হাইডি_জোহান্না স্পাইরি : সৃজনানুবাদ_রেজা কারিম : পর্ব-৮
দিনগুলো
খুব আস্তে আস্তে অতিবাহিত হচ্ছিলো। হাইডির সময় যেন কাটে না। প্রতিটা দিনই একই রকম।
প্রতি সকালেই পড়তে বসতে হতো। হাইডি তখনো পড়তে শিখেনি। সে শিখতে পারে না। পড়ালেখা তার
কাছে খুব কঠিন মনে হয়। পিটারও একই কথা বলতো।
বিকালবেলাটা একেবারেই বিরক্তিকর ছিলো। তখন হাইডি একা একা তার রুমে বসে থাকতো। সে কিছুই করতো না। তার করার মতো কিছুই ছিলো না। সে বাইরে যেতে পারতো না। তাই সে মন খারাপ করে বসে বসে তার বাড়ির কথা ভাবতো। সে যে জিনিসগুলো বেশি পছন্দ করতো তাও নিয়ে ভাবতো।
সন্ধ্যাবেলাটা ছিলো দিনের সবচেয়ে সেরা সময়। তখন সে বসার ঘরে ক্লারার সাথ কথা বলতে যেতো। ক্লারা তার গল্পগুলো শুনতে বেশ পছন্দ করতো। সে শুনতো হাইডির দাদার গল্প, স্নোয়ি ও ব্রাউনির গল্প। পিটার ও তার দাদিমার গল্প।
“আমারও একজন দাদিমা আছে।” বললো ক্লারা।
“তিনি মাঝে মাঝে এখানে থাকতে আসেন। তুমি তাকে পছন্দ করবে।”
“হুম! কিন্তু আমার শীঘ্রই বাড়ি যেতে হবে।” বললো হাইডি। সে প্রায়ই এ কথা বলে।
ক্লারাকে বিমর্ষ দেখায়। “আচ্ছা যেও। কিন্তু বাবা না আসা পর্যন্ত তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আমরা ভেবে দেখবো কী করা যায়।”
একটা বিষয় হাইডিকে দীর্ঘ সময় ফ্রাংফার্টে থাকতে বাধ্য করেছিল। প্রতিদিন সে তার দাদিমার জন্য একটা রোল জমাতে পারতো। সে প্রতিদিন রাতের খাবারের সময় তার নিজের রোলটা লুকিয়ে রেখে দিতো। সে এটা আগেরগুলোর সাথে তার কাপবোর্ডে জমা রাখতো।
একদিন প্যারিস থেকে একটি চিঠি এলো। চিঠিটি এসেছে জনাব সিম্যানের কাছ থেকে। তিনি আগামি সপ্তায় বাড়ি আসছেন। মিস রোমার ও বাড়ির কাজের লোকেরা বাড়িঘর গোছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
মিস রোমার হাইডির পোষাকের দিকে লক্ষ্য করলেন। এটা খুবই ছোট ও এর রং নষ্ট হয়ে গেছে। “তার সব কাপড়ই কি একই রকম। তার কাপবোর্ডটা আমার দেখা দরকার।” তিনি মনে মনে ভাবলেন। “যদি তাই হয় তবে ক্লারার কিছু পুরনো কাপড় তাকে ুদিয়ে দিবো।”
তিনি হাইডির রুমে প্রবেশ করলেন তখন হাইডি ক্লারার সাথে ছিলো। তিনি হাইডির কাপবোর্ড খুললেন।
“ও আমার প্রভু!” এই বলে তিনি চিৎকার করলেন এবং বসার ঘরের দিকে ছুটলেন।
“এডেলহাইড, আমি তোমার কাপড় রাখার কাপবোর্ডে এ কী দেখলাম? তোমার কাপবোর্ডে অনেকগুলো রোল ও রুটি। জনাব সিম্যান তোমার ব্যপারে কী ভাববে?”
তিনি দরজার দিকে গেলেন ও বাসার কাজের টিনোট্টিকে ডাকলেন।
“যাও, এডেলহাইডের কাপবোর্ড থেকে সবগুলো রোল নিয়ে ফেলে দাও।”
হাইডি টিনেট্টির পেছনে ছুটলো। কিন্তু সে তাকে থামাতে পারেনি। সে ক্লারার কাছে ফিরে এলো। “টিনেট্টি আমার সবগুলো রোল ফেলে দিয়েছেন। এগুলো আমার দাদিমার জন্য ছিল। এখন আর জন্য কিছুই রইলো না।” সে কাঁদতে শুরু করলো।
“শান্ত হও হাইডি। ঠিক আছে আমি তোমাকে অনেকগুলো নতুন রোল দেবো যখন তুমি বাড়ি যাবে। এগুলো পুরনো ও শক্ত হয়ে গেলে।” বললো ক্লারা।
হাইডির তা বিশ্বাস হচ্ছিলো না। তাই সে বললো, “তুমি কি আমাকে সত্যিই অনেকগুলো রোল দেবে? যতগুলো আমার ছিলো?”
“অবশ্যই। তোমার যা ছিলো তার চেয়ে বেশি। কিন্তু এখন তোমার কান্না থামাও।” বললো ক্লারা।
জনাব সিম্যান ঐদিন সন্ধ্যায় বাড়ি এলেন। তিনি দ্রুতই বসার ঘরে গেলেন এবং ক্লারাকে জড়িয়ে ধরলেন। বাপ-মেয়ে একসাথে হতে পেরে অনেক খুশি হলো।
তারপর তিনি হাইডির দিকে ফিরলেন।
“তাহলে এই হচ্ছে আমাদের ছোট সুইস বালিকা।” তিনি বললেন, “এসো আমরা হাত মিলাই।”
এরপর জনাব সিম্যান মিস রোমার সাথে কথা বলতে গেলেন।
“তোমাকে অসুখী দেখাচ্ছে। কী হয়েছে?
“ক্লারারতো কোনো সমস্যা হয়নি। হয়েছে কি? আমিতো ভেবেছিলাম সে অনেক ভালো আছে।”
“না জনাব সিম্যান। আমরা সুইস বালিকাটিকে নিয়ে মহা সমস্যায় আছি।”
“তাই? তাকে নিয়ে কী সমস্যা আবার?”
“তার সবকিছুতেই সমস্যা। জনাব সিম্যান। সে ভুলভাল কথা বলে। সে বাড়ির মধ্যে জন্তু-জানোয়ার নিয়ে আসে। এমনকি সে তার কাপড় রাখার কাপবোর্ডে রুটি রাখে। আমার মনে হয় ওর মাথা ঠিক নেই।”
জনাব সিম্যান ক্লারার কাছে গেলেন। তিনি হাইডিকে বাইরে পাঠালেন ও ক্লারাকে বললেন, “এখন আমাকে হাইডি সম্পর্কে বলো। কেন মিস রোমার মনে করে যে হাইডির মাথা ঠিক নেই? জীবজন্তু ও কাপবোর্ডে রুটি রাখার সবকিছু আমাকে খুলে বলো।”
ক্লারা হাসলো। সে তার বাবাকে বিড়াল ছানাদের কথা পিটারের দাদিমার জন্য রোল জমানোর কথা ইত্যাদি খুলে বললো। তার বাবাও হাসলেন।
“তাহলে তুমি চাও না যে আমি শিশুটিকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেই? তুমি কি তাকে নিয়ে বিরক্ত নও?” হাশিমুখে জিজ্ঞেস করলেন তার বাবা।
“মোটেই না বাবা। হাইডির সাথে থাকতে আমার অনেক ভালো লাগে। অনেক মজা হয় আর সে আমাকে অনেক মজার গল্পও বলে।”
জনাব সিম্যান মিস রোমারের কাছে ফিরে গেলেন। তিনি বললেন, “সুইস শিশুটি এখানেই থাকবে। দয়া করে তুমি তার প্রতি দয়ালু হবে ও তারা প্রতি খেয়াল রাখবে।”
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Facebook: facebook.com/samoiki
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments