পান সংখ্যা

 
যুগ যুগ ধরে বাংলার মানুষ পান খেয়ে তাদের হৃদয়ের কথা বলেছে। কোনো সভা, বিচার, বিবাহতে পান একটি প্রধান অনুজ্ঞ। আমাদের মা খালাদের দেখেছি তারা একবেলা ভাত না খেয়ে থাকতে পারে কিন্ত এক বেলা পান না খেয়ে থাকতে পারে না। বিবাহ অনুষ্ঠানে যদি ভুল করে পান না আনা হয় এমন হয়েছে সে বিয়েটি আর হয়ে উঠেনি। পান আমাদের দেশে একটি অর্থকারী ফসল। এর আছে নানা ঔষধী গুণ। আছে প্রেমের অনুজ্ঞ। প্রাচীন যুগে বাঙালী নারীরা ঠোঁট লাল করার জন্য পান খেত। পুরুষ তার যৌনশক্তি বৃদ্ধির জন্য পান খেয়ে থাকে। পান আমাদের জীবেন দারুন প্রভাব বিস্তার করে রয়েছে বলেই মোলাকাত এবার পান সংখ্যা করেছে। আগামীতে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে প্রকাশ হবে। এসংখ্যায় যারা লেখা দিয়ে সহযোগিতা করছেন সবাইকে ধন্যবাদ। আরো ধন্যবাদ যেসকল পাঠ আমাদের এই সংখ‌্যা পাঠ করেছেন। আপনাদের ভালো লাগলেই আমাদের এই কষ্টসাধ্য কাজে সফলতা। - আফসার নিজাম, সম্পাদক।
 
সূচীপত্র
 
যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম : কন্ঠশিল্পী: সাবিনা ইয়াসমিন
পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম : কণ্ঠ: রুনা লায়লা
পান খাওয়ার গল্প : পূর্ণেন্দু পত্রী
পানপাতা : তৈমুর খান
খান্দানী পান : মানসুর মুজাম্মিল
পানের খিলি : আসলাম প্রধান
পানের বাটায় পানসুপারি : রানা জামান
গল্প কথায় হাসে : জানে আলম
পানের নেশা : হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
পান : লুৎফুর রহমান
পান : অঞ্জন মন্ডল
দাদুর পান : শাহীন রায়হান
এক খিলি পান  : আহমেদ ইউসুফ
দাদুর পানের স্মৃতি : আনোয়ার আল ফারুক
পান পাতা : আশরাফুন নাহার
পান : নবীর হোসাইন
শনিবার : নজির আহমেদ
বুবু খোকন : রাসেল খান
মিষ্টি পান : শেখ একেএম জাকারিয়া
পানের কদর : নাছির বিন ইব্রাহীম
পানখোর : মাহমুদ আল হাসান
..................................................
 
যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম
কন্ঠশিল্পী: সাবিনা ইয়াসমিন
 
যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম
যদি সুন্দর একটা মন পাইতাম
সদরঘাটের পান খিলি তারে বানাই
খাওয়াইতাম
একদিন তারে কাছে পেলে
রসের পিরিত শিখাইতাম
সদরঘাটের পান খিলি তারে বানাই
খাওয়াইতাম।।
নতুন মুখের নতুন কথা শুনিতে সুন্দর
মাঝে মাঝে পান চিবাইতো হাসির
ভিতর
প্রেমের মালা দুটি হাতে তারই
গলায় পড়াইতাম
আমি তারই গলায় পড়াইতাম।।
রসের কথা রসের পিরিত
যদি না সে জানে
দু-চার কথা কইতাম তারে প্রেমের
কারনে
নর নারীর রসের পিরিত
কি মজা তারে শিখাইতাম
আমি কি মজা তারে বুঝাইতাম
সদরঘাটের পান খিলি তারে বানাই
খাওয়াইতাম।।
..................................................
 
পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম
কণ্ঠ: রুনা লায়লা
 
পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম বন্ধুর ভাগ্য হইলো না
কাজল দিয়া চোখ ভরিলাম লক্ষ্মী কইল না
অই বিয়া বলে ঘটক বাড়ি আইল না
কপালের গাঙ্গ বাঁকা বলে মাঝি তরী বাইল না
দাদীর দিনের খাড়ু পরে বইসা থাকি একলা ঘরে
বিড়ালের অই কান্ন শুনে শিকল তো আর ছিড়ল না
জীন পরীদের আছর এমন কথা শুনি রোজ
তাবিজ কবজ কতই নিলাম তবু তো কেউ নেয় না খোঁজ
মরছি শুধু জ্বলে পুড়ে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে
ভারের ঘুড়ি নাটাই ছিড়ে আকাশে আর উড়লো না
..................................................
 
পান খাওয়ার গল্প
পূর্ণেন্দু পত্রী
 
সবুজ পাতায় প্রথম মাখালে চুন
আট-পহরের ঘাঁটা বিছানায় ধপ ধপে সাদা চাদর
তারপর সেই সাদা চাদরে জাঁতিকাটা ফালা ফালা সুপরি
বহু যুগের ক্ষুধায় কাঁদতে কাঁদতে যে মরেছে তার কঙ্কাল,
আরেকবার বাঁচার ইচ্ছেয় যার হাড়ের ফুটোগুলো
এখনো বাঁশীর মতো ব্যাকুল
অর্থাৎ আমি,
খানিক পরেই আমার পাশে এনে বসাল তোমাকে
কেয়া-খয়েরের কুঁচি
গা ফেটে বেরোচ্ছে ঋতুবতী রমণীর নরম গন্ধ
এমন গন্ধ যে ঘুমোতে দেয় না নিশ্বাসকে
এমন নরম যাতে ভাসিয়ে দেওয়া যায় সর্বঙ্গ।
 
তিনদিক থেকে আষ্টেপৃষ্ঠে কে যেন মুড়ে দিল আমাদের
আর, হরিণের হলুদ মাংসে যেমন ব্যাধের তীর,
তেমনি একটি কঠিন লবঙ্গ ভেদ করে চলে গেল
তোমার মধ্যে আমাকে
আমার ভিতরে তোমাকে।
 
আমি বললাম, সুখী
এই বনগন্ধকেই তো শরীর ছিঁড়ে খুঁজেছি সারাটা গ্রীস্ম।
তুমি বললে, সুখী
তোমার চৌচির ডালপালাকে দেব বলেই তো সাজিয়েছি আমার বসন্ত।
 
আমাদের সামনে তখন অনন্তকাল।
আমাদের জিভের লালায়, দাঁতের কামড়ে, হাতের থাবায়
পৃথিবীর যত বন, তার গন্ধের ফেনা
যত পাখি, তার পশমের রোদ
যত নদী, তার নুড়ি পাখরের গান।
 
অমরতার ময়ুর নাচ দেখাবে বলে
যখন একটু একটু করে পেখম মেলছিল রক্তে
ঠিক তখুনি, দুটি আকীর্ণ শরীরের গোপন ভাস্কর্যকে ভেঙে-চুরে,
কেউ একজন চিবিয়ে খেতে লাগল আমাদের খিলিশুদ্ধ।
আমরা রক্তপাতের মতো গড়িয়ে পড়ছি তার ঠোঁটের কশ বেয়ে।
..................................................
 
পানপাতা
তৈমুর খান
 
পানপাতা মুখখানি যেদিন পান দিয়ে গেলে
সেদিনই প্রথম ছোঁয়া আমার হৃদয়-বরজে
কথা ফুটল মুগ্ধ আরতির মন্ত্রে জেগে উঠল ভাষা
তোমার সবুজ ফ্রকে হল পান আঁকা
 
জীবনের কত পথ, পথে পথে কত পানের বিপণি
রঙিন পিকে টুকটুকে কত লালমুখ
কারও কাছে যেতে পারি নাকো
হৃদয়ের গভীরে আজও একটি বরজ, ডাকে পানপাতা
 
মেঘের ভেলায় বেলা যায়, তবু তুমি আছ
ব্যাখ্যাহীন স্মৃতির ভেতর নিজস্ব মহিমায়
সমস্ত আকাশ জুড়ে পান, পানময় সংসার
একটি ছোঁয়ার নিমেষ স্পন্দন তোলে জীবনভর
 
যদিও তাম্বুল হও, নন্দিত রাধার কাছে প্রেমের সওগাত
আমি সেই তৃষ্ণার্ত বাঁশি শুনতে শুনতে আজও উন্মুখ 
একে একে বিরহ পর্ব পার করি, কাঁদে জ্যোৎস্না-নিশি
গোকুলে তোমারই বাঁধন শুধু আর সব নিঃস্ব করতালি
..................................................
 
খান্দানী পান
মানসুর মুজাম্মিল
 
পান খায় দাদাদাদি
পান খায় নানা
পান তবে খানা ?
পান খেতো রাজা রানী
পান খেতো প্রজা
পান-ঠোঁট মজা !
পান খেয়ে হাসিখুশি-
ঠোঁট লাল বৌ
দেখো দেখো লাজে রাঙা
মুখটা কী ওর !
পান খায় পাতি নেতা
পান সাধে ভোটে
যদি কিছু জোটে |
পান ছাড়া বিয়ে নেই
নেই কোনো সালিস
পান ছাড়া কিছু করো-
দিয়ে দেবে নালিশ |
পান খেয়ে কথা হয়
নেই হানাহানি
খান্দানী পান খেতে
লাগে টানাটানি !
 
পান তো-সোপান
সোনিয়া কাদির
পান তোসোপান
সোমরস
রসে কষে
জুড়াই পরাণ
যদি একখান
মুখ পাইতাম
সাময়িকী পান
তারে খাওয়াই
ছাড়িতাম
জলদি, আন্
পানদান
..................................................
 
পানের খিলি
আসলাম প্রধান
 
পানের কথা কী বলব আর
পানপাতা ঔষধি
খাওয়ার পরে পানের খিলি
না পাওয়া যায় যদি
মন হয়ে যায় মরা-
তাই তো দেখি পানখেকো খায়
পানের হাতে ধরা !
পানের সাথে চুন-সুপারি-খয়ের
খাওয়া গেলেও-
জর্দা কিন্তু দেহের জন্য ভয়ের !
..................................................
 
পানের বাটায় পানসুপারি
রানা জামান
 
পানের বাটায় পাশাপাশি পানের সাথে চুন
সুপারিটা কাটার সময় গেয়ো কোনো ধূন
কাটার সময় উদাস হলে আঙ্গুল হবে খুন
 
পানের সাথে খেতে পারো হাকিমপুরি জর্দা
বারে বারে খেতে দেখতাম আমার বাড়ির বড়দা
যক্ষায় মরা বড়দার গোরে টেনে রাখছি পর্দা
 
পানের সাথে খয়ের খেলে অধর রাঙে বেশ
রাঙা ঠোঁটে জবর লাগে খোলা থাকলে কেশ
পান-সুপারি অনেক জন্মায় আমার বাংলাদেশ
 
পানের গুণে পানের সুনাম আদি হতে আজ
সুপারিটা আলগাভাবে করে হার্টের কাজ
স্বাদ বাড়ালেও জর্দা খয়ের এক একটা বাজ।
..................................................
 
গল্প কথায় হাসে
জানে আলম
 
একবেলা ভাত না খেয়েও
থাকতে পারে ভাই
কিন্তু জেনো আমার আম্মুর
পান টা থাকা চাই।
আব্বু রও যে একই দশা
পান প্রিয় দু জন
পান পেলে খুব খুশি খুশি
থাকে তাদের মন।
বাজারে তাই গেলে আমি
পান কিনি ভাই আগে
পিতামাতার প্রতি খুবই
গভীর অনুরাগে
"পানের মাঝে ক্ষতি আছে
বলছে চিকিৎসক"
বললে ওদের
মনে লাগে বিদ্যুতেরই শক।
কে যে কবে বলছে ওদের
পান সুপারি চুন
খেলে বাড়ে মেধা শক্তি
বাড়ে অনেক গুণ
পাড়ার কোনো মহিলা তাই
কাছে যখন আসে
পানের বাটা নিয়ে আম্মু
গল্প কথায় হাসে।
..................................................
 
পানের নেশা
হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
 
ভাতের পরে খায় যদি কেউ
একটি শুধু পান
একটু পরেই হজম খাবার
খিদেতে টান্ টান্
খুশিতে খুব তাই যদি কেউ
পান পুরে দেয় মুখে
মুখের লালে আরও রঙিন
মন ভরে যায় সুখে
সারাদিনে একটি দুটি
পান তো খাওয়াই যায়
এমন পানের নেশা হলে
চালিয়ে যাওয়া যায়
কিন্তু যদি সারাদিনে
হিসেবে না থাকে
তাহলেই তো পড়বে তুমি
নেশার ভীষণ পাকে
..................................................
 
পান
লুৎফুর রহমান
 
বিয়ের বেলা পানের বাটা
আছে পানের গীতও
পানের সাথে ঠোঁটের আছে
ছন্দ ছড়ার মিতও।
পান খেয়ে ঠোঁট লাল করেছে
রসিক আমার স্বজন
তাইতো তারে বাসছি ভালো
করছি প্রেমে ভজন।
পানের প্রেমে, প্রেমের পানে
গান ধরেছে গান
তার গানেতে পাগল যে মীম
প্রেমিক কালা চাঁন।
..................................................
 
 
পান
অঞ্জন মন্ডল
 
পানের থালা নিয়ে মা বসবে
পান খেতে চুন লাগবে,
আরও লাগবে সুপারি
পান সুপারি চুন জর্দা না আনলে বাড়ি
বাবার সাথে মা করবে ভীষণ আড়ি।
আমি পান খাই না
ঠোঁট লাল হয় না।
মা বেশী খায় পান
আমি বলি কম খান
শুনে মা রেগে যান।
বলে মা- পানে মুখ করে নিশানা
পান ছাড়া আমার কিছুই চলে না।।
..................................................
 
দাদুর পান
শাহীন রায়হান
 
দাদুর ভয়ে সবাই থাকে চুপ
দাদু বুড়ো খুনখুনেও খুব
চমশা চোখে হাতে লাঠি
চলন বলন পরিপাটি
মুখে দাড়ি মাথায় পাকা কেশ
এটাই দাদুর নয়তো আসল বেশ।
.
দাদু যেন আস্ত মেশিনগান
রাগলে পরে সবার টানে কান
দাদুর ভয়ে দিন দুপুরে
আত্মারামও যায় যে উড়ে
নয়তো এটা ফান
কিন্তু দাদু মোম হয়ে যায়
আদর করে হাতটা বুলায়
যে তাকে দেয় পান।
..................................................
 
এক খিলি পান
আহমেদ ইউসুফ
 
এক খিলি পান
মুখে পুড়ে দিল কৃষ্ণকলি।
সবুজ পান চিবুতে চিবুতে
দুটো ঠোঁট, জিহবা লালে লাল।
রসনার রাজ্যে রসের সাগর
হৃদয়ে পানের মাদকতা।
 
এক খিলি পান
চিবিয়ে চিবিয়ে তারে বলি
"সবুজ পাতায় কেমন যৌবন?
যুদ্ধের ময়দানে রক্ত লাল
নিষ্পেষিত পান, নিষ্পেষিত প্রাণ
হৃদয়ে পানের সঞ্জীবতা।"
..................................................
 
দাদুর পানের স্মৃতি
আনোয়ার আল ফারুক
 
দাদু আমার পান চিবাতো
লালগোলাপী ঠোঁটে,
লাল টুকটুক দাদুর গালে
যেনো জবা ফোটে।
 
দাদুর পানের বাটায় ছিলো
হরেক মশলাপাতি,
উঠোনজুড়ে পান আসরে
কাটতো কতো রাতি।
 
একটুখানি বায়না ছিলো
দাদুর পানটা খেতে,
ভয়ও ছিলো দেখলে মায়ে
উঠতেন ঠিকই তেতে।
..
মায়ের চোখটা ফাঁকি দিয়ে
ঠোঁট ভেজাতাম পানে,
সেই স্মৃতিটা আজো আমায়
কী'যে ভীষণ টানে।
 
এখনো কী বেহেস্ত মাঝে
পান চিবাও তুমি,
মনের সুখে দাও এখনো
পানের রসে চুমি?
 
নেই'যে এখন পানপিয়াসী
আমার সৌখিন দাদু,
তাইতো আমি পাই না খুঁজে
দাদুর পানের যাদু।
 
দাদু তোমার পান চিবুনি
যাইনিতো এই ভুলে,
তোমার পানের স্মৃতি খুঁজি
রক্তজবা ফুলে।
..................................................
 
পান পাতা
আশরাফুন নাহার
 
টিপটিপ জ্বলা প্রদ্বীপ লজ্জাবতী চোখের পাতি
ভোরমিতালী গুঞ্জন তার কানে টেনে আনে
বসন্ত উদাস এক দমকা হাওয়া,
লজ্জাচোখে থমকে থমকে চায় সে লজ্জাবতী ,
বাহির হাওয়ায় প্রেমালাপ
ভেতরে দুরুদুরু কাঁপা ঠোঁটের পানপাতা গোলাপী গোলাপ,
হরণে লজ্জা এসেছে বসন্ত...
করবে কি তারে বরণ!
চিকুর ধোয়া পানিতে পানপাতা বিছিয়েছে থামবে
হসন্ত
বিধুতাজ পরা সে ঋতুরাজ ,
পানপাতায় এমনি দাঁড়িয়ে ছিল
এসেছিল সে বেসেছিল ভাল স্বপ্নকূলে সাদাকালো
তারপর পানপাতার শুষ্কতা স্বাদ ঘুঁচিয়ে কুড়ালো সবুজরঙ অপবাদ।
আজ এই লগ্ন আসে কি পানপাতা লজ্জাবতীর লালসিঁদুর ঘরের চৌকাঠ বেয়ে?
আসে কি অবহেলা?
আসে কী বহুকাঙ্খিত ফাল্গুন ধেয়ে...
আসে কি প্রেমময় অপবাদ বানী ?
পানপাতার লজ্জালাল গালে ঝরনার মিঠা না লোনা পানি।
লজ্জাবতী পানপাতায় মুখ ঢাকে
তখনও বরণডালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকে।
..................................................
 
পান
নবীর হোসাইন
 
আমি খুশি পেলেই একটা পান
চাই না খেতে পিৎজা কাবাব নান।
 
আমি খুশি পানের সাথে চুনে
চেহারা নয়, হই যে খুশি  গুনে।
 
মুখটাকে তাই রাঙিয়ে দিতে রোজ
পানকে খুঁজি নিত্য সেরে ভোজ।
 
পানের সাথে ভাব হয়েছে খুব
আস্ত পান দেয় যে গালে ডুব।
..................................................
 
শনিবার
নজির আহমেদ
 
তোমাকে দেখেছি সেই কবে—
কোন এক শনিবার।
সেই থেকে শনিবারে হ্যাং হয়ে আছে সময়,
চারদিকে অন্ধকার...
খুঁজে ফিরি রবি সোম মঙ্গলবার।
 
লাল ঠোঁট,রসালো জিহ্বা আর
চোখের আহ্বানে—
যতই সামনে এগোচ্ছি ততই সরে যাচ্ছো দূরে।
পানপাতা হিয়ার মধ্যে নদী,
তরঙ্গে দোলে পান সুপারি চুনের গুণানুবাদ—
তুমি ঠোঁট রাঙাতে নারাজ।
 
নদীতে সাঁতার কাটবো,
স্নান করবো কিন্তু শরীর ভেজাবো না।
তুমি বললে— তা কী হয়?
প্রশ্নের বদলে প্রশ্ন কয়-তুমি চাইলে কেন নয়?
 
তুমি বললে-এই নাও  যৌবনের শপথ,
আমি উড়াবো তোমায়;
ভাসাবো ডাঙায় লতায় পাতায় জড়াবো সারা গায়।
আজ দেখি হায়!
যাঁতাকলে স্বপ্ন সুপারি কাটা যায়,আমার
বাগানের পান অন্যজন চিবায়।
 
রবি সোম মঙ্গলবার নেই—
শনিবার তেল দ্যায় নিজের চরকায়...
..................................................
 
বুবু খোকন
রাসেল খান
 
পান খেয়েছে বুবু যে আজ
ঠোঁট করেছে লাল
বলছে বুবু খোকন খাবি ?
হেসে এক গাল
 
খোকন বলে - খেতে পারি
বকবে না তো মা ?
ভয় কেন পাস খোকন রে তুই
আমি আছি না !
 
পান নিয়েছে যেই না মুখে
মা দ্যাখে অই খাড়া
বুবু বলে - আসছি খোকন
একটুখানি দাঁড়া !
..................................................
 
মিষ্টি পান
শেখ একেএম জাকারিয়া
 
দূর শহরের দুষ্টু মেয়ে
আসমানেরই চান,
ফেবুর হাটে ইচ্ছা পুষে
খাবে মিষ্টি পান।
 
ইচ্ছা পূরণ করতে তারই
খুঁজতে থাকি পান,
কিন্তু কোথাও পাই না খুঁজে
দুঃখে ধরি গান।
 
গাইতে গাইতে হঠাৎ মিলে
পানের- সন্ধান,
এমন সময় পাই যে খবর
লাগবে না আর পান।
 
এই খবরে মন পাখিটা
উঠল কেঁদে হায়!
ফেবুর মেয়ে মরীচিকা
আগুন জ্বলে গায়।
..................................................
 
পানের কদর
নাছির বিন ইব্রাহীম
 
পান খেয়ে গান করে হরিদাস পাল
তার গানে তরুনেরা হবেই মাতাল,
এখানে ওখানে গাঁয়ে ডাক পরে তার
পান হলে টাকা কড়ি চায়বেনা আর।
 
ঘটক ফটিক মিয়া কথা থেকে বেশি
পান খান চুন দিয়ে জর্দাটা দেশি,
শুকনা সুপারি লাগে,লাগে সাদা পাতা
বারো মাস বগলেই থাকে বড় ছাতা।
 
পাড়ার ইমামের বেতনের টাকা
পান খেয়ে চলে যায়,বললেন কাকা,
ভাত নাকি এক বেলা না খেলেই চলে
পান না পেলেই হুজুরের পেট জ্বলে।
 
চাটগাঁয় বিবাহের একদিন আগে
পান ছল্লায় পান অবশ্যই লাগে,
চলেওনা পান ছাড়া মজলিশ,মেলা
পান না হলেই বলে,একি ছেলে খেলা!
..................................................
 
পানখোর
মাহমুদ আল হাসান
 
ঘরে ঢুকে বাপজান প্রথমেই খান
চির করে অর্ধেক একখিলি পান
জর্দায় মাখামাখি মৌ মৌ ঘ্রাণ
কেউ হয় বিরক্ত কারো কাছে প্রাণ
পান মুখে ফোলে ওঠে কোনো এক গাল
উঠোনের চারপাশ পিক ফেলে লাল
বউ কয় আব্বা সারাদিনই খান
পান পান করে করে জীবন কাটান
পানখোর বাপজান চায় পান শুধু
পানবিনে চোখে দেখে খালি মরু ধুধু

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.