জানুয়ারি ২০২৩ : ক্যালেন্ডার

 

কাজী কাদের নেওয়াজ

কবি কাজী কাদের নেওয়াজ ১৯০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদের তালেবপুরে নানাবাড়ি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাপের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট গ্রামে। তিনি বহরম কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। ১৯৩২ সালে সাব-ইন্সপেক্টর অব স্কুল পদে যোগদান করে ১৯৪৬ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। দেশবিভাগের পর তিনি ঢাকায় এসে নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরে দিনাজপুর জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন এবং ১৯৬৬ সালে অবসর গ্রহণ করে মাগুরার মুজদিয়া গ্রামে বসবাস করেন। 

কাজী কাদের অল্প বয়সেই সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন। সাহিত্যের সব শাখায়ই তাঁর বিচরণ ছিল, তবে কবিতাই ছিলো তাঁর প্রধান চর্চার ক্ষেত্র। বিষয়, বিন্যাস, আঙ্গিক ও প্রকাশনৈপুণ্য ছিলো তাঁর কাব্য স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে। কবিতায় তিনি সত্য, সুন্দর আর আদর্শকে ধারণ করেছন। ছান্দসিক কবি হিসেবে তিনি অধিক পরিচিত ছিলেন। প্রেম, প্রকৃতি ও স্বদেশ তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু। সহজ-সরল ভাবমাধুর্যে রচিত তাঁর কাহিনীধর্মী ও নীতিকথামূলক শিশুতোষ রচনার সংখ্যা অনেক।

কাজী কাদের নেওয়াজের গুরুত্বপূর্ণ রচনাবলি হলো: মরাল (১৯৩৬), দাদুর বৈঠক (১৯৪৭), নীল কুমুদী (১৯৬০), মণিদীপ, কালের হাওয়া, মরুচন্দ্রিকা, দুটি পাখি দুটি তারা (১৯৬৬), উতলা সন্ধ্যা ইত্যাদি। তিনি প্রেসিডেন্ট পুরস্কার, শিশুসাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৩) এবং মাদার বক্শ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৩ সালের ৩ জানুয়ারি নিজগ্রামে ইন্তেকাল হয়।

শিক্ষকের মর্যাদা

বাদশাহ আলমগীর
কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর।
একদা প্রভাতে গিয়া
দেখেন বাদশাহ, শাহজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া
ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে
পুলকিত হৃদে আনত-নয়নে,
শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধুলি
ধুয়ে মুছে সব করিছেন সাফ্ সঞ্চারি অঙ্গুলি।
শিক্ষক মৌলভী
ভাবিলেন আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তার সবি।
দিল্লীপতির পুত্রের করে
লইয়াছে পানি চরণের পরে,
স্পর্ধার কাজ হেন অপরাধ কে করেছে কোন্ কালে!
ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিলো তার ভালে।
হঠাৎ কি ভাবি উঠি
কহিলেন, আমি ভয় করি না’ক, যায় যাবে শির টুটি,
শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার
দিল্লীর পতি সে তো কোন্ ছার,
ভয় করি না’ক, ধারি না’ক ধার, মনে আছে মোর বল,
বাদশাহ্ শুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল।
যায় যাবে প্রাণ তাহে,
প্রাণের চেয়ও মান বড়, আমি বোঝাব শাহানশাহে।
তার পরদিন প্রাতে
বাদশাহর দূত শিক্ষকে ডেকে নিয়ে গেল কেল্লাতে।
খাস কামরাতে যবে
শিক্ষকে ডাকি বাদশা কহেন, ‘শুনুন জনাব তবে,
পুত্র আমার আপনার কাছে সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?
বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,
নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা’
শিক্ষক কন, ‘জাহপানা, আমি বুঝিতে পারিনি হায়,
কি কথা বলিতে আজিকে আমায় ডেকেছেন নিরালায়?’
বাদশাহ্ কহেন, ‘সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে
নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন,
পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ।
নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে
ধুয়ে দিল না’ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে।’
উচ্ছ্বাস ভরে শিক্ষকে আজি দাঁড়ায়ে সগৌরবে
কুর্ণিশ করি বাদশাহে তবে কহেন উচ্চরবে,
‘আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির,
সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ্ আলমগীর।’

পরিকল্পনা, গ্রন্থনা, গ্রাফিক্স : আফসার নিজাম

ক্যালেন্ডার ২০২৩
জানুয়ারি ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
মার্চ ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
এপ্রিল ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
মে ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
জুন ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
জুলাই ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
আগস্ট ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
সেপ্টেম্বর ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
অক্টোবর ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
নভেম্বর ২০২৩ : ক্যালেন্ডার
ডিসেম্বর ২০২৩ : ক্যালেন্ডার


⭐ FOR ANY HELP PLEASE JOIN

🔗 MY OTHERS CHANNELS

🔗 FOLLOW ME

🔗 MY WEBSITE

🔗 CALL ME
+8801819515141

🔗 E-MAILL
molakatmagazine@gmail.com

No comments

নির্বাচিত লেখা

আফসার নিজাম’র কবিতা

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খ-কবিতা এক/ক. সূর্য ডুবে গেলে কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া একচিলতে রোদের আশায় পরবাসী স্বামীর মতো অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচী...

Powered by Blogger.