জাহাঙ্গীর অরণ্য’র ছড়া

 
মেঘের বেটি
 
মেঘের বেটি ঝাঁপ দিয়েছে
         পায়ে দিয়ে মল
কচু পাতায় দোল দিয়ে কয়
         কেমন আছিস বল?
 
বাপ নেমেছে লাঙল নিয়ে
         মা নিয়েছে কলস
ও অভাগী মেঘের বেটি
         তুই তো বড় অলস!
 
ছমাস বাদে মেঘের বেটি
         সাগর দিলি পারি
আসিস না আর সামনে আমার
         তোর সাথে আজ আড়ি!
 
কেমন করে ছলায কলায়
         বিদেশ থাকিস পড়ি
তোর বিহনে কেমন করে
         দিনগুলো পার করি।
..................................................
 
মিনা
 
তিনশ টাকা মাইনে দিয়া
জীবনখানা নিছে নিয়া
লক্ষ ট্যাকায় কুত্তা পোষে
তিনশ ট্যাকা নাই!
মনে চায়,
যাইত্যা ধইরা গাইথ্যা ফালাই।
 
জীবন ওদের পুষ্প তোড়া
আমিই শুধু পাথড় মোড়া
রাইত দুইটায় ডাইক্কা কহে
মিনা, মাছটা ভাজ!
মনে চায়,
যাইত্যা ধইরা গাইথ্যা ফালাই।
 
কত্তো রুমের বিশাল বাড়ি
পোড়ো রুমেও বিছনা ঝাড়ি
এত্তোগুলা বিছনা তবু
পাকের ঘরে শুই!
মনে চায়,
যাইত্যা ধইরা গাইথ্যা ফালাই।
 
শরীর খাটায় যেন দানব
ভাবে না যে এটাও মানব
একটু ছুতোয় হামলে পড়ে
সেথায় খুন্তির ছ্যাকা!
মনে চায়,
যাইত্যা ধইরা গাইথ্যা ফালাই।
 
অর্থ ব্যয়ে খাত জোটে না
পরতে দেয় ঠিক ছেঁড়া তেনা
কয়শ ট্যাকা খরচা পড়ে
একটা নতুন জামায়!
মনে চায়,
যাইত্যা ধইরা গাইথ্যা ফালাই।
..................................................
 
খোকার স্মৃতি
 
আমি মাগো চলে গেলাম
জলা পুকুর পাড়ে
কোঁদো না আর খোকা বলে
অবুঝ মনের ভারে।
 
দুদিন বাদে মাটি ফুঁড়ে
আকাশ দেবো পাড়ি
তারার ধারে গড়ে নেবো
ঝলমলে এক বাড়ি।
 
আমায় যখন পড়বে মনে
নিশীথ বিজন হলে
পুকুর ধারে যেয় চলে
খেলনা লয়ে কোলে।
 
হাজার তারার মাঝে আমি
মুখটা উঁচু করে
সারাটা রাত রবো চেয়ে
জলা পুকুর ধরে।
 
ঘোমটা খুলে সরিয়ে ফেলো
হিজল পাতার থোকা
যেই তারাটা হাসছে একা
ওটাই তোমার খোকা।
 ..................................................
 
মায়ের স্মৃতি
 
মাগো আমি হাসছি অনেক
ওদের সাথে খেলছি অনেক
সাঁঝের বেলা চুপটি করে
ফিরছি একা ঘরে।
 
যেদিন তুমি চলে গেলে
কী কথা যে বলে গেলে
আমি তখন ঘুমিয়েছিলাম
ছোট্ট পাটির পরে।
 
মাগো তোমার মুখটি কেমন
মাখা হাতটি কেমন
তোমার ছায়া পাই না কেন
অন্য কারও তরে!
 
মাগো তুমি কোথায় থাকো
খোকা বলে কারে ডাকো
আমার মতো কাঁদছ নাতো
সাঁঝের আঁধার ঘরে।
..................................................
 
আজব শহর
 
আইছো বাছা ঢাকায় আইছ
                    বেছ করিছ বেছ
ছোল কোটির বাংলাদেছটা
               আজব একখান দেছ।
 
হগল জেলার হরেক মানুছ
                   এই ছহরটা ঠাছা
কোনোমতে নিয়া ফ্যালো
                ছোট্ট একখান বাছা।
 
ভিক্ষা করলেও করবার পারো
                রাজায়ও নাই মানা
চাইলে তুমি হবার পারো
               ছয়তানের এক ছানা।
 
চাইলে তুমি জন্তু হয়ে
                ছবাইকে দাও তাড়া
চাইলে আবার মানুছ হয়ে
                 যাবার পারো মারা।
 
প্যাটের দায়ে চুরি করে
                জীবন দিবার পারো
থানার ছাথে আপোছ করে
                চাইলে ছহর কাড়ো।
 
চাইলে তুমি বস্তি-খোপে
                 পচতে পারো মরে
চাইলে আবার একছ বাড়ি
                 নিবার পারো করে।
 
চাইলে তুমি বিদ্বান হয়ে
               টকছো দিবার পারো
বই-খাতা ছব ছিঁড়া ফেলে
              চ্যানেল দিবার পারো।
 
চাইলে তুমি মন্ত্রী হয়ে
                 চান্দে জমাও পারি
তোমার ঘরে ভিড় জমাবে
               কতো নর আর নারী।
 
হাহা হাহা হাহা হাহা
                হাছি আসছে ঠেলে
ভিনদেশিরা করতো কেমন
               এমন দ্যাছটা পেলে!
 
একই ধর্ম একই বর্ণ
                 একই মায়ের ভাছা
নীতি কথার ধার ধারি না
                  দ্যাছটা খামু কাঁচা।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.