perversion কথাটির অর্থ বিকার বিকৃতি, অস্বাভাবিক বা অসুস্থ কামপ্রবৃত্তি। যৌনতা যখন ভোগের মাত্রা ছাড়িয়ে তার বিকৃতি ও অসংযমের ভেতর চরিতার্থতা খোঁজে, ন্যায়-নিষ্ঠার ধার ধারে না, রুচিহীন ইন্দ্রিয়াসক্ত জীবনযাপনে তাড়িত হয়ে যখন মনুষ্যেতর হয়ে ওঠে তখন সে perverted. দেবতা, অসুর এবং মানুষ সকলের মধ্যেই
perversion এর দেখা মেলে। একাধিক নারীর সহবাস, অসম রতিক্রিয়া, নারীপীড়ন, নগ্ন যৌনাঙ্গ প্রদর্শন, সমকামিতা প্রভৃতি এর মধ্যেই পড়ে।
পুরাণে অহল্যাকে গোপনে ভোগ করেছিলেন ইন্দ্র। মৎস্যকন্যার নৌকায় পার হতে গিয়ে ঋষি পরাশরও কামাসক্ত হয়ে তাঁকে কুমারী অবস্থায় ভোগ করেন। ব্রহ্মা দক্ষ প্রজাপতিদের সৃষ্টিকালে 'সন্ধ্যা' নামে এক নারীও সেখানে আবির্ভূতা হন। তখন এক সুন্দর পুরুষকেও সৃষ্টি করেন। পুরুষটি এত সুন্দর ছিলেন যে, তাকে দেখে সবাই মোহিত হয়ে যায়। পুরুষটির নাম 'মন্মথ'। স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালে তাঁর অবস্থান। সে সঙ্গে সঙ্গেই ব্রহ্মাকে কামশরে বিদ্ধ করে। এতে ব্রহ্মা পুত্রবধূ ও কন্যা এবং মাতৃতুল্যের প্রতি কামাসক্ত হয়ে পড়েন। সুতরাং পুরাণ থেকে সৃষ্টির ঊষালগ্নে কামপ্রবৃত্তির এই perversion সংক্রামিত।
সিগমুন্ড ফ্রয়েড তাঁর গবেষণায় প্রমাণ করেছেন প্রবৃত্তির মূল উৎস যৌনতা। ধর্মাচরণ থেকে শিল্পচর্চা, জীবনযাপন থেকে স্বপ্নদর্শন এবং নিঃসঙ্গতা থেকে মুখরতা—যৌনতারই বিভিন্ন পরিক্রমণ এবং পর্যায়।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখতে পাই: মিশরের কিংবদন্তি রমণী ক্লিওপেট্রা রাজনৈতিক কারণে রাজ্য রক্ষার্থে মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিয়ে করেন তাঁর নিজেরই ভাই দ্বাদশ টলেমিকে। নীল নয়না অসাধারণ সুন্দরী যৌবনোচ্ছল নারী পৃথিবীর প্রায় সমস্ত পুরুষেরই কামনার ধন। কিন্তু রাজতন্ত্র এবং সিংহাসনের কারণে ভাইকে স্বামীর আসনে বসিয়ে হৃদয়পদ্মটি তার হাতেই তুলে দিতে হয়। কিন্তু এক নৌকাডুবিতে দ্বাদশ টলেমির মৃত্যু ঘটলে তাঁর আর এক ভাই ত্রয়োদশ টলেমিকে স্বামী রুপে বরণ করতে হয়। মিশরের ইতিহাসে এসব ঘটনা নতুন কিছু নয়। কারণ এর আগে পিতা-কন্যার বিবাহও হয়েছে। ফ্যারাও তৃতীয় আমেনোফিস তাঁর কন্যা শিতামনকে বিয়ে করেন। চতুর্থ আমেনোফিসও তাঁর আপন ঔরসজাতা আখেমেনামকে বিয়ে করেন। রাজা অয়দিপাউস নিজেরই গর্ভধারিণী মাকে বিয়ে করেন। সুতরাং এই perversion কোথাও না কোথাও ঐতিহাসিক স্বীকৃতির দলিলে রূপান্তরিত হয়েছে। তারপর আমরা দেখতে পাই অসম্ভব কামতাড়িতা ক্লিওপেট্রা একে একে ভেসে গেছেন ঐতিহাসিক বীরদের রক্ষিতা হয়ে। তাঁর মোহময় ওষ্ঠ পীনোন্নত বক্ষ কামনা করেছে বীরপুরুষদের। গ্রীক বীর সিজার এসেছে তাঁর জীবনে। তারপর এসেছে এন্টনি।
রোম সম্রাট ক্লডিয়াসের তৃতীয় পত্নী হিসেবে ভ্যালেরিয়া মেসালিনার জীবনেও দেখি যৌন বিকৃতির বিচিত্র গতি। ধার্মিক বাপের মেয়ে হয়েও জীবনে যৌনসুখটাকেই একমাত্র সুখ ভেবেছে। বয়স্ক স্বামীকে তাঁর যৌবনমোহে আবিষ্ট করে রেখে নগরের পুরুষদের একের পর এক বিছানায় ডেকেছেন। আর সবাই-ই একে একে পুরনো হয়ে গেছে। তাই তাঁর কাছে 'নতুনের আছে প্রয়োজন' বলে অন্বেষণ চালিয়েছেন। রাজ পরোয়ানা জারি করে মঞ্চ-অভিনেতা নেস্টারকে করেছেন নিজের গোপন কক্ষের কাম চরিতার্থের যন্ত্র। তাঁর শরীরে এঁকেছেন নখ-দাঁত এর চিহ্ন। তারপর সেও বিদায় নিয়েছে একই নিয়মে। এসেছে রোমের সম্ভ্রান্ত বংশের পুরুষেরা। একবার রোমের সমস্ত বারবণিতাকে নামিয়ে প্রতিযোগিতায় নিজে অংশগ্রহণ করেছেন। তাতে জানা যায় ২৪ ঘন্টায় তিনি ২৫ জন পুরুষকে কামতৃপ্ত করেন এবং এই প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রাসাদে ফিরে যান। রাজা ক্লডিয়াস দেশের বাইরে থাকাকালীন সিলিয়াস নামে এক প্রেমিককে বিবাহের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এবং সেই অনুষ্ঠানে নর্তকীদের নগ্ন নাচের দৃশ্য প্রদর্শিত হয়।
বিশ্ববিজয়ী নেপোলিয়ন বোনাপার্টের বোন পলিন বোনাপার্ট কতটা Pervert ছিলেন
তা আজও বিস্ময়ের বিষয় হয়ে আছে। একের পর এক পুরুষের জীবন থেকে ঘুরে ঘুরে খোঁজ করেছেন সেইসব শক্তিমান পুরুষদের যাঁরা তাঁকে যৌনানন্দে ভরিয়ে তুলতে পারবে। বিলাসবহুল জীবনযাপনের মধ্যে দিয়ে কেটেছে তাঁর জীবন। নেপোলিয়নের প্রধান সেনাপতি থেকে নিচু শ্রেণির কর্মচারীরাও তাঁর যৌন দাসে পরিণত হয়েছে। দুধের চৌবাচ্চায় নগ্ন হয়ে নিজেকে শুইয়ে রেখে পল নামে এক নিগ্রো ভৃত্যের কাছে যৌনসুখ নিয়েছেন। বাইরের কেউ আলাপ করতে এলে তাদের সামনে নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়েছেন। কেননা তাঁর মতে, তাঁর দেহের সৌন্দর্য একজন পুরুষের জন্য নয়—তা সকলেরই উপভোগের বিষয়। লাবণ্য মাখা অতি পেলব সৌন্দর্যের অধিকারিণী পলিন শেষের দিকে আসক্ত হয়েছেন ৩০ বছর বয়সী দীর্ঘদেহী স্বাস্থ্যবান শিল্পী নিকোলাস ফিলিপের প্রেমে। নিকোলাস ছিল গরিব, শুধু তাঁর অতৃপ্ত যৌনাকাঙ্ক্ষার জন্য তাঁকে চাকুরি দেন পলিন। মাত্রাতিরিক্ত যৌনপীড়ন চলতে থাকে তাঁর সঙ্গে পলিনের। নিকোলাসের মনুষ্যেতর প্রাণীর মতো বিশাল লিঙ্গ তাঁর উপর চালায় পাশবিক ধর্ষণ। কষ্ট হলেও পলিন যৌনতৃপ্তির জন্য মহানন্দে তা গ্রহণ করেন। কিন্তু এর ফলে তার যৌনাঙ্গে যে ক্ষত সৃষ্টি হয় সেই ক্ষতই একদিন ক্যান্সারে পরিণত হয়।
আজকের ইতিহাস আমাদের অজানা নয়। সত্তর বছরের বৃদ্ধের দ্বারা আট বছরের কিশোরীর ধর্ষণ, কিংবা তেষট্টি বছরের বৃদ্ধার সঙ্গে ত্রিশ বছরের যুবকের প্রণয় যে রতিরই পরিচয় দিক—তা যে perversion এর-ই জ্বলন্ত নিদর্শন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বহুগামী পুরুষ এবং বহুগামী নারী, ধর্ষণকারী এবং ধর্ষিতা হতে যাওয়া ব্যক্তির অভাব নেই। সন্ধের নিম অন্ধকারে চায়ের দোকানে যে যুবক রোজ চা পান করতে আসে, সে থাকে আমাদেরই মতো কোনও পরিবারে। কিন্তু তার ভীষণ নেশা যা মাদককেও ছাড়িয়ে যায় তা হল, সদ্য যুবকদের টাকা দিয়ে তাদের পশ্চাৎ দিক রতিক্রিয়ায় ব্যবহার করা। যেমন কোনও আশ্রমের সাধু-মোহন্তরাও করে থাকেন ছাত্র-শিষ্যদের। এদের কাছে নারী তেমন কাম্য নয়, পুরুষ শিকারই কামনার বস্তু হয়ে ওঠে। নারীতে-নারীতে বিবাহ, সংসার, যৌনতার ঘটনাও হামেশাই ঘটে চলেছে। পাশ্চাত্য দেশের যৌনসংস্কৃতি হিসেবে এদেশেও চালু হয়েছে বাৎস্যায়নের নানান রূপ যা যৌনপুরাণের মতোই। মুখ ও পায়ুকেও বেছে নেওয়া হয়েছে যৌনানন্দের আধার হিসেবে। বিবাহিত মহিলা-পুরুষও বিকৃতকামে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। ফলে তাদের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে অসন্তোষ। মেয়ে হোস্টেলের সংবাদও একবার শিহরিত করেছিল। হোস্টেল সুপারের অনুপস্থিতিতে একবার ছাত্রীরা ব্লু ফিল্ম দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এই উদ্দেশ্যে ভাড়া করে ভিসিআর। তারপর সবাই যৌন উত্তেজনায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে কৌশল করে ডেকে নেয় দোকানদারকে। দোকানদার হোস্টেলে পা রাখা মাত্র শুরু হয় উদোম টানাটানি। এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ। বেচারা দোকানদার আর কী দেখবেন! শেষে তার লিঙ্গটাই ছেঁড়া যায়।
আরও একটি অদ্ভুত যৌনতৃপ্তির খবর পাওয়া যায়। গৃহস্থ বাড়ির রাখাল একটি গাভীকে এমনভাবে বশীভূত করেছিল যার সঙ্গে রাখালটির নিত্য রতিক্রিয়া চলত। মাঠে নিয়ে গিয়ে কোনও উঁচু স্থানের ধার ঘেঁষে দাঁড় করাতো গাভীটিকে। তারপর তার পিঠে উঠে লিঙ্গটি প্রবেশ করাতো যৌনাঙ্গে। দিব্যি মানুষের মতোই তৃপ্ত হত ওরা। রাখালটিকে ডেকে এ কথার সত্যতাও যাচাই করা হয়েছিল।
এক কাপড়ের ফেরিওয়ালা কাঁদতে কাঁদতে তার বউ পালানোর গল্প বলছিল। কারণ জিজ্ঞেস করাতে লোকটি বলেছিল:'সে বড়োই বেজ্জত কথা, আমি বউয়ের পিছন মারি—ওটা ওর পছন্দ নয়।'
অভ্যাস ত্যাগ করতে বললে লোকটি কাচুমাচু করে বলেছিল: 'বহু চেষ্টা করেছি, কিছুতেই ত্যাগ করতে পারিনি।'
লোকটির বেশভূষা দেখে বেশ ধর্মপরায়ণ মনে হচ্ছিল, কিন্তু এরকম pervert তা কে জানে! দিনের আলোয় এরকম মানুষ কত ঘুরে বেড়ায়। কতজনই যে এরকম মানসিক রোগী তার হিসেব কেউ কখনো দিতে পারবে না। রাজপ্রাসাদ থেকে কুঁড়েঘর, ফুটপাত থেকে ভাঙা মঞ্চ সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে এই perversion এর ক্রিয়া।
⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN
🔗 MY OTHERS CHANNELS
🔗 FOLLOW ME
🔗 MY WEBSITE
🔗 CALL ME
+8801819515141
🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com
No comments