নেমে এসো যুদ্ধ ।। আহসানুল ইসলাম

 
আমার সমস্যা হল, দিন না যেতেই আমি ওদের কথা বুঝতে পারছি, ইংরেজি ভাষাটা আয়ত্বে আসায় আমার মানসিক অবস্থা খুবই বিপর্যস্ত হতে শুরু করছো।
কদিন আগেও আমি ওদের কথা কিছুই বুঝতে পারতাম না, তবে ওদের আচরণ এবং ব্যাঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি, অপমান করার বিভিন্ন কায়দাগুলো আমি বুঝতে পারি। গতকাল একজন ব্রিটিশ সৈন্য, আমার বয়সের একজন বন্দী, সে আমারই বন্ধু, তাকে জিজ্ঞেস করলো হাউ ওল্ড আর ইয়োর মাদার?
আমার বন্ধুর এবং আমার, দুজনের চোখই চক্চক্ করে উঠল, আমরা ইংরেজি বুঝতে শিখেছি?
আগ্রহ ভরে নসিম জবাব দেয়।
মা আমার বেশ বয়স্ক, সে আমার পথ চেয়ে বসে আছে।
আমি দোকানে খবুজ কিনতে এসেছিলাম, আমার কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। তোমাদের দয়া হলে আমাকে ছেড়ে দাও। প্রশ্নকারী তার চোখে দয়ার্দ্র ভঙ্গি ফুটিয়ে তোলে, কিন্তু দয়ার্দ্রতার মধ্যে যে ব্রিটিশ ক্রুরতা আর শয়তানি তা আমার বন্ধুটি বুঝতে পারেনি, এমনকি আমিও কিছু বুঝতে পারিনি, প্রশ্নকারী দয়ার্দ্র ভঙ্গিতে আবারো প্রশ্ন করে।
তোমার মায়ের বয়স কতো?
আমরা ভাবলাম, হয়ত মায়ের প্রতি দয়ার্দ্র হয়ে ওরা আমাদের ছেড়ে দেবে, আমি আমার বন্ধুর চোখের ভেতর এমন একটা দৃষ্টি দিলাম, যে দৃষ্টির মানে হলো, সুরায়া ইয়া হাবিবী, গুল মা-মা- ওমার।
আমার বন্ধুটি, আমার উসকে দেয়া তাগিদে ঝটপট্ উত্তর দেয় আমার মায়ের বয়স প্রায় চল্লিশ।
ব্রিটিশ সৈন্যটি নির্লজ্জ অশ্লীল ভঙ্গিতে প্রস্তাব করে, আই উইল ফাক্ ইয়োর মাদার,
আমরা তাজ্জব হয়ে গেলাম, আমাদের সমস্ত ধারণা বদলে গেল। সভ্যতার প্রতি দারুন ঘৃণায় আমরা মুখ ফিরিয়ে নিলাম। ব্রিটিশ সৈন্যরা এতটা ভব্যতা সভ্যতায় এগিয়ে আছে?
আমরা মুখ ফিরিয়ে নেবার কারণে, জ্ঞান না হারানো পর্যন্ত সভ্য ব্রিটিশদের মার খেতে থাকলাম, মার খেয়ে পড়ে রইলাম!
সে একই ধরনের প্রশ্ন, আজ একজন আমেরিকান সৈন্য আমাকে করছে,
হাউ ওল্ড আর ইয়োর মাদার?
স্পষ্টই কথাটার মানে বুঝলাম, কিন্তু উত্তর দেবার উপকারিতা এবং অপকারিতার প্রশ্ন আমার জ্ঞান আমাকে দিধান্বিত করে, সিদ্ধান্ত নিতে আমি অপারগ। আমি এদিক ওদিক তাকাই যেন আমার সামনে মুনকের-নেকীর ফেরেস্তার বদলে একপাল শয়তান আমাকে প্রশ্ন করছে, যে প্রশ্নের উত্তর আমি জানি না। কাচুমাচু দৃষ্টির প্রেক্ষণ দেয়ালে গিয়ে ফেরৎ আসে। আমি দারুণ শ্বাসকষ্ট বোধ করি। আমার মনে হয়, আমি মরে গেছি। সাড়ে তিনহাত কবরের বদলে সাত হাত কবরে দাফন করা হয়েছে এবং আমার কোন অজানা গুনার কারণে আল্লাহ আমাকে পবিত্র ফেরেস্তার বদলে নোংরা অপবিত্র শয়তান দ্বারা জিজ্ঞাসা করছে। আমি প্রভুর কাছে ক্ষমা চাইতেও লজ্জা পাই। আমার সারা শরীরে পাপ আর গুনাহের জিবাণু কিলবিল করছে। আমি নির্লজ্জের মতো মনে মনে তওবা করি, ঈমানকে শান দেই, মনকে দৃঢ় করি। আমি ওদের প্রশ্নের জবাব দেব না। মাকে গালী দেবার পথ সহজ করে দেব না। আমি উপরে তাকাই। এক টুকরো আকাশ যদি আমার চোখকে শান্তি দেয়। আমি কত দিন হয় আকাশ দেখি না!
আসমানের নীল মাঝে মধ্যে খোয়াবে এসে আমার বুকের সিনায় তোলপাড় করে। বেদনায় সাইমুম শব্দ করে রক্তের শিরায়। আমি কেঁদে ফেলি। কান্না থামাতে ঠোঁট কামড়ে ধরি।
একজন মহিলা সৈন্য আমার দুপায়ের মাঝখানে লাথি মারে। একটু আগের নীল আসমানের কথা ভুলে যাই, চোখে জায়গা করে নেয়া নীল আসমানের রঙ মুহূর্তে বদলে গিয়ে হলুদ ফ্যাকাশে এবং তীব্রলালে পরিবর্তিত হতে থাকে, হঠাৎ চোখে অন্ধকার নেমে আসে। বমি আসতে চায় আসে না। ব্যথার তীব্রতায় মাটির মানুষ মাটিতে নেতিয়ে পড়ি!
প্রায় ঘন্টাখানেক পরে জ্ঞান ফিরে পাই। আমার দৃষ্টিশক্তিও ফিরে আসছে ক্রমেই। আমি নতুন আতঙ্কে চোখ খুলি। আমাকে ঘিরে আরো বেশকিছু সৈন্য তাচ্ছিল্যের হাস্যরসে উছলে উঠছে। আমি আমার প্রতি আফসোস করি, কেন আবার বেঁচে ওঠলাম? চোখ আমার যা দেখতে পাচ্ছে, তা অসহনীয়। একজন বন্দিকে মলযুক্ত কমোডে মুখ চেপে ধরেছে কয়েকটি সৈন্য। সৈন্যগুলোর চর্ম শাদা ফ্যাকাসে খশখশে, অথচ তাদের আচরণ এতোই কৃষ্ণ যে সাদা চামড়ার প্রতি আমি চিরদিনের মতো ঘৃণা বোধ করবো।
আমার চোখের সামনে মজলুমকে এখন যে অপমান করছে সে অপমানের বেদনা আমার মার খাওয়া থেকে এক বিন্দুও কম নয়। অপমানের ব্যথা আমাকে দংশন করছে, অথচ মানুষকে আমি চিনি না।
সৈন্যরা লোকটিকে প্রশ্ন করে, তোমার বয়স কত?
আমার আহত ভাবনা আমাকে প্রশ্ন করে, ওরা এমন বয়স নিয়ে উৎসাহী কেন? বয়স না জেনেও তো গালাগালি করা যায়। নাকি এটা ওদের মজা করার নতুন কৌশল?
একজন সৈন্য চিৎকার করে আবারো প্রশ্ন করে
হাউ ওল্ড আর ইউ?
লোকটির বিনিত জবাব, ষাট!
লোকটির বয়ষ ষাট হওয়ায় কিনা কে জানে, মনে হচ্ছিল সে আমার বাবা। বাবাকে চার মাস ধরে দেখি না। হয়ত সেটাও একটা কারণ। লোকটির মুখে দীর্ঘ দাড়ি যার অধিকাংশই পাকা Ñ আমার বাবার মত। আবার এমনও হতে পারে, এই যে বন্দি লোকটি, কিয়ামত সদৃশ মুসিবত তার। সে একজন মুসলমান আমিও একজন মুসলমান। পৃথিবীর তাবৎ মুসলমানই একের ব্যথা অন্যে উপলব্ধি করে। নাকি করছে না? না করলে আমি এমন দোয়া করি, দয়াময় তুমি সব মুসলিম জনপদে যুদ্ধের আযাব চাপিয়ে দাও, আমরা যাতে একত্রিত হতে পারি!
একজন ব্রিটিশ সৈন্য তাচ্ছিল্যের সাথে জিজ্ঞেস করে, তা বুড়ো তোর ছেলে মেয়ে কটা?
লোকটির সরল উত্তর, আমার দুটি মাত্র মেয়ে, ওরা আমার হৃৎপিণ্ডের দুটি বাল্বের মত। লোকটির চোখে স্নেহের দারুণ দহন, তার ঠোঁট কাঁপে। আমেরিকান মহিলা সৈন্য, খুবই আগ্রহ ভরে জিজ্ঞেস করে, তাদের বয়স কত? আজকে ওদের কি হল, বয়সের বিষয় থেকে বেরই হতে পারছে না।
লোকটি বয়সের প্রসঙ্গ বদলে ফেলার জন্য অন্যভাবে উত্তর দেয়
ওরা খুবই ছোট।
মহিলা ঝুকে আসে, তার মুখ বিকৃত হয়, ক্রমেই জেদ মাথায় ওঠে জেদ নিয়ন্ত্রণে রেখে ফোস ফোস করে জিজ্ঞেস করে, মেয়েগুলো কি বাস্টার্ড না তোর? তোর মেয়েদের তো বয়স কম হবার কথা না বুড়ো।
লোকটির চোখে হঠাৎই ব্যক্তিত্ব উসকে ওঠে। আহত সিংহের মতো উত্তর দেয়
আমার এক মেয়ের বয়স ১৮, আরেক মেয়ের বয়স ১৯। আমার মেয়েদের নিয়ে অনাচারমূলক কিছু বল না। সৈন্যরা লোকটির মেয়েদের বয়স জানতে পেরে খুব মজা পাচ্ছে। মজাটা পূর্ণ করার জন্য প্রায় সকলে একযোগে সিগারেট ধরায়।
মহিলা সৈন্যটি আয়েসি টান দিয়ে এক মুখ ধোঁয়া ছেড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলীর দিকে চোখ ছোট করে তাকায়। তীক্ষè তরে তাকানোর কারণে কপালে ভাঁজ পড়েছে। দেখে মনে হবে, সে ধোঁয়ার বল নিয়ে খুব ভাবনায় নিমজ্জিত।
মহিলা সৈন্যটি হঠাৎ আবেগের আর্দ্রতা আর মানবতার সুর মিলিয়ে হাতের সিগারেট ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে এমন ভঙ্গি করে যেন আর একটি প্রশ্ন করেই বন্দিকে ছেড়ে দেবে। সে তার শেষ প্রশ্নটি করে, আচ্ছা তুমি কি মেয়েদের খুব ভালবাসো?
লোকটির উত্তর মুখে দিতে হলো না, তার চোখ থেকে স্বচ্ছ পানি বেড়িয়ে পড়ে।
মহিলা সৈন্যটি চোখের পানির কোন তোয়াক্কা না করে আবারো প্রশ্ন করে, বুড়ো, তুমি কি তোমার মেয়েদের খুব ভালবাসো? লোকটি মুখে হ্যাঁ বলে এবং সামনের দিকে মাথা তিন-চারবার ঝুকিয়ে গুরুত্বটা বোঝাতে চায়।
মহিলা সৈন্যটি হঠাৎ পৃথিবীর সবচাইতে নোংরা প্রশ্নটি করে। আচ্ছা বুড়ো, তুমি তোমার মেয়েদের সাথে শোওনি? লোকটি তার কানকে বিশ্বাস করতে পারে না। মহিলা পুনরায় প্রশ্নটি করায় অতিরিক্ত বিস্ময়ে লোকটির চোখ হঠাৎ জ্বলে ওঠে। বেদনার বান তার শিরাগুলোকে নীল করে তোলে। চোখে ঘৃণার অগুন তীব্রতা পায়। লোকটি আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে হঠাৎ সমস্ত শক্তিতে সৈন্যটির গালে তীব্র চড় বসিয়ে দেয়। মহিলা সৈন্যটির কাছে এটা কল্পনাতীত। সৈন্যটি চেয়ার থেকে ফ্লোরে পড়ে গিয়েও কোনো প্রকার উত্তেজিত হয় না। অন্য দুজন সৈন্য কোমরের পিস্তল হাতে নিয়ে লোকটির দিকে তাক করে। লোকটি শব্দ করে হেসে ওঠে।
মহিলা সৈন্যটি ভয় পায়, দুপা পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়। একজন আমেরিকান শাদা চামড়ার পুরুষ সৈন্য বন্দি লোকটির মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলী করে Ñ বুড়ো বন্দি হাসতে হাসতে শাহাদাত বরণ করে। আমরা বন্দিরা সব বাকরুদ্ধ।
লোকটির মৃত্যুতে সৈন্যরা হালকা উৎসবে মেতে ওঠে, সকলে প্রায় একই সাথে বিয়ারের ক্যান খোলে। ফেনাযুক্ত বিয়ার উগরে মাটিতে পড়ে। বিয়ারে চুমুক দিয়েই সিগারেট ধরায়, ঘন ঘন টান দিয়ে কারাগারের কক্ষটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে তোলে। মনে হয় শীতের রাতের কোমল কুয়াশা অথচ কুয়াশার সাথে কটু গন্ধ। দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়। সে কটু গন্ধময় কুয়াশাচ্ছন্নতার মধ্যে একটি লোককে প্রায় নগ্ন অবস্থায় আমাদের কক্ষে নিয়ে আসে। তার কথা বলার অবস্থা নেই। লোকটির গলায় কুকুরের বেল্ট বাঁধা। টেনে হেঁচড়ে তাকে আনা হয়। বেল্ট ধরে টানছে যে সৈন্যটি সে এক কৃটিশ মহিলা সৈন্য। সে পূর্ব হতে কক্ষে থাকা সৈন্যদের সাথে কি যেন বলাবলি করে, আমরা তার কিছুই বুঝলাম না। তবে সব সৈন্যদের মুখ হাসি হাসি দেখে আমরা আতঙ্কিত। একজন সৈন্য হঠাৎ তার প্যান্টের জিপার খুলে তার শিশ্ন বের করে এবং ধরে আনা লোকটিকে মুখ দিয়ে লেহন করতে বলে। লোকটি বিদ্রোহ করে এবং সৈন্যদের উদ্দেশ্যে থু থু ছিটিয়ে দেয়। লোকটি আরবী ভাষায় গালি দেয়। একজন সৈন্যকাল্বশব্দের তরজমা করে, ‘কাল্বমানে হলো কুকুর।
বৃটিশ মহিলা হাত নেড়ে নিজের দিকে ইশারা করে আমরা কুকুর, ইউ বাস্ট্রার্ড? লোকটি উত্তর দেয় Ñ আইওয়া, আনতুম কুল্লু হারাম। সৈন্যরা সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ী করে, এর মধ্যে একজন সৈন্য পেছনে হাত বাঁধা বন্দীর গায়ের প্রস্রাব করে। আমরা অনুভব করি, আমাদের সকলের শরীরই যেন শয়তানের প্রস্রাবে ভিজে গেছে, সমস্ত ইরাকীদের গা ভিজে গেছে। সারাবিশ্বের মানুষের গায়ে ওরা প্রস্রাব করে দিয়েছে। যদি অনুভূতি কাউকে নাড়া না দেয়, তবে আমি প্রভুর দরবারে দোয়া করি, প্রভু সারা জনপদে যুদ্ধ ছড়িয়ে দাও।
লোকটির বিদ্রোহ আমাদের সবার উপর নতুন আযাব নিয়ে এলো। এতে আমরা বিদ্রোহী লোকটির প্রতি বিন্দুমাত্র বিরক্ত নই। কারণ ওর বিদ্রোহ আমাদের সকলের মনের ভেতরের সুপ্ত আগ্নেয়গিরী। বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে ওরা একে একে আমাদের সবাইকে বিবস্ত্র করে। সার বেঁধে দাঁড় করায়। একজন মহিলা সৈন্য আমাদের গুপ্তাঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করে। তোমাদের ইয়েগুলো এমন বেজার কেন? আহা....! তারা মুখে চু-চু শব্দ করে আমাদের কষ্ট বাড়িয়ে দেয়।
ওদের মধ্যে একজন সৈন্যের মাথায় নতুন বুদ্ধি ভর করে, তারা নিজেদের মধ্যে কি এক অজ্ঞাত ভাষায় কথা বলে আর প্রায় সমস্বরে চিৎকার করে ওঠে। আমরা নতুন আতঙ্কে মুখ চাওয়া-চাওয়ীও করতে পারি না, কারণ আমরা সকলেই বিবস্ত্র। আমরা যেন হাশরের মাঠে ইয়া নফসি ইয়া নফসি করছি আর আমাদের সামনে এক দঙ্গল ইবলিশ।
ইবলিশেরা আমাদের শুইয়ে দিয়ে, একজনের উপর একজনকে তুলে দিয়ে, মানব পিরামিড গড়ে তুলে অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ে। আমরা লজ্জায় অপমানে দোয়া করি, এতেও যদি সারা পৃথিবীর হৃদকম্পন না হয় তবে প্রভু, সারা পৃথিবীতে যুদ্ধ ছড়িয়ে দাও।

⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.