প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ_আরিফ আজাদ : পর্ব-১৪
কোরআন, আকাশ, ছাদ এবং একজন ব্যক্তির মিথ্যাচার
বাজাতে পারলে আমার নামও মফিজ না।' সাজিদ মাথা নিচু করে ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। বিশ মিনিট দেরি করে ফেলেছে ক্লাসে আসতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ মিনিট দেরি করে ক্লাসে আসা এমন কোনাে গুরুতর পাপ কাজ নয় যে এর জন্য তার দিকে এভাবে তাকাতে হবে। সাজিদ সবিনয়ে বলল- স্যার, আসব? মফিজুর রহমান স্যার অত্যন্ত গুরু গম্ভীর গলায় বললেন-হু। এমনভাবে বললেন, যেন সাজিদকে দু-চার কথা শুনিয়ে দরজা থেকে খেদিয়ে পাঠিয়ে দিতে পারলেই উনার গা জুড়ােয়।। সাজিদ ক্লাসরুমে এসে বসল । লেকচারের বেশ অর্ধেকটা শেষ হয়ে গেছে। মফিজুর রহমান স্যার আর পাঁচ মিনিট লেকচার দিয়ে ক্লাস সমাপ্ত করলেন। সাজিদের কপালে যে আজ খুবই খারাপ কিছু আছে সেটা সে প্রথম থেকেই বুঝতে পেরেছে। মফিজুর রহমান স্যার সাজিদকে দাঁড় করালেন। খুব স্বাভাবিক চেহারায়, হাসি হাসি মুখ করে বললেন-সাজিদ, কেমন আছাে? সাজিদ প্রায় ভূত দেখার মতাে চমকে উঠল। এই মুহূর্তে সে যদি সত্যি সত্যিই ডুমুরের ফুল অথবা ঘােড়ার ডিম জাতীয় কিছু দেখত, হয়তাে এতটা চমকাত না। মিরাকল জিনিসটায় তার বিশ্বাস আছে, তবে মফিজুর রহমান স্যারের এই আচরণ তার কাছে তার চেয়েও বেশি কিছু মনে হচ্ছে। এই ভদ্রলােক এত সুন্দর করে, এরকম হাসিমুখ নিয়ে কারও সাথে কথা বলতে পারে, এটাই এতদিন একটা রহস্য ছিল। সাজিদ নিজেকে খানিকটা সামলে নিয়ে বলল-“জ্বি স্যার, ভালাে আছি আলহামদুলিল্লাহ্। আপনি কেমন আছেন? তিনি আবারও একটি মুচকি হাসি দিলেন। সাজিদ পুনরায় অবাক হলাে। মনে হচ্ছে সে কোনাে দিবাস্বপ্নে বিভাের আছে। স্বপ্নের একটা ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে, স্বপ্নে বেশিরভাগ সময় নেগেটিভ জিনিসকে পজিটিভ আর পজিটিভ জিনিসকে নেগেটিভ ভাবে দেখা যায়। মফিজুর রহমান স্যারকে নিয়ে তার মাত্রাতিরিক্ত নেগেটিভ চিন্তা থেকেই হয়তাে এরকম হচ্ছে। একটু পরে সে হয়তাে দেখবে, এই ভদ্রলােক তার দিকে রাগিরাগি চেহারায় তাকিয়ে আছে এবং বলছে-অ্যাই ছেলে? এত দেরি করে ক্লাসে কেন এসেছ? তুমি জানাে আমি তােমার নামে ডিন স্যারের কাছে কমপ্লেইন করে দিতে পারি? আর কোনােদিন যদি দেরি করেছ...' সাজিদের চিন্তায় ছেদ পড়ল। তার সামনে দাঁড়ানাে হালকা-পাতলা গড়নের মফিজুর রহমান নামের ভদ্রলােকটি বললেন-“আমিও খুব ভালাে আছি। ভদ্রলােকের মুখে হাসির রেখাটা তখনও স্পষ্ট। মফিজুর রহমান স্যার সাজিদকে বললেন-“আচ্ছা বাবা আইনস্টাইন, তুমি কি বিশ্বাস করাে আকাশ বলে কিছু আছে? সাজিদ এবার নিশ্চিত হলাে যে, এটা কোনাে স্বপ্নদৃশ্য নয়। মফিজুর রহমান স্যার তাচ্ছিল্যভরে সাজিদকে আইনস্টাইন' বলে ডাকে। সাজিদকে যখন আইনস্টাইন বলে, তখন ক্লাসের অনেকে খিলখিল করে হেসে উঠে । এই মুহূর্তে সাজিদ একটি চাপা হাসির শব্দ শুনতে পাচ্ছে। তাহলে এটা কোনাে স্বপ্নদৃশ্য নয়। বাস্তব। সাজিদ বলল-“জ্বি স্যার, বিশ্বাস করি।' ভদ্রলােক আরেকটি মুচকি হাসি দিলেন। উনি আজকে হাসতে হাসতে দিন কেটে পার করে দেওয়ার পণ করেছেন কিনা কে জানে। তিনি বললেন-“বাবা আইনস্টাইন, আদতে আকাশ বলে কিছুই নেই। আমরা যেটাকে আকাশ বলি, সেটা হচ্ছে আমাদের দৃষ্টির প্রান্তসীমা। মাথার উপরে নীলরঙা যে-জিনিস দেখতে পাও, সেটাকে মূলত বায়ুমণ্ডলের কারণেই নীল দেখায়। চাঁদে বায়ুমণ্ডল নেই বলে চাঁদে আকাশকে কালাে দেখায়। বুঝতে পেরেছেন মহামতি আইনস্টাইন? স্যারের কথা শুনে ক্লাসের কিছু অংশ আবার হাসাহাসি শুরু করল। স্যার আবার বললেন-“তাহলে বুঝলে তাে আকাশ বলে যে কিছুই নেই? সাজিদ কিছুই বলল না। চুপ করে আছে। স্যার বললেন-“গতরাতে হয়েছে কি জাননা? নেট সার্চ দিয়ে একটি ব্লগ সাইটের ঠিকানা পেলাম। মুক্তমনা ব্লগ নামে। রবিজিৎ নামে এক ব্লগারের লেখা পেলাম সেখানে। খুব ভালাে লেখে দেখলাম। যাহােক, রবিজিৎ নামের এই লােকটা কোরআনের কিছু বাণী উদ্ধৃত করে দেখাল কত উদ্ভট এসব জিনিস। সেখানে আকাশ নিয়ে কী বলা আছে শুনতে চাও?
সাজিদ এবারও কিছু বলল না। চুপ করে আছে। স্যার বললেন, কোরআনে বলা আছে“আর আমরা আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ। অথচ, তারা আমাদের নিদর্শনাবলি থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে। 'And we made the sky a protected ceiling, but they, from its signs, are turning away. Al-Ambia: 32' দেখলে তাে বাবা আইনস্টাইন, তােমাদের আল্লাহ বলেছে, আকাশ নাকি সুরক্ষিত ছাদ। তা বাবা, এই ছাদে যাবার কোনাে সিঁড়ির সন্ধান কোরআনে আছে। কি? হা হা হা হা।' চুপ করে থাকতে পারলে বেশ হতাে। কিন্তু লােকটির মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়িতে সাজিদ মুখ খুলতে বাধ্য হলাে। সে বলল- স্যার, আপনার সেই ব্লগার রবিজিৎ আর আপনার প্রথম ভুল হচ্ছে, আকাশ নিয়ে আপনাদের দুজনের ধারণা মােটেও পরিষ্কার নয়। -ও, তাই নাকি? তা আকাশ নিয়ে পরিষ্কার ধারণাটি কি বলাে শুনি?’, অবজ্ঞা ভরে লােকটির প্রশ্ন। সাজিদ বলল-স্যার, আকাশ নিয়ে ইংরেজি অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে বলা আছে, 'The region of the atmosphere and outer space seen from the earth', অর্থাৎ, পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বায়ুণ্ডলের এবং তার বাইরে যা কিছু দেখা যায়, সেটাই আকাশ। আকাশ নিয়ে আরও পরিষ্কার বলা আছে উইকিপিডিয়াতে; যদিও উইকপিডিয়ার তথ্য মূল সসার্স নয়। আপনি নেট ঘেঁটে মুক্তমনা ব্লগ অবধি যেতে পেরেছেন, আরেকটু এগিয়ে উইকিপিডিয়া অবধি গেলেই পারতেন। যাহােক, আকাশ নিয়ে উইকিপিডিয়াতে বলা আছে-“The sky (or celestial dome) is everything that lies above the surface of the Earth, including the atmosphere and outer space' অর্থাৎ, পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের উপরে যা কিছু আছে, তার সবই আকাশের অন্তর্গত। এর মধ্যে বায়ুমণ্ডল এবং তার বাইরের সবকিছুও আকাশের মধ্যে পড়ে। -হু, তাে? -এটা হচ্ছে আকাশের সাধারণ ধারণা। এখন আপনার সেই আয়াতে ফিরে আসি। 'আপনি কোরআন থেকে উল্লেখ করেছেন
আর আমরা আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ। অথচ, তারা আমাদের নিদর্শনাবলি থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে। 'আপনি বলেছেন, আকাশ কীভাবে ছাদ হয়, তাই না? স্যার, বিংশ শতাব্দীতে বসে বিজ্ঞান জানা কিছু লােক যদি এরকম প্রশ্ন করে, তাহলে আমাদের উচিত বিজ্ঞান চর্চা বাদ দিয়ে গুহার জীবনযাপনে ফিরে যাওয়া। -'What do you mean?' -বলছি স্যার। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর উপরিভাগে যে-বায়ুমণ্ডল আছে, তাতে কিছু স্তরের সন্ধান পেয়েছেন। আমাদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এসব পুরু স্তর দ্বারা গঠিত। এই স্তরগুলাে হচ্ছে: এক: ট্রপােস্ফিয়ার দুই: স্ট্রাটোস্ফিয়ার তিন: মেসােস্ফিয়ার চার: থার্মোস্ফিয়ার পাঁচ: এক্সোস্ফিয়ার। ‘এই প্রত্যেকটি স্তরের আলাদা আলাদা কাজ রয়েছে। আপনি কি জানেন, বিজ্ঞানী Sir Venn Allen প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, আমাদের পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের চারদিকে একটি শক্তিশালী Magnetic Field আছে। এই ম্যাগনেটিক ফিল্ড আমাদের পৃথিবীপৃষ্ঠের চারদিকে একটি বেল্টের মতাে বলয় সৃষ্টি করে রেখেছে। বিজ্ঞানী স্যার Venn Allen-এর নামে এ জিনিসটার নাম রাখা হয় Venn Allen Belt. ‘এই বেল্ট চারপাশে ঘিরে রেখেছে আমাদের বায়ুমণ্ডলকে। আমাদের বায়ুমন্ডলের দ্বিতীয় স্তরটির নাম হচ্ছে স্ট্রাটোস্ফিয়ার।' এই স্তরের মধ্যে আছে এক জাদুকরি উপস্তর। এই উপস্তরের নাম হলাে ওজোন স্তর। ‘এই ওজোন স্তরের কাজের কথায় পরে আসছি। আগে একটু সূর্যের কথা বলি। সূর্যে প্রতি সেকেন্ডে যে-বিস্ফোরণগুলাে হয়, তা আমাদের চিন্তা-কল্পনারও বাইরে। এই বিস্ফোরণগুলাের ক্ষুদ্র একটি বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তা এমন যে, তা জাপানের হিরােশিমায় যে-অ্যাটমিক বােমা ফেলা হয়েছিল, সেরকম দশ হাজার বিলিয়ন অ্যাটমিক বােমার সমান। চিন্তা করুন স্যার, সেই বিস্ফোরণগুলাের একটু আচ যদি পৃথিবীতে লাগে, পৃথিবীর কী অবস্থা হতে পারে? ‘এখানেই শেষ নয়। মহাকাশে প্রতি সেকেন্ডে নিক্ষিপ্ত হয় মারাত্মক তেজস্ক্রিয় উল্কাপিণ্ড। এগুলাের একটি আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে পৃথিবী।
‘আপনি জানেন আমাদের এই পৃথিবীকে এরকম বিপদের হাত থেকে কোনাে জিনিসটা রক্ষা করে? সেটা হচ্ছে আমাদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। আরও স্পেসিফিকলি বলতে গেলে বলতে হয়, ওজোন স্তর। ‘শুধু তাই নয়, সূর্য থেকে যে-ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি আর গামা রশ্মি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে, সেগুলাে যদি পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারত, তাহলে পৃথিবীতে কোনাে প্রাণীই বেঁচে থাকতে পারত না। এই অতিবেগুনি রশ্মির ফলে মানুষের শরীরে দেখা দিত চর্ম ক্যান্সার। উদ্ভিদের সালােকসংশ্লেষণ হতাে না। আপনি জানেন, সূর্য থেকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা এসব ক্ষতিকর জিনিসকে কোন জিনিসটা আটকে দেয়? পৃথিবীতে ঢুকতে দেয় না? সেটা হলাে বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর। এই ওজোন স্তর এসব ক্ষতিকর উপাদানকে স্ক্যানিং করে পৃথিবীতে প্রবেশে বাধা দেয়। মজার ব্যাপার কি জানেন? এই ওজোন স্তর সূর্য থেকে আসা কেবল সেসব উপাদানকেই পৃথিবীতে প্রবেশ করতে দেয়, যেগুলাে পৃথিবীতে প্রাণের জন্য সহায়ক। যেমন, বেতার তরঙ্গ আর সূর্যের উপকারী রশ্মি। এখানেই শেষ নয়। পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় যে-তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়, তার সবটাই যদি মহাকাশে বিলীন হয়ে যেত, তাহলে রাতের বেলা পুরাে পৃথিবী ঠাণ্ডা বরফে পরিণত হয়ে যেত। মানুষ আর উদ্ভিদ বাঁচতেই পারত না। কিন্তু, ওজোন স্তর সব কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে মহাকাশে ফিরে যেতে দেয় না। কিছু কার্বন-ডাইঅক্সাইডকে সে ধরে রাখে যাতে পৃথিবী তাপ হারিয়ে একেবারে ঠাণ্ডা বরফ শীতল
হয়ে পড়ে। বিজ্ঞানীরা এটাকে গ্রিন হাউজ বলে। স্যার, বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরের এই যে ফর্মুলা, কাজ, এটা কি আমাদের পৃথিবীকে সূর্যের বিস্ফোরিত গ্যাস, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি, মহাকাশীয় উল্কাপিণ্ড থেকে ‘ছাদ’-এর মতাে রক্ষা করছে না? আপনার বাসায় বৃষ্টির পানি প্রবেশ করতে পারে না আপনার বাসার ছাদের জন্য। বিভিন্ন দুর্যোগে আপনার বাসার ছাদ যেমন আপনাকে রক্ষা করছে, ঠিক সেভাবে বায়ুমণ্ডলের এই ওজোন স্তর কি আমাদের পৃথিবীকে রক্ষা করছে না? ‘আমরা আকাশের সংজ্ঞা থেকে জানলাম যে, পৃথিবীপৃষ্ঠ হতে উপরের সবকিছুই আকাশের মধ্যে পড়ে। বায়ুমণ্ডলও তাে তাহলে আকাশের মধ্যে পড়ে এবং আকাশের সংজ্ঞায় বায়ুমণ্ডলের কথা আলাদা করেই বলা আছে। 'তাহলে বায়ুমণ্ডলের এই যে আশ্চর্য রকম প্রটেক্টিং পাওয়ার, এটার উল্লেখ করে যদি আল্লাহ বলেনআর আমরা আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ। অথচ, তারা আমাদের নিদর্শনাবলি থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।
‘তাহলে স্যার ভুলটা কোথায় বলেছে? বিজ্ঞান তাে নিজেই বলছে, বায়ুমণ্ডল, স্পেশালি বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর একটি ছাদের ন্যায় পৃথিবীকে রক্ষা করছে। তাহলে আল্লাহ্ও যদি একই কথা বলে, তাহলে সেটা অবৈজ্ঞানিক হবে কেন? ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আপনার সেই রবিজিৎ রায় বিজ্ঞান কম বুঝেন সম্ভবত। উনাদের কাজ সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও মনগড়া কথা লিখে কোরআনের ভুল ধরা। কথাগুলাে বলে সাজিদ থামল। পুরাে ক্লাসে সে এতক্ষণ ধরে একটা লেকচার দিয়ে গেল বলে মনে হচ্ছে। তাকে আইনস্টাইন বলায় যারা খলখল করে হাসত, তাদের চেহারাগুলাে হয়েছে দেখার মতাে। মফিজুর রহমান স্যার কিছুই বললেন না। 'See you next' বলে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেন সেদিন।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments