নিয়তি ।। তানজারীন ইফফাত স্বাতী
পোয়াতি বৌডার প্যাডে লাথ্থি মারলি, তর দিলে কোন রহম নাই বারেক?
বারেক মিয়া যেন খুব স্বাভাবিক। যা করেছে ঠিক করেছে। পুরুষের কাজ করেছে। রহিমা খাতুন বলতে থাকে, বৌডার লাগি নাহয় তর দরদ নাই। অর প্যাডে তর পোলা, তার লাগিও তর কোন দরদ নাই? আল্লাহ্ তর দিলে রহম দেয় নাই? শরিক বাড়ির লোকজন ছুটে আসে। কেউ কোন কথা বলে না। যেন দোষী শাকেরা। শরিক ভাই-এরা বারেক মিয়াকে টানতে টানতে নিয়ে যায়। আর রহিমা খাতুন বৌ-ঝিদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকে, কি দেহ তোমারা? কি দেহ চাইয়া? এই চাচিই যেন শাকেরাকে এতদিন আগলে রেখেছে। সুখে দুঃখে বিপদে আপদে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আর কেউ না। আর কেউ আসেনি। সবাই যার যার সুখের সংসারের জপ করে। বারেক মিয়া দূরে গিয়েও চিৎকার করতে থাকে। অরে কইছিলাম, আমার লাঙল কাস্তে ঠিকমত রাখতে। কেমনে চুরি অইল? সারাদিন কাম কইরা শরীর ম্যাজম্যাজ করে, আমি ঘুমাইয়া পরছিলাম
-ক্যা তর বৌডা পোয়াতি হেই দিকে খেয়াল আছিলনা? কাম অয় ক্যামনে করে? তর তো আরও দুইডা মাইয়া আছে। তাগো দেখন, তাগো ইস্কুলে পাঠান, তাগো খাওন দেওন, আর যে বাড়ির হগ্গল কাম এইডি কেডায় করে। বৌডারে তো একদন্ড শান্তি দেস নাই।
অবস্থা খুব খারাপ। শাকেরাকে বলা হয়, তর ছেলে সন্তান হইছিল। মইরা গেছে। শাকেরা কষ্ট যন্ত্রণায় নিজের মুখটা চেপে ধরে নিজের একটা হাত দিয়ে। আর বলতে থাকে, মানুষ এত পশু হইতে পারে? সামান্য কামে ভুল হইছে বইলা আমার প্যাডের বাচ্চাডারে মাইরা ফেলল, কোন খেয়াল নাই। বলে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। এত রাগ হ্যার কার উপরে? আমার উপরে? আমি তার কি ক্ষতি করছি। সাথে সাথে জা বলে, আল্লায় দিলে তর আবার পোলা অইব। কি কও চাচি! সে সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তার বলে, ওনার যা অবস্থা আঘাতের ধকল এত সহজে সারবে না। ওনার জন্য পুনরায় সন্তান ধারণ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাছাড়া যা শুনলাম ওনার তো দুটি সন্তান রয়েছে।
-হ ডাক্তার সাব আছে। তয় ওই দুইডা তো মাইয়া। শাকেরার জা বলে।
কি বলছেন? হোক মেয়ে, তাতে কি? এই দেখেন আমিও তো মেয়ে। অথচ ডাক্তার হয়ে আপনাদের সেবা করছি। আপনাদের পাশে আছি। মেয়ে বলে এভাবে ভাবা ঠিক না। মেয়েরা আজকাল কত কিছু করতে পারে। আকাশের বুকে মেয়েরা উড়োজাহাজও চালাতে পারে। শাকেরা মুখ ঢেকে কাঁদতে থাকে। এখানে দুই দিন শাকেরার চিকিৎসা হয়। এই দুই দিন এখানে আসেনি বারেক মিয়া। অবস্য আসতে চেয়েছিল। কিন্তু ভয়ে গা ঢাকা দিয়ে ছিল। যদি পুলিশ আসে? ওকে ধরে নিয়ে যায়? কেউ কেউ ওকে বলেছিল সেই কথা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেডে শুয়ে শাকেরাও বলেছিল, এর জন্য ও থানায় যাবে। এত অত্যাচার ও আর সহ্য করতে পারছে না।
-তোমার দুটি মেয়ে রয়েছে। ওদের জন্য তোমাকে বাঁচতে হবে। ওদের লেখাপড়া শেখাতে হবে। তিন চার দিনে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে শাকেরা।
আর বারেক মিয়া এখনো নিখোঁজ। শরিক ভাইয়েরা এই নিয়ে দেন দরবার করে। শাকেরার কাছেও আসে। বোঝায়। শাকেরাকে বলে, বারেক মিয়াকে ক্ষমা করে দিতে।
-তুমি ক্ষমা না দিলে বারেক কই যাইব। হাজার হোক সোয়ামী। পুলিশে ধরায় দেওনডা ঠিক ওইব না। তোমার ওতো এই জগতে কেউ নাই। তুমি কই যাইবা? সোয়ামী না থাকলে এই বাড়িতে তুমি ক্যামনে থাকবা? -এইসব কথা পুরুষরাই বলতে পারে।
মনটা কেমন প্রতিবাদে ফেটে পরতে চায় শাকেরার।
পুরুষ! পুরুষ মানুষ! থু!
-ক্যা তুমার এত ত্যাজ ক্যা? বৌডারে কি এহন মাইরা ফালাবা? আমি কইলাম তুমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিমু। তুমি জেলে যাইবা।
-আবার গজগজ করে উঠে বারেক। আমি ছাড়া চলব? আমি ছাড়া চলব এই সংসার?
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments