শুভ্র শরৎ ১৪২৭ : ১ম পর্ব
শুভ্রতার কথা আসলেই আমাদের চিন্তায় ভেসে উঠে কাশফুলের শুভ্রতা। শাদা মেঘের উড়া উড়ি। যেনো সে বয়ে নিয়ে যায় জান্নাতী শুভ্রতা। যেখানে কেবলী পবিত্র এক অনুভূতি। পরিস্কার নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ফুল ফুটে। জমিনেও সবুজ প্রকৃতির মাঝে কাশফুলের শুভ্রতা। এই জন্যই সৃজনশীল মানুষ এই ঋতুকে রাণী বলে। বাংলার আকাশে যখন এই বৃষ্টি এই মেঘ। এটা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি। তিনি বলেছে ‘আমি যদি বেঁচে থাকি তবে এরকম এক প্রকৃতিতে বেঁচে থাকতে চাই। কিন্তু আমার অনেক কাজ। সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তিব্বত জয় করেই আমি আবার বাংলায় ফিরে আসবো। আর আল্লাহ যদি হায়াত দেন তবে বাংলাতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে চাই।’
আফসার নিজাম, সম্পাদক-মোলাকাত ডটকম
এখানে আকাশ নীল :: জীবনানন্দ দাশ
কাশফুলের কাব্য :: নির্মলেন্দু গুণ
শরতের কুহকে :: শিহাব সরকার
সরোদ :: মেঘ অদিতি
দূরবর্তী গ্রহলোকে নামহীন পাখি :: তমসুর হোসেন
হে ভাদ্র হে আশ্বিন :: মামুন মুস্তাফা
শারদ সংগীত :: ইলিয়াস বাবর
হাত ছানি দেয় :: ইদ্রিস মণ্ডল
শরৎ রাণীর রুপটা আহা! :: শিকদার বাসীর
আমার শরৎ :: বিশ্বজিৎ কর
শরৎ এলো :: শাহীন খান
শরৎ ভালোবেসে :: মাহমুদ সালিম
আনন্দ :: বিমল মণ্ডল
শরতের মেঘমালা :: রবি রায়হান
শরতের কথা :: শেখ একেএম জাকারিয়া
শরৎ কাঁড়ে মন :: সৈয়দ ময়নুল কবরী
কাশফুল :: সোহানুর রহমান সোহাগ
শুভ্র শরৎ :: কবিতা সুলতানা
শারদীয় :: সুয়েজ করিম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মনে হয় এ যেন আমার প্রথম দেখা।
আমি দেখলেম নবীনকে,
যার দর্শন হারিয়েছে।
কল্পনা করছি,
তীর্থযাত্রী আমি
ভেসে এসেছি মন্ত্রবলে।
উজান স্বপ্নের স্রোতে
পৌঁছলেম এই মুহূর্তেই
বর্তমান শতাব্দীর ঘাটে।
কেবলি তাকিয়ে আছি উৎসুক চোখে।
আপনাকে দেখছি আপনার বাইরে,
অভ্যস্ত পরিচয়ের পরপারে।
তাই তাকে নিয়ে এত গভীর কৌতূহল।
যার দিকে তাকাই
চক্ষু তাকে আঁকড়িয়ে থাকে
পুষ্পলগ্ন ভ্রমরের মতো।
আমার নগ্নচিত্ত আজ মগ্ন হয়েছে
সমস্তের মাঝে।
জনশ্রুতির মলিন হাতের দাগ লেগে
যার রূপ হয়েছে অবলুপ্ত,
তার সে জীর্ণ উত্তরীয় আজ গেল খ'সে।
দেখা দিল সে অস্তিত্বের পূর্ণ মূল্যে।
দেখা দিল সে অনির্বচনীয়তায়।
যে বোবা আজ পর্যন্ত ভাষা পায়নি
জগতের সেই অতি প্রকাণ্ড উপেক্ষিত
আমার সামনে খুলেছে তার অচল মৌন,
প্রথম চঞ্চল বাণী জাগল যেন।
আমার এতকালের কাছের জগতে
আমি ভ্রমণ করতে বেরিয়েছি দূরের পথিক।
তার আধুনিকের ছিন্নতার ফাঁকে ফাঁকে
দেখা দিয়েছে চিরকালের রহস্য।
সহমরণের বধূ
বুঝি এমনি ক'রেই দেখতে পায়
মৃত্যুর ছিন্নপর্দার ভিতর দিয়ে
নূতন চোখে
চিরজীবনের অম্লান স্বরূপ।
..................................................
জীবনানন্দ দাশ
ফুটে থাকে হিম শাদা- রং তার আশ্বিনের আলোর মতন;
রৌদ্রের দুপুর ভ’রে- বারবার রোদ তার সুচিক্বণ চুল
কাঁঠাল জামের বুকে নিঙড়ায়ে- দহে বিলে চঞ্চল আঙুল
বুলায়ে বুলায়ে ফেরে এইখানে জাম লিচু কাঁঠালের বন,
সন্ধ্যার অন্ধকারে, ধানক্ষেতে, আমবনে, অস্পষ্ট শাখায়
কোকিলের ডাক শুনে চোখে তার ফুটেছিল কুয়াশা কেবল।
..................................................
নির্মলেন্দু গুণ
তোমার হাতে বন্দী আমার ভালোবাসার কাশ
তাইতো আমি এই শরতে তোমার কৃতদাস"
দেখি আমার শরত রানী কাশবনে আর নেই।
..................................................
শিহাব সরকার
পরীরা পাহাড়ে নেমে পাশা খেলে মধ্যরাতে
আজ কোনো জাদুটোনা, ডাইনিরা নেই,
বনের ভিতরে বিজন যোগী-সন্ন্যাসীরা
শরতের জলসায় জমেছে জ্যোৎস্নাসম্ভোগ
রাত্রিভর মহুয়ার বন্যায় যৌবন মত্ত
শহর থেকে এসে ঝর্ণাজলে মুছেছি ঝুলকালি
ও মা, দুইদিকে টানিছে আনন্দপরমা!
মেঘ অদিতি
সাদা পাতায় থোকা থোকা অক্ষর ফুটুক
যতদূর দৃষ্টি বিনিময়
ফিকে নীলে ঘন হোক বনকাশ, তোমার আকাশ
অতল স্তব্ধতা ছেড়ে নীল চিরকুট, স্থিত হও তুমিও আবার। সরোদে শরৎ বাজুক।
..................................................
তমসুর হোসেন
কৈশরের দিনগুলো ছিল বড়োই স্বপ্নময়
যৌবনে দুটি অন্তরে জেগেছিল সহসা অভিন্ন ক্রন্দন
তারপর দেখা নেই, ব্রহ্মপুত্রের অপূর্ণাঙ্গ নালার মতো একদিন মরে গেল প্রেম
শুধু স্মৃতিটুকু থেকে গেল অনির্বাণ জন্ম জন্মান্তরে।
জলশূন্য মেঘে কিংবা অন্য কোন রৌদ্রস্নাত নিবিড় আকাশে
নামহীন পাখি হয়ে গাঢ় সবুজ অরণ্য প্রান্তরে মুক্ত বাতাসে
উড়ে যাওয়া যেত।
এই দূর্বহ স্মৃতির চেয়ে অল্প আয়ুতে জন্ম হলে কী হত ক্ষতি?
দূর হতে উড়ে এসে হৃদয়ের কাছে মেঘেরা বলে যেত কথা।
দুজনে একসাথে দুঃখময় পৃথিবীটা ছেড়ে যাই যেন।
..................................................
মামুন মুস্তাফা
মেলে দিয়েছিলো জ্যোৎস্নাহত মেঘের শাড়ি?
নিশিঘন কালো চুলে শরতের শিশির বিন্দু বিন্দু
জলে পরাহত পুরুষের তৃষ্ণা মেটায়।
শরতের শাদা মেঘ বাষ্পীভূত হয়ে যায় এই
ভাটি বাংলায়— গাঁদাফুলবনে রমণী ও রমণে
কেবলি ধূলি ও মেঘের মৃত্যু উদ্যাপিত হলো!
কেবল ভাদুরে দিবস...মাটির গহীন ক্রন্দন...
পড়া শিউলি ফুলে দয়িতার সজল মুখ।
..................................................
ইলিয়াস বাবর
গোপন ব্যথা আর যত সব ভন্ডামি-জমকালো।
শুভ্রতারই প্রলেপ এঁকে সাদায় মজি ঢের
মানুষেরা মানব হবে সংগীত হোক ফের।
প্রেম সাগরের নাগর হয়ে আঁকছি কারুকাজ।
শরত শেখায় ক্ষমার কিমা কাশের বৃন্দদাবন
প্রেমিক সাজি, মানুষ ভজি শরত-আয়োজন!
ইদ্রিস মণ্ডল
গাছর ডালে
সবুজ পাতা
টাঙ্গায় ছাতা
ক্ষণে ক্ষণে
বাতাস উড়ে
ফুলটা নড়ে
শিউলি ফুটে হাসে
মন ভরানো রূপ নিয়ে সে
উড়ে দেশে আসে
রূপ করে সে পেশ।
..................................................
শান্ত-মায়াময় প্রকৃতি বিরাজ করে দেশে
ফুল কুড়োতে দৌড়ে আসে শানু, পরী, মিতা
শিউলী ফুলের মালাগাঁথার হয় প্রতিযোগিতা
সাদা মেঘের টুকরো ভাসে নীল আকাশে ডেলি
গন্ধে সদা আকুল করে হাসনাহেনা, বেলী
নদীর ধারে কাশফুলেরা খাচ্ছে হাওয়ায় দোলা
ক'দিন পরেই আমন ধানে ভরবে চাষী গোলা
পাকা তালের মিষ্টি রসে বানায় পিঠা বধূ
শরৎ রাণীর রুপটা আহা! দেখতে কী'যে মধু ।।
..................................................
বিশ্বজিৎ কর
শিউলি কুড়োনোর বেলা,
শরৎরাণীর ভেলা!
অপু-দূর্গার দৌড়,
রক্তিম সূর্যের ভোর!
তালপুকুর পদ্মে ভরা,
শাহীন খান
ভ্রমর হৃদয় মাতোয়ারা করে সে যে ভুল।
রাতের বেলা জোনাক জ্বলে লাগে ভারী ভালো
চন্দ্র হাসে রাতাকাশে দিনে রবির আলো।
সাদা সাদা মেঘের সারি যায় হারিয়ে দূরে
বেলেহাঁস ও বক পাখিরা ঝিলের দিকে ওড়ে।
ডাহুক ডাকে থেকে থেকে দোলে ঘুঘুর ছানা
প্রজাপতি খুব সহসা মেলে রঙ্গিন ডানা।
নদীপাড়ে কাশের শোভা খিলখিলিয়ে হাসে
ঝিরিঝিরি ঠান্ডা হাওয়ায় ফুল সুরভি ভাসে।
মাহমুদ সালিম
গাছে পাখির দল
টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে
টুপটুপটুপ জল।
রাখাল বাঁশির সুরে
শরৎ রানী রূপের ঝলক
হৃদয় রাজ্যপুরে।
পড়ছে হেসে হেসে
ফুল পাখিরা গান ধরেছে
শরৎ ভালোবেসে।
..................................................
বিমল মণ্ডল
বিকেলের ভাষা ছুঁয়ে যায়
অভ্যাসের সুখ
স্নান সারি আবারও স্নান
প্রতিটি মুহূর্ত তোমার নকল খেলা
রাস্তায় রাস্তায় সমস্ত আনন্দ
বিরল আগমনী গান
পাহাড় -পর্বত আশ্বাসের ছায়া
চিরকালীন এই সান্ধ্যকাল
দাখিল করে রেখেছো শব উৎসব
পলকে পলকে ইশারা
বয়ে যাওয়া প্রতিশ্রুতি
আলো- আঁধারি খেলা
সফেন আনন্দে মুখর।
..................................................
রবি রায়হান
বর্ষার স্মৃতি ভুলে উঠে শরতের গান গেয়ে,
এই বুঝি নামবে ঝরঝর বৃষ্টি ধরায় বেয়ে।
কাশবনে সাদা ফুল অনুভূতি জাগে অপরূপ,
সাদা মেঘের ভেলা ভাসে নীল ঐ আকাশে।
সকালের সোনা রোদে ঝলমল করে হাসে,
ধানক্ষেতে সোনালী রঙ ধরে ভাদ্রে এসে।
সকালে পুকুরে জলকেলিতে মাতে পাতি হাঁস,
শরতের শুভ্রতায় মনে জাগে সুখের হরষ।
দৃষ্টি মেলে আবছা আঁধারে জাগে সুখস্মৃতি,
শান্তির পরশে পুলকিত মন অনুরণনে মাতি।
বুকের ভিতর মোর বাউলের একতারা বাজে,
..................................................
শেখ একেএম জাকারিয়া
ফুলপরীরা সেই খুশিতে যায় যে হেসে,
রবির কিরণ নেচে ওঠে শুভ্র কাশে।
রক্তিম আভা সবাই মাখে মন পরতে,
মনের সুখে যায় নেচে যায় ছন্দতালে।
গান গেয়ে যায় মধুর সুরে মনের হাটে,
সুবাস ছড়ায় শিউলি বেলি বৃক্ষতলে।
এসব দেখে সকল প্রাণীর মনটা ভরে,
মিষ্টি ঘ্রাণে মনে ভরে যায় শরৎ এলে।
..................................................
সৈয়দ ময়নুল কবরী
পদ্ম ফোটে নদীর জলে, কাশফুল হাসে ঝিলে।
তালের রসের গন্ধ শুকে,ভোলায় ব্যথা দুঃখ
কূলও বধূর মনের সুখে হাসিতে ফোটায় মূখ।
নদীর তীরে বাগান জোরে, ফসলের চলে দুম
মাঝির ডিঙি নদীর ধারে, বাঁধিয়ে পারে ঘুম।
শরৎ হাসে মনোল্লাসে, শরৎ কাঁড়ে এই মন
শরৎ চোখে ছবি আঁকা শরতের আয়োজন।
..................................................
সোহানুর রহমান সোহাগ
দাড়িঁয়ে থাকা সাদা কাশফুল।
মাঠের ঐ পাশেই আকাশ
কাশফুলের সাথে মিশে হয়ে গেছে নীল।
দুলছে কাশফুল কি দারুণ!
সাদা কাশফুল দেখতে নিদারুণ!
ফুলের অসম্ভব সুন্দর সুভাস।
সাদা কাশ ফুল আমায় দিচ্ছে
শরতের আভাস।
মিলিয়ে যাওয়া সাদা মেঘের ভেলায়।
সাদা কাশফুল নিয়ে খেলায় মেতে থাকি
সকাল বিকেল সন্ধ্যা বেলায়।
ঐ দিগন্তের চূড়ায়,
মিশে যাওয়া আকাশ ছোয়ার।
..................................................
কবিতা সুলতানা
আকাশের নীলে,পাতালের ঝীলে
আনন্দঘনতায় আছে যেন মিশি।
কী রূপ তোমার ওগো প্রকৃতি প্রকাশে,
ছন্দ ছন্দে মোর পাখি গায় গান,
কাশফুলে দুলে দুলে মেলে দেয় ডানা,
..................................................
সুয়েজ করিম
জলহারা ওই শুভ্র মেঘের ভেলা
নীল আকাশে স্বচ্ছ রূপের খেলা।
দিঘল দীঘির শাপলা-শালুক তোলে।
ঋতুর মলাট খুলে ঋতুর রাণী
ফুলের গন্ধে ছড়ায় মুগ্ধ বাণী।
উচ্ছাসে তাই লাগল প্রাণে ছোঁয়া।
কাশফুলেতে ফুটছে চাঁদের জ্যোতি
সুজন মাঝি গাইছে পল্লিগীতি।
ওত পেতে রয় কেমনে তাঁরে খাবে।
দিনের আলো নিভে গেলে রাতে
জ্যোৎস্না জ্বলে কাচের মতো তাতে।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments