রবিউল মাশরাফি’র ছড়া
ক্রীতদাস
সুখে দুখে তাদের পাশে থাকা তোমার কাজ।
প্রজার ব্যথায় দেশের ব্যথায় কাঁপতে হবে বুক
তাদের মুখে ফুটলে হাসি তাতেই তোমার সুখ।
কিন্তু তুমি বসত গড়ো উপরতলার পর
তুমি রাজা আমরা প্রজা দুই মেরুতে ঘর।
তবু তুমি আমায় ভাবো তোমার ক্রীতদাস!
ভোটের শেষে প্রজার সাথে একী প্রহসন!
লোকে বলে তোমরা নাকি তিত বেহায়ার দল।
দোহাই লাগে মানুষ হইও সামনে বিপদ ঢেউ
চেয়ারখানি উল্টে গেলে বাঁচাবেনা কেউ।
২৩.০৮.২০১৮
……………………………………………
রাতের আকাশে তারার মাঝেও তোকে করি খোঁজ
ব্যথার চিঠিতে জানালাম তোকে শেষ আবেদন
মৃত্যুর আগে দেখা দে আমায় খুব পোড়ে মন।
১৯/০৯/২০১৮
……………………………………………
শরম নাকি থাকতে নেই
লাত্থি গুতো বাঁশ ডলাটা
মোটেও মনে রাখতে নেই।
সেটাও নাকি চাটতে হয়
বড়লোকের পূত্র তবু
চাঁদার পিছু হাটতে হয়।
জীবন থেকে ছাড়তে নেই
ঝগড়াঝাটি দাঙ্গাতেও
কারোর কাছে হারতে নেই।
গুণ্ডা বলে, লজ্জা নেই
ওদের নাকি মাথায় ঘিলু
হাড্ডিতেও মজ্জা নেই।
আরতো বড়ো কিচ্ছু নেই
স্বার্থখাতে নিঠুর ওরা
ওদের মতো বিচ্ছু নেই।
কাজটা নাকি রাজনীতির
পবিত্র সে রাজার নীতি
সেটাও হলো আজ ভীতির।
আমার বড়ো ইচ্ছে হয়
কিন্তু ওরা রাত বিরাতে
চাদাবাজির দিচ্ছে ভয়।
বুকের পরে হাত রাখুক
নীতির রাজা হতে হলে
রাজনীতিরও জাত রাখুক।
তবুও যদি মানুষ হয়
প্রমাণ ক'রে দেখিয়ে দিক
ওদের কথা ফানুস নয়।
বলতে পারেন? জানতে চাই
তাদের বুকে বুক মিশিয়ে
একটু শুধু কানতে চাই!
……………………………………………
বাবার সঙ্গে রোজ
গলায় গলায় মিশে যেতাম
নিতাম বাবার খোঁজ।
দেখে বাবার মুখ
বাবা আমার ফুলে হতেন
খুশীতে তিন বুক।
কী-যে বাবার সুখ!
দোয়ারই সিন্দুক।
বাবার থেকে দূর
বাবার স্মৃতি বুকের মাঝে
বাজায় করুণ সুর।
বাবা আমার সব
তার উপরে শুধুই রাসূল সা:
বাবার স্নেহের দাম
বেচে থাকলে এখন আরো
আদরে রাখতাম।
রক্তঝরা দান
সেই বাবারা জীবদ্দশায়
পায় যেন সম্মান।
০৮.০১.২০১৭।
……………………………………………
প্রজাপতি নাচ আছে দেখে নারে কেউ
আয় আয় প্রজাপতি আয় তোরে ছুঁই
ডানা ভরা এতো রঙ কোথা পেলি তুই?
শিং দু'টি ঠিক যেন সরু বেণি চুল
ছাপা শাড়ি প'রে তুই নেচে নেচে যাস
কী জানি কী অজানায় আমাকে পুড়াস।
ভাই বোনে যোগ দিতো খুশির মেলায়
সারাদিন কেটে যেতো ক'রে হৈ চৈ
আহা! সেই দিনগুলি আজ গেলো কই?
মানুষের কানে কানে এই কথা কোস
মিলেমিশে থাকে যারা, তারা সুখী ভাই
ছেঁড়া ছেঁড়া জীবনের কোনো দাম নাই
দুনিয়ার সকলেই মিলেমিশে থাক
মানুষের সব ব্যথা সুদূরে পালাক।
……………………………………………
সেই দেশে আজ বলতে ভয়ে পারিনাকো কথা।
কেউ বলেনা কোনও কথা বিপদ হবে জেনে।
আর কতদিন থাকতে হবে করুণ চোখে চেয়ে!
যে তারে দেয় বেশী পূজা তারই কথা শোনে।
ইচ্ছে হলে তারাই পারে জ্বালতে দেশে আলো।
এদেশ কবে সাদা হবে? হবে পূন্য ভূমি?
দেইনা কাজে কোনো ফাঁকি মিথ্যে কথার ছলে।
পড়ার সময় পড়তে বসি খেলার সময় খেলি
পাখির ডাকে খুব সকালে চোখের পাতা মেলি।
বুকের ভিতর জ্বলে আমার দেশপ্রেমের আলো।
ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার নয় টিচার হবো আমি
বাবা বলেন মানুষ হবি সবার চেয়ে দামি।
……………………………………………
মুসলমানরা বোম আগুনে জ্বলছে
মারছে ওরা মারছে দিবারাত্র
জঙ্গি সেতো; উছিলাই মাত্র।
বৃটেন এবং তাদের নানা ব্রান্চও
বিশ্ব থেকে মুসলমানের বংশ
পাল্লা দিয়ে করছে ওরা ধ্বংস।
নাফ নদীতে রোহিঙ্গা লাশ ভাসলো
শিশুর বুকে বর্গী সেনার লম্ফ
মানবতায় কঠিন ভুমিকম্প!
দু'দিন পরে শেষ হবে তোর দর্প
একটু করিস নিজের সঙ্গে যুদ্ধ
আগুন জলে ডুব দিয়ে হোস শুদ্ধ।
তাহলে কী ভণ্ডামি ওম্ শান্তি!
……………………………………………
তাঁরাই থাকে সুখের পাশে
বিফলতায় হতাশ হলে
পড়বে জীবন আঁধার কোলে।
স্বপ্ন জাগার গল্প বেচো
গল্প যদি হয় গোছালো
জাগায় মনে আশার আলো।
তোমার ছোট্ট হৃদয় কোনে
দেখবে সেটা উঠবে জেগে
সফলতার তুমুল বেগে।
চেষ্টা ক'রে নাও এগিয়ে
সোনার হরিণ পাবে দেখো
এই কথাটি মনে রেখো।
ভাগ্যদুয়ার দ্রুত খোলে
আল্লাহ্ বলেন চেষ্টা করো
সত্যপথে জীবন গড়ো।
১৪.০৪.২০১৮
……………………………………………
মুখ করোনা কালো
বিবেক জাগার কাজ ক'রেছি
বলবে তুমি ভালো।
কাজের মেয়েটাকে
আমার মতো সেও যেন
আনন্দেতে থাকে।
জমকালো এক সাজে
আজ থেকে আর নেই ভেদাভেদ
ওর ও আমার মাঝে।
মাঝে মধ্যে দিও
আমার জন্যে কিনলে কিছু
ওর খবরও নিও।
মন খুশীতে হাসে
ওর বাবা-মা ঠিক তেমনই
ওকে ভালোবাসে।
আমার দিকে চেয়ে
কেমন হতো আমি যদি
হতাম কাজের মেয়ে!
……………………………………………
অন্ধ তারা ভীষণরকম হচ্ছে বিপথগামী।
জ্ঞানের অতি জ্ঞানপাপী নিজকে জ্ঞানী ভাবে
ভাবটা এমন দিনগুলো তার এমনি করেই যাবে।
নয়রে জ্ঞানী মূর্খ তারা উল্টো পথে চলে
নইলে কি আর ধর্ম নিয়ে ভ্রান্ত কথা বলে!
সাত আট মাইল হেটেই যেতাম
দশ গেরামের খাদক ছিলাম
সাহস ক'রে সামনে দাঁড়ায়
এমন মানুষ কেউ ছিলোনা
আমি ছিলাম সিংহতেজী
বলতো সবাই লোহার শরীর
বাঘ পালাতো আমার ভয়ে
শিয়াল হয়ে গহীন বনে
আমার তখন কর্ম ছিলো
পাড়াপড়শি সকল মানুষ
শ্রদ্ধাঁভরে সালাম দিতো।
হাটতে গেলেই একটু জিরোই
আর পারিনা আগের মতো!
অঙ্গসকল ভঙ্গ এখন
পা দু'টো ঠিক কঞ্চি যেমন
আর পারেনা রাখতে ধ'রে
হাড্ডিসার এই শরীরটাকে।
হাঁটুর জোরও ক'মে গেছে
স্মৃতি ভীষণ লোপ পেয়েছে
চোখ দু'টোতে ঝাপসা দেখি
একটু হাওয়া লাগলে গায়ে
চমকে উঠি! ঝড় এলো কী!
পাহাড় ভাঙার শব্দ শুনি।
আজ আসেনা আমার বাড়ি
চলার পথে ফুল ছড়াতো
যে লোকেরা ভালোবেসে
আজ দেখিনা তাদের ছায়া!
ফুলগুলো কী চুপসে গেছে!
মনটা এখন এতোই ভীত
ইদুর দেখে পালাই দূরে
অসহায়ে জীবন কাটে
বৃদ্ধকাছে কেউ আসেনা
বৃদ্ধরা কী দেশের বোঝা?
সন্তানেরা অনেক দূরে
একলা থাকার কীযে ব্যথা
আমার মতো কেউ বোঝেনা
আমার মতো কেউ বোঝোনা।
সঞ্চিত ধন নেই কিছুই
দুই হাতে সব উড়িয়েছি
আজ মনে হয় জীবনশেষে
শরীর এবং টাকার মূল্য
বৃদ্ধ বোঝে সবচে' বেশি....
কষ্টটা খুব টাচি!
কষ্ট নিয়েই বাঁচি।
মাথায় বসুক চেপে
মৃত্যুর চেয়ে সেতো বেশী নয়
পারো যদি দেখো মেপে!
দুখ চলে যায় দূরে
কষ্টেরা ভয়ে বেহুঁশে পালায়
তুলোর মতোন উড়ে।
কষ্টের মুখোমুখি
হাজারো দুঃখ পায়ে দ'লে বলে
আমরা জগতে সুখী।
২১.০১.২০১৮
……………………………………………
গায় লাগেনি কিছু
পাঁচটা পাকায় ছুটি আমি
মিন্দি পাতার পিছু
দশটা পাকায় মাথা যেন
একটু হলো নিচু।
কষ্ট পেলাম মনে
আধা পাকায় আরও বেশি
পড়ছি আলোড়নে
কলপ দেয়ার তাগিদ দিলো
বউ ও বন্ধুগনে।
সত্য দিলাম ঢেকে
মুখের ভাঁজও মুছে দিলাম
মেকআপের রঙ মেখে
তবু বয়স পড়লো ধরা
হাতের আঙুল দেখে!
যতই ছড়াক আলো
চোখ দেখে তার যায়গো বুঝা,
ভিতর বাহির স্বচ্ছ যাদের
হয়তো তারা ভালো।
……………………………………………
অথচ তার নিজ দেশেই আকাশ ছোঁয়া দাম
কোথায় পাবো বড় ইলিশ বলতে পারেন ভাই?
গরম ভাতে ইলিশ খেতাম আহারে তার ঘ্রাণ!
তাইতো আমি রাজার কাছে আর্জি করি পেশ
জাটকা ধরে করছে যারা দেশের সর্বনাশ
বলুন রাজা; দেবেন বলুন, তাদের গলায় ফাস?
……………………………………………
Rabiul Mashrafi
give you mental peace,
And morally you will be
more and more rich.
……………………………………………
সময় ফুরালে আধাঁরে লুটায় প্রায়শ্চিত্ত মানি
দুধের মাছিরা পায়ের উপরে সম্মান ঢালে হেসে
বুঝে নিতে হয় তোমাকে সেনয় চেয়ারকে ভালোবেসে
ঘুঙুরের ব্যথা চাপা প'ড়ে থাকে দুই কদমের তলে
প্রজার কষ্ট চিরকাল শুধু আগুন হয়েই জ্বলে।
১৯.০৮.২০১৮
……………………………………………
শক্তি বড়ই ঠোঁটে
নইলে কী আর ঠোঁটের ঘাঁয়ে
বৃক্ষ কেঁপে ওঠে!
থাকে গাছের খোড়লে
তাকে দেখে শিখতো যদি
এ সমাজের মোড়লে!
পর্দা ফাঁকে হেসে ওঠে বর ও বধূর চেহারা।
পালকি দেখে কারসে কথা পড়লো মনে আহারে
কিশোর স্মৃতি বুকে নিয়ে ভাবছি বসে তাহারে।
ঘাসচাদরে বসে যেতাম পাতার বাঁশী বাজিয়ে।
ভাবিনিকো সেসব স্মৃতি এমনি ক'রে পোড়াবে!
মিথ্যে করে বউ সাজাতাম মধুর কিশোর বেলাতে।
সেই কিশোরী পালকি চড়ে কোথায় গেলো হারিয়ে
তার আশাতে আজও আমি হাত রেখেছি বাড়িয়ে।।
২১.০১.২০১৫
……………………………………………
নতুন পোশাক বানাতেই হবে বিদেশী কিংবা দেশী।
ঈদের পূর্ব্বে ছুটি নেই কারো হুকুম হয়েছে জারি
সারারাত জেগে কাজ করে মিলে মালিক কর্মচারী
টেইলর বলে পেরেশানি সুরে ঈদের পূর্ব্ব রাতে
অর্ডারগুলো দিতে হবে ঠিক প্রভাতের সাথে সাথে
জিড়ানোর কোনো ফুসরত নাই তবু কাজ পরিপাটি
এ উহারে বলে তুই হাত ধর আর আমি গলা কাটি।
রাতের ভিতরে অনেক পুলিশ জড়ো করে ঐ খানে।
পুলিশের দল লাশ খুঁজে মরে দর্জি দোকান ঘেটে
লাশ গেল কই? আজ রাতে যারে মেরেছিস গলা কেটে?
শার্ট বানাতেই হাত ধরে ট্রেনি আর আমি গলা কাটি।
বেফাস কথার জাল বুনে আর বাড়াবোনা জটিলতা।
কতো সংসার ভেঙে গেছে হায়! বেফাস কথাকে ঘিরে
প্রাণের বন্ধু সেও চ'লে যায় প্রিয় বন্ধন ছিঁড়ে।
২১/০৭/২০১৭
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Facebook: facebook.com/samoiki
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments