আছেই; তা­হা ছাড়া আপ­নার প্রা­ণের জন্য এজি­দের সৈন্যের সম্মু­খীন হই­তে আম­রা কখ­নোই পরা­ক্স­মুখ হইব না। আম­রা শি­তি নহি, তা­হা স্বী­কার করি; কি­ন্তু আপ­নার প্রা­­রার জন্য আমা­দের প্রাণ শত্রু­­স্তে অর্পণ করি­তে শি­ক্ষার আব­শ্যক কি? আম­রাও যদি শত্রু­­স্তে বি­না­­প্রা­প্ত হই, তথা­পি মদি­নার এক­টি স্ত্রী­লোক জী­বিত থা­কি­তে এজি­দ্ আপ­নার অনি­ষ্ট সা­ধন করিয়া কখ­নোই মদি­নার সি­­হা­­নে বসি­তে পা­রি­বে না। আপ­নি কা­হার ভয়ে-কো­ন্ শত্রুর শত্রু­তায় মদি­না পরি­ত্যাগ করি­বেন? আমা­দের জী­বন থা­কি­তে আম­রা আপ­না­কে যা­­তে দিব না। আপ­নার আজ্ঞার প্র­তি­­ন্ধ­­তা করি­তে আমা­দের ক্ষ­­তা নাই। যদি আপ­নি মদি­না পরি­ত্যাগ করি­তে নি­তা­ন্তই কৃ­­­ঙ্ক­ল্প হইয়া থা­কেন, করুন; কি­ন্তু মদি­না­বা­সী­রা আপ­না­কে কখ­নোই পরি­ত্যাগ করি­বে না। যে­খা­নে যা­­বেন, তা­হা­রাও আপ­নার সঙ্গে সে­­খা­নে যা­­বে।"
হো­সেন বলি­তে লা­গি­লেন, "ভাই সকল! এজি­দের জী­­নের প্র­থম কা­র্যই আমা­দের বংশ বি­নাশ করা। যে উপায়ে হউক, এজি­দ্ আমার প্রাণ বি­নাশ করি­বে। যখন দুই ভ্রা­তা ছি­লাম, তখন এজি­দের সৈন্যে­রা সা­হস করিয়া প্র­কা­শ্য যু­দ্ধ করি­তে অগ্র­সর হয় নাই। কয়েক­বার পরী­ক্ষা করিয়া দে­খিয়াছে এবং আপ­না­রাও দে­খিয়াছেন। এক্ষ­ণে আমার সা­হস, বল, বু­দ্ধি চি­ন্তা­­ক্তির অনেক লা­ঘব হইয়াছে। কা­রণ, ভ্রা­তৃ­শো­কে আমি যে প্র­কার দু­­খিত কা­তর আছি, তা­হা আপ­না­রা স্ব­­ক্ষে দে­খি­তে­ছেন; যে হৃদয় কখ­নোই ভয়ের নাম জা­নিত না, শত্রু­না­মে যে হৃদয় কদাচ আত­ঙ্কিত হইত না, সেই ভয়শূন্য­হৃদয় আজ ভ্রা­তৃ-বিয়োগ-দু­­খে সা­মা­ন্য যু­দ্ধের না­মে আত­ঙ্কে কাঁপিয়া উঠি­তে­ছে। আমার নি­জের মনই যদি নি­রুৎসাহ থা­কিল-শত্রুভয়ে কম্প­মান রহিল, তখন কা­হার উৎসা­হে-কা­হার উত্তে­­নায়, আপ­না­রা সেই দু­র্দা­ন্ত শত্রুর অস্ত্র­­ম্মু­খে-অসং­খ্য সে­নার অসং­খ্য অস্ত্র­­ম্মু­খে দণ্ডায়মান হই­বেন? বলুন তো, কা­হার সা­­সের উপর নি­র্ভর করিয়া বি­­র্মীর অস্ত্রা­ঘা­তের জন্য বক্ষ বি­স্তার করিয়া দি­বেন? শি­ক্ষি­তি সৈন্যের তর­বা­রির গতি কা­হার প্রোৎসা­­বা­ক্যে প্র­তি­রোধ করি­বেন? আমি অনেক চি­ন্তা করিয়া দে­খিয়াছি, এক্ষ­ণে মদি­না পরি­ত্যাগ করাই আমার পক্ষে শ্রেয়ঃ এবং মদি­না­বা­সীর পক্ষে মঙ্গল। আমার জন্য আমি আপ­না­দি­­কে বি­­­গ্র­স্ত করি­তে বা­­না করি না। এজি­দের হস্তে, কি­­বা তা­হার সৈন্যের হস্তে বি­ধি যদি আমার জী­বন-শে­ষের বি­ধি করিয়া থা­কেন, তবে তা­হা নি­শ্চয়ই ঘটি­বে। যে­খা­নেই কেন যাই না, আমার প্রা­­­ন্তা সে­­খা­নেই উপ­স্থিত হই­বে। কা­রণ, জগ­দী­শ্ব­রের কা­র্য অনি­বা­র্য। আমার স্থা­না­ন্তর হওয়ায় মদি­না­বা­সী­রা তো এজি­দের রো­ষা­গ্নি হই­তে রক্ষা পা­­বে। তা­হাই আমার পক্ষে মঙ্গল।"
প্র­তি­বে­শী­­ণের মধ্যে এক­জন প্রা­চীন ছি­লেন, তি­নি বলি­তে লা­গি­লেন, "ঈশ্ব­রের নিয়োজিত কা­র্য অনি­বা­র্য, কথা কে না স্বী­কার করি­বে? কি­ন্তু আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ হঠাৎ এই­ভা­বে এত বড় রা­জ্য আপ­না­কে অযা­চি­­ভা­বে ছাড়িয়া দিল, ইহার কা­রণ কী? কথাও রা­ষ্ট্র হইয়াছে যে, এজি­দ্প­ক্ষীয় কা­সে­দ্ তিন লক্ষ টা­কা লইয়া কু­ফা নগ­রে জেয়াদের নি­কট গিয়াছিল। জেয়াদ্ও দা­মে­স্কের কা­সে­দ্কে এবং তৎসম­ভি­ব্যা­হা­রী সৈন্য­­তু­ষ্টয়কে বি­শেষ পু­­স্কৃত করিয়া বি­দায় করিয়াছেন। তা­হার পর­দি­­সই স্ব­প্ন­বি­­রণ সভায় প্র­কাশ করিয়া রা­­সি­­হা­সন রা­জ্য আপ­না­কে অর্পণ করিয়াছেন। ইহা­রই-বা কা­রণ কী? যদি এজি­দের মন্ত্র­ণায় সে অস­ম্মত হই­বে, কি এজি­দের আদেশ প্র­তি­পা­­নে অনি­চ্ছুক হই­বে, তবে নি­­স্বা­র্থ বন্ধুর চি­­­ত্রু­প্রে­রিত কা­সে­দ্কে কেন পু­­স্কৃত করি­বে? কেন তা­হার প্র­­ত্ত অর্থ নিজ ভা­ণ্ডা­রে রক্ষা করি­বে? যে রা­জ্য আপ­নার পি­তা বহু পরি­শ্রম করিয়াও নি­ষ্ক­ণ্ট­কে হস্ত­গত করি­তে পা­রেন নাই, কয়েক­বার তাঁহা­কে নগ­­বা­সী­রা, যে প্র­কার কষ্টে নি­পা­তিত করিয়াছিল, তা­হা বোধ হয় আপ­নি পরি­জ্ঞাত আছেন। এই­ণে কু­ফা­ধি­­তি জেয়াদ্ হঠাৎ নূরন­বী মো­হা­ম্ম­দের স্ব­প্না­দে­শে সেই রা­জ্য অকা­­রে আপ­না­কে দান করিল, ইহা­তে আমার বি­শেষ সন্দেহ আছে।"
হো­সেন বলি­লেন, "এমন কথা মু­খে আনি­বেন না। আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের ন্যায় আমার প্র­কৃত বন্ধু মদি­না ব্য­তীত অন্য কোন স্থা­নেই নাই। তাঁহার গু­ণের কথা কত বলিব। তি­নি আমার জন্য এজি­দের মু­ণ্ড­পাত করি­তেও বোধ হয় কখ­নোই কু­ণ্ঠিত হই­বেন না। জেয়াদের বা­ক্য কা­র্যে আমার কি­ছু­মা­ত্র সংশয় নাই।"
বৃ­দ্ধ পু­­রায় বলি­তে লা­গি­লেন, "জেয়াদের বা­ক্যে কা­র্যে আপ­নার কোন সংশয় হয় না, অব­শ্যই না হই­তে পা­রে। কি­ন্তু আমি বলি, মা­নু­ষের মনের গতি কো­ন্ সময় কী হয়, তা­হা যা­হার মন, সেও জা­নি­তে পা­রে না। এক­টু চি­ন্তা করিয়া কা­র্য করায় ক্ষ­তি কী? আমার বি­বে­­নায় অগ্রে জনৈক বি­শ্বা­সী এবং সা­­সী লো­­কে কু­ফা নগ­রে প্রে­রণ করা হউক। কু­ফা­বা­সী­রা যদি কো­নরূপ চক্রা­ন্ত করিয়া থা­কে তবে অব­শ্যই প্র­কাশ হই­বে। গু­প্ত মন্ত্র­ণা 'দিন গো­পন থা­কি­বে? এক­টু সন্ধান করি­লেই সকল জা­না যা­­বে। আর জেয়াদের রা­জ্য­দা­­­ঙ্ক­ল্পও যদি যথা­র্থ হয়, তবে আপ­নার কু­ফা গম­নে আমি কোন বা­ধা দিব না।"
হো­সেন বলি­লেন, " কথা মন্দ নয়; কি­ন্তু অন­র্থক সময় নষ্ট এবং বি­­ম্ব। তা যা­হাই হউক, আপ­নার কথা বা­­বার লঙ্ঘন করিব না। অগ্রে তথায় পা­ঠা­­তে কা­হা­কে মন­স্থ করিয়াছেন? এমন সা­­সী বি­শ্বা­সী পা­ত্র কে আছে?"
দ্বি­তীয় মো­স্লেম না­মক জনৈক বী­­পু­রুষ গা­ত্রো­ত্থান করিয়া কর­জোড়ে বলি­তে লা­গি­লেন, "হজ­রত ইমা­মের যদি অনু­­তি হয় তবে দা­সই কু­ফা নগ­রে যা­­তে প্র­স্তুত আছে। আপ­নি কি­ছু­দিন অপে­ক্ষা করুন, আমি কু­ফায় যাইয়া যথা­র্থ তত্ত্ব জা­নিয়া আসি। যদি আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদ্ সর­­ভা­বে রা­জ্য দান করিয়া থা­কেন, তবে মো­স্লেম আন­ন্দের সহিত শুভ সং­বাদ লইয়া ফি­রিয়া আসি­বে। আর যদি ইহার মধ্যে কোন ষড়যন্ত্র থা­কে, তবে বু­ঝি­বেন, মো­স্লে­মের এই শেষ বি­দায়। আপ­নার কা­র্যে মো­স্লে­মের প্রা­ণের মায়া, সং­সা­রের আশা, সুখ-দু­­খের চি­ন্তা, স্ত্রী-পরি­বা­রের স্নে­­­ন্ধন, কি­ছু­মা­ত্র মনে থা­কি­বে না। আজ মো­স্লেম আপ­নার কা­র্যে জী­বন উৎসর্গ করিল। এই মুহূর্তেই কু­ফায় যা­ত্রা করি­বে। এখা­নে অনে­কেই আছেন, যা­হা বলি­তে ইচ্ছা করেন বলুন; মো­স্লেম সে কথার অন্য­থা কি­ছু­তেই করি­বে না।"
বৃ­দ্ধ পু­­রায় বলি­লেন, "মো­স্লেম তো যা­­তেই প্র­স্তুত। মো­স্লে­মের প্র­তি আমার তো সম্পূর্ণ বি­শ্বা­সই হয়, কি­ন্তু একা মো­স্লে­­কে কু­ফায় প্রে­রণ করা যু­ক্তি­­ঙ্গত বলিয়া বোধ হয় না। শি­ক্ষাত হউক কি অশি­ক্ষিত হউক, সৈন্য­না­­ধা­রী কতিপয় লো­­কে মো­স্লে­মের সঙ্গে দি­তে হই­বে।"
বৃ­দ্ধের মু­খে এই কথা শু­নি­বা­মা­ত্র নি­তা­ন্ত আগ্র­হের সহিত অনে­কে যা­­তে ইচ্ছুক হই­লেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে এক হা­জার লোক মো­স্লে­মের সঙ্গী হই­তে সমুৎসুক হইল। কু­ফার রহ­স্য-ভেদ ষড়যন্ত্রের মূলো­চ্ছেদ করি­তে তা­হা­রা প্রা­­­ণে প্র­স্তুত। সমুদয় কথা সা­ব্য­স্ত হইয়া গেল; অস্ত্র­­স্ত্র সং­গ্রহ করিয়া মো­স্লেম এক হা­জার সৈন্য লইয়া কু­ফা নগ­রা­ভি­মু­খে যা­ত্রা করি­লেন। বী­­­রের দুই পু­ত্রও পি­তার সঙ্গে চলিল

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.