ধর্ষণ ও ব্যভিচার রোধে ইসলাম_এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান
ইসলামে ব্যভিচারকে অশ্লীল ও নিকৃষ্ট কাজ ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যভিচার ও ধর্ষণ রোধে ইসলাম পর্দার বিধান দিয়েছে, শালীন পোশাক পরিধানের কথা বলেছে এবং নারী ও পুরুষকে চক্ষু অবনত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি ব্যভিচার ও ধর্ষণ রোধে ইসলামে পার্থিব ও অপার্থিব শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
যিনা বা ব্যভিচার : যিনা বা ব্যভিচার বলতে বুঝায়, ইসলামি শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধন ছাড়া অবৈধ পন্থায় যৌন তৃপ্তি লাভ। ইসলামি শরীয়াতে অবৈধ পন্থায় যৌন সম্ভোগ সম্পূর্ণ হারাম এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ধর্ষণ : ধর্ষণ হচ্ছে মেয়ের অনিচ্ছায় জোড় পূর্বক যৌন সঙ্গম। ধর্ষণ এক পুরুষ কর্তৃকও হতে পারে আবার একাধিক পুরুষ মিলেও গণধর্ষণ হতে পারে।
আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে ধর্ষণের ভয়াবহতায় আতঙ্কিত অভিভাবকরা। সম্প্রতি ধর্ষণ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া বেশ কয়েকবার ধাক্কা খেল। ভারতে বাসের ভেতর বেশকয়েকটি গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশেও একটার পর একটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে থাকে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে পাঁচ হাজারের বেশি। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ধর্ষণের ঘটনা ৮৭৯টি, যা ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬০৭টিতে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে এক হাজারেরও বেশি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পৃথক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে এক হাজার ৪১৩ নারী ধর্ষিত হয়েছেন।
পুলিশ সদরদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে এক হাজার ৯২৪টি। এর মধ্যে ৫১.৬২ শতাংশই ধর্ষণের অভিযোগে মামলা। এক্ষেত্রে সাজাপ্রাপ্তির হার মাত্র ১১.২৬ শতাংশ।
ইদানিং প্রতিদিনই ধর্ষণের খবর প্রকাশ হচ্ছে মিডিয়াতে।
পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দিন-দিন চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে ধর্ষণের মতো জঘন্য একটি বিষয়।
কেন বাড়ছে এমন ঘটনা
মনোবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক সময়ই ঘটনার সুষ্ঠু কোনো বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। মূলত বিচারহীনতার সংস্কৃতিই এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিন্দনীয় এ ঘটনার পেছনে দায়ী সমাজ ব্যবস্থা, নৈতিক শিক্ষার অভাব, যথাযথ শিক্ষার অভাবসহ মাদকের মতো বেশ কিছু বিষয়।
এ ঘটনার বিস্তার রোধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। পাশাপাশি কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার কথিত এই ধর্ষকদের। শাস্তির বিষয়গুলোও প্রচার করা দরকার গণমাধ্যমে, যাতে কেউ এই ধরনের হীন কাজ করার সাহস না দেখায়। সমাজে পর্দার হুকুম বাস্তবায়ন দরকার। পাশাপাশি পরিবার-সমাজ, বিদ্যালয়ের মতো জায়গাগুলোতে নৈতিক শিক্ষার বিস্তার করা উচিত। এছাড়া লিফলেট, ব্যানার-পোস্টারের মাধ্যমেও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালানো উচিত।
ইসলামে ব্যভিচারকে অশ্লীল ও নিকৃষ্ট কাজ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি এর জন্য পার্থিব ও অপার্থিব শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কুরআনুল কারীমে ব্যভিচার সম্পর্কে বলা হয়েছে,
وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا
এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। [ সুরা ফুরকান : ৬৮ ]
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে। [ সূরা ফুরকান : ৬৯ ]
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। [সূরা ইসরা :৩২]
وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ
إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ
فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاء ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ
‘এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না। অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালংঘনকারী হবে।’ [সূরা মুমিনুন : ৫-৭]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত : নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আদম সন্তানের উপর যেনার একটি অংশ লিখা হয়েছে। সে তা পাবেই। মানুষের দু’চোখের যেনা দেখা। দু’কানের যেনা শুনা। জিহ্বার যেনা কথা বলা। হাতের যেনা স্পর্শ করা। পায়ের যেনা যেনার পথে চলা। অন্তরের যেনা হচ্ছে আকাক্সক্ষা করা। লজ্জাস্থান তার সত্য মিথ্যা প্রমাণ করে’ [মুসলিম হা/২৬৫৭; মিশকাত হা/৮৬ ‘ঈমান’ অধ্যায়]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘হে মুসলমানগণ! তোমরা ব্যভিচার পরিত্যাগ কর। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি দুনিয়াতে ও তিনটি আখেরাতে প্রকাশ পাবে।
যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হয় তা হচ্ছে,
ক. তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিনষ্ট হয়ে যাবে,
খ. তার আয়ুষ্কাল সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং
গ. তার দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে।
আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে,
ক. সে আল্লাহর অসন্তোষ,
খ. কঠিন হিসাব ও
গ. জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।’ [বায়হাকি, হা নং ৫৬৪]
যিনাকারীর পরকালীন শাস্তি
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না এবং তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেবেন না। তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। তারা হলো, বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক ও অহংকারী দরিদ্র।’ [মুসলিম শরিফ, ঈমান অধ্যায়, হাদিস নম্বর : ২৯৬]
“যিনারাকীরা উলঙ্গ অবস্থায় এমন এক চুলার মধ্যে থাকবে যার অগ্রভাগ হবে অত্যন্ত সংকীর্ণ আর নিম্নভাগ হবে প্রশস্ত । উহার তলদেশে অগ্নি প্রজ্বলিত থাকবে। তাদেরকে তাতে দগ্ধ করা হবে। তারা মাঝে মধ্যে সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছে যাবে; অতঃপর আগুন যখন স্তমিত হয়ে যাবে তখন তাতে তারা আবার ফিরে যাবে। আর তাদের সাথে এই আচারণ কেয়ামত পর্যন্ত করা হবে।” [বুখারী :৭০৪৭]
ইসলামী আইনবিদরা এ মর্মে ঐকমত্যে রয়েছেন যে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিকে ধর্ষণের কারণে অভিযুক্ত করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে তার কোনো পাপ নেই। কেননা ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ওপর বল প্রয়োগ করা হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার উম্মতের ভুলবশত করা অপরাধ, ভুলে যাওয়া কাজ ও বল প্রয়োগকৃত বিষয় ক্ষমা করে দিয়েছেন।’ [ইবনে মাজাহ : ২০৪৫]
ধর্ষণের ক্ষেত্রে এক পক্ষ থেকে ব্যভিচার সংঘটিত হয়। আর অন্য পক্ষ হয় মজলুম বা নির্যাতিত। তাই মজলুমের কোনো শাস্তি নেই। শুধু জালিম বা ধর্ষকের শাস্তি হবে। ধর্ষণের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় সংঘটিত হয়। এক. ব্যভিচার। দুই. বল প্রয়োগ। তিন. সম্ভ্রম লুণ্ঠন। ব্যভিচারের জন্য কুরআনে বর্ণিত ব্যভিচারের শাস্তি পাবে। ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি ব্যক্তিভেদে একটু ভিন্ন। ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদ- দেওয়া হবে। আর যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত করা হবে। হানাফি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব মতে, ধর্ষণের জন্য ব্যভিচারের শাস্তি প্রযোজ্য হবে। তবে ইমাম মালেক (রহ.)-এর মতে, ধর্ষণের অপরাধে ব্যভিচারের শাস্তির পাশাপাশি ‘মুহারাবা’র শাস্তি প্রয়োগ করা হবে। ‘মুহারাবা’ হলো অস্ত্র দেখিয়ে বা অস্ত্র ছাড়াই ভীতি প্রদর্শন করে ডাকাতি করা কিংবা লুণ্ঠন করা। এককথায় ‘মুহারাবা’ হলো পৃথিবীতে অনাচার সৃষ্টি, লুণ্ঠন, নিরাপত্তা বিঘিœতকরণ, ত্রাসের রাজ্য কায়েম করা ইত্যাদি। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ‘মুহারাবা’র শাস্তি এভাবে নির্ধারণ করেছেন,
إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَنْ يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ مِنْ خِلَافٍ أَوْ يُنْفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি হচ্ছে : তাদের হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে বা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কেটে দেওয়া হবে কিংবা দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। এটি তাদের পার্থিব লাঞ্ছনা, আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।’ [সূরা মায়িদা : ৩৩)
এ আয়াতের আলোকে মালেকি মাজহাবে ধর্ষণের শাস্তিতে ‘মুহারাবা’র শাস্তি যুক্ত করার মত দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, সমাজে ধর্ষণ মহামারির আকার ধারণ করলে, সমাজ থেকে ধর্ষণ সমূলে নির্মূল করার লক্ষ্যে এ শাস্তি প্রয়োগ করা জরুরি। [আল মুগনি : ৮/৯৮]
আর যদি ধর্ষণের সঙ্গে হত্যাজনিত অপরাধ যুক্ত হয়, তাহলে ঘাতকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- হওয়া উচিত।
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত : তিনি তাঁর ভাষণে বলেছিলেন : নিশ্চয় আল্লাহ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আর তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এবং আল্লাহর অবতীর্ণ বিষয়াদির একটি ছিল রজমের আয়াত। আমরা সে আয়াত পড়েছি, বুঝেছি, আয়ত্ত করেছি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাথর মেরে হত্যা করেছেন। আমরাও তাঁর পরে পাথর মেরে হত্যা করেছি। আমি আশঙ্কা করছি যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পর কোন লোক এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহর কসম! আমরা আল্লাহর কিতাবে পাথর মেরে হত্যার আয়াত পাচ্ছি না। ফলে তারা এমন একটি ফর্য ত্যাগের কারণে পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির উপর পাথর মেরে হত্যা অবধারিত যে বিবাহিত হবার পর যিনা করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী, যখন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি পাওয়া যাবে।’ [বুখারী ২৪৬২, মুসলিম ১৬৯১]
ধর্ষিতার করণীয়
ব্যভিচারের সমগোত্রীয় অথচ তার চেয়েও ভয়ঙ্কর অপরাধ হলো ধর্ষণ। ইসলামে ব্যভিচারের পাশাপাশি ধর্ষণও কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। কোনো ব্যক্তি যদি ধর্ষণের শিকার হয়, তাহলে তার সর্বপ্রথম করণীয় হলো, সম্ভব হলে তা প্রতিরোধ করা। এমনকি যদিও তা ধর্ষণকারীকে হত্যা করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে, তাতেও ইসলাম সায় দিয়েছে। সাইদ ইবনে জায়েদ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে যে ব্যক্তি নিহত হয়েছে, সে শহীদ। জীবন রক্ষা করতে গিয়ে যে নিহত হয়েছে, সে-ও শহীদ। দ্বিন রক্ষা করতে গিয়ে যে নিহত হয়েছে, সে শহীদ। আর সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে যে নিহত হয়েছে, সে-ও শহীদ।’ [আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৭২; তিরমিজি, হাদিস : ১৪২১]
তাই যে ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার হয়েছে, তাকে ধর্ষণ হওয়ার কারণে যেমন অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত করা যাবে না তেমনি তাকে বাঁকা চোখে দেখা কিংবা কটুক্তিও করা যাবে না।
ইসলাম যদিও মানব সমাজকে ধর্ষণ, যিনা-ব্যভিচারের আশঙ্কা থেকে বাঁচানো জন্য দ-বিধি আইনের কথা উল্লেখ করেছেন। এটি নিছক বিচারের শেষ উপায়।
এ বিধান নাজিলের উদ্দেশ্য এটি নয় যে, মানুষ অপরাধ করে যেতে থাকবে আর ইসলাম হদ প্রয়োগ তথা বেত্রাঘাত, হত্যা বা দেশান্তরিত করতে থাকবে বরং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, লোকেরা যেন এ অপরাধ না করে এবং কাউকে শাস্তি দেয়া বা কারো উপর জোর-জবরদস্তি করার সুযোগই না পায়।
তাই অপরাধমুক্ত মানব সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিটি মানুষে মনে আল্লাহর ভয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাতে সে দুনিয়ার যাবতীয় অপরাধ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারে।
আর ঈমানের অপরিহার্য দাবিও হচ্ছে মানুষ অপরাধমুক্ত জীবন প্রতিষ্ঠা করবে। আল্লাহর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অপরাধ ছেড়ে দেবে। দুনিয়া ও পরকালের জবাবদিহিতার মানসিকতা নিজেদের মধ্যে তৈরি করবে।
আল্লাহ তা‘আলা পুরো মানবজাতীকে গর্হিত কাজগুলো ছেড়ে কুরআনের বিধানগুলো যথাযথ পালনের তাওফিক দান করুন। আমীন।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments