পথের সাথী ।। হাসি কনা কর
ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম গাবতলি থেকে বাসে উঠলাম সিট নম্বর মিলিয়ে গিয়ে বসলাম একটি মেয়ের পাশে। মিনিট দশেক পরে বাসটি ছেড়ে দিলো। ঘড়ি দেখালাম রাত দশটা চুপচাপ বসে থাকতে ভালোলাগছে না তাই মোবাইলটা নিয়ে ফেসবুক দেখছিলাম আবার আড়চোখে মেয়েটিকে লক্ষ করছিলাম। মেয়েটি বেশ সুন্দরী তবে শ্যামলা, ডাগর ডাগর চোখ মাথাভর্তি কোকরা চুল বাতাসে উরে নাকে মুখে পরছে সুন্দর আংগুল দিয়ে আলতো করে সরিয়ে দিচ্ছে মোট কথা আমি মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেছি কিন্তু আমারতো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তানা হলে ওর সাথে প্রেম করতাম সত্যি বলছি ওকে আমার ভিষণ পছন্দ হয়েছে। মোবাইলটা মুখের কাছে ধরে নিজেকে একটু আড়াল করে ওকে দেখছিলাম ও চুপচাপ সিটের সাথে হেলান দিয়ে মোবাইল দেখছিলো আর মাঝে মাঝে একটু হাসছিলো, খুব মিস্টি ওর হাসি। আমি জানি না আমার যে বৌ হবে সে দেখতে কেমন হবে কারন আমিতো তাকে দেখিইনি।
পড়ালেখা শেষ করে বেশ কিছু দিন একটু বন্ধু বান্ধব দের সাথে ঘুরে বেরিয়েছি, সমুদ্র সৈকত পাহাড় বিভিন্ন জায়গায় কিন্তু কোথাও কোন মেয়েকে আজ অবধি পছন্দ হয়নি, এমন করে ভালো লাগেনি কাউকে আর আজ যখন কোন একজনকে এতো ভালোলাগলো তখন আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। কি যে করি এইসব আবোল তাবোল আকাস পাতাল ভাবছি এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল। আমার রিংটোন হলো একটা বাচ্চা ছেলের দমফাটা হাসি সংগে সংগে ফোনটা রিসিভ করলাম বললাম মা কেমন আছো? মা বলল ভালো আছি তুমি কেমন আছো? কখন গাড়ি ছেড়েছে। মা দশটার গাড়ি ছেড়েছে ঐ পাঁচটা ছটা নাগাত পৌঁছে যাবো তুমি চিন্তা করো না। আচ্ছা বাবা খবর পেলাম মেয়েও নাকি আজ ঢাকা থেকে খুলনার আসছে। তা আমি কি করবো? রাগ করিসনা বাবা, শোন মা এর উপর যখন ভরসা করেছিস তখন তুই ঠকবি না খুশিই হবি এমন মেয়েই আমি ঠিক করেছি। তুই যেমন ওকে দেকিসনি মেয়েটিওতো তোকে দেখেনি তোরা কেউই ঠকবি না। মা এখন রাখি? আচ্ছা রাখ। ফোনটা রাখতে না রাখতে আবার বেজে উঠল ছোট বোনটা ফোন করেছে রিছিভ করছি আর তাকিয়ে দেখছি কেমন কটমট করে আমার দিকে তাকাচ্ছে আমার পাশের ছিটের মেয়েটি, আর বলছে উঃ একি রিংটোন কোন ভদ্রলোকর মোবাইলের রিংটোন এমন হয়? ওপাশ থেকে অর্পি হ্যালো হ্যালো বলছে পরিস্কার শোনা যাচ্ছে আর আমিতো ফোনটা হাতে নিয়ে মেয়েটির দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি কেউ রেগে গেলে যে তাকে এতো সুন্দর দেখায় আগে কখনো দেখিনি। আমার ঐঅবস্থা দেখা মেয়েটি বলল, কিহলো কথা বলুন এভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন? মেয়েটির কথা শুনে পিছনের ছিটের দুটি ছেলেদের মেয়ে হা হা করে হাসছে আর বলছে দাদা হুসে আছেন তো... আমি সম্বিত ফিরে পেলাম আর বললাম কিরে অর্পি ফোন করেছিস কেন? দাদা তোর কি হয়েছে কথা বলছিস না কেন? পাশে একটি মেয়ের কথা শুনলাম আমি সেই কখন থেকে হ্যালো হ্যালো করে যাচ্ছি। ওকিছু না কি বলবি বল।আচ্ছা বৌদির ব্যানারশির রংটা কি? কসমেটিক কিনেছিস দুটো করে। আসি তারপরে দেখিস এজন্য কি কেউ ফোন করে? রাখ এখন, আর শোন বারবার ফোন করিস না। ঠিক য়াছে দাদা। আমি ফোন বন্ধ করে পকেটে রাখতে যাচ্ছি এমন সময় মেয়েটি বলল, এইযে আপনার নামটা কি? আমার নাম রক্তিম। মনেমনে মেয়েটিবলল, আমার যার সাথে বিয়ে হবে ঠিক হয়েছে তার নামওতো রক্তিম, এই কি সেই নাকি? দুর কিযে ভাবিনা একই নামের অনেকে থাকতে পারে। এমন শুদর্শন স্মার্ট ছেলেকি আমার ভাগ্যে আছে নাকি? কিহলো আমার নামটা শুনে চিপ মেরে গেলেন যে। না না চুপ মেরে যাবো কেনো অন্যকথা ভাবছিলাম। আচ্ছা শুনুন আপনার ফোনটা দিনতো এই বলেই আমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নিলো। আমি বললাম একি আপনি কি করছেন? দাড়ান দাড়ান কোনো ক্ষতি করছি না মাত্র রিংটোনটা বদলে দিচ্ছি। কেনো? আপনি আমার রিংটোন বদলাবেন, কে দিয়েছে এ অধিকার? এটা অধিকারের প্রশ্ন নয়। যেহেতু আমারা পাশাপাশি বশেয়াছি সেহেতু আপনার বাজে রিংটোন আমি পরিবর্তন করতে ই পারি। আমি খুব বিরক্ত হচ্ছি আপনার এই বাজ রিংটোনে। আমার মাথা ধরে যাচ্ছে। দয়া করে বাড়ি গিয়ে আবার ঐ দমফাটা হাসি রিংটোনটা নিয়ে নেবেন। আচ্ছা ঠিক আছে, এবার বলুনতো আপনার নামটা কি? আমার নাম দিয়ে আপনি কি করবেন? কেন আমার নামটাতো আপনি জানলেন আপনার নামটা আমি জানবো না… শুনুন আমার প্রয়োজন ছিলো তাই জেনেছি আপনার তো কোন প্রয়োজন নেই। কে বলেছে কোন প্রয়োজন নেই। কি প্রয়োজন বলুন তো? প্রয়োজনের কি কোন শেষ আছে এই ধরুন আপনি কোথায় নামবেন, তারপরে আপনি ঢাকায় কি করেন পড়ালেখা না চাকরি, তারপরে ধরুন আপনার বিয়ে ঠিক হয়ে ছে কিনা সেজন্য বাড়ি যাচ্ছেন কিনা... কি বল্লেন আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে এবং তার জন্যেই আমি বাড়ি যাচ্ছি আপনি কি করে জানলেন? আমি জানি নাতো আন্দাজ করলাম মাত্র। মানে... আন্দাজ করলেন বেশ আমি ও বলবো আপনার বিয়ে ঠিক হয়েছে তাই আপনি ও বাড়ি যাচ্ছেন। হ্যা তো আমার বিয়ে উপলক্ষেই আমি বাড়ি যাচ্ছি। ঐযে আমার ছোট বোনে অর্পি ফোন করে জিজ্ঞাসা করলো বেনারশীর রংটা কি তার পরে ওর জন্যও সাজগোজের জিনিস নিয়ে ছি কিনা এসব আরকি। বাঃ ভারি মজাতো আমাদের দুজনেরই বিয়ে ঠিক হয়েছে দুজনেই বাড়িযাচ্ছি। আবার বসে ছিও দুজন পাশাপাশি এটা কি কাকতালীয় ব্যাপার। কি যানি হবে হয়তো।
কি যে বলেন শুনুন আপনাকে যদি অজ্ঞানই করি তাহলে শুধু বেনারসিটাই নেবোনা বেনারসির মালিককে তুলে নিয়ে যাবো। তাই আমাকে নিয়ে কি করবেন, আমিতো একজনের বাকদত্যা। সত্যি কথা বলতে কি আমি একটু স্পস্ট কথা বলতে ভালো বাসি… কেন বলুন তো? আপনার মতো একজন পথচলার সংগি পেয়ে আমার ভিষণ ভালো লাগছে মনে হয় যেন অন ন্তকাল যদি এভাবেই চলতো যদি কোথাও না থামতো ভিষণ ভালো হতো। ও তাই... আমিও খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম একা যাচ্ছি পাশের সিটেকে না কে বসবে যদি বদমাশ হয় তখন কি হবে। এখন আর কোন চিন্তা নেই আপনি খুব ভদ্রলোক। যাক একটু ভরসা পেলাম। আমাদের কথার ভিতর কন্ডাকটর এসে টিকিট চাইলো বলল আপনাদের টিকিট টা দেখি। আমি পকেট থেকে টিকিটটা বের করে দিলাম। টিকিটটা হাতে নিয়ে বলল, আপনার স্ত্রীরটা কোথায়? পাশের সিটথেকে নতুন বলে উঠলো এইযে আমর টিকিট, নাযেনে না শুনে একজনের সাথে আর একজনের সম্পর্ক জুড়ে দেন কেন বলুক তো? না মানে দুজনে খুব গল্প করছিলেনতো তাই ভাবলাম... হ্যা তা তো ভাববেন ই৷ দুজন দুজনের সাথে কথা বললেই বুঝি স্বামী স্ত্রী হয়ে যায় যত্তসব। আর এইযে চুপ করে আছেন যে, জিনিসটা উপভোগ করছেন তাই না? আরে না না আপনি ইতে বলে যাচ্ছেন আমার আর বলার সুযোগ কোথায়। পেলে বলতেন। হ্যা বলতামইতো। কোথায় আহাম্মক... পালিয়েছে বোধ হয়।
এইযে রক্তিম আপনি খেয়ে নিন আমি খাব না। কেন সন্দেহ হচ্ছে? না না ওসব কোন কথা নয় ওতো একটু মজা করলাম আমি রাস্তায় কিছুই খাই না আপনি খান আমি একটু ঘুমাতে চাই। আচ্ছা ঠিকয়াছে আপনি ঘুমান।
নুডুলসটা বেরকরে খেয়ে নিলাম তারপরে আমিও ঘুমাবো ভাবছি এরমধ্যে বিকট একটা শব্দ হলো তাকিয়ে দেখি গাড়ির ভিতর লোক জন চিৎকার চেচামেচি করছে আমি হতভম্বহয়ে ভাবছি কি করবো হঠাৎ করে গাড়িটা কাঁতহয়ে পরে গেল আমি নতুনকে দু'হাতে প্রানপনে বুকের মধ্যে চেপে ধরলাম এবং বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। জ্ঞান হারালাম, যখন জ্ঞান ফিরলো৷ তখন দেখলাম একটা হাসপাতালের বেডে শুয়েয়াছি আমার হাতে পায়ে খুব ব্যাথা পরক্ষণেই হুস হলো আচ্ছা নতুন কোথায়? আমি তো ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম ও কোথায়? লাফ দিয়ে উঠে বসলাম বেডের উপর। নার্সরা ছুটে এলো বলল একি আপনি উঠছেন কেন? আমি বললাম নতুন কোথায় ওকে খুঁজে পেতেই হবে। শুনুন শুনুন আছে আমরা দেখছি আপনি বসুন। না না আমার বসার সময় নেই যেকোনো মূল্যে ওকে পেতে হবে। ওদিকে নতুনের হুস হলো সে ও রক্তিমকে না দেখে হন্তদন্ত হয়ে বেড়িয়ে পরল। গলা ছেড়ে ডাকতে লাগল রক্তিম রক্তিম কোথায় আপনি... দুজনেই সামনা সামনি দেখা হলো কোনো কিছু না ভেবেই দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরল যেন জনম জনম ধরে দুজন দুজনের বন্ধু। আমি বললাম কোথায় লেগেছে? বেশি লাগেনি এই মাথার ডান পাশটায় ব্যাথা লেগেছে। আপনার কোথায় লেগেছে? আমার হাতে আর পায়ে খুব বেশি নয়। আচ্ছা আমাদের লাগেজগুলো কোথায় পাওয়া যাবেতো? দেখি আমি দেখছি আমি ও যাবো। না না আপনি যাবেন না। বেরিয়ে পড়লাম, একজনকে বললাম আচ্ছা লাগেজগুলো কোথায়? মনেঐ বাসযাত্রীদের। হ্যা হ্যা ওখানে পুলিশ আছে যার যার লাগেজ প্রমাণ নিয়ে তার হাতে তুলে দিচ্ছে। ওটা দুজনে প্রমাণ দিয়ে লাগেজ দুটো নিয়ে একটা ট্যাক্সি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম কিন্তু নতুননের কাছে শুনতে গিয়ে দেখলাম ওকাপছে ওকে একটা কাপর জড়িয়ে দিলাম জ্বর এসে গেছে ওর। আর শোনা হলো না ও কোথায় যাবে তাই ভাবলাম আমাদের বাড়িতেই নিয়ে যাই তারপরে দেখা যাবে।
একসময় ট্যক্সি এসে দাড়ালো রক্তিমের বাড়ির সামনে। সব দৌড়ে এসেছে। সবাই তাকিয়েয়াছে ও কাকে সংগে নিয়ে এসেছে। রক্তিমের মা বলল এ কি এ যে আমার মা লক্ষ্মি প্রথমা ওকে কোথায় পেলে? রক্তিম আর প্রথমা একে অপরের মুখের দিকে অপলক চেয়ে থাকে…
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
Facebook: facebook.com/molakat
Facebook: facebook.com/afsarnizam
Instagram: instagram.com/molakat
Instagram: instagram.com/afsarnizam
Twitter: twitter.com/afsarnizam
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments