শাহিদ উল ইসলাম'র কবিতা
ইছামতি ও একটি দীর্ঘশ্বাস
চোখে চোখ পড়তেই শৈশবে ফিরি
ডুব সাঁতার খেলি; শুশুক যেমন খেলে গেছে!
ভেঙ্গে পড়া ছোট ছোট ঢেঊ- ও
হারানো দিনের ভাটিয়ালী সুর।
রোদ্দুর জলে রূপার ঝিলিক
জল জোসনার মিতালী; উত্তাল যৌবন
জোয়ার ভাটা সবই ছিলো তোমার।
সারেঙ বাড়ী, ঘাট, সারেঙের বউ
সব মনে পড়ে আজ।
তোমার খেয়াঘাট বান্দুরা; যেখানে লঞ্চের নীড়
লালফোটা সাদা বিস্কুট, জলশিরা মিঠাই
আজো জিহ্বায় খুব লেগে আছে।
প্রিয় নদী আমার হে প্রেয়সী ইছামতি
তুমি খোয়া যাওয়ায় এই আমি আজ
প্রত্নতাত্ত্বিক খুঁড়ছি অতীত!
এথায় এখন শুশুক হাসে না আর;
ঘাঁট প্রসস্ত হয়ে আসে এবং
তোমার গলা টিপে তোমাকে হত্যার পাঁয়তারা
সকলই চোখে পড়ে আজ।
তথাপিও আমি নিশ্চুপ যেন এক
ফেলানির পিতা ফ্যালফ্যাল জল চোখে
কেবলই তাকিয়ে থাকি উজানের দিকে।।
..................................................
এর কোনো মানে নেই, উত্তর নেই, পৃথিবীতে আমি
একটি আরশোলা নিজেকে মানুষ দাবী করি
হতাশায় আচ্ছন্নতার পরেও।
হয়তোবা আমার মস্তিষ্ক ধাক্কা দিতে পারতো
মানুষের মনকে, আওয়াজ তুলতে পারতো হতাশার
বিরুদ্ধে। পারতো আগুন ও কান্নার বিপরীতে থাকতে
অথবা এমন হতে পারতো যে
নগর ও গাঁয়ের সভ্যদের সমস্ত হিংস্রতা কুকর্ম
হীনতাকে শ্রাবণ মেঘের গোছল দ্বারা
শীত সকালের পালংশাক বানিয়ে দিতে,
নিঝুম দ্বীপের কালোরাত হয়ে যাই
আমার কলম চলে না, পেটও আর চলে না
একটা নাদান আরশোলা ছাড়া আর কিছু নই।
ইদানিং আমি একটু একটু করে জেগে উঠি
হতাশার কাঁচ ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসতে চাই
জীবনের কষ্টগুলো সব মাচায় তুলে রেখে
ফের বাঁচতে চাই
নতুন চাঁদে স্নান করে নতুন আকাশের সন্ধানে
আমিও বলতে চাই, আমিও মানুষ আরশোলা নই।
..................................................
কিন্তু আমাদের কান তা শোনে না।
শোনে না অনেক কিছু
অভিযোগের ঝোলাও পাহাড় আকার ধারণ করে
তবুও শোনে না কেউ নাগরিক ক্রন্দন!
যা সনাক্ত করেছে তা কেবলই বলির পাঠা
ঘৃণার ঘোড়দৌড় বিপন্ন মানব জীবন
স্তূপকৃত হয় অযথা রাজাদের ভাষণে,
মরুভূর বালিয়াড়ির অবচেতন বুকে।
তবু আমি বলতে চাই
ভালোভাবে বাঁচার অধিকার আমাদেরও আছে
নতুবা আমার অধিকারযুক্ত উচ্চারণটুকু
স্বশব্দে বাতাসে ভাসার অধিকার!
তোমার চূড়ায় আর বরফ জমছে না!
আলগা হয়ে একদিন মিশে যাবে ধরার ধুলোয়।
কেউ ভুলেও বলবে না এখানে হিমালয় ছিলো
কোন পাখি আর গাইবে না তোমার গান!
আকাশ ছুঁয়ে বহুতল ভবন হতে চাও!
তোমার চারপাশে মোসাহেবের যে আঁটি বাঁধা
মৌসুমি মাছির ঝাক
পা চাটা এসকল কুকুরের দল
কালে দেখবে তারা সরে গেছে দুগ্ধবতী অন্য উলানে।
এবং তোমাকে আকাশে তুলে দেবার কথা
বলে ওরা মই সরিয়ে নিলে
ফের আবার সেইসব মীরনের অট্টহাসি!
ফের আবার কথা হবে দুজনার।
শেষকথা;
বুকচিরে হৃদপিণ্ড নিয়ে
বারংবার হিন্দ বিনতে উতবা হয়ে যাও!
সে ঘা হয়তো কালে শুকাবে না কোনদিন
তবুও তুমি আছো আমার হৃদ আঙিনায়
প্রভাতে সদ্য ফোটা গোলাপ।
..................................................
বাঁধলো যে ঘর ঘরের কোনে
এই বরষায়;
মেলবে ডানা উড়বে হাওয়ায়
এই ভরসায়!
পাখির পাতা সংসার
ছানা হলো পোনা হলো
সুরে নতুন ঝংকার।
কিন্তু বিপদ আসলো তেড়ে
হুররে রেরে রেরে
দুষ্ট ছেলে ছানাগুলো
নিলো যে আজ কেড়ে।
করলে এমন পাখিগুলো
বাঁধবে যে ঘর ঘরের কোনে
কোন দেশেতে?
থাকবে না আর পাখপাখালী
সব শেষেতে।
..................................................
অ্যাঁদো ডোবা পুকুর পাগার খাল বিল নালা নদী
ভালো নেই ভালো নেই!
ঝোপ-ঝাড় বন-বনানি
কেও ভালো নেই।
ভালো নেই গিরিপথ পাহাড় পর্বত
হাঁট বাজার মার্কেট শপিংমল মসজিদ মন্দির গির্জা
ভালো নেই ভালো নেই
বিষণ্ণতার কালো মেঘে ঢেকে
আছে কালের আকাশ!
ভালো নেই আমি তুমি এবং সে
এখন ভালো থাকার স্বপক্ষে একটি উপমাও
এসে দাঁড়ায় না আর
তথাপিও আমরা ভালো থাকি
আমাদের ভালো থাকতে হয়; ভালো
না থেকেও মুখে ভালো থাকার রঙ
ফুটিয়ে বলতে হয় "ভালো আছি"
"ভালো আছি" আমি ভালো আছি।
..................................................
চাইবো না বিশ্বজিৎ বা আবরার হত্যার বিচারও!
আমি না হয় একখানা কবিতা লিখি।
জাতীর পিতার সুযোগ্য কন্যার গৃহপালিত
ছাত্রলীগের ভূয়সী প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে
একদল দরজালের নিকট মাথাটি নুয়ে দিয়ে
আমি না হয় একখানা কবিতা লিখি।
সময় এখন মানুষের বিপক্ষে কথা বলার
সময় এখন মীরজাফর মীরজাফর হয়ে উঠার
সময় এখন আবুজেহেলের হাতে হাত মিলিয়ে
আমি না হয় একখানা কবিতা লিখি।
হায় হাসান হায় হোসেন করে কাঁদার সময় কোথায়
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার সময় কোথায়
তার চেয়ে বরং এজিদের পতাকাতলে যেয়ে
আমি না হয় একখানা কবিতা লিখি।
আমি আর সাগর রুনির হত্যার বিচার চাইবো না
চাইবো না বিশ্বজিৎ বা আবরার হত্যার বিচারও!
আমি না হয় একখানা কবিতা লিখি।
..................................................
তাই স্বপ্ন মুখ থুবড়ে থাকে পড়ে বধ্যভুমে!
একালে নাগিনীর বিষনিশ্বাসে
দূষিত হয় বাতাস,
নাগরিকের বাক স্বাধীনতা।
কে আছো হে আদম; আদমের পুত
এতো এতো অমানুষের ভেতর থেকে
গাইবে প্রতিবাদের কোরাস!
আমি আহবান করি-
ঘুমিয়ে থাকেন লক্ষণ সেন হয়ে
ভাবেন বখতিয়ার নেই; নেই তার ঘোড়াও
আহা একটু মগজ ধুয়ে দেখুন!
আবরার ফাহাদ বারবার ফিরে এসে
রক্তে ভিজিয়ে দেয় আপনার আসন!
হয়তো একদিন ভেঙ্গে দিতে পারে
নাগিনীর সেই বিষদাঁত!
বলবো আমি এদেশ কবির স্বদেশ হলো!
..................................................
উথাল পাথাল হৃদয়ে দেখি বৈশাখের ভাঙচুর
কিছুটা গড়ায় কিছুটা ভাঙ্গায় সৃষ্টি মধুর
মাঝরাতে তবে কি কবি নুরালয়ে ভরপুর!
শ্রাবনের মেঘ মাথায় নিয়ে আজকের এই মাঝরাতে
প্রসব বেদনা কি নড়েচড়ে উঠে হরদম
রাজ্যের ভাবনা নিয়ে কি কবির কবিত্ব কি কাতরায়
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে নীলিমা ভেদ করে
কোন ব্লাকহোলে কবি কি শাবক কাব্য হাতড়ায়?
আর যদিবা হয় ও শ্যাম চোরের শাকচুন্নির দীপ
তবে তাকে আতুর ঘরেই গলা টিপে মারো
কেননা আমরা চাই সবুজের চেরাগ উজ্জ্বল নিব।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Facebook: facebook.com/samoiki
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments