অধ্যাপক শাহেদ আলী বাংলা
কথাসাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ছোটো গল্পকার শাহেদ
আলী। জিবরাইলের ডানা গল্পটি তাঁকে
বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দেয়
আরও অর্ধশতাব্দি আগে। একই সমতলে,
শানযর, ঐ যে নীল
আকাশ, নানীর ইন্তেকাল তাঁর
শ্রেষ্ঠ গল্পসমূহের মধ্যে অন্যতম। তাঁর
প্রতিটি গল্পে দেশ-মাটি-মানুষের গল্প প্রস্ফুটিত হয়েছে
নানা আঙ্গিকে। পশু পাখির জীবনযাত্রাও
তাঁর নজর এড়িয়ে যায়নি।
রঙের প্রতি মানুষের
দুর্বলতা চিরন্তন। সহজাত প্রবৃত্তি থেকেই
মানুষ কোনো না কোনো
রঙের প্রতি আকর্ষণ বোধ
করে। কেউ ভালোবাসে লাল;
শিশুদের ক্ষেত্রে ইহা বেশি প্রযোজ্য।
কেউবা আবার নীল। সবুজের
প্রতি কেউ প্রগাঢ় টান
অনুভব করে। খইরি, বেগুনি,
বাদামি, গোলাপি, জলপাই রঙ আমাদের
অনেকরই পছন্দের। প্রিয় রঙ যাই
হোক রঙধনু কিন্তু সব
মানুষকেই আকৃষ্ট করে। এখানে
জেনে রাখা ভালো, কালো
বা সাদা কিন্তু কোনো
রঙ নয়।
গল্পকার শাহেদ আলী কী
রঙ পছন্দ করতে? তা
আমাদের জানা নেই। তবে
প্রখ্যাত সাহিত্যিক আবু রুশদ বলেন,
‘‘শাহেদ আলী নীল রঙটা
খুব পছন্দ করতেন, তার
গল্পের নায়িকাকেও তিনি নীলরঙে রঙিন
করে তুলেছেন। যেন ঐ যে
নীল আকাশ গল্পের নায়িকার
নঈমার চেহারা, রূপের বর্ণনা এই
রকম এসেছে- নীল শাড়ি,
নীল চুড়ি, নীল পাথর
বসানো নাক ফুল আর
নীল ব্লাউজ এবং আজকাল
সে চোখে নীল সুরমাও
মাখে। আল্লাহর নূরের তাজাল্লিতে তুড়
পাহাড় পুড়ে যে নীল
তৈরি হয়েছিল সেই নীল।’’
কথাসাহিত্যিক শাহেদ আলীর বিভিন্ন
গল্পে নীল রঙ বার
বার ঘুরে ফিরে এসেছে।
মনে হয় তিনি নীল
রঙের দ্বারা আচ্ছাদিত ছিলেন।
রঙ এর প্রয়োগের একজন
অনুকরণীয় শিল্পীও বটে। স্থান কাল
পাত্র ভেদে বিভিন্ন অবয়বে
নীল রঙ আশ্রয় নিয়েছে
তাঁর ছোটো গল্পে। যেমন-
ঐ যে নীল আকাশ
গল্পে ‘নীল’ শব্দ ব্যবহার
হয়েছে ৫৮ বার। সুন্দরভাবে
তিনি ‘নীল’কে প্রস্ফুটিত
করেছেন আলোচ্য গল্পে। গল্পের
নায়িকা নঈমা ভাবির নিল
রঙই আরাধ্য। নীল রঙ ভাবিকে
প্রবলভাবে আকর্ষণ করে। সিদুও
সেখান থেকে ফিরতে পারেনি।
সিদু ভাইয়া উপহার দেয়ার
ক্ষেত্রেও নীল শাড়ি, নীল
ব্লাউজ, নীল চুড়ি আনতে
ভুল করেনি।
নীল রঙ এসেছে
নানা আঙ্গিকে, নানা ভাবনায়, ব্যবহারে,
আচার-বিহারে, পোশাকে, চাহনিতে। যেমন- নীল আকাশ,
নীল পাথর, নীল ভ্রমর,
নীল পানি, নীল সাগর,
নীল আঁচল, নীল পোশাক,
নীল আসমান, নীল শাড়ি,
নীল চুড়ি, নীল রঙ,
নীল সুরমা, নীল ব্লাউজ,
নীল পাখি, নীল সুতা,
নীল আংটি, নীল কোট,
নীল ছিকা, নীল ফিতা,
আরো আরো। নীল
দিয়ে নীলায়িত পুরো গল্পটা। নীলের
নীলিমায় নিয়মিত অবগাহন করছে
এর নায়িকা। শেষে নীল নিয়ে
নিয়তির নিকট নিস্তব্ধ হয়ে
গেছে। মৃত্যুর পরেও ‘ভাবীর পরনে
রয়েছে নীল শাড়ি আর
হাতে নীল রেশমি চুড়ি,
চোখে নীল সুরমা, বাঁ
হাতের একটা আঙুলে নীল
আংটি, আর নাকে সেই
নীল পাথর বসানো নাক-ফুলটি। গুচ্ছ চুলগুলি
ভাগ করা একটু নীল
ফিতা দিয়ে! আরো আশ্চর্য,
ভাবীর মরা চোখ দুটির
মরা দৃষ্টি তখনো নিবদ্ধ
রয়েছে নীল আকাশের দিকে।’
অনেকে বলে থাকেন
‘কষ্টের রঙ নীল’।
সত্য মিথ্যা জানা নেই।
মানব সমাজের দুর্বৃত্তায়নে লেখক
মনোকষ্টে ভুগতেন। শেকড়শূণ্য রাজনীতি, মেকি ধর্মীয় রীতি,
তরুণ সমাজের ইসলাম বিমুখতা,
ইনসানের চরিত্রহীনতা, শিক্ষাব্যবস্থার গলদ, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে
ধর্মহীনতা ইত্যাদি তাঁকে ভাবিয়ে তুলত।
এটা তাঁর বিভিন্ন লেখায়
ও সাক্ষাতকারে লক্ষ্যণীয়।
হদিস:
১। শাহেদ আলীর শ্রেষ্ঠ
গল্প , বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক
সোসাইটি, মতিঝিল ঢাকা, সেপ্টেম্বর
২০০২, দ্বিতীয় সংস্করণ
২। কথাশিল্পী অধ্যাপক শাহেদ আলী জীবন
ও কর্ম, ড. আবদুল
ওয়াহিদ সম্পাদিত, আল আমিন প্রকাশন,
আগস্ট ২০০২
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments