বিষাদ সিন্ধু : মীর মশাররফ হোসেন_মহরম পর্ব : ২০তম প্রবাহ

মারওয়ান্ সৈন্য­সহ মদি­নায় আসি­লেন। অলী­দের মু­খে সবি­স্তা­রে সম­স্ত শু­নি­লেন। হা­সা­নের মৃ­ত্যুর পর হো­সেন অহো­রা­ত্র 'রওজা শরি­ফে' বাস করি­তে­ছেন, কথায় মারওয়ান্ অত্য­ন্ত চি­ন্তিত হই­লেন।পবি­ত্র রওজায় যু­দ্ধ করা নি­তা­ন্তই দু­র্বু­দ্ধি­তার কা­র্য; সে ক্ষে­ত্রে যু­দ্ধ করি­তে সা­হসও হয় না! যু­দ্ধে আহ্বান করি­লেও হো­সেন কখ­নোই তাঁহার মা­তা­­হের সমা­ধি­স্থান পরি­ত্যাগ করিয়া অগ্র­সর হই­বেন না। মারওয়ান্, বি­শে­ষরূপে এই সকল কথার আন্দো­লন করিয়া অলী­­কে জি­জ্ঞা­সা করি­রেন, "ভাই! ইহার উপায় কী? আমার প্র­থম কা­র্য হো­সে­নের মু­ণ্ড লাভ, শেষ কা­র্য তা­হার পরি­বা­­কে বন্দি করিয়া দা­মে­স্ক­­­রে প্রে­রণ। হো­সে­নের মস্তক হস্ত­গত না হই­লে শেষ কা­র্য­টি সম্প­ন্ন হওয়া অস­ম্ভব।" কী উপায়ে হো­সে­­কে মো­হা­ম্ম­দের সমা­ধি­ক্ষে­ত্র হই­তে স্থা­না­ন্ত­রিত করি­বেন, এই চি­ন্তাই এখন তা­হা­দের প্র­বল হইয়া উঠিল। অনেক চে­ষ্টা-অনেক কৌ­শল করিয়াও কি­ছু­তেই কৃ­­কা­র্য হই­তে পা­রি­লেন না। এক­দিন মারওয়ান্ ওত্বে অলী­দের সহিত পরা­­র্শ করিয়া উভয়েই ছদ্ম­বে­শে নি­শীথ সময়ে পবি­ত্র রওজায় উপ­স্থিত হই­লেন। রওজা­­ধ্যে প্র­বে­শের পথ নাই, বি­শেষ অনু­­তিও নাই। রওজার চতু­ষ্পা­র্শ্ব­স্থ সী­মা­নি­র্দি­ষ্ট রেল ধরিয়া হো­সে­নের তত্ত্ব সন্ধান জা­নি­তে লা­গি­লেন। হো­সেন ঈশ্ব­রের উপা­­নায় মনো­নি­বেশ করিয়াছেন। অনে­­ক্ষণ পর্য­ন্ত উভয়ে অব­স্থা­তেই রেল ধরিয়া দাঁড়াইয়া রহি­লেন। উপা­­না সমা­ধা হই­বা­মা­ত্রই ছদ্ম­বে­শী মারওয়ান বলি­লেন, "হজ­রত! আম­রা কোন বি­শেষ গো­­নীয় তত্ত্ব জা­না­­তে এই নি­শীথ সময়ে আপ­নার নি­কট আসিয়াছি।"
হো­সেন বলি­লেন, "হে হি­তা­র্থী ভ্রা­তৃ­দ্বয়! কী গো­­নীয় তত্ত্ব দি­তে আসিয়াছেন? জগ­তে ঈশ্ব­রের উপা­­না ভি­ন্ন আমার আর কোন আশা নাই! গো­পন তত্ত্বে আমার কী ফল হই­বে?-আমি কোন গো­­নীয় তত্ত্ব জা­নি­তে চা­হি না।"
ছদ্ম­বে­শী মারওয়ান্ বলি­লেন, "আপ­নি সেই তত্ত্বের সমুদয় বৃ­ত্তা­ন্ত শু­নি­লে অব­শ্যই বু­ঝি­তে পা­রি­বেন যে, তা­হা­তে আপ­নার কো­নরূপ ফল আছে কি না।"
হো­সেন আগ­ন্তু­কের কি­ঞ্চিৎ নি­­টে যাইয়া বলি­লেন, "ভ্রা­তৃ­গণ! নি­শীথ সময়ে অপ­রি­চিত আগ­ন্তু­কের রওজার মধ্যে আসি­বার নিয়ম নাই। আপ­না­রা বা­হি­রে থা­কিয়াই যা­হা বলি­তে ইচ্ছা হয় বলুন।"
ছদ্ম­বে­শী মারওয়ান্ বলি­লেন, "আপ­নি আমা­দের কথায় যদি প্র­ত্যয় করেন, তবে মনের কথা অক­­টে বলি। আপ­নার দু­­খে দু­­খিত হইয়াই আম­রা ছদ্ম­বে­শে নি­শীথ সময়ে আপ­নার নি­কট আসিয়াছি।এজি­দের চক্রা­ন্তে জায়েদা যে কৌ­­লে ইমাম হা­সা­­কে বি­­পান করাইয়াছে, তা­হার কোন অং­শই আমা­দের অজা­না নাই! কি করি-কর্ণে শু­নি, মনের দু­ঃখ মনেই রা­খি, গো­­নে চক্ষের জল অতি কষ্টে সম্ব­রণ করি। হা­সা­নের বি­­পা­নের বিষয় মনে হই­লে হৃদয় ফা­টিয়া যায়; চতু­র্দি­কে অন্ধ­কার বোধ হয়! এজি­দের হৃদয় লৌ­­নি­র্মিত, দেহ পা­ষা­ণে গঠিত; তা­হার দু­ঃখ কি! আম­রা তা­হার চা­কর; কি­ন্তু নূরন­বী মো­হা­ম্ম­দের শি­ষ্য, আপ­নার ভক্ত। এই যে নি­শীথ সময়ে শি­বির হই­তে বা­হির হইয়া এত দূরে আসিয়াছি, কোন স্বা­র্থ নাই, কোন প্র­কার লা­ভের আশা করিয়াও আসি নাই,-এজি­দ্ কৌ­­লে আপ­নার প্রাণ লই­বে,-ইহা আমা­দের নি­তা­ন্তই অস­হ্য। আমা­দের অন্ত­রে ব্য­থা লা­গিয়াছে বলিয়াই আসিয়াছি।"
হো­সেন বলি­লেন, "প্রা­ণের একা­ংশ,-বি­শেষ অগ্র­­ণ্য অংশ-সেই ভ্রা­তা­কে তাঁহার স্ত্রীর সহায়তায় এজি­দ্ বি­­পান করাইয়া কৌ­­লে মা­রিয়াছে, ইহার উপ­রে আর কী কষ্ট আছে? আমার প্রা­ণের জন্য আমি ভয় করি না।"
মারওয়ান্ বলি­লেন, "প্রা­ণের জন্য আপ­নার যে কি­ছু­মা­ত্র ভয় নাই তা­হা স্বী­কার করি। কি­ন্তু আপ­নার প্রাণ গে­লে আপ­নার পু­ত্র-কন্যা-পরি­বার, হা­সা­নের পরি­বার, ইহা­দের কি অব­স্থা ঘটি­বে, ভা­বুন দে­খি।দু­­ন্ত জা­লেম এজি­দ্! সে যে কি করি­বে, তা­হার মনই তা­হা জা­নে; আর বে­শি বি­­ম্ব করি­তে পা­রি না। আম­রা যে গু­প্ত­ভা­বে এখা­নে আসিয়াছি, কথার অণু­মা­ত্র প্র­কাশ হই­লে আমা­দের দেহ মস্তক কখ­নোই এক­ত্র থা­কি­বে না। আজ ওত্বে অলী­দ্ মারওয়ান্ এজি­দের আদেশ মত এই স্থির করিয়াছে যে, এই রা­ত্রেই রওজা মো­বা­রক ঘে­রাও করিয়া আপ­না­কে আক্র­মণ করি­বে। পরি­শে­ষে হা­­নে­বা­নু, জয়নাব এবং আপ­নার পরি­বা­­স্থ যা­­তীয় স্ত্রী­লো­­কে বদ্ধ করিয়া বি­শেষ অপ­মা­নের সহিত এজি­দ্ সমী­পে লইয়া যা­­বে।"
হো­সেন এক­টু রো­­­­বশ হইয়া বলি­তে লা­গি­লেন, "প্র­কা­শ্য­ভা­বে যদি আমার মস্তক লই­তে আসে, আমি তা­হা­তে দু­­খিত নই। আর ভাই, ইহাও নি­শ্চয় জা­নিয়ো, আমি বাঁচিয়া থা­কি­তে ঈশ্বর কৃ­পায় আমার পরি­বা­রের প্র­তি-মদি­নার কোন-এক­টি স্ত্রী­লো­কের প্র­তি, কোন নরা­ধম না­­কী জবা­­ণে হস্ত­পে করি­তে পা­রি­বে না।"
মারওয়ান্ বলি­লেন, "সেই জন্যই তো আপ­নার শি­­চ্ছে­দন অগ্রে করাই এজি­দের একা­ন্ত ইচ্ছা। এজি­দ্ও জা­নিয়াছেন যে, হো­সেন বাঁচিয়া থা­কি­তে আর কি­ছুই হই­বে না। আপ­নি আজ রা­ত্রি­তে এখা­নে কখ­নোই থা­কি­বেন না। হা­জার বল­বা­ন্ হা­জার ক্ষ­­তা­বান হই­লেও পাঁচ হা­জার যো­দ্ধার মধ্যে একা এক প্রা­ণী কি করি­বেন? আপ­নি এখ­নই স্থান হই­তে পলায়ন করুন। মারওয়ান গু­প্ত সন্ধা­নে জা­নিয়াছে যে, আপ­নি এই রওজা ছাড়িয়া কো­­খা­নেই গমন করেন না; রা­ত্রিও শেষ হইয়া আসিল, আর অধিক বি­­ম্ব নাই। বোধ হয়, এখ­নই তা­হার আক্র­মণ করি­বে। দে­খুন! আপ­নার পরি­বা­­­ণের কুল, মান, মর্যা­দা, শে­ষে প্রাণ পর্য­ন্ত এক আপ­নার প্রা­ণের প্র­তি নি­র্ভর করি­তে­ছে; আর বি­­ম্ব করি­বেন না, আম­রাও শি­বি­রা­ভি­মু­খে যাই; আপ­নি অন্য কোন স্থা­নে যাইয়া আজি­কার যা­মি­নীর মত প্রাণ রক্ষা করুন।"
হা­স্য করিয়া হো­সেন বলি­লেন, "ভাই রে, ব্য­স্ত হইও না। তো­মা­দের এই ব্য­­হা­রে আমি বি­শেষ সন্তু­ষ্ট হই­লাম। তো­­রা এজি­দের পক্ষীয় লোক হইয়া গো­­নে আমা­কে এমন গু­প্ত সন্ধান জা­না­­লে-আশী­র্বাদ করি, পর­কা­লে ঈশ্বর তো­মা­দি­­কে জা­ন্না­­বা­সী করি­বেন। ভাই রে! আমার মর­ণের জন্য তো­­রা ব্যা­কুল হইও না, কোন চি­ন্তা করিয়ো না। আমি মা­তা­­হের নি­কট শু­নিয়াছি, দা­মে­স্ক কি­­বা মদি­নায় কখ­নোই কা­হা­রো হস্তে আমার মৃ­ত্যু হই­বে না। আমার মৃ­ত্যুর নি­র্দি­ষ্ট স্থান 'দা­স্ত কা­র্বা­লা' না­মক মহা­প্রা­ন্তর। যত­দিন পর্য­ন্ত সর্ব­প্রলয়কর্তা, সর্বে­শ্বর আমা­কে কা­­বা­লা প্রা­ন্ত­রে না লইয়া যা­­বেন, তত­দিন পর্য­ন্ত কি­ছু­তেই কোন প্র­কা­রে আমার মরণ নাই।"
মারওয়ান্ বলি­লেন, "দে­খুন! আপ­নার সৈন্য­বল, অর্থ­বল কি­ছুই নাই; এজি­দের সৈন্য­গণ আজ নি­শ্চয়ই আপ­না­কে আক্র­মণ করি­বে। আপ­নি প্রা­ণে মা­রা না যা­­তে পা­রেন, কি­ন্তু বন্দিভূত হই­তেই হই­বে, তা­হা­তে আর কথা­টি নাই। দা­স্ত কা­র্বা­লা না হই­লে আপ­নার প্রা­­বিয়োগ হই­বে না, কথা সত্য-কি­ন্তু এজি­দের আক্র­মণ হই­তে রক্ষা পা­­বেন কি­সে? আপ­নার জন্যই মদি­না আক্রা­ন্ত হই­বে;-মদি­না­বা­সী­রা না­না­প্র­কার ক্লে¬ পা­­বে। যদিও তা­হা­রা এজি­দের সৈন্য­­­কে এক­বার শেষ করিয়াছে, কি­ন্তু মারওয়ান্ এবা­রে চতু­র্গুণ সৈন্য সং­গ্রহ করিয়া দা­মে­স্ক হই­তে আসিয়াছে। আপ­নি যদি শত্রু­­স্তে বন্দি হন, তা­হা হই­লে জীয়ন্তে মৃ­ত্যু­­ন্ত্র­ণা ভোগ করি­তে হই­বে। আর বে­শি বি­­ম্ব করি­তে পা­রি না, প্র­ণাম করি। আম­রা চলি­লাম। যা­হা ভাল বি­বে­­না হয় করি­বেন।"
লো­কে­রা চলিয়া গেল। হো­সেন ভা­বি­তে লা­গিল, "হায়! আজ পর্য­ন্ত এজি­দের ক্রো­ধের উপ­শম হয় নাই। সক­লই ঈশ্ব­রের লী­লা! লো­­টি যথা­র্থই 'মো­মেন' এই নি­শীথ সময়ে প্রা­ণের মায়া বি­­র্জন করিয়া পর­হি­­সা­­নে নি­­স্বা­র্থ­ভা­বে এতদূর আসিয়াছে! কি আশ্চ­র্য! বা­স্ত­বিক ইহা­রাই যথা­র্থ পর­হিতৈষী। মারওয়ান্ পু­­রায় সৈন্য সং­গ্রহ করিয়া মদি­নায় আসিয়াছে। কি করি,-আমি যু­দ্ধ­­জ্জা করিয়া শত্রুর সম্মু­খীন হই­লে মদি­না­বা­সী­রা কখ­নোই নি­­স্ত্র-নি­শ্চে­ষ্ট হইয়া বসিয়া থা­কি­বে না, নি­শ্চয়ই প্রাণ পর্য­ন্ত পণ করিয়া আমার পশ্চা­দ্ব­র্তী হই­বে। এখনও তা­হা­রা শো­­­স্ত্র পরি­ত্যাগ করে নাই; দি­বা­রা­ত্র হা­সা­­বি­­হে দু­­খিত মনে-হা-হু­তা­শে সময় অতি­বা­হিত করি­তে­ছে। সময় তা­হা­দের হৃদয় পূর্ববৎ সমুৎসা­হিত, জন্মভূমি রক্ষার সু­দৃঢ়পণে শত্রু­নি­­নে সমুৎসুখ সমু­ত্তে­জিত হই­বে কি না, সন্দেহ হই­তে­ছে। কা­রণ দু­­খিত মনে, দগ্ধীভূত হৃদয়ে কোন প্র­কার আশাই স্থায়িরূপে বদ্ধমূল হয় না। যত­দিন তা­হা­রা জী­বিত থা­কি­বে, তত­দিন ইমা­মের শোক ভু­লি­তে পা­রি­বে না।এই শো­­­ন্ত­প্ত হৃদয়ে সেই স্নে­­কা­তর ভ্রা­তৃ­­­কে কী বলিয়া আমি আবার এই মহা­যু­দ্ধে প্র­বৃ­ত্ত করা­ইব। কি­ছু­দিন যু­দ্ধে প্র­বৃ­ত্ত না হওয়াই আমার উচিত। আমি যদি কি­ছু­দি­নের জন্য মদি­না পরি­ত্যাগ করি, তা­হা­তে তি কি?এজি­দের সৈন্য আজ রা­ত্রি­তেই রওজা আক্র­মণ করিয়া আমার প্রা­­বধ করি­বে, ইহা বি­শ্বা­স্যই নহে। এখা­নে কা­হা­রো দৌ­রা­ত্ম্য করি­বার মতা নাই। শু­ধু এজি­দের সৈন্য কেন, জগ­তের সম­স্ত সৈন্য এক­ত্রিত হইয়া আক্র­মণ করি­লেও এই পবি­ত্র রওজায় আমার ভয়ের কোন কা­রণ নাই, তথা­পি কি­ছু­দি­নের জন্য স্থান পরি­ত্যাগ করাই সু­­রা­­র্শ। আপা­­তঃ কু­ফা নগ­রে যাইয়া আব­দু­ল্লা­হ্ জেয়াদের নি­কট কি­ছু­দিন অব­স্থি­তি করি। জেয়াদ আমার পরম বন্ধু। আরব দে­শে যদি প্র­কৃত বন্ধু কেহ থা­কে, তবে সেই কু­ফার অধী­শ্বর প্রিয়তম বন্ধুবৎসল জেয়াদ্। যদি মদি­না পরি­ত্যাগ করিয়া যাওয়া উচিত বি­বে­­না হয়, তবে সপ­রি­বা­রে কি­ছু দি­নের জন্য কু­ফা নগ­রে গমন করাই যু­ক্তি­সি­দ্ধ। আজ রা­ত্রির -কথা কি­ছুই নহে। এইরূপ ভা­বিয়া হো­সেন পু­­রায় ঈশ্ব­রো­পা­­নায় মনো­নি­বেশ করি­লেন।
ওত্বে অলীদ মারওয়ান্ উভয়ে শি­বি­রে গিয়া বেশ পরি­ত্যা­গপূর্বক নি­র্জন স্থা­নে বসিয়া পরা­­র্শ করি­তে­ছেন। অনেক কথার পর মারওয়ান বলি­লেন, "মো­হা­ম্ম­দের রওজায় হো­সে­নের মৃ­ত্যু নাই! আম­রা এমন কোন উপায় নি­র্ণয় করি­তে পা­রি নাই যে, তা­হা­তে নি­শ্চয়ই হো­সেন রওজা হই­তে বহি­র্গত হইয়া মদি­না পরি­ত্যাগ করেন। এই­টি যা­হা হইল ইহাও মন্দ নহে। ইহার উপ­রে আরো এক­টি ছিল, কি­ন্তু সে আমা­দের ক্ষ­­তার অতীত। তৎবি­স্তা­রিত কা­সেদ গিয়া মু­খে প্র­কাশ করি­বে, তা­হার উপায়-কৌ­শল, সমুদয়ই কা­সে­­কে বি­শে­ষরূপে বলিয়া দি­লাম।"
ওত্বে অলীদ বলি­লেন, "আর বে­শি বি­স্তা­রের আব­শ্যক নাই, শী­ঘ্র পত্র লি­খিয়া কা­সে­­কে প্রে­রণ করা কর্ত­ব্য।"
লি­খি­বার উপ­­রণ লইয়া মারওয়ান্ লি­খি­তে বসি­লেন। কি­ছুণ পরেই ওত্বে অলীদ আবার বলি­লেন, "এক­টি কথাও যেন ভুল না হয়, অথচ গো­পন থা­কে এই­ভা­বে পত্র লে­খা উচিত।" মারওয়ান পত্র লি­খি­তে লা­গি­লেন। এক­জন সৈনিক পু­রু­ষের সহিত এক­জন কা­সে­দ্ আসিয়া যথা­রী­তি নম­স্কার করিয়া কর­জোড়ে দণ্ডায়মান হইল। মারওয়ান পত্র রা­খিয়া কা­সে­দ্কে লইয়া গো­­নে তা­হা­কে সম­স্ত কথা বলি­লেন। অন­ন্তর মারওয়ান পত্র­খা­নি শেষ করি­তে বসি­লেন। কা­সে­দ্ কর­জোড়ে বলি­তে লা­গিল, "ঈশ্ব­­প্র­সা­দে এই কা­র্য করি­তে করি­তেই আমি বৃ­দ্ধ হইয়াছি, যা­হা বলি­বেন অবি­কল তা­হাই বলিব। কে­বল শহ­রের না­­টি আর এক­বার ভাল করিয়া বলুন, কু­ফার কী কু­ফা।"
মারওয়ান রী­তি­মত পত্র লে­খা শেষ করিয়া কা­সে­দের হস্তে দিয়া বলি­লেন, "কু­ফা।" কা­সে­দ্ বি­দায় হইল। মারওয়ান এবং অলীদ উভয়ে নি­র্দি­ষ্ট স্থা­নে গমন করি­লেন।

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.