শীত শিহরণ : শীত সংখ্যা ২০২১
শীত আমাদের জীবনে কর্মব্যস্ততা কমিয়ে ঘুমের রাজ্যে নিয়ে যায়। শীত বাতাস, রুক্ষ মাটি আর ঝিমিয়ে যাওয়া গাছগাছালি এক নিরবতা সৃষ্টি করে। অল্প বিস্তর কর্মব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে মানুষ সৃজনশীলতায় মিলিত হয়। বিছানায় স্বপ্নের অনুভূতিগুলো আবার জেগে ওঠে। তন্দ্রাহীন অর্ধঘুম কল্পনার ডানা মেলে। নতুন চিন্তায় আর একবার পাশ ফিরে শোয়। এ বছর করোনা আমাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে আসলেও আমাদের জীবনাশক্তি তার অভিশাপকে তোয়াক্কা না করে জীবনকে আরো পরিশীলিত করে তোলেতে সর্বাত্ত্বক চেষ্টা করে চলছে। আগামী পৃথিবী যেনো আরো শুদ্ধ, আরো মনোরম, বাসযোগ্য হয় তার চিন্তায় আমাদের জীবনের সৃজনক্রিয়া অব্যাহত চলতে থাকে। সবার জীবন সুন্দর ও জীবনাশক্তি বৃদ্ধি পাক এই আমাদের কামনা। এই কামনায় আমরা শীত সংখ্যা প্রকাশ কলাম। আশা করি পাঠক লেখক সবারই এই সংখ্যাগুলো ভালো লাগবে। আর আপনাদের ভালো লাগা আর ভালোবাসাই আমাদের জন্য দোয়া।
আফসার নিজাম
সম্পাদক
পৌষ :: কাজী নজরুল ইসলাম
শীতে ভালোবাসা পদ্ধতি :: আবুল হাসান
শীত এলে মনে হয় :: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
নিজেই নিজের আজ্ঞাবহ :: তৈমুর খান
শিশির ভেজা শীত :: কবিতা সুলতানা
দুধ কুয়াশা :: শাহীন রায়হান
একটি সকাল :: শিরিন আফরোজ
মাঘ :: মুহাম্মদ ইব্রাহিম বাহারী
শীত এলো :: জুনাইদ বিন মুহিব
কুয়াশার কুঞ্জ :: জোবায়েদ হোসেন
শীতের পাখি :: ইমরান খান রাজ
শীতের আগমন :: রাজীব হাসান
মিষ্টি আলো :: হামীম রায়হান
বাংলাদেশের শীতকাল :: ডা. এম এ ওহাব লাবিব
হাঁড়কাপুনি শীত :: গাজী আরিফ মান্নান
শীতের হাওয়া :: ইউনুস আহমেদ
শীতের আগমন :: মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
শীতের সকাল :: আফজাল সুয়েব
শীত এসেছে :: সৈয়দ ময়নুল কবরী
শীতার্তদের পাশে দাঁড়াও :: মুহাঃ রাকিবুল ইসলাম
..................................................
কাজী নজরুল ইসলাম
ঐ যে এলো গো-
সে এলো আর পাতায় পাতায় হায়
বিদায়-ব্যথা যায় গো কেঁদে যায়,
পথ-চাওয়া দীপ সন্ধ্যা-তারায় হারায়ে।।
পউষ এলো গো-
পউষ এলো গো! পউষ এলো-
বিদায়-ক্ষণের (আ-হা) ভাঙা গলার সুর-
কালো চোখের করুণ চাওয়া ছাড়ায়ে।।’
আবুল হাসান
সন্ধেবেলা তোমার চুলে শিশির ভরে রাখবো লক্ষ্মী
তোমার অনামিকায় কামড় দিয়ে আমি হঠাৎ আবার
‘যাহ-কী-দুষ্ট’ ওষ্ঠে তোমার ওষ্ঠ ছোঁবো সকাল বেলায়
সূর্যোদয়ের কাছে কেবল শান্তি চাইবো, বুঝলে কনক
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সোনালী ফসল, কত রোদ ও বৃষ্টির স্বপ্ন যেন
স্নেহ লেগে আছে
লাউমাচায়, গরু ও গরুর ভর্তা সবান্ধব পুকুরের পাশে
মুখে বিশ্রামের ছবি, যদিও কোমরে গ্যাঁটে ব্যাথা ।
মধুময় হয়ে যাবে, যে রকম চেয়েছেন পিতৃপিতামহ
তাদের মৃত্যুর আগে ভেবেছেন আর দুটো বছর যদি…
এবার সমস্ত কিছু……
..................................................
তৈমুর খান
গান ঝরছে। অন্ধকারের তীব্র গান।
ধারণার রাস্তা আগলে কুকুরগুলি দৌড়ে গেল।
হল্লা নামল পথের মোড়ে।
দুয়ারে সব মৃতমাছ। পর্দা ঠেলছে।
আসছ কেন? কে ডেকেছে?
রাঙা চোখের কোনো ইশারা দেখছি না আর।
ঠাণ্ডা বাতাস হাতুড়ির মতো উঠছে নামছে।
শুনশান ঘুম ওই পালাল। কুকুররগড় চলছে বেশ।
আর কথার দোকান। দোকানে এসেছে চেতনাকুমারী।
বেশ রূপসী। ছলকাচ্ছে মৃদু গন্ধ।
কাতুকুতু। হিহি হিহি। লাফিয়ে নামছে শব্দগুলি।
এসবই খুব প্রাইভেসি।
পর্দা নামাও দেখব না আর। অনুভূতির দোকান
বন্ধ। চোখ ফিরুক চোখের কাছে। বেশ অন্ধকার।
কবিতা সুলতানা
আলতো ভেজায় পা,
হলুদে আমার গাঁ।
সাতার কাটে হাঁস,
ধরে শত মাছ।
শিউলি নামের মেয়ে,
ফুল ভরি গান গেয়ে।
সত্যি কি যে মিঠে,
তাই আসি গ্রামে ছুটে।
হৃদয় শীতল পাটি,
সূর্য পরিপাটি।
আমার পাশে রয়।
..................................................
শাহীন রায়হান
চায়ের সাথে খাও কি তুমি হালকা চিনি আদা
রাত তো অনেক বাইরে কেন? যাও না কেন বাড়ি
রাগ করেছ? মা বকেছে? মায়ের সাথে আড়ি?
বনবাদাড়ে নামবে এখন শীতের চপল গাড়ি
কাঁপবে শীতে ভয় পাবে খুব ভূত প্রেতও আছে
বলছি আমি দুধ কুয়াশা এসো আমার কাছে।
আমায় দিবে তোমার মত একটি সাদা শাড়ি?
শিরিন আফরোজ
শিশির ভেজা ঘাস।
সকাল আসে, ভুবন রাঙায়
দিনভর আলোর চাষ ।
মিষ্টি রোদের হাসি,
স্বপ্ন রাশিরাশি ।
নতুন একটি দিন,
বাজায় সুখের বীণ।
সকাল আসুক বারেবার,
দূরে থাকুক আঁধার।
..................................................
মুহাম্মদ ইব্রাহিম বাহারী
শীতে কাঁপে ডোরাকাটা বাঘে
কাঁপে মানুষ বস্তিবাসি ঢাকায়
হারু পাগলা ফ্যালফেলিয়ে তাকায়।
হিমালারই ঠাণ্ডা বাতাস ধেয়ে
পশু পাখি ঠকঠকিয়ে কাঁপে
যবুথবু শীতের ভীষণ চাপে।
মন ভরে যায় গুড়পাটালির ঘ্রাণে
মটরশুটির খেতের আইল জুড়ে
দূর্বাকোমল ওঠে মাটি ফুড়ে।
মৌমাছিরা ফুলের রেনু ঘাটে
সবজি ফসল হিমজুড়ানো মাঘে
লাল সবুজের বাংলা আমার জাগে।
..................................................
জুনাইদ বিন মুহিব
কম্বল ও চাদরে,
আকড়িয়ে না ধরে।
ঘাসভেজা শিশিরে,
কাঁপুনির জিকিরে।
বিকালের কুয়াশায়,
গরম ঐ ধোঁয়া চা'য়।
রস ভরা হাঁড়িতে,
কুয়াশার শাড়িতে।
..................................................
জোবায়েদ হোসেন
আমি ভুলে যাই, গাঁয়ের চিরচেনা মেঠোপথ-
দৌড়ে গিয়ে নিয়ে আসে, একঝাঁক জীর্ণ জ্বালানি-
কুয়াশার কুঞ্জ তড়িৎ ডিঙ্গে।
একজোড়া বুনোহাঁস, মৃদু কাঁপছে।
দেখে অজানা কোথাও হারিয়ে যায়-
ইমরান খান রাজ
মহা শীতের বার্তা,
ভিজে থাকে ঘাস,
স্নান করে পাতিহাঁস।
ভোরেই গাছে চড়ে,
নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
মৌমাছি হাসে মিষ্টি,
যতদূর যায় দৃষ্টি।
..................................................
রাজীব হাসান
শীতের আগমন
শীতের মাঝে ভালো লাগে
করতে দেশ ভ্রমণ।
নতুন ধানের ঘ্রাণে
ধানের গন্ধ দোলা দেয়
কৃষাণ-কৃষাণীর প্রাণে।
মনে দেয় দোলা
অতিথি পাখির মিষ্টি গুঞ্জন
যায় না কভু ভোলা।
শীতকাল এলে
ঘরে ঘরে পিঠার মেলা
মজা গালে দিলে।
..................................................
হামীম রায়হান
রোদ পোহাতে ভালা,
ঝুলে হীরের মালা।
শালিক জোড়া উঁমের খোঁজে
উড়ে এ ডাল ও ডাল,
দিঘীর বুকে শাপলা জুড়ে
জলপিপিদের শোর,
নামে শীতের ভোর।
..................................................
ডা. এম এ ওহাব লাবিব
শীত মানে মাঘ মাসের ঠান্ডায় অযু, ফজর।
শীত মানে হাড় কাঁপানো, সর্দি, কাশির বাও।
শীত মানে সবজি আর রঙিন ফুলের হাসি ।
শীত মানে ওয়াজ মাহফিল আর বস্ত্রমেলা।
শীত মানে নতুন ক্লাসের নতুন বইয়ের পৃষ্ঠা।
শীত মানে পদ্মপুকুরে ঠান্ডা বরফে গোসল।
শীত মানে জটলা বসে খড়ের আগুনে প্রহর।
শীত মানে ভ্রমরগুলো ফুলবাগানে ছোটে।
শীত মানে কম্বলহীন পথশিশুদের নির্ঘুম রাত।
শীত মানে ঘরে ঘরে বিলের নানা মাছের জাত।
শীত মানে ভাপা, পুলি, তেলপিঠা আর মেহমান।
..................................................
গাজী আরিফ মান্নান
চৌদিকে বাড়তে থাকে ঠান্ডা হাওয়ার স্রোত,
আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে নবান্নেরই মেলায়।
শিশু-কিশোর-বৃদ্ধরা খায় মজা করে,
হাঁড়কাপুনি শীতে পরে গরম কাপড় ভারী,
শৈতপ্রবাহ শুরু হলে কাজ-কর্ম যায় থেমে।
খাতার পাতায় যত্ন করে রঙিন ছবি আঁকি,
শীত মৌসুমে ফুটে উঠে সোনার বাংলাদেশ।
..................................................
ইউনুস আহমেদ
চারদিক আজ গেছে ঢেকে হিম কুয়াশার চাদরে।
কুয়াশাতে যায় না দেখা একটু দূরের বসতবাড়ি
শিশির কণা দূর্বা ঘাসে মুক্ত ছড়ায় রাশি রাশি।
শীতল হাওয়ায় ফুলের সুবাস জাগায় আশা মনেতে।
সর্ষে ফুলের রঙ বাহারে শালিক টিয়ে ওঠল হেসে
এমনিভাবে কাটুক না দিন ফুল পাখিকে ভালবেসে।
বলল হেসে দুষ্টগুলি, হোক না মজা কার কী তাতে?
এমনিভাবে শীতের হাওয়া দ্বারে দ্বারে কড়া নাড়ে।
..................................................
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
পৌষ ও মাঘ দু’মাস মিলেই শীতকাল।
এই এক বাংলার অনন্য ঋতু।।
কুয়াশায় আচ্ছন্ন শীতের সকাল
ঘুম ভাঙ্গলেও বিছানা ছেড়ে উঠতে চায়না মন!
যেনো এক অন্য অনুভূতি।
মাঠেঘাটে তাকালেই চোখে পড়ে
খেজুরগাছের আগায় ঝুলছে রসের হাড়ি।
সারি বেঁধে উড়ে চলা অতিথি পাখির দল।
অসহায় মানুষদের হাসি ফুঠাতে
সমাজকর্মীরা ছু্ঁটে বেড়ায় শীতবস্ত্র নিয়ে।
..................................................
আফজাল সুয়েব
জমিয়ে খাই মোরা মহা খায়েশে।
কোয়াশায় সব ঢাকা
পথঘাট সব ফাকা
আগুন পোহাই বসে গভীর আয়েশে।
সোয়েটার ও চাদর তাই আঁকড়ে ধরি।
মিঠে মিঠে রোদ উঠে
ভেসলিন দিই ঠোঁটে
শীতের সকাল যেন সাদা এক পরী।
..................................................
সৈয়দ ময়নুল কবরী
গীত ধরেছে পাখি,
রৌদ দিয়েছে ঢাকি।
থরথরে কাপে হিয়া
শীত ধরেছে পাখির ডানায়
ডাক ভুলেছে টিয়া।
হাঁক তুলেছে রাগে,
কাঁদছে বাঘের মাসি,
তার গলেতে ফাঁসি।
নাচছে বানর গাছে,
ডাকছে ময়না কাছে।
..................................................
মুহাঃ রাকিবুল ইসলাম
পথের বাঁকে মরছে কেহ
পথ ও শিশুর দল
কেউবা কাঁদে বাঁচার আশা
বোবা তাদের মুখের ভাষা
বুকে অথৈ জল।
কান্না করে গভীর রাতে
কষ্টে ভাসে বুক
নেই ঠিকানা তাদের জানি
এসো তাদের বুকে টানি
দেও বিলিয়ে সুখ।
আসল কি তার হেতু মর্ম
শ্রেষ্ঠ মহিমায়
আপন সুখে সুখ বিলিয়ে
দুঃখীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
আয়রে ছুটে আয়।
সাহায্যের ঐ হাতটি বাড়াও
করি আহ্বান
ধনী গরীব বিভেদ যতো
বুকে জমা দুঃখের ক্ষত
হোকনা অবসান।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Facebook: facebook.com/samoiki
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments