ধূম্যজাল_মনিরা মিতা
ক্যাম্পাস থেকে হলে ফিরেই মনটা খারাপ হলে গেল উর্মির। রুমমেট দু’জনেই বাড়ীতে গেছে। একাকী জীবন পানসে আর নির্লিপ্ত। জীবনের খন্ড-খন্ড ব্যর্থতার স্বাদ আর অন্ধকার তাকে করেছে শুদ্ধ। তবুও মুচকি হাসি সর্বক্ষণই ঠোঁটে লেগে থাকে তার। একাকিত্বই তার বড় আপনজন তাই ওটা আঁকড়ে ধরে বড় হয়েছে সে, সুতরাং বিষন্ন বাগানের চিত্র তার নতুন চেনা নয়।
তবুও আজ একা থাকতে কেমন যেন লাগছে। সন্ধ্যা হয়ে এল। ক্যাম্পাস আস্তে আস্তে ফাঁকা হচ্ছে। উর্মি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে তার ভাবছে সামনের দিনগুলো কেমন হবে মরুময় নাকি শ্রাবণমূখর?
হঠাৎ একটা নাকি কন্ঠ কেঁদে উঠলো। উর্মি অনেক সাহস নিয়ে বলে উঠল কে? কে ওখানে আমি!
আমি কে?
আমি জয়িতা।
উর্মি বললো এতো রাতে এখানে কি ভাবে এলেন?
আমি তো ভুত, আমি সব জায়গায় যেতে পারি। তবে তোমার কোন ক্ষতি করব না, তুমি ভয় পেয় না।
উর্মি-ভুত!!!
হ্যাঁ, কিন্তু তুমি ভয় পেও না, আমি বিপদ পরে এখানে এসেছি, সকাল হলেই চলে যাব।
উর্মি একটু স্বাভাবিক হয়ে বললো তুমি নাকি কন্ঠে কথা বলো না, আমার ভয় করে। তুমি কেন এখানে এসেছ?
ভুত-স্বাভাবিক কন্ঠে আস্তে আস্তে বলতে শুরু করল তার কাহিনী। আমার নাম জয়িতা। আমি ৩ বছর আগে এই ক্যাম্পাসে দর্শন বিভাগে ভর্তি হই। ভাল ছাত্রী ছিলাম তাই সবাই আমাকে চিনতো। যৌবনের বসন্তে মতোয়ারা ছিলাম। ক্যাম্পাসে ছুঁটে বেরিয়েছি সময়ে অসময়ে। ক্যাম্পাসের একটা আতঙ্কের নাম সেলিম রাজনীতি করে। ছেলেটি খুব বেপরোয়া আর ভয়ঙ্কর ধরনের। প্রায় আমাকে বিরক্ত করতো। আমি পাত্তা দিতাম না।
এক সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিলাম একটা জরুরী কাজে। ফেরার পথে দেখি সেলিম তার দলবল নিয়ে দাঁড়েয়ে আছে। আমি ভয়ে দৌঁড় দিলাম। ওরাও আমার পিছু নিল। অন্ধকারে আমি রাস্তার দিকে খেলাল না কইে দৌঁড়াচ্ছি। হঠাৎ একটা গাড়ী আমার উপর দিয়ে উঠে গেল। আমি হয়ে গেলাম মাংস পিন্ড। আর আমার অতৃপ্ত আত্মা হয়ে গেল ভুত।
তারপর থেকে এই ক্যাম্পাসেই থাকি কারন এটাই ছিল আমার ধ্যান – জ্ঞান। এখানে বেশ ভালই ছিলাম আমি। কিন্তু গত বছর সেলিমকে অন্যদলের লোকেরা গলা কেটে ফেলে রেখে যায়।
সেই থেকে সেও আমারই মত ভুত হয়েই ঘুরে বেরায় এই ক্যাম্পাসে। ভুত হয়েও সে আমাকে তাড়িয়ে বেরায়। আমাকে পেলেই মারে, কষ্ট দেয়।
আজ রাতেও আমাকে তাড়াচ্ছিল। আমি উপায় না পেয়ে তোমার রুমে এসেছি।
কথা শেষ হতে না হতেই চিৎকার করে উঠলো জয়িতা-আমাকে মেরো না, মেরো না।
উর্মি হঠাৎ জয়িতা ভুতের হাত টেনে ধরলো। ঠিক তখনই কেউ একজন উর্মিকে জোড়ে চড় মেরে ঢাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। এমন সময় ফজরের আযান ভেসে এলো চারিদিকে নি:শব্দ হয়ে গেল। সব কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল।
উর্মি ভয়ে ঘেমে গেছে। আবল তাবল বকছে, উর্মির মাথা ঘুরছে। কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বোঝেনি।
উর্মির ঘুম ভাঙ্গলো সকাল ৯ টায়। ঘুম থেকে উঠে গতরাতের কথা ভেবে গা ছমছম করতে লাগলো। পরক্ষণেই মনে হল সে স্বপ্ন দেখেছে। ক্যান্টিনে গেল চা খেতে। ক্যান্টিনে যেতেই রহিম, ক্যান্টিনের ছোট ছেলে টা চা নিয়ে এল। কিছুক্ষণপর রহিম বললো –
আফা আপনেরে এমন লাগতাছে ক্যান?
রাইতে ঘুম হয়নি বুঝি? আর আপনের ডান গালডা ফুলা ক্যান, ব্যাথা পাইছেন বুঝি।
উর্মি চা রেখে আয়না বের করে দেখে সত্যিই তার ডান গালটা অসম্ভব ফুলে আছে।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments