সুশান্ত হালদার’র কবিতা
আকাঙ্ক্ষা
তোমাকে নিয়ে আর ভাবি
না হেমলতা
যেমন একদিন ভেবেছিলাম বাটার মাখানো তন্দুর আর মাংসের রেজালা
বন্য শুকোরের মতো ঘোঁৎ ঘোঁৎ করে জানিয়েছিলাম শূন্য গহ্বরের মতো পাঁকিয়ে ওঠছে জঠর জ্বালা(হতে পারে যৌনতা)
কতটা উৎসুক হলে একজন মানুষ সেদিন চিবিয়ে খেয়েছিল নিয়নের বাতি সমেত পৈশাচিক অট্টালিকা
এখন ক্ষুধা নেই, আছে
প্রকৃতির প্রগলভতা
আছে হাসি মাখানো জোছনার ইশারা
আছে দূর নীলিমার পড়ন্ত বিকেলের আশঙ্কা
আছে নদীর শরীরে কামুক বাতাসের জলজ ভালোবাসা
আছে কোঁচকানো ঠোঁটে নিভে যাওয়া তারার বিহ্বলতা
আছে আগুনের আঁচে বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্ক্ষা
আছে মৃত মানুষের না ফেরা দেশের রহস্যময়তা
আছে সাকারের মাঝে নিরাকারের দুর্ভেদ্যতা
আছে, তবুও আছে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব ভেদ হানাহানির নির্লজ্জতা
বেঁচে থাকার মানে কি?
ভাবিনি আগে হেমলতা
কার্তিকের এই পড়ন্ত বিকেলে কখন ঘিরে ধরবে রাত্রির কুয়াশা
নাকি গুটিগুটি পায়ে মৃত্যু এসে নিয়ে যাবে প্রাণ সহসা,
হেমলতা ...
ভুলে ভরা জীবন তবুও ছাড়ে না বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা!
..................................................
ক্ষুধার্ত
ক্ষুধার্ত বলে ভেবো না
যুদ্ধ চাই
যে যুদ্ধে রক্তাক্ত হবে আমার প্রেমিকা,
জানি,কুক্ষিগত করেছো ক্ষমতা
প্রতিটি গোডাউন আজ গোলাবারুদে ঠাঁসা
যেখানে থাকার কথা ন্যায্য অধিকার
সেখানে বৈষম্যের গড়েছো পাহাড়
যেখানে থাকার কথা অসাম্প্রদায়িক চেতনা
সেখানে ধর্মকে করেছো হাতিয়ার
যেখানে থাকার কথা ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে অটুট ভালোবাসা
সেখানে হিংসার আবরণে লুকিয়ে রেখেছো শান্তির পতাকা
ক্ষুধার্ত বলে ভেবো না
যুদ্ধ চাই
যে যুদ্ধে রক্তাক্ত হবে আমার প্রেমিকা,
যদি বলো ছেড়ে দেবো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইল
যদি বলো অন্ধকারেই হেঁটে যাবো মাইলের পর মাইল
যদি বলো ধামাচাপা দিয়ে দেবো ষড়যন্ত্রের ফাইল
যদি বলো মহাসমুদ্রে ভাসাবো ডিঙা একাই
যদি বলো স্বপ্নের ঘুড়ির ছিঁড়ে দেবো নাটাই
তবুও যুদ্ধের মহড়ায় নেবো না বাঁচার জন্য ঠাঁই
শুধু অক্ষত গোলাপে ভালোবাসার চুম্বন এঁকে দিতে চাই!
..................................................
খোয়া
তোমাকে ভালোবাসতে হবে,
এমন নয়
যদি পেয়ে যাই ধূসর গোধূলির কুয়াশাঘেরা রাত
যদি পেয়ে যাই রাত্রি শেষে রৌদ্রজ্জ্বল প্রভাত
যদি অমিমাংসিত ভূখণ্ডে পেয়ে যাই মুক্ত বাতাসের স্বাদ
যদি কাঁটাতারে ঝুলে না থাকে আর ফ্যালানিদের লাশ
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা আমার
ভালোবাসার রকমফেরে আমিও ছিলাম তোমার
তোমাকে ভালোবাসতে হবে,
এমন নয়
যদি পাথরের বুকে পেয়ে যাই ঝরনার আত্মবিলাপ
যদি জলমগ্ন পৃথিবী হঠাৎ গুমরে ওঠে করে ভয়ার্ত চিৎকার
যদি আগুনের তাপে ঝলসে যায় বেণীবন্ধ পাঁজর আবার
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা আমার
সবুজে ঘেরা পাথরের বুকে আমিও ছিলাম রূপান্তরিত পাহাড়
তোমাকে ভালোবাসতে হবে,
এমন নয়
যদি কাপ্তাই হ্রদে পেয়ে যাই দূর নীলিমার অবকাশ
যদি ঝরা ফুলের গন্ধে বিভোর হয় রাত্রি জাগা নারীর অবসাদ
যদি অতৃপ্ত সঙ্গমে উত্তাল সাগর এনে দেয় ঝড়ের পূর্বাভাস
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা আমার
রাত্রির বুকে সূর্যের খোয়ায় টেনেছি জীবনের উপসংহার!
..................................................
মরুর
বুকে লখিন্দরের বেহুলা
কাঁঠালিচাঁপায় এখন আর
দেখি না ভোরের কুয়াশা
ডাহুক কী ভুলে গেছে ডাহুকীর ভালোবাসা
নাকি নদীর জলে ভুলে গেছে সাঁতার চাপিলা
রঞ্জনা
তুমিও কী ভুলে যাবে ছাপার অক্ষরে কবিতার বর্ণমালা
যেখানে গচ্ছিত রেখেছিল অচেনা পথিক ভালোবাসার সঞ্চিতা
নাকি প্রোথিত বীজে ধৈর্যচ্যুৎ কৃষক বুনে যাবে শুধু অপেক্ষার আলপনা
মৃত মানুষের মতো আমিও
একদিন খুঁজে নেবো পিরামিড
ধুলোবালি আর আঁধারে ঘেরা ঘরে যদি না জ্বলে প্রদীপ
ভ্রমন পিয়াসী যদি মনে করে এ সমাধি সত্যিই প্রাগৈতিহাসিক
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা
মরুর বুকে এখনো আমি খুঁজেই চলেছি লখিন্দরের বেহুলা!
..................................................
বসন্ত
ছাড়াই ফুটেছে মালতী
বিষন্ন সন্ধ্যায় যখন
এলে তখন চাঁদ ছিল জোছনাময়
প্রকৃতি ছিল নিরব আর জোনাকি স্বপ্রতিভ জ্বলছিল,
ঝিঁঝিঁর একটানা শব্দে উদাসী মন ভুলে গেছে যন্ত্রণা কাতর শহর
মরুময় প্রান্তর,পঁচাগলা মানুষের কৃত্রিমতায় ভরা ইটের পাঁজর
অথচ নষ্ট মানুষের ভীড়ে এখনো আমি কবিতায় ঈশ্বর খুঁজি
ধ্যানমগ্ন ঋষি যদি করে
ঈশ্বরের আহাজারি
শান্ত জলে মৎস্য যদি বাধাহীন চলে নিরবধি
প্রেমের আলিঙ্গনে যদি নূয়ে পড়ে শান্তশিষ্ট প্রকৃতি
তবে কেনো ভালোবেসে ফোটাতে পারবো না বসন্ত ছাড়াই মালতী?
বিষন্ন সন্ধ্যায় যখন
এলে তখন ভুলে গেছি হৃদয়ের রক্তক্ষরণ
ভুলে গেছি ঝর্ণার জলে বৃষ্টির সহমরণ
ভুলে গেছি পাথরের গায়ে কুঠারের আস্ফালন
ভুলে গেছি দমকা বাতাসে ঝড়ের আচানক গর্জন
শুধু ভুলিনি........
জোছনার কোলে ভালোবেসে দিয়েছিলে যে চুম্বন!
..................................................
তিয়াস
আবার যদি দেখা হয় হেমন্তের
কোনো ভোরে
সেদিনের মতো কুয়াশার চাদরে রাখবে কী হাত দূর্বার 'পরে
নাকি উত্তরের বাতাসে উড়াবে চুল বাউলের মতো করে
শিউলি ঝরা সকাল না হয় দেবো উপহার...
শূন্য বুকে পাবে ফাগুন বসন্ত-ঘেরা নিস্তব্ধ রাত্রির সমাহার
থাকবে না কোলাহল,হুইশেল,কড়া
পাহারায় ট্রাফিক সিগন্যাল
সবুজের 'পরে হেঁটে যাবে দূর, বহুদূর...
যেথায় দেবদারু আর ঝাউ স্বাক্ষী ছিল প্রথম মৃত্যু ক্ষণ
খোলা কুন্তলে রেখে হাত, চিবুকে ছেড়েছি গরম নিশ্বাস
বুকে বুক, অধরে ওষ্ঠ যেনো কলাপাতায় রেখেছে পাণ্ডুলিপি জীবনানন্দ দাস
অবগাহনে যেমন মনে করে সন্ন্যাসী নারী-সঙ্গমের প্রভাব
আবার যদি দেখা হয় ঋতু
বৈচিত্রের কোনো ছোঁয়ায়
ঘুঙুরের মতো শব্দ করে হাঁটিও পথ নির্দ্বিধায়
নির্লজ্জ বাতাস শান্ত জলে করে যদি উল্লাস
আনারের বুকে মুখ ঘষে দ্রাক্ষারসে মিটাবো তিয়াস!
..................................................
ফাঁদ
রূপসী রাত করেছে অভিমান
অনুরাগে তবুও রেখেছে বুকে হাত
কম্পিত ঠোঁটে জমানো সোহাগ
কাজল টানা চোখে দস্যুতা করেছে ভর
স্পন্দিত বুকে তবুও মিলনের অপূর্ণ সাধ
রাগে অনুরাগে ডুবে গেছে লজ্জিত চাঁদ
নক্ষত্র যদি বুঝে যায়
নির্জনতার অভিলাষ
ঝরা ফুলে অরণ্য করে শুধু হা-হুতাশ
ডুবে যাওয়া চাঁদ যদি ফিরে না আসে আর
বিরহের যাতনায় সূর্যের বুকেই বাসা বাঁধে ধূমায়িত রাত,
রাগে অনুরাগে তবুও নিয়েছি বুকে তোলে মরনেরই ফাঁদ!
..................................................
দগ্ধিভূত
অনল
যে প্রেম দিয়েছি উজার
করে নিজেকে নিঃশেষ করে
তা কী যাবে ভুলে
নাকি সময়ের ঘূর্ণিপাকে নক্ষত্র হয়ে জ্বলে ওঠবে আঁধারের বুকে
যে প্রদীপ শিখাহীন, পুড়ে পুড়ে নিঃশেষ
সেও কী যাবে ভুলে
নাকি সময় নিরূপণে জ্বলে ওঠবে ধূপের গন্ধে আরতি হয়ে
যে ভূমি মিটিয়েছে তৃষ্ণা মেঘের জলে
সেও কী যাবে ভুলে
নাকি সোঁদামাটির গন্ধ হয়ে বেঁচে থাকবে ফসলের মাঠে
যে পাখি গেয়ে গান রাত্রি নিশিথে শুনিয়েছে ভোরের কলতান
তাকেও কী যাবে ভুলে
নাকি স্মৃতি মন্থনে রক্তিম হবে কোলাহলপূর্ণ পৃথিবী
যে প্রেম দিয়েছি উজার
করে নিজেকে নিঃশেষ করে
তা কী যাবে ভুলে
নাকি ফাগুন শেষে ফোটাবে ফুল ঝরা পাতার সমাধিস্থলে
যদি দেখো নির্বাক পাথর চেয়ে আছে দৃষ্টিহীন নীলাকাশ পানে
তবে বুঝিবে অসীম আকাশও পুড়েছিল দগ্ধিভূত অনলে!
..................................................
নদী
ও নারীর ভালোবাসা
নদীর কষ্টে কাঁদিনি আমরা
অথচ মৌন বিকেল ছড়িয়েছে উৎকণ্ঠা
রাত্রির শুভাগমনে যারা কুড়িয়েছিল ঘটি বাটি থালা
তারাই শ্যাম্পেন ভরা গ্লাসে নদীকে করেছে বারোয়ারির বৈঠকখানা
কুমারী প্রত্যুষ আজ ভুলে গেছে রঙের বাহারি খেলা
নারীর কষ্টে কাঁদিনি
আমরা
অথচ বিষন্ন সন্ধ্যায় পরখ করেছি কতটা হারিয়েছে রঙ পলেস্তারা
টিকটিকির সঙ্গমে এখনো ডিগবাজি খায় সর্বভুক আরশোলা
সঙ্গমে নারী পুরুষকে দিয়েছে অবগাহনে নদীর প্রত্যাশা
নদী যদি ভাঙে পাড়,বলেছি
যৌবনবতী নারীর এসেছে জোয়ার
অথচ চর পড়া বুকে নারীর মতো নদীও করে শুধু হাহাকার
নারীর মতো নদীও নিজেকে হারিয়েছে সঙ্গমে বহুবার!
..................................................
মিথিলা
যদি যেতে চাও, যেতে পারো
মিথিলা
আঁধার রাতে যেটুকু দিয়েছি জোছনা
ফিরে চাইবো না শীতের রাতে মাঘী পূর্ণিমা
বরফের সাথে করে নেবো আত্মীয়তা
আসলে তুমি জানতেই না....
বরফেও থাকে আগুন,ছিন্নমূলে যেমন ফাগুন
তেমনি ছিলে তুমি রক্ত কণিকারও দ্বিগুণ
যদি যেতে চাও,যেতে পারো
মিথিলা
যে হাত ছুঁয়েছিল একদা পাহাড়চূড়া
উপচে পড়া ঝরনায় যে পাথর পেতেছিল বুক অবলীলায়
তাকেও চাইবো না, যে পাথর ভেঙে ভরাট হয়েছে দিঘি নালা
যদি যেতে চাও, যেতে পারো
মিথিলা
ভিক্ষার থালায় এখন জমিয়েছি ভালোবাসা
অগণিত মানুষে ভরে গেছে কিংকর্তব্যবিমূঢ় ঢাকা
যেটুকু ঋণ, তাও দেবে শোধে পরিত্যক্ত দেয়ালের মরিচা
ফিরে চাইবো না, যেটুকু দিয়েছি স্নানঘরে প্রেমেসিক্ত ঝরনার ধারা
যদি যেতে চাও, যেতে পারো
মিথিলা
নিশ্বাসে এখনো ঈশ্বরী তুমি আমার
তাকেও চাইবো না, যে বাতাসে দুলেছিল ফুল ফল বৃক্ষ দু'বার
যদি যেতে চাও, যেতে পারো মিথিলা
পশ্চাতে ফেলে স্মৃতির অজস্র পাহাড়
যদি যেতে যাও,যেতে পারো
মিথিলা
যে ঠোঁটে চুম্বন রেখেছিল আলিঙ্গনে বহুবার
শিৎকারে যে বাতাস ওঠেছিল কেঁপে বারবার
তাকেও রাখবো স্মরণ বুকের ক্ষতে আজন্মকাল
যেতে যদি চাও, যেতে পারো মিথিলা
ভুল করে হলেও ভুলে যেও পথভোলা পথিকের নাম ধাম ঠিকানা!
যেমন একদিন ভেবেছিলাম বাটার মাখানো তন্দুর আর মাংসের রেজালা
বন্য শুকোরের মতো ঘোঁৎ ঘোঁৎ করে জানিয়েছিলাম শূন্য গহ্বরের মতো পাঁকিয়ে ওঠছে জঠর জ্বালা(হতে পারে যৌনতা)
কতটা উৎসুক হলে একজন মানুষ সেদিন চিবিয়ে খেয়েছিল নিয়নের বাতি সমেত পৈশাচিক অট্টালিকা
আছে হাসি মাখানো জোছনার ইশারা
আছে দূর নীলিমার পড়ন্ত বিকেলের আশঙ্কা
আছে নদীর শরীরে কামুক বাতাসের জলজ ভালোবাসা
আছে কোঁচকানো ঠোঁটে নিভে যাওয়া তারার বিহ্বলতা
আছে আগুনের আঁচে বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্ক্ষা
আছে মৃত মানুষের না ফেরা দেশের রহস্যময়তা
আছে সাকারের মাঝে নিরাকারের দুর্ভেদ্যতা
আছে, তবুও আছে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব ভেদ হানাহানির নির্লজ্জতা
কার্তিকের এই পড়ন্ত বিকেলে কখন ঘিরে ধরবে রাত্রির কুয়াশা
নাকি গুটিগুটি পায়ে মৃত্যু এসে নিয়ে যাবে প্রাণ সহসা,
হেমলতা ...
ভুলে ভরা জীবন তবুও ছাড়ে না বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা!
..................................................
যে যুদ্ধে রক্তাক্ত হবে আমার প্রেমিকা,
জানি,কুক্ষিগত করেছো ক্ষমতা
প্রতিটি গোডাউন আজ গোলাবারুদে ঠাঁসা
যেখানে থাকার কথা ন্যায্য অধিকার
সেখানে বৈষম্যের গড়েছো পাহাড়
যেখানে থাকার কথা অসাম্প্রদায়িক চেতনা
সেখানে ধর্মকে করেছো হাতিয়ার
যেখানে থাকার কথা ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে অটুট ভালোবাসা
সেখানে হিংসার আবরণে লুকিয়ে রেখেছো শান্তির পতাকা
যে যুদ্ধে রক্তাক্ত হবে আমার প্রেমিকা,
যদি বলো ছেড়ে দেবো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইল
যদি বলো অন্ধকারেই হেঁটে যাবো মাইলের পর মাইল
যদি বলো ধামাচাপা দিয়ে দেবো ষড়যন্ত্রের ফাইল
যদি বলো মহাসমুদ্রে ভাসাবো ডিঙা একাই
যদি বলো স্বপ্নের ঘুড়ির ছিঁড়ে দেবো নাটাই
তবুও যুদ্ধের মহড়ায় নেবো না বাঁচার জন্য ঠাঁই
শুধু অক্ষত গোলাপে ভালোবাসার চুম্বন এঁকে দিতে চাই!
..................................................
যদি পেয়ে যাই ধূসর গোধূলির কুয়াশাঘেরা রাত
যদি পেয়ে যাই রাত্রি শেষে রৌদ্রজ্জ্বল প্রভাত
যদি অমিমাংসিত ভূখণ্ডে পেয়ে যাই মুক্ত বাতাসের স্বাদ
যদি কাঁটাতারে ঝুলে না থাকে আর ফ্যালানিদের লাশ
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা আমার
ভালোবাসার রকমফেরে আমিও ছিলাম তোমার
যদি পাথরের বুকে পেয়ে যাই ঝরনার আত্মবিলাপ
যদি জলমগ্ন পৃথিবী হঠাৎ গুমরে ওঠে করে ভয়ার্ত চিৎকার
যদি আগুনের তাপে ঝলসে যায় বেণীবন্ধ পাঁজর আবার
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা আমার
সবুজে ঘেরা পাথরের বুকে আমিও ছিলাম রূপান্তরিত পাহাড়
যদি কাপ্তাই হ্রদে পেয়ে যাই দূর নীলিমার অবকাশ
যদি ঝরা ফুলের গন্ধে বিভোর হয় রাত্রি জাগা নারীর অবসাদ
যদি অতৃপ্ত সঙ্গমে উত্তাল সাগর এনে দেয় ঝড়ের পূর্বাভাস
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা আমার
রাত্রির বুকে সূর্যের খোয়ায় টেনেছি জীবনের উপসংহার!
..................................................
ডাহুক কী ভুলে গেছে ডাহুকীর ভালোবাসা
নাকি নদীর জলে ভুলে গেছে সাঁতার চাপিলা
তুমিও কী ভুলে যাবে ছাপার অক্ষরে কবিতার বর্ণমালা
যেখানে গচ্ছিত রেখেছিল অচেনা পথিক ভালোবাসার সঞ্চিতা
নাকি প্রোথিত বীজে ধৈর্যচ্যুৎ কৃষক বুনে যাবে শুধু অপেক্ষার আলপনা
ধুলোবালি আর আঁধারে ঘেরা ঘরে যদি না জ্বলে প্রদীপ
ভ্রমন পিয়াসী যদি মনে করে এ সমাধি সত্যিই প্রাগৈতিহাসিক
তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা
মরুর বুকে এখনো আমি খুঁজেই চলেছি লখিন্দরের বেহুলা!
..................................................
প্রকৃতি ছিল নিরব আর জোনাকি স্বপ্রতিভ জ্বলছিল,
ঝিঁঝিঁর একটানা শব্দে উদাসী মন ভুলে গেছে যন্ত্রণা কাতর শহর
মরুময় প্রান্তর,পঁচাগলা মানুষের কৃত্রিমতায় ভরা ইটের পাঁজর
অথচ নষ্ট মানুষের ভীড়ে এখনো আমি কবিতায় ঈশ্বর খুঁজি
শান্ত জলে মৎস্য যদি বাধাহীন চলে নিরবধি
প্রেমের আলিঙ্গনে যদি নূয়ে পড়ে শান্তশিষ্ট প্রকৃতি
তবে কেনো ভালোবেসে ফোটাতে পারবো না বসন্ত ছাড়াই মালতী?
ভুলে গেছি ঝর্ণার জলে বৃষ্টির সহমরণ
ভুলে গেছি পাথরের গায়ে কুঠারের আস্ফালন
ভুলে গেছি দমকা বাতাসে ঝড়ের আচানক গর্জন
শুধু ভুলিনি........
জোছনার কোলে ভালোবেসে দিয়েছিলে যে চুম্বন!
..................................................
সেদিনের মতো কুয়াশার চাদরে রাখবে কী হাত দূর্বার 'পরে
নাকি উত্তরের বাতাসে উড়াবে চুল বাউলের মতো করে
শিউলি ঝরা সকাল না হয় দেবো উপহার...
শূন্য বুকে পাবে ফাগুন বসন্ত-ঘেরা নিস্তব্ধ রাত্রির সমাহার
সবুজের 'পরে হেঁটে যাবে দূর, বহুদূর...
যেথায় দেবদারু আর ঝাউ স্বাক্ষী ছিল প্রথম মৃত্যু ক্ষণ
খোলা কুন্তলে রেখে হাত, চিবুকে ছেড়েছি গরম নিশ্বাস
বুকে বুক, অধরে ওষ্ঠ যেনো কলাপাতায় রেখেছে পাণ্ডুলিপি জীবনানন্দ দাস
অবগাহনে যেমন মনে করে সন্ন্যাসী নারী-সঙ্গমের প্রভাব
ঘুঙুরের মতো শব্দ করে হাঁটিও পথ নির্দ্বিধায়
নির্লজ্জ বাতাস শান্ত জলে করে যদি উল্লাস
আনারের বুকে মুখ ঘষে দ্রাক্ষারসে মিটাবো তিয়াস!
..................................................
অনুরাগে তবুও রেখেছে বুকে হাত
কম্পিত ঠোঁটে জমানো সোহাগ
কাজল টানা চোখে দস্যুতা করেছে ভর
স্পন্দিত বুকে তবুও মিলনের অপূর্ণ সাধ
রাগে অনুরাগে ডুবে গেছে লজ্জিত চাঁদ
ঝরা ফুলে অরণ্য করে শুধু হা-হুতাশ
ডুবে যাওয়া চাঁদ যদি ফিরে না আসে আর
বিরহের যাতনায় সূর্যের বুকেই বাসা বাঁধে ধূমায়িত রাত,
রাগে অনুরাগে তবুও নিয়েছি বুকে তোলে মরনেরই ফাঁদ!
..................................................
তা কী যাবে ভুলে
নাকি সময়ের ঘূর্ণিপাকে নক্ষত্র হয়ে জ্বলে ওঠবে আঁধারের বুকে
যে প্রদীপ শিখাহীন, পুড়ে পুড়ে নিঃশেষ
সেও কী যাবে ভুলে
নাকি সময় নিরূপণে জ্বলে ওঠবে ধূপের গন্ধে আরতি হয়ে
যে ভূমি মিটিয়েছে তৃষ্ণা মেঘের জলে
সেও কী যাবে ভুলে
নাকি সোঁদামাটির গন্ধ হয়ে বেঁচে থাকবে ফসলের মাঠে
যে পাখি গেয়ে গান রাত্রি নিশিথে শুনিয়েছে ভোরের কলতান
তাকেও কী যাবে ভুলে
নাকি স্মৃতি মন্থনে রক্তিম হবে কোলাহলপূর্ণ পৃথিবী
তা কী যাবে ভুলে
নাকি ফাগুন শেষে ফোটাবে ফুল ঝরা পাতার সমাধিস্থলে
যদি দেখো নির্বাক পাথর চেয়ে আছে দৃষ্টিহীন নীলাকাশ পানে
তবে বুঝিবে অসীম আকাশও পুড়েছিল দগ্ধিভূত অনলে!
..................................................
অথচ মৌন বিকেল ছড়িয়েছে উৎকণ্ঠা
রাত্রির শুভাগমনে যারা কুড়িয়েছিল ঘটি বাটি থালা
তারাই শ্যাম্পেন ভরা গ্লাসে নদীকে করেছে বারোয়ারির বৈঠকখানা
কুমারী প্রত্যুষ আজ ভুলে গেছে রঙের বাহারি খেলা
অথচ বিষন্ন সন্ধ্যায় পরখ করেছি কতটা হারিয়েছে রঙ পলেস্তারা
টিকটিকির সঙ্গমে এখনো ডিগবাজি খায় সর্বভুক আরশোলা
সঙ্গমে নারী পুরুষকে দিয়েছে অবগাহনে নদীর প্রত্যাশা
অথচ চর পড়া বুকে নারীর মতো নদীও করে শুধু হাহাকার
নারীর মতো নদীও নিজেকে হারিয়েছে সঙ্গমে বহুবার!
..................................................
আঁধার রাতে যেটুকু দিয়েছি জোছনা
ফিরে চাইবো না শীতের রাতে মাঘী পূর্ণিমা
বরফের সাথে করে নেবো আত্মীয়তা
আসলে তুমি জানতেই না....
বরফেও থাকে আগুন,ছিন্নমূলে যেমন ফাগুন
তেমনি ছিলে তুমি রক্ত কণিকারও দ্বিগুণ
যে হাত ছুঁয়েছিল একদা পাহাড়চূড়া
উপচে পড়া ঝরনায় যে পাথর পেতেছিল বুক অবলীলায়
তাকেও চাইবো না, যে পাথর ভেঙে ভরাট হয়েছে দিঘি নালা
ভিক্ষার থালায় এখন জমিয়েছি ভালোবাসা
অগণিত মানুষে ভরে গেছে কিংকর্তব্যবিমূঢ় ঢাকা
যেটুকু ঋণ, তাও দেবে শোধে পরিত্যক্ত দেয়ালের মরিচা
ফিরে চাইবো না, যেটুকু দিয়েছি স্নানঘরে প্রেমেসিক্ত ঝরনার ধারা
নিশ্বাসে এখনো ঈশ্বরী তুমি আমার
তাকেও চাইবো না, যে বাতাসে দুলেছিল ফুল ফল বৃক্ষ দু'বার
যদি যেতে চাও, যেতে পারো মিথিলা
পশ্চাতে ফেলে স্মৃতির অজস্র পাহাড়
যে ঠোঁটে চুম্বন রেখেছিল আলিঙ্গনে বহুবার
শিৎকারে যে বাতাস ওঠেছিল কেঁপে বারবার
তাকেও রাখবো স্মরণ বুকের ক্ষতে আজন্মকাল
যেতে যদি চাও, যেতে পারো মিথিলা
ভুল করে হলেও ভুলে যেও পথভোলা পথিকের নাম ধাম ঠিকানা!
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Facebook: facebook.com/samoiki
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments