ধর্ষণ বিরোধী কবিতা : ৪র্থ সংখ্যা

 
মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সুন্দর জীবনের জন্য পাঠিয়েছেন দুনিয়ায়। সৃষ্টির সৌন্দর্য রক্ষার দায়িত্বও আমাদের উপর নেস্ত করেছেন। কিন্তু আমরা আমাদের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে পৃথিবীর সৌন্দর্যকে কালিমা লেপন করছি। মানুষে মানুষে তৈরি করছি বিভেদ। মানুষের অধিকারকে করছি ভুলুণ্ঠিত। মানুষকে আর আমরা সম্মান করতে পারছি না। নৈতিকতার থেকে আমরা আজ বহুদূরে অবস্থান করছি। আমাদের শিল্প সাহিত্য, সংস্কৃতিও আজ এই সকল অপকর্মের ইন্দন দিয়ে যাচ্ছি। সেই সকল অপকর্মের অসংস্কৃতির বিরুদ্ধে মোলাকাত সবসময় সৃজনশীল মননশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শুভ বুদ্ধির উদয়ের কাজ করছে। আর মোলাকাতের সাথে আপনারা  মেলবন্ধন করে আমাদের কর্মকে এগিয়ে নিয়ে যান। জন্য আমরা যারপরনাই খুশি।
 
আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ কিছু খারাপ মানুষের জন্য অসম্মানীত হতে পারে না। শুভ বুদ্ধি উদয় হওয়ার জন্য আমাদেরধর্ষণ বিরোধী কবিতা সংখ্যা আপনার অংশগ্রহণ আমাদের সহযোগিতা করেছে। সেই সহযোগিতার ছিলছিলায় আজ আমরা প্রকাশ করলামধর্ষণ বিরোধী কবিতা : ৪র্থ সংখ্যা। সম্পাদনায় আফসার নিজাম
 
সূ চী প ত্র
অন্ধ অসুখ :: মীনা সাহা
সুনামি ঢেউ :: মালা ঘোষ
নরকের কীট :: হামিদা আনজুমান
অত্যান্ত কষ্ট :: শামসুন নাহার
প্রতিক্রিয়া :: মমতাজ মম
নারীর ইজ্জত রক্ষা পাক :: শিরিন আফরোজ
হীরা মণি তুমিও আল্লাকে সব বলে দিও :: রফিক মজিদ
ধর্ষণ যাতন :: জাফর পাঠান
অন্ধকারের জন্মকথা :: সৌরভকুমার ভূঞ্যা
এই শহরে বিচার নাই :: মুহিব্বুল্লাহ কাফি
শ্রেষ্ঠ পাপী :: সৌমেন দেবনাথ
ধর্ষক ধর :: পারভীন আকতার
ডিজিটাল ভূত :: শাহজাহান মোহাম্মদ
সূর্যোদয়ের রাঙা শপথ :: কমল কুজুর
ফাঁসি চাই :: মিজান ফারাবী
ধর্ষকের দেশ নেই, ধর্ম নেই, দল নেই :: ডা. এম ওহাব লাবিব
ওদের কোন নেই পরিচয় :: এইচ. এম. হাসানুজ্জামান
ধর্ষণের প্রতিবাদ :: মোঃ জোবাইদুল ইসলাম
দাবি একটাই ফাঁসি :: মুস্তাফা ইসলাহী
জেগে ওঠো নারী :: শেখ নূরুল আমীন
..................................................
 
অন্ধ অসুখ
মীনা সাহা
 
বীর্য ধারণ ক্ষমতা বাড়াও পুরুষ
বীর্যের স্খলনে ভাসে অপাবৃতা যোনি
কীটের দংশনে ক্ষত ফুলের পাপড়ি
বাঁচাও অমল প্রাণ রুক্ষ ধরণী
লোভের আগুনে জমে ভোগের কামনা
নারী শরীর কেবল প্রলুব্ধ বাসনা
চারিদিকে যত চায় ভাসছে হতাশা
হাই হাই কোথা যাই ঘোর অমানিশা
জাগো মানব বিবেক অসুস্থ ধরণী
আর কতবার বলো ধর্ষিতা
মাতন্ডী
নারী তুমি বন্ধ্যা হও দিও না জনম
পতন হোক তবে মানব ভুবন
নিজেকে তাকিয়ে দেখ পাপান্ধ পুরুষ
লুব্ধ দৃষ্টি ছেড়ে গাঁথো সৃষ্টির সরস
..................................................
 
সুনামি ঢেউ
মালা ঘোষ
 
কষ্টগুলো কাঁপে বুকের মাঝে
ঠোঁটের ভাঁজে দুঃখের বিষন্নতা
অন্তপুরে দুঃখ ছড়ায় সূর্যমুখী।
অথৈ জলে ভেসে যাচ্ছে জীবনতরী।
নারীর আর্তচিৎকারেও ঘুম ভাঙেনা!
ঘুমায় যারা জন্ম তাদের দিল কে?
প্রসব ব্যথার কষ্ট সময়
বোঝো কি?
বর্বরতা আল্পনা চিহ্ন
নিস্পাপ তনুতে আঁকলে যারা
মায়ের কথা একটিবারও ভাবলে কি?
সারাক্ষণ পুড়ছে, দ্বগ্ধ জ্বালায় জ্বলছে।
রাত্রির গভীরে অনিশ্চয়তার মেঘ
অভিশাপে জর্জরিত।
সম্ভ্রম হরণকারী হলে কেন?
গর্ভে ধারণ করার চেয়ে
ধর্ষক যেন গর্ভেই ধ্বংস হয়।
প্রতিদিন অবিরত দুচোখে
সুনামি ঢেউ।
নীল হয়ে ওঠা শরীর
আত্মহত্যারই হাতছানি দেয়।
নারীকে ভেবেছে নধর হরিণী
ধর্ষক পুরুষ হয়েছে শাণিত ছুরি।
রাষ্ট্র!! ধর্ষককে সম্মানীয় পুরুষ করো।
ভালোবাসার মুখোশ যেন
কোনদিন সে আর না পরে।
..................................................
 
নরকের কীট
হামিদা আনজুমান
 
আমরা কি হায় চেয়েছিলাম এমন জাহান্নাম
চিৎকার করে নিজেই কাঁদি বলবো কারে থাম!
 
পশুর অধম নরকের কীট থাবায় নোংরা হাত
বিভৎস আর ঘৃণ্য তারা ঘণায় আঁধার রাত।
 
আগুন জ্বলে দুইটি চোখে মাথায় পড়ে বাজ
নিজের জন্মকথা তোরা, ভুলে গেলি আজ?
 
যে জঠরে জন্মেছিলি মায়ের কোলে এলি
মায়ের জাতি সেই নারী কে তুই রে খুবলে খেলি।
 
বোনটি যে তোর আদর মায়ার ভালোবাসার দোল
স্নেহের সাগর বোনের শরীর দেখেও ঝড়ে লোল?
 
বাবার চোখে অশ্রু গাঢ় মেয়ের চোখে জল
এমনি কত শত গল্পে হারাই মনের বল।
 
তিমির রাতি কত বড় ভোর কি হবে আর?
আদালতে অসুর গুলোর হবে কি বিচার?
 
ধ্বংস ওদের করা তো চাই, চলুন রুখে দাঁড়াই
নারী, পুরুষ এক হয়ে আজ মৃত্যু আগুন জ্বালাই।
..................................................
 
অত্যান্ত কষ্ট
শামসুন নাহার
 
আইয়্যামে জাহেলিয়াতের এর যুগ নাকি এসেছে বাংলাদেশে
বড় বড় নেতারা সব পালিয়েছে গর্তের শেষে
বিচার নাইরে বিচার নাই বিচার নাই বাংলাদেশে
কাঁদে ধরণী কাঁদে মা কাঁদেরে অবুঝ শিশু
ধরণী বুঝি মাথা নোয়াবে লজ্জায় কিছু কিছু।
 
হে আইয়্যামে জাহেলিয়াত শুধু যৌবতী নয়, বাদ পড়েনা শিশু নানী
কেমন করে বাঁচবে বলো এদেশের নারী নামের প্রাণী,
এদেশ তোমার আমার এদেশ মোদের গর্ব
স্বাধীনতা এনেছিলাম বুঝি এসব ধর্ষকদের করতে আনন্দ।
 
পাকিস্তানিরা ধর্ষক ছিলো জাত ওদের ভিন্ন
ওদের মাঝে মায়া দয়া নাই ওরা যে নষ্ট পন্য,
আমরা বাঙালি উদার মুসলিম জাতে আমরাও ভিন্ন
কিন্তু মোদের স্বভাব চরিত্র কেমনে হলো ওদের মত বণ্য।
 
তবে কি এরা তারা? যারা পাকিস্তানিদের রক্ষা করতে বেঁধেছিলো বস্তা
তাদেঁরই সন্তান এমন হবে আর এমন কি অসম্ভব কথা,
মা তার অসহায় নারী সন্তান যে নষ্ট
রক্তের টানে এমন করছে যে অত্যান্ত কষ্ট
 
সময় এসেছে নারী জাগরনের
সময় এসেছে রুখে দাড়ানোর
বারেবারে কেন কেঁদে যাবে নারী
অসহায় অবলা করুন সুরের কারী।
 
হায় দয়াময় দয়া করো পাঠাও বিচারের বান
রক্তাক্ত বোন দেখুক চেয়ে বিধাতার বিচারের দান,
এদেশে যদি বিচার না হয় থামবে না ধর্ষণ
কুলাঙ্গারেরা মুক্তি পাবে বিশেষ দলে তার নাম।
..................................................
 
প্রতিক্রিয়া
মমতাজ মম
 
আমি তুলে আনতে চাই মহাকালের গর্ভ হতে একটি মাত্র তরতাজা ভ্রুন!
যা জন্ম দেবে নিষ্কলুষ একটি পৃথিবীর,
যার পাপ নিঃশ্বাসের বিষাক্ত বিকিরণে হবেনা গ্রীন হাউজ এ্যাফেক্ট।
 
আমি ঘুড়ির মত দূর্বার গতিতে উড়তে উড়তে ছিটাতে চাই কিছু পবিত্র শস্যদানা!
যা ভক্ষনে রক্ত পরিশোধিত হয়, চামড়ার আবরন তলে প্রেম জন্মায়,
মায়া জন্মায়, খুনির রক্তাক্ত ছুরির ডগায় জন্মায় লাল পুষ্প।
 
আমি নতুন একটি কবিতা লিখতে চাই মানচিত্রের মাঝখানে!
যেখানে গোলা-বারুদ, বন্দুক, পিস্তল হবে মৃত্তিকা, হবে কোদাল,
সন্ত্রাসী- খুনিরা হবে একেকটা সাচ্চা দেশপ্রেমিক হবে বাংলার চাষা,
তাদের ছাতি হবে একটা -দ্বীপ ভূখণ্ড যার মধ্যে লাল-সবুজ নিশান উড়বে।
 
আমি বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাই সেই সব নুপংশুক পাষণ্ডদের!
যাদের কারনে বঙ্গবালারা বার বার বলাৎকার হয়েছে, আত্নহত্যা করেছে।
তাদের দ্বিখণ্ডিত অণ্ডকোষের চাপ্টারে ধারালো খুড়ের চিহ্নে আলগা হওয়ার চিত্র আঁকতে চাই।
 
আমি সকল অনিয়ম, অন্যায় আর গোঁড়ামিতে সীলমোহর লাগিয়ে দিতে চাই!
তাতে লিখা রবে ঔদ্ব্যত যৌবনে লাগামহীন ঘোড়ার সমাপ্তির অধ্যায়।।
..................................................
 
নারীর ইজ্জত রক্ষা পাক
শিরিন আফরোজ
 
তোমার সৃষ্ট জগৎ এতো সুন্দর !
তুমি পালনকর্তা,
নোংরা মনের নোংরামিতে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে
নারীর ইজ্জত,
তুমি রক্ষা করো বিধাতা।
নারীর গর্বে জন্ম নিয়ে যারা
নারীকে করছে অসম্মান,
তাদের জন্য দেশজুড়ে প্রতিবাদ হউক
রক্ষা পাক নারীর সম্মান।
জগন্যতর অপরাধীদের বিচার হউক
জানাই তাদের ধিক্কার,
বন্ধ হউক নারী নির্যাতন,
বন্ধ হউক ধর্ষণ অত্যাচার
মানুষরূপে জন্ম নিয়ে যারা করছে
পশুর চেয়ে অধম কাজ,
বিকৃত মানসিকতা আর লজ্জাহীন দৃষ্টি দিয়ে
কলঙ্কিত করছে তারা রাষ্ট্র সমাজ।
..................................................
 
হীরা মণি তুমিও আল্লাকে সব বলে দিও
রফিক মজিদ
 
হীরা মণি তুমিও
সিরিয়ার ওই শিশুর মতো
আল্লাকে সব বলে দিয়ো।
আমরা তোমার সম্ভ্রম জীবনের
নিরাপত্তা দিতে পারলাম না।
নরপিচাশের উল্লাসও বন্ধ করতে
পারিনি আমরা।
নিস্পাপ দেহে শকুনের থাবা
আর কতদিন চলবে
তাও জানিনা আমরা।
আমাদের তুমি ক্ষমা করো না
আমাদের শকুনের দৃস্টি যেনো
নিজের শরীরই খুবলে খুবলে খায়।
হীরা মণি তুমিও
আল্লাহকে সব বলে দিও
নিষ্ঠুর পৃথিবীর কী দরকার?
মানুষ রূপী নারমাংস খাদক
রাক্ষসের দল সমূলে ধ্বংস হয়ে যাক।
ঘেন্না হয়, নিজের শরীরকে দেখে
আমরা মানুষরাই এখন
বনের হিংস্র প্রাণীর মতো
টেনে হিচড়ে ছিন্নভিন্ন করে খাচ্ছি
আমার ঔরস।
নখের আঁচড়ে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছি
আমার জন্মের আলো রেখা।
কাঁমড়ে কাঁমড়ে ক্ষত-বিক্ষত করছি
নিজের অস্তিত্বকে।
হীরা মণি তোমাকে আল্লাহর কাছে
বলতেই হবে
তোমাকে ফুল হয়ে ফোটার আগেই কেন
নর্দমার পঁচা পানিতে ফেলে
নষ্ট করা হলো।
পৃথিবীর আলো-বাতাসে
সুখের স্বাস নেয়ার আগেই
স্বাস বন্ধ করে দেয়া হলো।
কী হীরা মণি-
আল্লাহকে সব বলে দিবে না…?
..................................................
 
ধর্ষণ যাতন
জাফর পাঠান
 
কোন্ অমানুষ নরাধমের বাচ্চা-
মেয়েটির করেছে সর্বনাশ,
ধরাধামের বাঁধাধরা নিয়ম ভেঙ্গে-
ভবিষ্যৎ করেছে বিনাস,
সমাজের অপাংক্তেয় ধর্ষকেরা-
খাটাসের বাচ্চা পিচাশ।
 
প্রতি সেকেন্ডের কুলসি কাটায়
যেই মা বুনেছিলো স্বপ্ন,
মেয়ে আমার যে আলো জ্বালবে
দিবে সমাজকে রত্ন,
ক্লান্তির গাঁয়ে কুঠারাঘাত হেনে তাই-
মেয়ের করেছে যত্ন।
 
আদর-আত্তির মেয়েটি বাবার
নম্র সহজ সরল,
সততার পথে গড়েছে জীবন
ঘৃণায় ত্যাগীছে গড়ল,
জমিয়েছে কড়ি-কিনবে শাড়ী
বাজবে সানাই-বাহারী রকমারি।
 
কোন্ ইবলিশের দল
শান্ত নদে অশান্তির তুলেছে দোল্,
কোন্ নষ্ট-ভ্রষ্টের দল্
কামড়েছে অবলীকে-জলদি বল্।
 
আইনের দরজায় টোকা হবে পরে
হবে আগে নিতে বদল্,
কুড়ে কুড়ে লাশ খাবে তার-ধরাতল
এরা যে ইবলিশের দল্
..................................................
 
অন্ধকারের জন্মকথা
সৌরভকুমার ভূঞ্যা
 
সমস্ত শরীর জুড়ে এক অসহ্য যন্ত্রণা
সৃষ্টির আলোক-পথে আঁধারের পৈশাচিক উল্লাস,
অদ্ভুত ঘুম এসে ভারী করে দু-চোখের পাতা
জীর্ণ বুকের মাঝে জেগে ওঠে বাতাসের হাহাকার।
ভাঙা মন তবু দুঃসাহসী হয়, স্বপ্ন দেখে বেঁচে থাকবার।
একটাই জীবন,
কে আর সময়ের আগে ফিরে যেতে চায়?
তবুও ফিরে যেতে হয়, যন্ত্রণা আর অশ্রুর পথ ধরে
অন্ধকার থেকে আরও কোনো গভীর অন্ধকারে।
একটা জীবন ফুরিয়ে যায়, তবুও রয়ে যায় কিছু
ধূসর ছাইয়ের ভেতর থেকে জেগে ওঠে
রক্তাক্ত যোনি আর গর্ভের নরক অন্ধকার।
 
অন্ধকারেরও একটা আলো আছে,
যা দিয়ে সময়ের খণ্ড খণ্ড অধ্যায় লেখে
নব-জন্মের এক আশ্চর্য কাহিনি।
ফুরয়ে যাওয়া শরীর হারিয়ে যায় অশ্রুর অন্ধকারে
জীবনের পাতায় পড়ে থাকে নির্মম শূন্যতা,
তবুও যোনি আর গর্ভের অন্ধকার নিয়ে
কোথাও জীবনের অদ্ভুত চিত্রনাট্য লেখা হয়।
..................................................
 
এই শহরে বিচার নাই
মুহিব্বুল্লাহ কাফি
 
এই শহরে স্বাধীনতা নাই
দুর্গন্ধের আভাস পাই,
শহরে ধর্ষক বেড়েছে
ধর্ষণের বিচার নাই!
 
এই শহরে নিরাপত্তা নাই
সাথে স্বামী থাকলেও,
শহর পচে গেছে
সাহায্য পাবেনা চিল্লাইলেও।
 
এই শহরে বিচার নাই
মানবতার গেছে মরে,
মা-বোনদের ইজ্জত এখন
অশ্রু হয়ে ঝরে পরে!
 
এই শহরে ধর্ষক আছে
ধর্ষণের বিচার নাই,
ধর্ষকরা তাই দিব্যি ঘুরে
করে বেড়াচ্ছে যাচ্ছেতাই!
 
এই শহরে মা-বোন আছে
তাদের রক্ষার পুরুষ নাই,
নরপশুরা ধর্ষণ করে
প্রশাসনকে বলে হ্যাল, হাই!
 
এই শহরে কিছু মানুষ আছে
চেয়ে চেয়ে দেখে যায়,
ধর্ষণের সময় বাধা না দিয়ে
পরে আবার বিচার চায়!
 
এই শহরে অমানুষও আছে
তুচ্ছ বিষয়ে প্রতিবাদী হয়,
শতো শতো নারী হচ্ছে ধর্ষণ
এখন তারা কিছুই নাহি কয়!
..................................................
 
শ্রেষ্ঠ পাপী
সৌমেন দেবনাথ
 
ভাদ্র মাসের কুকুর ওরা
ভাঙে দুখীর বেড়া,
কাড়ে নারীর সম্ভ্রম ওরা
ধরে করো ন্যাড়া।
 
ওদের কোনো নেই পরিচয়
করো ঘর সিলগালা,
ওদের জোটের ভাঙো তালা
পরাও জুতার মালা।
 
লুচ্চার মারো মুখে ঝাটা
ছবি করো প্রকাশ,
কোমরেতে রশি বেঁধে
ঘোরাও গ্রামের আশপাশ।
 
সুশীল সমাজ জেগে উঠো
আর থেকো না দর্শক,
কিসের তাদের দল পরিচয়
ওরা শুধুই ধর্ষক।
 
ওরা ধর্ষক শ্রেষ্ঠ পাপী
প্রশ্রয় দিও না কেউ,
ওদের রক্ষায় হাত বাড়ালে
থামবে না ধর্ষণ ঢেউ।
 
পশুর চেয়ে নোংরা ওরা
ওরা ভীষণ ভণ্ড,
ধরে ধরে ভরো জেলে
আর দাও মৃত্যুদণ্ড।
..................................................
 
ধর্ষক ধর
পারভীন আকতার
 
ধর ধর ধর ধর্ষক ধর,
কর কর জুতোপেটা কর।
মার মার ইচ্ছেমতো মার,
দে বল দে অবলাকে বল দে।
 
লাথি মার তাসের ঘর,
জ্বালা আগুন জ্বালা গায়ে
 অলিগলির যত অসৎ নর।
বুকের ফাটায় চলে যুদ্ধ কর।
 
ন্যায় অন্যায় বুঝিয়ে দে
কিল-ঘুষি সমানে দে,
খোদার সৃষ্টি অদম্য তেজে
ঘা শুকবোর আগে দে।
 
অসৎ সন্তান ত্যাজ্য কর,
পাপের বোঝা হালকা কর।
ধর ওদের ধর, ছিঁড়েখুঁড়ে
শিয়াল শকুনের খাদ্য কর।
 
পাপিষ্ঠকে কনডেমে রাখ
জামাই আদর চুকে যাক।
আইনের বাঁধা চোখ খোল,
মহাযুদ্ধ বাঁধাবে গন্ডগোল।
 
সাবধান, হুশিয়ারির হুশিয়ার,
নারী জাগছে একদম হুশিয়ার।
রেহাই পাবি না নরপিশাচ আশপাশ
টুকরো টুকরো হবে বজ্রে বঙ্গ আকাশ।
..................................................
 
ডিজিটাল ভূত
শাহজাহান মোহাম্মদ
 
অলিগলিতে ভূত নাচে
যার যা খুশি মতো,
ডিজিটাল ভূতপিশাচ
এখন শত শত।
 
ভূতরূপি পিশাচেরা
নিচ্ছে কেড়ে জীবন,
অহরহ ধর্ষণ খুনের
খেলা তাদের ভীষণ।
 
তেঁতুল গাছ শেওড়া গাছ
নয়তো তাদের বাস,
গডফাদারের ছত্র ছায়ায়
কাটায় বারো মাস।
..................................................
 
সূর্যোদয়ের রাঙা শপথ
কমল কুজুর
 
নদীজলে মাছরাঙার খেলা চলে এখন
ঘাটে বাঁধা থাকে ডিঙ্গি নৌকো
চোখ আঁধার করে দৃশ্য দেখা শুধু
ক্রমেই এমিবার চক্রে সেঁধিয়ে যায়
                            সাধের মানব জনম।
 
সোনা ফলানো সবুজ ধান ক্ষেত
ভরে থাকে হিংস্র শকুনের আনাগোনায়
আলের পাশের পড়ে থাকা
রক্তাক্ত এক নিষ্পাপ কিশোরী
                   জন্মভূমিকে আবার চেনায়।
 
রাজপথের মূক শূন্যতা করে দূর
মিছিল মিটিং আর স্লোগান চলে অবিরত
অন্ধত্বের অভিশাপ করবে খণ্ডন আজ
আছে যত ধর্ষকামী ক্ষত
                           সবই করবে সাফ।
 
শঙ্খচিলের ডানায় দিয়ে ভর
নিশ্চিত আসবে এবার সোনারঙা ভোর
রক্তমাখা আগুন জ্বেলে রেখে মনে
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত তোলো উর্দ্ধপানে
                           হোক সিক্ত অন্তর।
..................................................
 
ফাঁসি চাই
মিজান ফারাবী
 
ধর্ষণ দিনে রাতে
ধর্ষণ বিয়ালে
ধর্ষণ করে যায়
পাড়া গাঁ' শিয়ালে!
 
মাদ্রাসা স্কুলে
ধর্ষণ টিচারে
ধর্ষণ সবখানে
নাই কেউ বিচারে!
 
ধর্ষণে কলেজে
ফাদারে গির্জায়
এই দেখে নারীদের
লজ্জাতে শির য়ায়!
 
ধর্ষক যেই হোক
তার মা বোন নাই!
ধর্ষণ করে যারা
দেশে আর ঠাঁই নাই।
 
দাবী তোল একটাই
ধর্ষণে ফাঁসি চাই
ফাঁসি ছাড়া শালাদের
গতি নাই, গতি নাই।
..................................................
 
ধর্ষকের দেশ নেই, ধর্ম নেই, দল নেই
ডা. এম ওহাব লাবিব
 
বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত এক অবাক প্রসঙ্গ ধর্ষণ
দুনিয়ায় কারোর জন্যই বসবাসের নেই আজ ধরণ।
 
ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে অনেক নির্দোষ নারীকেই
রাস্তাঘাটে, বাসে, শিক্ষাঙ্গনে, ফ্লাটে কিংবা বাড়িতেই।
 
বাংলাদেশে নারী নির্যাতন, আবার লাগাম ছাড়া ধর্ষণ
শিশু ধর্ষণ, বৃদ্ধা মহিলা ধর্ষণ, হতভম্ব সব যৌন বর্ষণ।
 
যৌন নিপীড়ন এর বলি হয়েছে কতো শত অবলা নারী জ্ঞানপাপী,
নাস্তিক কিংবা কট্টরপন্থীরা কি বলতে পারি।
 
বক্তব্যে যত বিধিনিষেধ পর্দা প্রায় সবই নারীর জন্য।
পুরুষের পর্দা, চক্ষু নিবারণ নিয়ম বিধানে নেই যেন
 
নারীর অধিকার মর্যাদা নিয়ে শুধু মুখে সমারোহ 
ইভটিজিং, জুলুম, নির্যাতন ধর্ষণ হচ্ছেতো অহরহ।
 
নিজের সংসার আর আয়ের ধান্দায় মোরা সবাই বাঁচি 
 শিশুর ধর্ষণে তবু চোখে কানে ঠুলি এটে বসে অাছি।
 
বাল্যবিবাহের যন্ত্রণায় পিষ্ট হয় আমরা দেখেও সব বোবা
দায়িত্বজ্ঞানহীন আর স্বার্থপর জাতি ধরনীতে আর কে বা।
 
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ তো ছিলোনা শুধু নিজের প্রয়োজনের
শুধু নারীর পোশাক আর নীরবতায় কী দায় সমাজের। 
 
আমরা শুধু সরকার প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে থাকি
 সরকারের চেয়ে আমাদেরও দায় দায়িত্ব কম নাকি।
 
একজনের মেয়ে ধর্ষিতায় আমরা তো পাশে দাঁড়াইনা
নিজের মেয়ের কিছু হলে তখন কাউকে সাথে পাইনা।
 
বখাটেরা উত্যক্ত করে তখন আমরা প্রতিবাদ করিনা।
সাম্যবাদের গান শুধু কবিরা গায়, মোরা গিটার ধরিনা।
 
ধর্ষণ সেটা তো হতে পারে কারণ মানসিক যৌন বিকৃতি
পরিবারের দায়িত্বে চিকিৎসা দিয়ে নারীকে দাও নিষ্কৃতি।
 
ধর্ষক সেতো চোর ডাকাত ছিনতাইকারী হিংস্র জানোয়ার
 রাজনৈতিক দল নেই, নেই পরিচয় সরকারি দল ক্ষমতার।
 
 ধর্ষকের দেশ নেই, ধর্ম নেই, বোন নেই, নেই কোনো দল
 বিচারে পিটিয়ে মারবো মোরা একসাথে এই জঞ্জাল।।
..................................................
 
ওদের কোন নেই পরিচয়
এইচ. এম. হাসানুজ্জামান
 
মানবতার '' ভুলে সব পাপ করে হরদম,
মানুষ তো নয় পশুই ওরা শুয়োর বলাও কম।
 
লজ্জা শরম সব হারিয়ে কুকুর থেকেও হীন,
ওদের প্রতি আম জনতা প্রকাশ করে ঘীন।
 
মায়ের কথা বোনের কথা নাই মনে এক তিল
নারীর প্রতি নেই মমতা ওরাই শকুন-চিল
 
মা বাবা কে গালি শোনায় যেসব কুলাঙ্গার,
মানুষ নামের কলঙ্ক সব এই সমাজের ভার।
 
ধর্ম, সমাজ, মানবতাও মনের মাঝে নাই,
ওরা কারো হয় না ছেলে হয় না কারো ভাই।
 
জন্ম নিয়েও সন্দেহ তাই সকল মনে আজ,
হতেই পারে জারজ ওরা প্রমাণ করে কাজ।
 
নিশ্চয়ই কেউ পিছন থেকে সাহস জোগায় ঠিক,
ওদের থেকে কম দোষী নয় তাদের প্রতিও ধিক।
 
সকল দোষীর সঠিক বিচার সবাই মিলে চাই,
মানবতার ঘোর বিরোধী ক্ষমার সুযোগ নাই
 
দল বুঝিনা সবার দাবি সঠিক বিচার হোক,
ওদের কোন নেই পরিচয় ওরা তো ধর্ষক
..................................................
 
ধর্ষণের প্রতিবাদ
মোঃ জোবাইদুল ইসলাম
 
ধর্ষক তোরা নরপিশাচ তোদের মা-বোন নাই?
রাস্তা-ঘাটে একা পেয়ে ধর্ষণ করিস তাই?
 
তোদের যৌন লালসা যখন বেড়ে গেছে এতোই
তাহলে তোদের ঠিকানা তো পতিতালয়ই।
 
কত নিরীহ বোনদের গেলো প্রাণ তোদের কারণে
কত শিশু অকালে পতিত হলো মৃত্যুর ধারণে।
 
কত বোন দিলো প্রাণ অপমানে-ক্ষোভে
কত মা-বাবার গেলো প্রাণ প্রতিবাদের কোভে।
 
কত ভাইয়ের হলো অপমান তোদের কুকর্মে
কত স্বামী হলো আশাহত তোদের অপকর্মে।
 
আর কত ধর্ষণ করলে ক্ষান্ত তোরা হবি?
আর কত মা-বোনের হবে আত্মহত্যার ছবি?
 
আর কত কাল থাকবে মা-বোনরা নিরাপত্তাহীন?
আর কত সময় ধরে থাকবি তোরা মনুষ্যত্বহীন?
 
আর কত নির্যাতন করবি আর মেরে ফেলে দিবি?
আর কত ধর্ষণের পরে তোরা ইস্তফা দিবি?
 
আর কত দিন থাকবি তোরা পশুত্ব নিয়ে?
আর কত সময় গড়ালে তোরা থাকবি মনুষ্যত্ব নিয়ে?
..................................................
 
দাবি একটাই ফাঁসি
মুস্তাফা ইসলাহী
 
 
ধর্ষণে সেঞ্চুরি মানিকের জাবিতে
লম্পট পার পায়, কী লজ্জা ভাবিতে !
 
উলঙ্গ মহিলার মূর্তিটা কলেজে
বানিয়েছে শিল্পী সে, পশুদের দলে যে।
অশালীন জামা, সাজ, অশ্লীল এ্যাড
দেখে হয় মানুষেরা অমানুষ, ব্যাড।
 
একসাথে ছেলেমেয়ে খেলে, করে কাজ
পড়ে, ঘুরে, গায়, নাচে কমে গেছে লাজ।
নাটক সিনেমাতে যৌনতা মূল
ফোনে, নেটে পর্নোতে একেবারে ফুল।
 
তাই বাড়ে ধর্ষণ সব স্থানে, বাড়িতে  
পথে-ঘাটে- বাসে-ট্রেনে, অফিস ফাঁড়িতে।
 
নেতাদের আশ্রয়ে ধর্ষক, খুনি
বেঁচে যায়, নেচে গায়, ভীত নন উনি।
 
ধর্ষণে উৎসাহ পায় যেই কাজে
নির্মূল করো সেটা, দেশে থাকে না যে।
দাবি আজ একটাই-  দিতে হবে ফাঁসি,
কমে যাবে ধর্ষণ, খুন রাশি রাশি।
..................................................
 
জেগে ওঠো নারী
শেখ নূরুল আমীন
 
জেগে ওঠো নারী, তোমার অস্তিত্বের সংগ্রামে-
তোমাকে সুরক্ষিত করো জীবীকা সম্ভ্রমে।
জীবনে জীবন ঘষে দৃঢ়তায় আঁকো স্বপ্নের ছবি-
লৌহ-মানবী হও পূত-পদক্ষেপে- অধিকারে।
নিজেকে গড়ার এখনই সুবর্ণ সময়-
শরীর-লোলুপ হায়েনার বিষদাঁত ভেঙে দাও
যতসব মধ্যযুগীয় হিংস্রতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও !
তোমার ইতিহাসের ক্ষুরধার তেঁজ নিয়ে সতত
সময়ের মহাকাব্য রচনা তোমাকেই করতে হবে
পঁচা-গলা সমাজের টুঁটি চেপে ধরো নিরন্তর ঘৃণায় !
তোমার সূর্যের ঝলকানিতে ধ্বসে পড়ুক অসভ্যতা
পুড়ে যাক্, এই দুঃসময়ের যত গ্লানি !
এই নিকষ-কালো আঁধারে আঘাত করো-
পাশবিক লালসার হাত থেকে বেঁচে যাক্ সভ্যতা !

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com 

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.